চীনা পুরাণ

চীনা পুরাণ চীনের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রাপ্ত পুরাণকথা। চীনা ভাষা ও অন্যান্য ভাষায় রচিত পুরাণকথাগুলো হানসহ আরও ৫৫-৬০টি গোষ্ঠী যুগ যুগ ধরে সংগ্রহ ও সংকলন করে আসছে।চীনা পুরাণে প্রাচীন চীনের কিংবদন্তী, সংস্কৃতি ও চীনের ইতিহাস সম্পর্কে বর্ণনা রয়েছে। অন্যান্য দেশের পুরাণের মত চীনা পুরাণকেও চীনের ইতিহাসের ধারক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যে কারনে চীনা পুরাণে উল্লেখিত গল্প, চরিত্র ও ঘটনাবলী ঐতিহাসিক ও পৌরাণিক দুই ক্ষেত্রেই সমান গুরুত্বপূর্ণ।[1]

চীনে অসংখ্য ছোট ছোট জনগোষ্ঠী রয়েছে, যাদের নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি রয়েছে। কিছু জনগোষ্ঠীর তাদের নিজস্ব গ্রন্থ রয়েছে, যাতে তাদের মূল্যবান ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক তথ্যের পাশাপাশি তাদের মৌলিক পৌরাণিক গল্প লিপিবদ্ধ আছে। কিছু পৌরাণিক গল্প আবার কয়েকটি জনগোষ্ঠীর মধ্যে একইভাবে বা একটু পরিবর্তিতভাবে প্রচলিত।

ইতিহাসবেত্তারা খ্রিষ্টপূর্ব দ্বাদশ শতাব্দী থেকে চীনের পৌরাণিক গল্পগুলো সংগ্রহ করে ওরাকল হাড় লিপিতে লিখে আসছে। ক্লাসিক অব মাউন্টেন অ্যান্ড সীজ বইতে হাজার বছর পূর্বের গল্প লিখা হয়েছে। এছাড়া এপিক অব ডার্কনেস বইতে আরও কিছু পৌরাণিক গল্প লিপিবদ্ধ হয়েছে। বুক অব রায়টস, রেকর্ড অব দ্য গ্রান্ড হিস্টোরিয়ান, বুক অব ডকুমেন্টলুসি চাঙ্কি বইগুলোতেও অনেক পৌরাণিক গল্প লিপিবদ্ধ হয়েছে।

প্রধান বিষয়সমূহ

পূর্বের উপাস্য

নুইউও ও ফুক্সি, অর্ধেক সাপ ও অর্ধেক মানুষ

যুগের বিবর্তনে চীনা পুরাণে প্রধান উপাস্যের পরিবর্তন হয়েছে। যেমন:

