ঈশ্ব‌রের সিংহাসন

ইসলাম ধর্মমতে আরশ মঞ্জিল (আরবী: العرش‎ ইংরেজীঃ Al-ʿArsh) হচ্ছে আল্লাহ সুবহানু তায়ালার সব থেকে বড় সৃষ্টি। মুসলমানগণ বিশ্বাস করেন আল্লাহ তার ক্ষমতার নিদর্শন স্বরূপ আরশ মঞ্জিল সৃষ্টি করেছেন। কিছু মুসলিম, যেমন সালাফিগণ বিশ্বাস করেন, আল্লাহ আরশকে তার ক্ষমতার নিদর্শ‌ন ও বাসস্থান উভয় হিসেবে সৃষ্টি করেছেন;[2][3][4], কিছু মুসলিম, যেমন অধিকাংশ সুফিগণ বিশ্বাস করেন যে, আল্লাহ শুধুমাত্র তার ক্ষমতার নিদর্শ‌ন হিসেবে আরশকে সৃষ্টি করেছেন, বাসস্থান হিসেবে নয়;[5] এবং কিছু মুসলিম, যেমন আশআরী ও মাতুরিদীগণ একে আল্লাহর মহত্ত্বে‌র রুপক বলে মনে করেন[6][7][8]। আল কুরআনের ২৫ জায়গায় আরশ মঞ্জিলের উল্লেখ আছে। কুরআনের কয়েকটি আয়াতের (বাক্য) ভাবানুবাদ হল,

"নিশ্চয় তোমাদের রব আল্লাহ। যিনি আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টি করেছেন ছয় দিনে, তারপর আরশে উঠেছেন। তিনি সব বিষয় পরিচালনা করেন। তার অনুমতি ছাড়া সুপারিশ করার কেউ নেই। তিনিই আল্লাহ, তোমাদের রব। সুতরাং তোমরা তাঁর ইবাদাত কর। তারপরও কি তোমরা উপদেশ গ্রহণ করবে না?"[9]

তিনিই আসমান ও যমীন ছয় দিনে তৈরী করেছেন, তাঁর আরশ ছিল পানির উপরে, তিনি তোমাদেরকে পরীক্ষা করতে চান যে, তোমাদের মধ্যে কে সবচেয়ে ভাল কাজ করে। আর যদি আপনি তাদেরকে বলেন যে, "নিশ্চয় তোমাদেরকে মৃত্যুর পরে জীবিত ওঠানো হবে, তখন কাফেরেরা অবশ্য বলে এটা তো স্পষ্ট যাদু!"[10]

"সুতরাং আল্লাহ্‌ মহিমান্বিত, প্রকৃত মালিক, তিনি ছাড়া কোন (সত্য) উপাস্য নেই; তিনি সম্মানিত ‘আরশের অধিপতি।"[11]

"আর আপনি ফেরেশতাদেরকে দেখতে পাবেন যে, তারা 'আরশের চারপাশে ঘিরে তাদের রবের সপ্ৰশংস পবিত্ৰতা ও মহিমা ঘোষণা করছে। আর তাদের মধ্যে বিচার করা হবে ন্যায়ের সাথে এবং বলা হবে, সকল প্রশংসা সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহর প্রাপ্য।"[12]

আল কোরআনে আল্লাহর সিংহাসন বা কুরসি সম্পর্কে সুরা বাকারায় আয়াতুল কুরসি নাজিল হয়েছে। এই আয়াতে আল্লাহর নাম আল-হাইয়্যু, আল-কাইয়ুম[13] এর কথা বলা হয়েছে। হাদিসে আছে, রসুল (সঃ) বলেছেন, প্রতি নামাজের পর যে ব্যক্তি আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে তার পুরষ্কার জান্নাত[14] এবং এটা পাঠ করলে শয়তানের হাত থেকে পরিত্রাণ লাভ করা যায়।.[15] হাদিস থেকে জানা যায় আরশ মঞ্জিলের অবস্থান সর্বোচ্চ জান্নাত 'জান্নাতুল ফিরদাউস'এর উপরে।[16]

সিংহাসনে উপবিষ্ট পিতা গড,ওয়েস্টফালিয়া, জার্মানী, ১৫ শতকের শেষার্ধে অঙ্কিত।

নতুন বাইবেল বা নিউ টেস্টামেন্টে থ্রোন অব গডকে কয়েক রূপে[17] বর্ণনা করা হয়েছে। দাউদের সিংহাসন, থ্রোন অব গ্লোরি, থ্রোন অফ গ্রেস এবং আরো অনেক[17] । ইহুদি ধর্মে বর্ণিত স্বর্গকেও"[18] নতুন বাইবেলে গডের সিংহাসন হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।

মিকাইয়াহ (১ রাজা ২২, ১৯), ইসাইয়া (ইসাইয়া ৬), ইজিকিয়েল (ইজিকিয়েল ১))[19] এবং দানিয়েল (দানিয়েল ৭,৯) সবাই ঈশ্বরের সিংহাসনের কথা উল্লেখ করেছেন।.[20]

বিষ্ণু অনন্ত শেষে বিশ্রাম নিচ্ছেন। দেবী লক্ষী তার পদসেবা করছেন।

হিন্দু ধর্মের বৈষ্ণব মতে ভগবান বিষ্ণুর সিংহাসন হচ্ছে শেষ(সংস্কৃতঃ शेष) বা শেষনাগ(शेषनाग)। শেষ'কে অনেক সময় অনন্ত শেষ বা আদি শেষ(आदिशेष) নামেও ডাকা হয়। সাধারনত শেষনাগ সম্পর্কে মন্তব্য করা হয় এটি বিশাল দুগ্ধসাগরে ভাসমান একটি কুন্ডলী পাকিয়ে থাকা সাপ, যেখানে বিষ্ণু শুয়ে থাকেন। তিনি কখনো পাঁচ বা সাত মাথা আবার কখনো হাজার মাথা নিয়ে আবির্ভূত হন।[21]

• Arnold, Edwin (১৯৯৮)। Pearls of the Faith (1998 সংস্করণ)। Kessinger Publishing। আইএসবিএন 0-7661-0243-2। - Total pages: 340
• Bowker, John (২০০৫)। The concise Oxford dictionary of world religions (2005 সংস্করণ)। Oxford University Press। আইএসবিএন 0-19-861053-X। - Total pages: 702
• Kittel, Gerhard (১৯৬৬)। Theological Dictionary of the New Testament, Volumes 3-4 (1966 সংস্করণ)। Wm. B. Eerdmans Publishing। আইএসবিএন 0-8028-2245-2। - Total pages: 1116
• O'Shaughnessy, Thomas J. (ডিসেম্বর ১৯৭৩)। "God's Throne and the Biblical Symbolism of the Qur'ān"। Numen। BRILL। 20 (3): 202–221। doi:10.1163/156852773x00376। জেস্টোর 3269642।
• Pickthalll, Marmaduke; Hanauer, James Edward (১৯৩৫)। Folk-lore of the Holy Land: Moslem, Christian and Jewish (1935 সংস্করণ)। Forgotten Books। আইএসবিএন 1-60506-065-8। - Total pages: 280