টাইটানিক (১৯৯৭-এর চলচ্চিত্র)
টাইটানিক (ইংরেজি: Titanic) হচ্ছে ১৯৯৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ডিজাস্টার রোমান্টিক চলচ্চিত্র। এই সিনেমার পরিচালক, লেখক ও সহ-প্রযোজক হলেন বিখ্যাত মার্কিন চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব জেমস ক্যামেরন। মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন লিওনার্ডো ডিক্যাপ্রিও (জ্যাক ডসন) ও কেট উইন্সলেট (রোজ ডিউইট বিউকেটার)। উচ্চবিত্ত সমাজের মেয়ে রোজের সাথে টাইটানিক জাহাজে নিম্নবিত্ত সমাজের প্রতিভূ জ্যাকের প্রেম হয়। ১৯১২ সালে টাইটানিকের পরিণতির পটভূমিতে তাদের এই ট্র্যাজেডিই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ছবিটিতে। প্রেমের গল্প আর প্রধান চরিত্রগুলো কাল্পনিক হলেও অনেকগুলো পার্শ্ব চরিত্র ঐতিহাসিক সত্যের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে। গ্লোরিয়া স্টুয়ার্ট বৃদ্ধা রোজের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। বৃদ্ধা রোজ তার টাইটানিক জীবনের কাহিনী বর্ণনা করেছে।
টাইটানিক | |
---|---|
![]() প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পোস্টার | |
পরিচালক | জেমস ক্যামেরন |
প্রযোজক | জন ল্যান্ডাউ জেমস ক্যামেরন |
রচয়িতা | জেমস ক্যামেরন |
শ্রেষ্ঠাংশে | লিওনার্ডো ডিক্যাপ্রিও কেট উইন্সলেট বিলি জেইন ক্যাথি বেটস ফ্রান্সিস ফিশার ভিক্টর গার্বার গ্লোরিয়া স্টুয়ার্ট বার্নার্ড হিল ড্যানি নিউক্কি বিল পাক্সটন |
সুরকার | জেমস হর্নর |
চিত্রগ্রাহক | রাসেল কার্পেন্টার |
সম্পাদক | কনরাড বাফ জেমস ক্যামেরন রিচার্ড হ্যারিস |
প্রযোজনা কোম্পানি | লাইটস্টর্ম এন্টারটেনমেন্ট |
পরিবেশক | মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র/কানাডা প্যারামাউন্ট পিকচার্স আন্তর্জাতিক টুয়েন্টিয়েথ সেঞ্চুরি ফক্স |
মুক্তি | ১৯৯৭ ডিসেম্বর ১৯ |
দৈর্ঘ্য | ১৯৪ মিনিট |
দেশ | ![]() |
ভাষা | ইংরেজি |
নির্মাণব্যয় | US$ ২০কোটি[1] |
আয় | US$২.১৮৭ বিলিয়ন [2] |
১৯৯৫ সালে টাইটানিকের চলচ্চিত্রায়ন শুরু হয়। সে সময় ক্যামেরন আটলান্টিকের তলায় টাইটানিকের আসল ভগ্নাবশেষের ছবি তোলা শুরু করেছিলেন। তিনি প্রেম কাহিনীর অবতারণা ঘটিয়েছিলেন মানুষের বাস্তব জীবনের ট্রাজেডির মাধ্যমে টাইটানিকের ট্রাজেডি ফুটিয়ে তোলার জন্য। ছবির আধুনিক সময়ের শ্যুটিং করা হয়েছে রাশিয়ার মির অভিযানের সহযোগী জাহাজ Akademik Mstislav Keldysh-এ, আর প্রাচীন টাইটানিকের শ্যুটিংয়ের জন্য পুরনো টাইটানিক নতুন করে তৈরি করা হয়েছে। বাহা ক্যালিফোর্নিয়ার Playas de Rosarito-তে টাইটানিক পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া টাইটানিকডুবির দৃশ্য ফুটিয়ে তোলার জন্য ক্যামেরন স্কেল মডেলিং ও কম্পিউটার এনিমেশনের সাহায্য নিয়েছেন। তৎকালীন সময়ে টাইটানিকই ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বাজেটের ছবি। এই চলচ্চিত্র তৈরীতে মোট ব্যয় হয়েছে প্রায় ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। প্যারামাউন্ট পিকচার্স ও টুয়েন্টিয়েথ সেঞ্চুরি ফক্স যৌথভাবে এই অর্থের যোগান দিয়েছে।
