তাজিন আহমেদ

তাজিন আহমেদ (জন্ম: ৩০ জুলাই ১৯৭৫ - মৃত্যু: ২২ মে ২০১৮) বাংলাদেশের একজন অভিনেত্রী এবং উপস্থাপক। [1] তার অভিনীত প্রথম নাটক ‘শেষ দেখা শেষ নয়’ ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত হয়। নাটকের পাশাপাশি তিনি ১৯৯৭ সাল থেকে থিয়েটারে অভিনয় করেছেন।

তাজিন আহমেদ
জন্ম(১৯৭৫-০৭-৩০)৩০ জুলাই ১৯৭৫
নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ
মৃত্যু২২ মে ২০১৮(2018-05-22) (বয়স ৪২)
উত্তরা, ঢাকা
জাতীয়তাবাংলাদেশি
অন্যান্য নামজল
নাগরিকত্ববাংলাদেশি
যেখানের শিক্ষার্থীইডেন মহিলা কলেজ
পেশা
  • সাংবাদিক
  • অভিনেত্রী
  • নাট্যব্যক্তিত্ব
  • উপস্থাপক
  • লেখক
কার্যকাল১৯৯৬–২০১৮
আদি নিবাসনোয়াখালী, বাংলাদেশ
দাম্পত্য সঙ্গী
  • এজাজ মুন্না

রুমী রহমান

পিতা-মাতা
  • কামাল আহমেদ (পিতা)
  • দিলারা জলি (মাতা)

প্রাথমিক জীবন

তাজিন আহমেদের জন্ম ১৯৭৫ সালের ৩০ জুলাই নোয়াখালী জেলায়। তবে তিনি বেড়ে উঠেছিলেন পাবনা জেলায়। ঢাকার ইডেন কলেজ থেকে পড়াশোনা করেছেন তিনি। ১৯৯২ সালে তিনি এইচএসসিতে উর্ত্তীর্ণ হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন তাজিন আহমেদ।

কর্মজীবন

সাংবাদিকতা

নাট্যাঙ্গনে কাজ করার পাশাপাশি বেশ কয়েক বছর সাংবাদিকতায় যুক্ত ছিলেন। ১৯৯৪ সালে তিনি দৈনিক ভোরের কাগজে যুক্ত হন। ১৯৯৭ সালে প্রথম আলোতে সাংবাদিকতা শুরু করেন ও ১৯৯৮ সালে “নিজস্ব প্রতিবেদক” হন। তিনি আনন্দ ভুবন পত্রিকায় কিছুদিন কলাম লেখক হিসেবে কাজ করেছেন। ২০০২ সালে তিনি জনসংযোগ কর্মকর্তা হিসেবে মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেডে যোগ দেন।[2][3]

অভিনয়

দিলারা ডলি রচিত ও শেখ নিয়ামত আলী পরিচালিত 'শেষ দেখা শেষ নয়' নাটকে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে তাজিন আহমেদের অভিনয়যাত্রা শুরু হয়েছিল। নাটকটি ১৯৯৬ সালে বিটিভিতে প্রচার হয়েছিল। এরপর তিনি অসংখ্য নাটক-টেলিছবিতে কাজ করেছেন। [4] তাজিন আহমেদের অভিনয়ের শুরুটা হয় টিভি নাটক দিয়ে। ১৯৯৬ সালে বিটিভিতে প্রচার হওয়া ‘শেষ দেখা শেষ নয়’ নাটকের আগেও ১৯৯১ সালে বিটিভির ‘চেতনা’ নামের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উপস্থাপনা শুরু করেন তিনি। তার অভিনীত বিটিভি প্রচারিত ‘আঁধারে ধবল দৃপ্তি’ বেশ সাড়া জাগিয়েছিল। ১৯৯৭ সালে ‘থিয়েটার আরামবাগ’ দিয়ে মঞ্চনাটক শুরু করেন। এরপর ‘নাট্যজন’ থিয়েটারের হয়ে বেশ কিছু নাটকে অভিনয় করেন তিনি। পরবর্তী সময়ে আরণ্যক নাট্যদলের ‘ময়ূর সিংহাসন’ নাটকে অভিনয় করেছিলেন। এটি তার সর্বশেষ অভিনীত মঞ্চনাটক। তার সর্বশেষ অভিনীতি ধারাবাহিক নাটক ‘বিদেশি পাড়া’। হুমায়ূন আহমেদ পরিচালিত নাটক ‌‌‘নীলচুড়ি’তে অভিনয় প্রশংসিত হয়েছিলেন তাজিন আহমেদ। [5]

অভিনীত নাটক

তাঁর অভিনীত নাটকগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • শেষ দেখা শেষ নয় (১৯৯৬)
  • ‘নীলচুড়ি
  • অদেখা ভুবন (২০০৪)
  • উৎস (২০০৭)[6]
  • নলবাজি (২০০৭)[7]
  • পরস্পর (২০০৮)[8]
  • দ্য ফ্যামিলি (২০০৯)
  • বার বার ফিরে আসে (২০০৯)[9]
  • ও বন্ধু আমার (২০০৯)
  • মা (২০১৩)[10]
  • নকশাল (২০১৪)[11]
  • তোমার খোলা হাওয়া
  • অত:পর বিবাহ বার্ষিকী
  • সাত পৌড়ে কাব্য
  • এক আকাশের তারা

