খান টিপু সুলতান

খান টিপু সুলতান (১৩ ডিসেম্বর ১৯৫০ - ১৯ আগস্ট ২০১৭) ছিলেন একজন বাংলাদেশী আইনজীবী এবং রাজনীতিবিদ এবং বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা। তিনি বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচন ১৯৯৬, এবং ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে খুলনা বিভাগের যশোর জেলার মনিরামপুর উপজেলা (যশোর -৫) আসন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[1][2]

খান টিপু সুলতান
সাবেক জাতীয় সংসদ,১৯৯৬ এবং ২০০৮ সংসদ সদস্য
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্মখান টিপু সুলতান
(১৯৫০-১২-১৩)১৩ ডিসেম্বর ১৯৫০
খুলনা,ডুমুরিয়া উপজেলা, বাংলাদেশ
মৃত্যু১৯ আগস্ট ২০১৭
কেন্দ্রীয় হাসপাতাল, ঢাকা
নাগরিকত্ববাংলাদেশ
জাতীয়তাবাংলাদেশ
রাজনৈতিক দলবাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
দাম্পত্য সঙ্গীজেসমিন আরা বেগম
সন্তান
  • হুমায়ুম সুলতান (সাদাব)
  • জুবায়ের সুলতান (পেলব)
পিতামাতাআব্দুল হামিদ খান (বাবা)
পেশারাজনীতি

প্রাথমিক জীবন

খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার ধামালিয়ার মামার বাড়ীতে তার জন্ম।তার পিতার নাম আববদুল হামিদ খান এবং মাতা আঞ্জীবন আরা বেগম। তার দাদা ছিলেন বৃটিশ সরকারের যশোর জেলার একজন ম্যাজিস্ট্রেট। খাঁন টিপু সুলতানরা ৩ ভাই ও ৪ বোন।

ব্যক্তিগত জীবন

১৭ অক্টোবর ১৯৮২ সাল খুলনার মেয়ে জেসমিন আরাকে বিয়ে করেন টিপু সুলতান ।তিনি দুই পুত্র সন্তানেরনের পিতা । বড় ছেলে হুমায়ুম সুলতান আর ছোট ছেলে জুবায়ের সুলতান (পেলব)।[1]

শিক্ষাজীবন

শিক্ষাজীবন শুরু হয় ১৯৫৬ সালে; ডুমুরিয়া রঘুনাথপুর গ্রামস্থ স্কুলে। দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ার সময় তার বাবা মারা যান। তখন তিনি পড়ালেখার জন্য মামা বাড়িতে চলে আসেন। তিনি ১৯৬৪ সালে যশোর সম্মিলনী স্কুলে ভর্তি হন ৮ম শ্রেণীতে। ১৯৬৭ সালে এই স্কুল হতেই এস. এস. সি পাশ করেন। এবং পরে ভর্তি হোন যশোর সরকারী এম. এম. কলেজে। আইয়ুব-মোনায়েম শাসনকালে সক্রিয়ভাবে ছাত্র রাজনীতি শুরু করেন । এই কারণে কর্তৃপক্ষ তাকে ১৯৬৮ সালে বহিষ্কার করে এবং তিনি ট্রান্সফার সার্টিফিকেট নিয়ে চলে যান নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজে । ১৯৬৯ সালে তিনি সেখান থেকে এইচ. এস. সি. পাস করেন। পরে আবার যশোর সরকারী এম. এম. কলেজে ফিরে যান এবং বি.কম-এ ভর্তি হোন।

১৯৭২ সালে তিনি যশোরে শহীদ মশিয়ুর রহমানের নামে একটি ল কলেজ প্রতিষ্ঠিতকরতে সাহায্য করেন । পরে নিজের প্রতিষ্ঠা করা ল কলেজে পড়াশুনা শুর করেন। ল কলেজের ছাত্র হিসেবে টিপু সুলতান প্রথমবর্ষ সম্পন্ন করেন। এরপর রাজনীতিতে ওতপ্রেতভাবে জড়িয়ে পড়েন।