  • শাংডি (皇天大帝): শাং সাম্রাজ্য সময়কালে আবির্ভূত হয়েছিল. পরে তাকে Huángtiān Shàngdì (皇天上帝) নামে ডাকা হত. Huángtiān Dàdì বলতে জেড সম্রাটতাওকে বুঝানো হয়।
  • ইয়ু ডি: চীনে তাও ধর্ম প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর তিনি আবির্ভূত হন। নুইউও ও ফুক্সির পূর্বে তার আগমন ঘটে।
  • তাও: তাও ধর্ম মতে তাও মানে স্বর্গ, যা খ্রিষ্টপূর্ব ৭০০ অব্দে সুজিঙ রচিত বুক অব ডকুমেন্ট-এ লিপিবদ্ধ হয়। তাও সম্পর্কে সৃষ্টিধর্মী কোনো লেখা নেই এবং বর্তমানে তাও ও শাঙডি একই শ্রেণীভুক্ত হয়ে গেছে, এবং অনুসারীরা একই স্থানে উপাসনা করে, যেমন বেইজিং-এর টেম্পল অব হ্যাভেন।[2]
  • নুইউও: (নু ক্বা নামেও পরিচিত), খ্রিষ্টপূর্ব ৩৫০ অব্দে বিভিন্ন সাহিত্যে আবির্ভূত হন। তার সঙ্গী, ফুক্সি, (ফু সি নামেও পরিচিত) ছিলেন তার ভাই ও স্বামী. মানুষের প্রথম পূর্বপুরুষ হিসেবে তাদের উপাসনা করা হত। তাদের ঊর্ধ্বাঙ্গ ছিল মানুষের মত আর নিম্নাঙ্গ ছিল সাপের মত। তিনি গং গং কর্তৃক ধ্বংসকৃত স্বর্গের স্তম্ভগুলো পুনর্নির্মাণ করেন। নুইউও মানুষকে তার সঙ্গী হিসেবে মাটি দিয়ে তৈরি করেছেন, এমন বিশ্বাস প্রচলিত ছিল।[3]
  • ফানকু: খ্রিষ্টপূর্ব ২০০ অব্দে তাওবাদী লেখক জু ঝিং তার সম্পর্কে লিখেন, তিনি ছিলেন স্বর্গ ও পৃথিবীর সৃষ্টিকারী।[4]

সাহিত্যিক উপাদান

কিছু পৌরাণিক কাহিনী নাটক ও উপন্যাস আকারে এখন বর্তমান। শেনমো দেবতা ও দানবদের নিয়ে রচিত একটি ফিকশন। অন্যান্য পৌরাণিক কাহিনীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল

  • প্রাচীন রাজ্য চু নিয়ে রচিত মহাকাব্য "লি সাও", "হিউ গে", ও "হেভেনলি কোয়েশন্স"
  • ফেংশেন বাং: ঝাও সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা নিয়ে রচিত পৌরাণিক কাহিনী
  • য়ু চেং'এন (Journey to the West): ১৫৯০ সালে প্রকাশিত; হিউয়েন সাঙ-এর ভারতবর্ষে আগমন ও বৌদ্ধ ধর্ম সম্পর্কিত, যাতে প্রেতাত্মা, দানব, শয়তান ও আগ্নেয়গিরির বর্ণনা রয়েছে।
  • বাইশে ঝুয়ান: হাঙঝু রচিত রোমান্টিক গল্প, যেখানে একটি সর্পিণী মানুষের রূপ ধারন করে একজন পুরুষের প্রেমে পড়ে।
  • ইন সার্চ অব সুপারন্যাচারাল: চতুর্থ শতাব্দীতে আত্মা, প্রেতাত্মা ও অতিমানবীয় ঘটনাবলী নিয়ে সংগৃহীত ও সংকলিত কাহিনী
  • স্ট্রেঞ্জ টেল অব চাইনিজ স্টুডিও: পু সঙলিং রচিত শেয়ালসদৃশ জিউইউ হুর কাহিনী
  • ঝিগুয়াই (誌怪): অদ্ভুত ও অতিমানবীয় ঘটনা নিয়ে রচিত কাহিনী
  • জি বু ইউ: কিং সাম্রাজ্যের সময়কালে সংকলিত অতিমানবীয় ঘটনা নিয়ে রচিত কাহিনী

পৌরাণিক ইতিহাসের সমীক্ষণ

ত্রিলোক ও পাঁচ সম্রাট

ত্রিলোক ও পাঁচ সম্রাট নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে। অনুমান করা হয়, তারা সিয়া সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার পূর্বে আনুমানিক খ্রিষ্টপূর্ব ২৮৫০ অব্দ থেকে খ্রিষ্টপূর্ব ২২০৫ অব্দ পর্যন্তন শাসন করে। অধিকাংশ গ্রন্থ থেকে প্রাপ্ত তালিকায় উল্লেখ্য ত্রৈলোক্য ও পাঁচ সম্রাট শাসকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল

