কৃত্তিকা

নীলাম্বরী কৃত্তিকা গুচ্ছনক্ষত্র । আন্তর্জাতিকভাবে এর পরিচিতি Pleiades নামে। ঋগ্বেদের ঋষিরা চিনতো অগ্নি ব'লে আর সিদ্ধান্তজ্যোতিষিতে এটি কৃত্তিকা নামে পরিচিত। নক্ষত্রটি সপ্তর্ষিদের পত্নী হিসেবেও পরিচিত।[1]

আকাশে অবস্থান

এ নক্ষত্রের এক-চতুর্থাংশ মেষ রাশিতে আর বাকী তিনভাগ বৃষ রাশিতে অবস্থিত। কার্ত্তিক মাসের প্রায় ২৭তম দিন থেকে অগ্রহায়ণের প্রায় ১০ম দিন পর্যন্ত এ নীলাম্বরীগুচ্ছ নক্ষত্র-বিভাগের পরিপ্রেক্ষিতে পৃথিবীর ক্রান্তি ।

ঋগ্বেদীয় ঋষিদের কৃত্তিকা-চিন্তা

পুরো ঋগ্বেদ জুড়েই ছড়িয়ে রয়েছে অগ্নি নামধারী কৃত্তিকার প্রতি অজস্র প্রার্থণা । ঋগ্বেদীয় ঋষিরা পৃথিবীতে সুলভ অগ্নিকেন্দ্রীক যজ্ঞে ক্রমশ সীমাবদ্ধ হয়ে উঠলেও অনেক ঋষির ঋকে অগ্নি নামধারী নক্ষত্র কৃত্তিকাকে চেনা যায় ।[2] [3][4] পৃথিবী থেকে খালিচোখে অগ্নিকুণ্ডলীর মত দেখায় তাই ঋষিদের মননে এ অগ্নি বহু নামে অভিহিত । যেমনঃ জীবনশক্তি বিদিত/জ্ঞাত ব'লে মনে হতো তাই এর নাম জাতবেদা , যজ্ঞাহুতি ভক্ষক অগ্নির নাম হুতাশন , যজ্ঞের হবি বাহক বলে বহ্নি , জীবদেহের উত্তাপরূপী অগ্নির নাম তনুনপাৎ , প্রত্যক্ষ অগ্নি নরাশংস , (মানব প্রশংসিত) বনের আগুন দাবানল , বিদ্যুতাগ্নি শম্পাৎ , সমুদ্র-বারিতে প্রজ্বলিত অগ্নি বারবানল বা বড়বা , বনস্পতির দহন শমী , ক্রোধাগ্নির নাম জমদগ্নি , ভানু তথা সূর্য্যরশ্মির নাম চিত্রভানু । ঋষিরা এর উত্তাপের নাম দিয়েছিল ঊর্জস্বন্ত , এর দীপ্তিকে বলতো ভা , তেজ , তপ ইত্যাদি ।

ঋগ্বেদের প্রাচীন ঋষি বসিষ্ঠ ৭.১৭.১ ঋকে কৃত্তিকাকে অগ্নি সম্বোধন ক'রে বলেছেন , "হে সমিধ-সমন্বিত অগ্নি ! সুষমা বিস্তার করো , ময়ূরশিখার ন্যায় পৃথিবীর ঊর্ধ্বে বিস্তীর্ণ হও" ।[5]

তথ্যসূত্র

  1. ঋগ্বেদ ৭ম মণ্ডল ১৭শ সূক্ত পংক্তি ১৯
  2. বেলাবাসিনী ও অহনা গুহ . ঋগ্বেদ ও নক্ষত্র . গোপা প্রকাশনী , কলকাতা-২৮,১৯৬৭
  3. GENERAL RESULTS OF BEING BORN IN KRITTIKA NAKSHATRA
  4. Dennis M. Harness. The Nakshatras: The Lunar Mansions of Vedic Astrology. Lotus Press (Twin Lakes WI, 1999.) আইএসবিএন ৯৭৮-০-৯১৪৯৫৫-৮৩-২
  5. Harness, Dennis M.। নক্ষত্রঃ বৈদিক জ্যোতির্বিদ্যা। মতিলাল বানারসিদাস। সংগ্রহের তারিখ ১২ মে ২০১৬
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.