কর্মজীবন

১৯৭২ সালে যশোর থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক বিল্পব নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করেন। ১৯৭৫ সালে জাতীয় সরকার প্রতিষ্ঠাকালে সাপ্তাহিক বিপস্নব বন্ধ হয়ে যায়। সাংবাদিকতা পেশা ত্যাগ করে তিনি আইন পেশায় নিয়োজিত হন। ১৯৭৮ সালে বার কাউন্সিল পরীক্ষায় অংশ নিয়ে অ্যাডভোকেটশীপ অর্জন করেন এবং আইন পেশায় যোগ দেন। বার কাউন্সিল হতে হাইকোর্ট ডিভিশনে প্রাকটিস করার জন্য তিনি ১৯৮৫ সালে সনদ পান।

১৯৮৯ সালে টিপু সুলতান যশোর জেলা বার এ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি যশোর বারের সম্পাদক থাকা অবস্থায় ঐ বছরেই অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দিতা করেন। ঐ নির্বাচনে টিপু সুলতানের প্রতিদ্বন্দী হিসেবে যিনি বিজয়ী হয়েছিলেন ১৯৯০ সালে তার আকষ্মিক মৃত্যুর কারণে খান টিপু সুলতানকে বার কাউন্সিলের নির্বাচিত সদস্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়। পরে তিনি ১৯৯১ সাল থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত দক্ষতার সাথে বার কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৫ সালে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নির্বাচনেও প্রতিদ্বন্দিতা করেন ও বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেন। বার কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে তিনি অর্থ বিষয়ক কমিটি এবং একই সঙ্গে বার কাউন্সিল ট্রাইব্যুনালের সদস্য হিসেবে কাজ করে সফলতা অর্জন করেন।

মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ

১৯৬৯ সালের ছাত্র-গণআন্দোলনে নেতৃত্ব দেন টিপু সুলতান। এই আন্দোলনের শুরতেই যশোরের সরকারী এম. এম. কলেজ থেকে তার নেতৃত্বে প্রথম মিছিল বের হয়। এসময় তিনি যশোরের ছাত্র সমাজের কাছে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন। শুধু ছাত্র সমাজে নয় পুরো যশোরে অনেক জনপ্রিয়তা লাভ করেন। ১৯৬৯ সালের গণআন্দোলনের পর পর যশোর জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় এবং ওই সম্মেলনে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন খান টিপু সুলতান। এ সময়ে আইয়ুব খানের পতন এবং ইয়াহিয়া খানের ক্ষমতা গ্রহণের পর জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণা আসে। এর কিছুদিন পর যশোরে মুসলিম লীগের নেতা নূরুল আমিনের আগমন নিয়ে গণপ্রতিরোধ সৃষ্টি করেছিলেন। এ ঘটনায় খান টিপু সুলতানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে সামরিক আদালতে মামলা হয়। বিচারে তাদের ৬ মাসের কারাদন্ড হয়। তিনি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে গ্রেফতার এড়িয়ে ’৭০-এর নির্বাচনী প্রচারণার জন্য চট্টগ্রামখুলনার বিভিন্ন অঞ্চলে অবস্থান করেন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ব্যাপক বিজয়ের পর বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ঢাকায় পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের বৈঠক হয়। বৈঠকে খান টিপু সুলতানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার করতে বঙ্গবন্ধু অনুরোধ করেন ইয়াহিয়া খানকে। এর প্রেক্ষিতে মামলা প্রত্যাহার হয়।