লেখালাখি

অভিনয় ও উপস্থাপনার বাইরে লেখালেখির কাজও করেছেন। তাঁর লেখা অনেক নাটক টেলিভিশনে প্রচারিত হয়। তাজিনের লেখা ও পরিচালনায় তৈরি হয় ‘যাতক’ ও ‘যোগফল’ নামে দুটি নাটক। তার লেখা উল্লেখযোগ্য নাটকগুলো হচ্ছে ‘বৃদ্ধাশ্রম’, ‘অনুর একদিন’, ‘এক আকাশের তারা’, ‘হুম’, ‘সম্পর্ক’ ইত্যাদি।[12]

উপস্থাপনা

১৯৯১ সালে বিটিভির ‘চেতনা’ নামের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উপস্থাপনা শুরু করেন। এনটিভিতে প্রচারিত ‌‘টিফিনের ফাঁকে’ অনুষ্ঠানে টানা ১০ বছর উপস্থাপনা করেছেন তিনি।[13] একাত্তর টিভিতেও ‘একাত্তরের সকালে’ হাজির হয়েছেন তিনি।[12]

রাজনীতি

তাজিন আহমেদ রাজনৈতিক সংগঠন 'বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন' (এনডিএম) যোগ দিয়েছিলেন। দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির বিভাগীয় সম্পাদক (সাংস্কৃতিক) পদে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। [14][15]

ব্যক্তিগত জীবন

নাট্য পরিচালক এজাজ মুন্নাকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন। তবে তাদের সংসার টিকেনি। এরপরে তাজিন বিয়ে করেন ড্রামার রুমি রহমানকে।[2]

মৃত্যু

২০১৮ সালের ২২ মে তাজিন আহমেদ হৃদরোগে আক্রান্ত হলে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় সেদিন বেলা ৪টা ২০ মিনিট নাগাদ কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। [16][17] পরের দিন জানাযা শেষে তাকে ঢাকার বনানী কবরস্থানে বাবা কামাল উদ্দিন আহমেদের কবরে পাশে সমাহিত করা হয়।[18]

পুরস্কার
বছরপুরস্কারবিভাগকাজফলাফল
২০০৩৩২তম বাচসাস পুরস্কারসেরা টিভি অভিনেত্রীকথার কথাবিজয়ী[19]

তথ্যসূত্র
  1. "প্রিয়.কম"। প্রিয়.কম। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-২২।
  2. আহমেদ, শিবলী। "তাজিনের এক জীবন"। প্রিয়.কম। ২২ মে ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ মে ২০১৮।
  3. "বাবার কবরেই সমাহিত হবেন তাজিন"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-২৩।
  4. "এক অনুষ্ঠানে তাজিনের ১০ বছর"। jaijaidinbd.com। ২২ মে ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-২২।
  5. "ভালো লাগা মুহূর্তগুলো সবসময় স্মৃতি হয়ে যায়: তাজিন আহমেদ"। বাংলা ট্রিবিউন। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-২২।
  6. ""Utsho": Tele-film to generate awareness on HIV/AIDS"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ২০০৭-১১-৩০। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-২৩।
  7. "Single episode drama 'Nolbaji' on ATN Bangla"। দ্য ডেইলি স্টার। ২০০৭-০১-১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-২৩।
  8. "Drama serial "Poroshpor" on Rtv"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ২০০৮-০১-২৮। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-২৩।
  9. "TV play Bar Bar Phirey Ashey on Channel 1"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ২০০৯-০৩-২৭। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-২৩।
  10. "TV play Maa on ATN Bangla"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৩-১১-১৪। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-২৩।
  11. "Tazin returns to the screen"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৪-১১-০৩। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-২৩।
  12. "তাজিন আহমেদ আর নেই"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২২ মে ২০১৮।
  13. "দশ বছরে তাজিন"। দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন। ৩ জানুয়ারি ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মে ২০১৮।
  14. "রাজনীতিতে অভিনেত্রী তাজিন আহমেদ"। সমকাল। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-২২।
  15. "রাজনৈতিক দলে যোগ দিলেন তাজিন"। বাংলা ট্রিবিউন। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-২২।
  16. "অভিনেত্রী তাজিন আহমেদ আর নেই"। বাংলা ট্রিবিউন। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-২২।
  17. "চলে গেলেন অভিনেত্রী তাজিন আহমেদ"। দ্য ডেইলি স্টার। ২০১৮-০৫-২২। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-২৩।
  18. "বাবার কবরেই সমাহিত তাজিন"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মে ২০১৮।
  19. আফসার আহমেদ (২০০৪-০৬-২৮)। "32nd BACHSAS Awards: A glitzy night : Recognition of outstanding media talents"। দ্য ডেইলি স্টার। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৫-২৩।

বহিঃসংযোগ
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.