  • ত্রিলোক
    • ফুসি: স্বর্গলোকের দেবতা
    • নুইউও: মর্ত্যলোকের দেবতা
    • শেনং: মনুষ্যলোকের দেবতা, প্রাচীন কৃষি ও চিকিৎসাবিদ
  • পাঁচ সম্রাট (ডি)
    • হুয়াংডি: চীনের প্রথম সার্বভৌম রাজা হিসেবে পরিচিত
    • ঝুয়াংক্সু: হুয়াংডির নাতী
    • সম্রাট কিউ: ঝুয়াংক্সুর ভাইয়ের ছেলে
    • সম্রাট ইয়াও: কিউয়ের ছেলে, ইয়াওয়ের বড় ভাই তার বাবাকে সরিয়ে সিংহাসন দখল করে, পরে তিনি তাকে সরিয়ে সিংহাসনে আরোহণ করেন
    • সম্রাট সুন: ইয়াওয়ের উত্তরসূরী[5]

মহাপ্লাবন

সম্রাট ইয়াওয়ের সময়ে হুয়াংহো নদীতে মহাপ্লাবনের সৃষ্টি হয়। গুনকে প্লাবন নিয়ন্ত্রনের দায়িত্ব দেওয়া হলের তিনি নয় বছরেও এই সমস্যা সমাধান করতে পারেন নি। সম্রাট সুন তাকে নির্বাসিত করেন। তার জায়গায় স্থলাভিষিক্ত হয় তার ছেলে ইয়ু দ্য গ্রেট। তিনি জনবল দিয়ে খাল ও পরিখা খনন করেন। তের বছর পর বন্যাজনিত সমস্যা দূর হয়। সম্রাট সুন তাকে তৎকালীন সিয়া সাম্রাজ্য বা বর্তমান হেনান-এর শাসক হিসেবে নিয়োগ দেন। ইয়ু জলদেবতা গং গংয়ের মন্ত্রী জিয়ানলিওকে হত্যা করেন।[6]

সিয়া সাম্রাজ্য

ইয়ুর মৃত্যুর পর সিংহাসনে আরোহণ করে তার ছেলে কি। কিয়ের শাসনভার গ্রহণ নিয়ে দ্বিমত রয়েছে। অনেকেই মনে করেন, ইয়ু শাসনভার দিয়ে গিয়েছিলেন গাওতাওকে। কিন্তু গাওতাও তার পূর্বে মারা যান। তাই ইয়ু গাওতাওয়ের ছেলে বো য়িকে শাসনভার দিয়ে যান। আরেক দল মনে করেন, বেশিরভাগ রাজ্যসভার সদস্য বো য়ি থেকে কির প্রসংশা করেন। আরেক দল মনে করেন, বো য়ি স্বেচ্ছায় কিকে শাসনভার গ্রহণ করার অনুরোধ করেন। অন্য আরেক দল মনে করেন, কি বো য়িকে হত্যা করে সিংহাসন দখল করেন।

কিয়ের সফলতা চীনে পুরনো রীতিনীতি ভেঙ্গে নতুন করে এক সাম্রাজ্য গড়ে তুলে। এই সাম্রাজ্য সিয়া সাম্রাজ্য নামে পরিচিতি লাভ করে। সিয়া সাম্রাজ্য ছিল কিছুটা পৌরাণিক। রেকর্ড অব গ্রান্ড হিস্টোরিয়ান্সব্যাম্বু অ্যানালস বইয়ে সিয়া সাম্রাজ্যের ১৭জন সম্রাটের নাম উল্লেখ আছে। কিন্তু এই সময়কালের তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়া যায় নি। তবে শাং সাম্রাজ্য শুরুর কিছু পূর্বের নগর সভ্যতার কিছু প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়া গেছে।[7]