১৯৭১ সালের প্রথম দিকে যশোর ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি হিসেবে ছাত্র সমাজকে সংগঠিত করে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে তারা সশস্ত্র লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতি নেন। এসময় এক বিশেষ মুহুর্তে তাদের মিছিলে পাকিস্তান সেনাবাহিনী গুলি চালায়। ৩ মার্চের সেই মিছিলে যশোরে প্রথম শহীদ হন চারুবালা। চারুবালা যখন গুলিবিদ্ধ হন টিপু সুলতান ছিলেন তার পাশেই। চারুবালার মরদেহ নিয়ে রাজপথে সেদিন মিছিল করেছিল ছাত্র সমাজ। ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ নিয়াজ পার্ক হিসেবে পরিচিত কালেক্টরেট ময়দানে মঞ্চ তৈরি করে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা পতাকা উত্তোলন করেন টিপু সুলতান ও তার রাজনৈতিক সহযোদ্ধারা। এ সময় তিনি সশস্ত্র স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর অভিবাদন গ্রহণ করেন। সে দূর্লভ মুহূর্তের ছবি এখনও যশোর ইনস্টিটিউট পাবলিক লাইব্রেরি ও যশোর সেনানিবাসের জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাক সেনাবাহিনী যখন সশস্ত্র হামলা চালায় তখন খান টিপু সুলতান ছিলেন এম. এম কলেজের বর্তমান পুরাতন হোস্টেলে। সে সময় ছাত্র-জনতাকে নিয়ে তারা ক্যান্টনমেন্ট সংলগ্ন আরবপুর মোড়ে ব্যারিকেড দিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। পাক সেনাদের গতিরোধ করার জন্য যে বোমা হামলা চালানো হয় তার নেতৃত্ব ছিলেন খান টিপু সুলতান। প্রথম দফা ব্যর্থ হয়ে রাত্র ১টার দিকে পাক সেনাবাহিনী আবার শহরে প্রবেশ করে। তারা এম. এম. কলেজের হোস্টেলে ব্যাপক তল্লাসী চালায়। খান টিপু সুলতানকে খোঁজাখুজি করে না পেয়ে বই ও আসবাবপত্র নিয়ে যায়। খান টিপু সুলতান ঐ রাতে হোস্টেলে অবস্থান না করায় প্রাণে বেঁচে যান। পরদিন ২৬ মার্চ সকাল থেকে পাক সেনাবাহিনী খান টিপু সুলতানকে ধরিয়ে দিতে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে; মাইকে ঘোষণা দেয়। তাকে বার বার আত্নসমর্পণের জন্য বলা হলেও টিপু সুলতান শহরের কাজী পাড়ায় মিঞা মতিনের বাড়ীতে আত্মগোপন করে থাকেন। সেখানে দু’দিন অবস্থানের পর ২৭ মার্চ চলে যান হাসান শিবলীর বাড়িতে। এই অবস্থায় বঙ্গবন্ধু ও রাজনৈতিক সহপাঠিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রতিরোধ সংগ্রামের মানসিক প্রস্তুতি জোরদার করেন। ৩০ মার্চ ইপিআর ও ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সঙ্গে যুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনী পরাজিত হলে শহর মুক্ত হয়। এ সময় খান টিপু সুলতানের নেতৃত্বের মিছিল বের হয় এবং কন্ঠ শিল্পী শাহ মোঃ মোরশেদ রাজপথে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন।

পরে পাক হানাদার বাহিনী আবার শহরে প্রবেশ করলে তিনি যশোর শহর ছেড়ে নড়াইলে অবস্থান নেন। এর দু’দিন পর তিনি বাঘারপাড়া, ডুমুরিয়া ও মনিরামপুরে আত্নগোপন করে সাংগঠনিক কাজ করেন। হানাদারদের আক্রমণের এক পর্যায়ে ইপিআর সদস্যরা ছত্রভঙ্গ হলে টিপু সুলতান ভারত যান মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিতে। জেনারেল ওসমানীর সঙ্গে যোগাযোগ হলে তার নির্দেশ ও নেতৃত্বে বাংলাদেশের নেতৃস্থানীয় ছাত্রদের নিয়ে একটি স্পেশাল অপারেশান গ্রুপ গঠন করে তাদের নিয়ে বিহারের চাকুলিয়াতে সশস্ত্র ট্রেনিং নেন তিনি। সেখানে ট্রেনিং শেষে ফিরে আসেন দেশে। স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার তাকে যশোর সেক্টরে স্টুডেন্ট পলিটিক্যাল লিয়াজোঁ অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেন। তৎকালীন সেক্টর কমান্ডার মেজর ওসমান তাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন। তিনি যশোর সেক্টরে গেরিলা যোদ্ধাদের রাজনৈতিক নেতৃত্ব দিয়ে অগ্রসর করার দায়িত্ব পালন করেন। প্রত্যেকটি অপারেশন ক্যাম্পে গিয়ে তাদের সংগঠিত করেন এবং প্রশিক্ষণ দেন। তার পরামর্শে বিভিন্ন মহকুমা ও থানায় এফ. এফ কমান্ডার নিয়োগ দেন সাব-সেক্টর কমান্ডাররা।