১৯৯৭ সালের ২রা জুলাই মুক্তি পাওয়ার কথা থাকলেও নির্মাণ প্রক্রিয়ায় বিলম্বের কারণে অবশেষে ১৯শে ডিসেম্বর টাইটানিক মুক্তি পায়। মুক্তির তারিখ পিছিয়ে যাওয়ার কথা শুনে অনেকেই ভেবে বসেছিলেন, এই ছবির মুক্তি পাওয়া আর হবে না এবং ফক্স ও প্যারামাউন্ট বিশাল লোকসানের সম্মুখীন হবে। আশা খুব বেশি না থাকলেও মুক্তির পর টাইটানিক সমালোচক ও দর্শক সবার কাছ থেকেই বিপুল প্রশংসা পায়। টাইটানিকের সবচেয়ে বড় দুটি অর্জন হচ্ছে: ১৪টির মধ্যে ১১টি ক্ষেত্রেই একাডেমি পুরস্কার জিতে নেয়া এবং সর্বকালের সবচেয়ে বেশী উপার্জন করা। স্ফীতির বিষয়টা বাদ দিলে টাইটানিকের চেয়ে বেশী আয় এ পর্যন্ত কোন সিনেমা করতে পারেনি। টাইটানিক মোট ২.১৮৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছে। অবশ্য মূল্যস্ফীতি বিবেচনা করলে উত্তর আমেরিকার সবচেয়ে বেশী উপার্জনকারী সিনেমার তালিকায় টাইটানিক ৬ নম্বরে থাকে। আর অস্কার ১১টির বেশি কোন সিনেমাই পায়নি। টাইটানিক ছাড়া একমাত্র বেন-হার ও লর্ড অফ দ্য রিংস: দ্য রিটার্ন অফ দ্য কিং-ই ১১টি ক্ষেত্রে অস্কার পেয়েছে।
কাহিনী
চরিত্রসমূহ
কাল্পনিক
- লিওনার্ডো ডিক্যাপ্রিও - জ্যাক ড'সন
- কেট উইন্সলেট - রোজ ডিউইট বিউকেটার
- বিলি জেইন - কেইলডন "ক্যাল" নেথান হকলি
- ফ্রান্সিস ফিশার - রুথ ডিউইট বিউকেটার
- গ্লোরিয়া স্টুয়ার্ট - ১০১ বছর বয়সের রোজ
ঐতিহাসিক
- ক্যাথি বেটস - মার্গারেট ব্রাউন
- ভিক্টর গার্বার - টমাস অ্যান্ড্রুস
- বার্নার্ড হিল - ক্যাপ্টেন এডওয়ার্ড জন স্মিথ
- ইওয়ান স্টুয়ার্ট - ফার্স্ট অফিসার উইলিয়াম মারডক
পুরস্কার ও সম্মাননা
- একাডেমি পুরস্কার ১৯৯৮
- সেরা ছবি - জন ল্যান্ডাউ ও জেমস ক্যামেরন
- সেরা পরিচালক - জেমস ক্যামেরন
- সেরা পোশাক সজ্জা
- সেরা ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট
- সেরা শব্দ সমন্বয়
- সেরা শব্দ সম্পাদনা
- সেরা মৌলিক সুর - জেমস হর্নার
- সেরা সম্পাদনা - কনরাড বাফ, জেমস ক্যামেরন ও রিচার্ড এ হ্যারিস
- সেরা মৌলিক সঙ্গীত
- সেরা শিল্প নির্দেশনা
- সেরা চিত্রগ্রহণ - রাসেল কার্পেন্টার
- গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ড
- সেরা চলচ্চিত্র - নাট্য
- সেরা পরিচালক
- সেরা মৌলিক সুর
- সেরা সঙ্গীত
অ্যামেরিকান ফিল্ম ইনস্টিটিউট বেশ কয়েকটি তালিকায় টাইটানিক শীর্ষস্থান পেয়েছে। যেমন:
- আমেরিকার সর্বকালের সেরা ১০০টি থ্রিলিং সিনেমার তালিকায় ২৫তম (২০০১)
- মার্কিন চলচ্চিত্রে সর্বকালের সেরা ১০০টি প্রেমকাহিনীর তালিকায় ৩৭তম (২০০২)
- মার্কিন চলচ্চিত্রে সর্বকালের সেরা ১০০টি গানের তালিকায় সেলিন ডিয়নের "মাই হার্ট উইল গো অন" ১৪ নম্বরে আছে (২০০৪)
- মার্কিন সিনেমায় সর্বকালের সেরা ১০০টি উক্তির তালিকায় জ্যাক ডসনের (ক্যাপ্রিও) "I'm king of the world!" উক্তিটি ১০০ নম্বরে আছে (২০০৫)
- ২০০৭ সালে সর্বকালের সেরা ১০০ মার্কিন সিনেমার নাম পুনরায় প্রকাশিত হলে টাইটানিক তাতে ৮৩তম স্থান দখল করে
- এএফআই এর টেন টপ টেন-এ টাইটানিক সর্বকালের সেরা ১০টি এপিক চলচ্চিত্রের তালিকায় ৬ নম্বরে আছে
তথ্যসূত্র
- "Box office statistics for Titanic (1997)". বক্স অফিস মোজো. Retrieved October 15, 2006.
- Movie Titanic - Box Office Data, News, Cast Information - The Numbers
বহিঃসংযোগ
![]() |
উইকিউক্তিতে নিচের বিষয় সম্পর্কে সংগৃহীত উক্তি আছে:: টাইটানিক |
- টাইটানিক-এর দাপ্তরিক ওয়েবসাইট
- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে টাইটানিক
(ইংরেজি) - রটেন টম্যাটোসে টাইটানিক (ইংরেজি)
- মেটাক্রিটিকে টাইটানিক (ইংরেজি)
- টাইটানিক - The Numbers