শাং সাম্রাজ্য

সিয়া সাম্রাজ্যের শেষ সম্রাট সিয়াজিয়ে ছিলেন স্বেচ্ছাচারী শাসক। শাং জাতির নেতা তাং তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তুলে এবং তাকে পরাজিত করে শাং সাম্রাজ্য গড়ে তুলে। কিংবদন্তী আছে যে, সম্রাট জাইয়ের সময়ে জলবায়ু পরিবর্তিত হচ্ছিল। সূর্য ও চাঁদ তাদের কক্ষপথ পরিবর্তন করে। ফলে ঋতুতেও পরিবর্তন আসে। খালবিল শুকিয়ে যায়। পিশাচ ও বক ১০ রাত ধরে চিৎকার করেছিল। সেই সময় স্বর্গ থেকে তাংয়ের কাছে আদেশ আসে সিয়া সাম্রাজ্যের শাসনভার নেওয়ার জন্য। স্বর্গীয় সাহায্যে তাং সিয়া সাম্রাজ্য ধ্বংস করে এবং সহজে বিজয় লাভ করে।[8]

সৃষ্টি ও দেব-দেবী

Dragon-gods, from Myths and Legends of China, 1922 by E. T. C. Werner

চীনা পুরাণে বর্ণিত আছে যে জেড সম্রাট স্বর্গ, নরক ও পৃথিবী এই তিন ভূখণ্ড পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত। জেড শাসকরা জেড প্রিন্সিপাল গোল্ডেন স্ক্রিপ্ট (玉律金篇, Yù lǜ jīn piān) পুণ্যবানদের পুরস্কৃত করে থাকেন। সাধুরা প্রথমে রায় দেয় এবং সেই রায়ের ভিত্তিতে পরে উপদেষ্টামন্ডলী পূর্ণাঙ্গ রায় দেন।

ড্রাগন

চীনের ড্রাগন চীনা পুরাণের একটি গুরুত্বপূর্ণ সৃষ্টি। ড্রাগনকে সবচেয়ে শক্তিশালী ও স্বর্গীয় প্রাণী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশ্বাস করা হত যে, তাদের শ্বাস-প্রশ্বাস থেকে মেঘ উৎপন্ন হয়। ড্রাগন শক্তির প্রতীক ও দেবতাদের কাজে সহায়তা করত। ইয়াংলঙ চীনা পুরাণের সবচেয়ে বিখ্যাত ড্রাগন। ইয়াংলঙকে বৃষ্টির দেবতা হিসেবে গণ্য করা হত। মানুষ বিভিন্ন স্থান থেকে তার কাছে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করত। ঝংঘুয়া মিনজু জাতি তাদের জাতিসত্ত্বার পরিচয় দিতে 'ড্রাগনের বংশদর' শব্দগুচ্ছ ব্যবহার করত।

ধর্ম ও পুরাণ

চীনা পুরাণ কনফুসীয় ধর্ম, তাও ধর্ম ও বৌদ্ধ ধর্মের সাথে সম্পর্কিত। হান সাম্রাজ্য পূর্ববর্তী পৌরাণিক কাহিনী, যেমন সাংহাই জিং থেকে কিছু উপাদান তাও ধর্মে এবং চীনা সংস্কৃতি ও বৌদ্ধ ধর্মে গৃহীত হয়েছে। এছাড়া ধর্মীয় উপাদানসমূহ চীনা পুরাণের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে গেছে। যেমন, তাও ধর্মে স্বর্গ সম্পর্কিত বিশ্বাস রয়েছে, যা পুরাণে দেব-দেবীদের বসবাসের জায়গা হিসেবে উল্লেখিত।