চৌগাছায় জাহাঙ্গীরপুর গ্রামে এসে সশস্ত্র সহযোদ্ধাদের নিয়ে অবস্থান গ্রহণ করেন এবং চৌগাছার সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেন খান টিপু সুলতান। এ যুদ্ধ হয়েছিল চৌগাছা থানার বেশিরভাগ এলাকা জুড়ে। দু’পক্ষই এ যুদ্ধে ট্যাংক ব্যবহার করে। মিত্র বাহিনী যুক্ত হওয়ায় এটি ভয়াবহ যুদ্ধে রূপ নেয়। হানাদাররা টিকতে না পেরে অনেক ক্ষয়ক্ষতির পর ৩ ডিসেম্বর পিছু হঠতে বাধ্য হয়। ৭ ডিসেম্বর যশোর মুক্ত হয়।

রাজনৈতিক জীবন

১৯৬৬ সালে যশোর সম্মিলনী স্কুলে ১০ম শ্রেণীতে পড়াকালীন তিনি সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন এবং যশোর শহর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব লাভ করেন। ১৯৬৭ সালে যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের অনুপস্থিতির কারণে তাকে জেলার দায়িত্ব দেয়া হয়; ১৯৬৮ সালে তিনি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পুনঃনির্বাচিত হন এবং ১৯৬৯ সালে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৬৯ সালে ছাত্র-গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭০ সালের নির্বাচন ও ১৯৭১-এ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি যশোর অঞ্চলের সরাসরি নেতৃত্ব দেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চ শিক্ষা নেয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকায় আসেন খান টিপু সুলতান। কিন্তু বঙ্গবন্ধু তাকে যশোরের জাতীয় রাজনীতিতে যোগ দেয়ার নির্দেশ দেন। বঙ্গবন্ধুর আদেশ অমান্য করতে পারেননি তিনি। ঢাকা হতে যশোরে ফিরে গিয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগ দেন এবং স্থায়ীভাবে যশোরে বসবাস শুরম্ন করেন। ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু তাকে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব দেন। বঙ্গবন্ধুর অত্যন্ত স্নেহভাজন ছিলেন খাঁন টিপু সুলতান

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হলে খান টিপু সুলতান বন্দি হন। দুই বছর কারাভোগের পর মুক্তি পেয়ে যশোর জেলা আওয়ামী লীগকে পুন:সংগঠিত করেন। ১৯৭৮ সালে তার উদ্যোগে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় এবং এতে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন তিনি। এর পর পরই বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়; এতে তাকে কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য নির্বাচন করা হয়।

১৯৮২ সালে এরশাদ সরকার ক্ষমতা দখলের পর আওয়ামী লীগে আদর্শগত মতবিরোধ দেখা দিলে তিনি সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেন। পরে তিনি যশোর জেলা আওয়ামী লীগের একজন সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এক পর্যায়ে প্রায় ৮ মাস তিনি বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক লীগের হয়ে কাজ করেন। পরবর্তীকালে আবার আওয়ামী লীগে ফিরে যান এবং জেলা কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৫ সালে আবারও যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।

১৯৯১ সালে পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে যশোর-৫ (মনিরামপুর) হতে নির্বাচিত হন খান টিপু সুলতান। এ সময় তিনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সালের ১২ জুন ৭ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে যশোর-৫ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন। সংসদ সদস্য হিসেবে তিনি যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে সংসদীয় কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খান টিপু সুলতান আওয়ামী লীগ হতে মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচনে অংশ নেন এবং এবার তিনি বিপুল ভোটে দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৩ সালের ২২ জানুয়ারী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পান কিন্তু এই নির্বাচনে তিনি পরাজিত হন।[1]

তথ্যসূত্র

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.