ইয়োকোহামা

ইয়োকোহামা (জাপানি: 横浜; [jokohama] (শুনুন)) পূর্ব এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র জাপানের একটি গুরুত্বপূর্ণ নগরী ও সমুদ্র বন্দর। এটি দেশটির কানতৌ প্রশাসনিক অঞ্চলের কানাগাওয়া জেলার (জাপানি ভাষায় "কানাগাওয়া কেন") রাজধানী। শহরটি জাপানের হোনশু দ্বীপের পূর্ব-মধ্যভাগে , টোকিও উপসাগরের পশ্চিম উপকূলে, জাপানের রাজধানী টোকিও শহরের ৩২ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত। এটি জাপানের ২য় সর্বোচ্চ জনবহুল নগরী। ইয়োকোহামা নগরীর আয়তন ৪৩৭ বর্গকিলোমিটার এবং এখানে প্রায় ৩৭ লক্ষেরও বেশি লোকের বাস।

ইয়োকহামা
横浜市
মনোনীত নগরী
ইয়োকোহামা নগরী[1]
উপরে বাম থেকে: মিনাতো মিরাই ২১, ইয়োকাহামা চীনাশহর, নিপ্পন মারু, ইয়োকোহামা রেলস্টেশন, ইয়োকোহামা নৌবুরূজ

পতাকা

সীলমোহর
কানাগাওয়া জেলার মানচিত্রে বেগুনী রঙে ইয়োকোহামা নগরীকে নির্দেশ করা হয়েছে।
ইয়োকহামা
 
স্থানাঙ্ক: ৩৫°২৬′৩৯″ উত্তর ১৩৯°৩৮′১৭″ পূর্ব
দেশ/রাষ্ট্র জাপান
প্রশাসনিক অঞ্চলকানতৌ
জেলাকানাগাওয়া জেলা
সরকার
  নগরপালফুমিকো হাইয়াশি
আয়তন
  মোট৪৩৭.৩৮ কিমি (১৬৮.৮৭ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (১লা অক্টোবর, ২০১৬)
  মোট৩৭,৩২,৬১৬
  জনঘনত্ব৮৫৩৪.০৩/কিমি (২২১০৩.০/বর্গমাইল)
সময় অঞ্চলজাপান মান সময় (ইউটিসি+9)
– বৃক্ষCamellia, Chinquapin, Sangoju
Sasanqua, Ginkgo, Zelkova
– ফুলগোলাপ
Address1-1 Minato-chō, Naka-ku, Yokohama-shi, Kanagawa-ken
231-0017
ওয়েবসাইটwww.city.yokohama.lg.jp
ইয়োকোহামা
কান্জিতে "ইয়োকোহামা"
জাপানি নাম
হিরাগানা よこはま
কিউজিতাই 橫濱
শিঞ্জিতাই 横浜

টোকিও শহর ও ইয়োকোহামা শহর একত্রে টোকিও-ইয়োকোহামা নামের একটি পৌরপুঞ্জ গঠন করেছে, যা জাপানের বৃহত্তম পৌরপুঞ্জ। টোকিও ও ইয়োকোহামা শহরের মধ্যবর্তী অবস্থানে কাওয়াসাকি নামের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্পনগরী অবস্থিত।

ইয়োকোহামা নগরীটি একটি পাহাড়বেষ্টিত উপকূলীয় সমভূমি অঞ্চলে দাঁড়িয়ে আছে। পাহাড়ের একটি শ্রেণী দক্ষিণ-পূর্ব দিকে প্রসারিত হয়ে হোম্মোকু অন্তরীপ নামের একটি শৈলান্তরীপ গঠন করেছে। ইয়োকোহামার জলবায়ু গ্রীষ্মকালে আর্দ্র ও উষ্ণ এবং শীতকালে মৃদু; গ্রীষ্মের শুরুতে ও শরতের শুরুতে বৃষ্টিপাত হয়। সেপ্টেম্বর মাসে প্রায় তাইফুন ঘূর্ণিঝড় হয়।

ইয়োকোহামা জাপানের কেইহিন শিল্পাঞ্চলে অবস্থিত একটি শিল্পনগরী। এখানে উৎকৃষ্টমানের পোতাশ্রয় সুবিধা আছে; এটি জাপানের সবচেয়ে উন্নত বন্দরগুলির একটি। এছাড়া এখানে খনিজ তেল পরিশোধন কেন্দ্রসহ রাসায়নিক দ্রব্য, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যদ্রব্য, যন্ত্রাংশ ও মোটরযান নির্মাণের কারখানা আছে।

ইয়োকোহামাতে বহু স্মৃতিসৌধ, মন্দির, খ্রিস্টানদের গির্জা। এখানে অনেক সুন্দর নগর উদ্যান (যেমন ইয়ামাশিতা উদ্যান ও নোগেইয়ামা উদ্যান) আছে, যেগুলি থেকে পোতাশ্রয় এলাকার সুন্দর দৃশ্য অবলোকন করা সম্ভব। শহরের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত ইয়োকোহামা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং একই সালে (১৯৪৯) প্রতিষ্ঠিত ইয়োকোহামা নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম উল্লেখযোগ্য। ১২৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত কানাজাওয়া গ্রন্থাগারে বহু ঐতিহাসিক গ্রন্থ ও দলিলপত্র আছে। এছাড়া শহরে বিভিন্ন বিষয়ের উপর বহু জাদুঘর ও ঐতিহ্যবাহী নো এবং কাবুকি ঘরানার নাট্যশালা আছে।

১৯শ শতকের মধ্যভাগেও ইয়োকোহামা জেলেদের একটি ছোট গ্রাম ছিল। গ্রামটি উপসাগরের উপরে অবস্থিত একটি চরের উপর অবস্থিত ছিল। "ইয়োকোহামা" শব্দটির আক্ষরিক অর্থ "অনুভূমিক সৈকত"। ১৮৫৯ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক চাপের মুখে বৈদেশিক বাণিজ্যের জন্য ইয়োকোহামা বন্দরটিকে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় এবং এটি একটি বাণিজ্যিক কেন্দ্রে পরিণত হয়। বিদেশীদেরকে অতিরাষ্ট্রিক (অর্থাৎ রাষ্ট্রীয় আইনের আওতার বাইরে থাকার) সুবিধা প্রদান করা হলে এখানে অনেক বিদেশী বসবাস করা শুরু করে এবং বিদেশীদের লোকালয়টি ইয়োকোহামা শহরের কেন্দ্রে পরিণত হয়। ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে সংঘটিত একটি ভূমিকম্পে ইয়োকোহামা শহরটি প্রায় সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়। এরপর সরকারী নকশা অনুযায়ী এটিকে আবার ধীরে ধীরে গড়ে তোলা হয়। ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯৪৫ সালে শহরটির উপরে মিত্রশক্তির বিমানগুলি ভারী বোমাবর্ষণ করে। বর্তমানে এটি জাপানের সবচেয়ে আধুনিক নগরীগুলির একটি।

ইয়োকোহামা মহাসড়ক ও রেলপথের মাধ্যমে রাজধানী টোকিও এবং জাপানের অন্যান্য বৃহৎ শহরের সাথে সংযুক্ত। নগরীর নিকটবর্তী দুইটি বিমানবন্দর হল টোকিওর হানেদা বিমানবন্দর এবং টোকিও উপসাগরের অপর প্রান্তে চিবা জেলাতে অবস্থিত নারিতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর

তথ্যসূত্র

  1. Yokohama official web site (ইংরেজি)

  • উইকিমিডিয়া কমন্সে ইয়োকোহামা সম্পর্কিত মিডিয়া দেখুন
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.