গুরুত্বপূর্ণ দেব-দেবী

ওয়েন চাঙ, চীনা পুরাণে সাহিত্যের দেবতা, আনুমানিক ১৫৫০-১৬৬৪ খ্রিষ্টাব্দ, মিঙ সাম্রাজ্য.
Spirit of the well, from Myths and Legends of China, 1922 by E. T. C. Werner
Zoomorphic guardian spirits of Day and Night, হান সাম্রাজ্য (২২০ খ্রিষ্টপূর্ব - ২২০ খ্রিষ্টাব্দ)
  • বৌদ্ধ ধর্মীয় দেবতারা
    • ক্ষিতিগর্ভ: দশ নরকের দেবতা
    • চার স্বর্গীয় রাজা: বৌদ্ধদের চারজন অবিভাবক দেবতা
    • গৌতম বুদ্ধ (釋迦牟尼, Shìjiā móu ní)
    • গুয়ানইন (কুয়ানইন নামেও পরিচিত)
    • হোতেই
  • বাওশেং দাদি: চিকিৎসার দেবতা
  • চাংজিই: চার চক্ষুবিশিষ্ট ছিল
  • চেং'ই: চন্দ্রের দেবী[9]
  • চি ইউ: হুয়াংডির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল
  • সিতি গড
  • ইয়ু দ্য গ্রেট: সিয়া সাম্রাজ্যের স্থপতি এবং জনগণকে মহাপ্লাবন থেকে রক্ষার জন্য সুপরিচিত[10]
  • ডাওজি: লোক নায়ক, তার খামখেয়ালীপনা আচার-আচরণের জন্য পরিচিত
  • ড্রাগন রাজা
  • আট অমর দেবতা
    • চাও গুওজিও
    • হান জিয়াংজি
    • হান ঝংলি
    • হে জিয়াংগু
    • লান চেইহে
    • লু ডংবিন
    • তাই গুয়াইলি
    • ঝাং গুওলাও
  • এরলাং শেন: কপালে তৃতীয় চক্ষুবিশিষ্ট, সত্যদর্শী
  • চার সম্রাট (四御, Sì yù): তাও ধর্মের চার স্বর্গীয় দেবতা
    • ইয়ু ডি (জেড সম্রাট)
    • বেইজি দাদি
    • তাওহুয়াং দাদি
    • এম্প্রেস অব আর্থ
  • ফাংফেং: নয় মাথা বিশিষ্ট বিরাটাকার সরীসৃপ, মহাপ্লাবনের পরে ইয়ু দ্য গ্রেট তাকে হত্যা করে
  • ফেং মেং: হাও য়ি'র শিষ্য, ঘটনাক্রমে তার খুনীও
  • গাও ইয়াও
  • গং গং: সরীসৃপ বা সাপ আকৃতির জলদেবতা বা জলদানব
  • গুয়ান ইউ: ভাতৃত্ব ও যুদ্ধের দেবতা
  • নুবা (হানবা নামেও পরিচিত) (旱魃)
  • হাও য়ি: চন্দ্রের দেবী
  • হু শি
  • খুয়াফু: একটি দানব যে সূর্যকে ধাওয়া করেছিল[11]
  • কুই জিং: সাহিত্যের দেবতা
  • লেই গঙ: বজ্রের দেবতা
  • লাঙ মো: পাঁচটি ড্রাগনের বাচ্চাকে লালনপালন করা জন্য যাকে দেবী বলে মান্য করা হত
  • মাজু: সমুদ্রের দেবী, প্রকৃত নাম ছিল লিন মাও নিয়াং
  • মেং পো: আত্মাদের কয়েদকরার দায়িত্বে নিয়োজিত
  • নেজহা: তাওদের রক্ষক
  • নুইউও: মানুষ সৃষ্টিকারী
  • ফানকু: স্বর্গ ও পৃথিবীকে সৃষ্টিকারী ও পৃথককারী দেবতা
  • সুন ইউকঙ: বানর রাজ হিসেবেও পরিচিত
  • তাম কুং: আবহাওয়ার পূর্বাবাসদানকারী সমুদ্রদেবতা
  • কি জি
  • তিন হুয়াং ও পাঁচ দি সম্রাট
  • তিন সাধু: তাও ধর্মের তিনি সাধু পুরুষ
    • দাউদে তাওজুন
    • লিঙবাও তাওজুন
    • ইউয়ানশি তাওজুন
  • তু দি গঙ: ধনসম্পদ ও জ্ঞানের দেবতা
  • তু এর শেন: সমকামী পুরুষদের প্রেম ও যৌনতার দেবতা
  • ওয়ানচাঙ ওয়াং: সংস্কৃতি ও সাহিত্যের দেবতা
  • অং তাই শিন: সুস্থতার দেবতা
  • ইয়ো গাঙ
  • জি ওয়াঙমু: পশ্চিমের রানী
  • জিয়াং নদীর দেবী (Xiangfei)
    • ই হুয়াং (娥皇)
    • নু ইয়ং (女英)
  • সিহে: সূর্যের দেবী
  • সিনতাও: মাথাহীন দানব, হুয়াং সম্রাট তাকে যুদ্ধে আহ্বান করায় তার শিরচ্ছেদ করে
  • ইয়ানলুওয়াঙ: মৃত্যুর দেবতা
  • ইউকিয়াং: হুয়াং সম্রাটের বংশধর, উত্তর সাগর ও বাতাসের দেবতা
  • জাও জুন: রন্ধনের দেবতা
  • ঝাও গঙমিঙ (চাই শেন নামেও পরিচিত): সৌভাগ্যের দেবতা
  • ঝঙ কুই: প্রেতাত্মা
  • ঝু রঙ: আগুনের দেবতা

সৃষ্টিতত্ত্ব

দিক

  • চীনা পুরাণে চারটি চিহ্ন বা প্রতীক চারটি দিককে নির্দেশ করে থাকে।
    • কিং লঙ: পূর্ব
    • কালো কচ্ছপ: উত্তর
    • বাই হু: পশ্চিম
    • ঝু ক্যু: দক্ষিণ

পৌরাণিক স্থান

  • বুজহাও পর্বত: একটি পৌরাণিক পর্বত
  • দি ইউ: নরক
  • ফিদার মাউন্টেন: মহাপ্লাবনের পর নির্বাসনের স্থান
  • ফুসাঙ: জাপানে অবস্থিত একটি পৌরাণিক দ্বীপ
  • জেড পর্বত: একটি পৌরাণিক পর্বত
  • কুনলুন পর্বত: একটি পৌরাণিক পর্বত, যেখানে বিভিন্ন স্বর্গীয় বৃক্ষ ও প্রানী রয়েছে
  • লংম্যান, ঝেজিয়াং: ড্রাগন গেইট, যেখানে একজন অপরাধী ড্রাগন হয়ে যেতে পারত
  • ফেনলাই পর্বত: চীন সাগরে অবস্থিত পৌরাণিক স্বর্গ
  • ক্যুকিও (鵲橋; Quèqiáo): ছায়াপথে পাখির তৈরি সেতু
  • তিয়ানতাং: স্বর্গ
  • জুয়ানপু (玄圃; Xuánpǔ): কুনলুন পর্বতে অবস্থিত একটি পৌরাণিক স্থান
  • ইয়েনছিয়াও (瑤池; Yáochí)
  • ফেঙ্গডু: নরকের রাজা তিয়ানজির আবাসস্থল[12]

অন্যান্য বিষয়

  • আকাশের দড়ি
  • পৃথিবীর স্তম্ভ
  • মই

পৌরাণিক সৃষ্টি

অবাস্তব

  • ঝু
  • চার শয়তান (四凶, Sì xiōng)
    • হুন্দুন: বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী
    • তাওতি: ভোজনবিলাসী
    • তাওয়ো (梼杌): অজ্ঞতা
    • কিউঙকি (窮奇): সৎ পথ থেকে বিচ্যুতকারী
  • ঝাইউ (詐窳): নরখাদক

ড্রাগন

চেন রং-এর আঁকা "নয় ড্রাগন", ১২৪৪ খ্রিষ্টাব্দ, চীনা সং সাম্রাজ্য, বোস্টন ফাইন আর্টস মিউজিয়াম, যুক্তরাষ্ট্র
  • ড্রাগন রাজা: ড্রাগনদের রাজা
  • চাই: শিংহীন ড্রাগন ও পর্বতের দানব
  • ডিলং: পৃথিবীর ড্রাগন
  • ফুকাংলং: ধনসম্পদের ড্রাগন
  • জিয়াওলং: সমুদ্রের ড্রাগন
  • শেনলং: বৃষ্টির ড্রাগন
  • তাওলং: স্বর্গীয় ড্রাগন
  • হোয়াইট সারপেন্ট: কিংবদন্তি সাদা সাপ সদৃশ ড্রাগন
  • ইয়ংলং: হুয়াং সম্রাটের ভৃত্য
  • ঝুলং: উজ্জ্বল লাল স্বর্গীয় ড্রাগন

পাখিসদৃশ

  • সানজুয়ু (三足烏; sānzúwū): তিন পা বিশিষ্ট কাক, হুয়ি গুলি করে মেরে ফেলে
  • কিঙ নিয়াও (青鳥; qīngniâo): পৌরাণিক পাখি ও জি ওয়াঙমোর বার্তাবাহক
  • ফেঙহুয়াং (鳳凰; fènghuáng): চীনা পৌরাণিক পাখি, ("ফিনিক্স" নামেও পরিচিত)
  • বাই ফাঙ
  • ক্রেন: অমরত্বের সাথে সম্পর্কিত
  • জিয়ান (鶼; jian1): এক চোখ ও এক পাখাওয়ালা পৌরাণিক পাখি
  • জিগুয়াং (吉光; jíguāng)
  • জিংয়েই: পৌরাণিক পাখি, যে গাছে শাখা-প্রশাখা ও নুড়ি পাথর দিয়ে সমুদ্র ভরাট করতে চেয়েছিল
  • জিউফেং: নয় মাথাবিশিষ্ট পাখি, ছোট ছেলেমেয়েদের ভয় দেখাত
  • পেং: বিশাল পৌরাণিক পাখি
  • শানইয়াং: পৌরাণিক পাখি
  • সু সুয়াং (鷫鷞; su4shuang3): বকের মত দেখতে পৌরাণিক পাখি
  • ঝু ক্যু: দক্ষিণ দিকের প্রতীক
  • ঝেন: এক ধরনের বিষাক্ত পাখি

মৎস্যসদৃশ

মানবসদৃশ

  • ক্যু: এক পা-বিশিষ্ট পর্বতের দানব, গান ও নৃত্যকলায় পারদর্শী
  • জিয়াংশি: পুনর্জীবিত লাশ
  • অক্স-হেড ও হর্স-ফেস: জন্তুসদৃশ শয়তান
  • সিয়াও (魈; xiao1): পর্বতের শয়তান
  • ইয়াওগুয়াই: শয়তান

স্তন্যপায়ীসদৃশ

  • জিওয়েই হু (九尾狐): নয় লেজওয়ালা শেয়াল
  • নিও: সমুদ্র ও পর্বতের নীচে বসবাস করে, ছোট বাচ্চাদের ভয় দেখায়
  • লংমা: পাখাওয়ালা ঘোড়া
  • লুডুয়া: সত্য ধরে ফেলতে পারে
  • শিজি: মিথ্যার সাথে সত্যের তুলনা করতে পারে, মিথ্যাবাদীদের গুতা দেওয়ার জন্য শিং রয়েছে
  • কিলিন: কল্পিত অগ্নিবর্ষী দৈত্য, যার বিভিন্ন রূপ রয়েছে
  • পিক্সিউ: পাখাওয়ালা সিংহ
  • রুই শি (瑞獅, Ruì Shī): সিংহ
  • হুলি জিং: শয়তান শেয়াল
  • সিনিউ (犀牛): গন্ডার, চীনে গন্ডার বিলুপ্ত হতে থাকলে তা পৌরাণিক হয়ে ওঠে।
  • বাই জে: হুয়াং সম্রাটের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হলে তার পক্ষে সব শয়তানদের দেওয়া হয়

বানরসদৃশ

  • চীনা বানর: রক্ষী
  • সিগু: উড়ুক্কু বানর
  • সিয়াও: লম্বা হাতওয়ালা বানর

সরীসৃপসদৃশ

  • আও: বিশালাকৃতির জলজ কচ্ছপ
  • বাশে: বিশালাকৃতির সাপ, যা হাতি গিলে ফেলতে পারে
  • জিয়ানলিও: নয় মাথাওয়ালা অতিকায় সাপ

পৌরাণিক বৃক্ষ

  • ফুসাঙ: গাছ
  • লিংঝি মাশরুম: অমরত্বদানকারী ছত্রাক
  • পিচেস অব ইম্মরটালিটি
  • ইয়াও ঘাস: জাদুকরী গুণসম্পন্ন ঘাস

তথ্যসূত্র

  1. Lihui, Yang,; ও অন্যান্য (২০০৫)। Handbook of Chinese Mythology। নিউইয়র্ক: অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। আইএসবিএন 978-0-19-533263-6।
  2. ওয়ার্নার, ই.টি.সি. (১৯২২)। Myths and Legends of China। নিউইয়র্ক: জর্জ জি. হারাপ অ্যান্ড কোং লিমিটেড। পৃষ্ঠা ৭৭।
  3. "নুইউওর মানুষ তৈরীর কাহিনী"bengali.cri.cn। সংগ্রহের তারিখ ১ নভেম্বর ২০১৬
  4. "ফানকুর আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টির কাহিনী"bengali.cri.cn। সংগ্রহের তারিখ ১ নভেম্বর ২০১৬
  5. "ইয়াও ও সুনের যোগ্য উত্তাধিকারী নির্বাচণের কাহিনী"bengali.cri.cn। সংগ্রহের তারিখ ১ নভেম্বর ২০১৬
  6. "Yu and Gun"bengali.cri.cn। সংগ্রহের তারিখ ১ নভেম্বর ২০১৬
  7. "সিয়া রাজবংশ-- ইতিহাসে চীনের প্রথম রাজবংশ"ক্রি অনলাইন। সংগ্রহের তারিখ ২ নভেম্বর ২০১৬
  8. Mozi। "非攻下 – Condemnation of Offensive War III"
  9. "চাঁদের অন্ধকার অংশে অবতরণের পরিকল্পনা"নিউজনেক্সটবিডি ডটকম। ঢাকা, বাংলাদেশ। ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১ নভেম্বর ২০১৬
  10. লুইস, মার্ক এডওয়ার্ড (২০১২), The Flood Myths of Early China, স্টেট ইউনিভারসিটি অব নিউইয়র্ক প্রেস, আইএসবিএন 978-0-7914-8222-3.
  11. "খুয়াফুর সুর্য ধাওয়ার কাহিনী"bengali.cri.cn। সংগ্রহের তারিখ ১ নভেম্বর ২০১৬
  12. "পৃথিবীর যে স্থানগুলোতে রয়েছে নরকের দরজা!"দৈনিক ভোরের কাগজ। ঢাকা, বাংলাদেশ। ২৮ নভেম্বর ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১ নভেম্বর ২০১৬

গ্রন্থপঞ্জি

  • পেপার, জর্ডান ডি. (১৯৯৫)। The Spirits are Drunk: Comparative Approaches to Chinese Religion। আলব্যানি, নিউইয়র্ক: স্টেট ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্ক প্রেস। আইএসবিএন 0-7914-2315-8।

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.