আরতি সাহা

আরতি সাহা (১৯৪০ - ২৩ আগস্ট ১৯৯৪) একজন ভারতীয় সাঁতারু। তিনি মাত্র চার বছর বয়স থেকেই সাঁতার শেখা শুরু করেছিলেন। পরবর্তীকালে খ্যাতনামা সাঁতারু মিহির সেন তাকে ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম করতে অণুপ্রাণিত করেছিলেন এবং ১৯৫৯ সালে প্রথম এশীয় মহিলা সাঁতারু হিসাবে তিনি ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম করেন।[1] শুধু তাই নয় ১৯৬০ সালে প্রথম ভারতীয় মহিলা ক্রীড়াবিদ হিসাবে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হন।

আরতি সাহা
আরতি সাহা
জন্ম২৪শে সেপ্টেম্বর ১৯৪০
মৃত্যু২৩শে আগস্ট ১৯৯৪
জাতীয়তাভারতীয়
পেশাসাঁতারু
পুরস্কারপদ্মশ্রী (১৯৬০)

প্রথম জীবন

আরতি দেবী মধ্যবিত্ত বাঙালী হিন্দু পরিবারে ব্রিটিশ ভারতের অবিভক্ত বাংলার কলকাতায় ১৯৪০ সালের ২৪শে সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। পিতা পাঁচুগোপাল সাহার তিন সন্তানের মধ্যে তিনি দ্বিতীয় ও দুই মেয়ের মধ্যে জ্যেষ্ঠা ছিলেন। পাঁচুগোপাল সাহা ব্রিটিশ সৈন্যবাহিনীর এক সাধারণ চাকুরীজীবী ছিলেন।[2] দুর্ভাগ্যবশত মাত্র আড়াই বছর বয়সে তিনি মাতৃহারা হন। যারফলে তার বড় ভাই ও ছোটো বোন ভারতী মামার বাড়িতে এবং তিনি নিজে উত্তর কলকাতায় ঠাকুমার কাছে মানুষ হতে থাকেন। চার বছর বয়সে তার কাকার সাথে চাঁপাতলা ঘাটে স্নান করতে যেয়ে সাঁতার শেখা শুরু করেন। সাঁতারের প্রতি তার আগ্রহ দেখে পাঁচুগোপাল সাহা তার কন্যাকে শোভাবাজারের হাটখোলা সুইমিং ক্লাবে ভর্তি করে দেন। ১৯৪৬ সালে পাঁচ বছর বয়সে শৈলেন্দ্র স্মৃতি সাঁতার প্রতিযোগিতায় ১১০গজ দূরত্বের ফ্রি স্টাইলে সোনা জেতেন।

কৃতিত্বপূর্ণ কর্ম

১৯৪৬ থেকে ১৯৫৬ সালের মধ্যে আরতি দেবী বহু সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন।[2] ১৯৪৫ থেকে ১৯৫১ সালের মধ্যে ২২টি রাজ্যস্তরের প্রতিযোগিতায় জয়ী হয়েছিলেন।[2] ১৯৪৮ সালে তিনি মুম্বইতে অনুষ্ঠিত ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতায় রূপো ও ব্রোঞ্জ যেতেন। ১৯৫১ সালে রাজ্য স্তরের প্রতিযোগিতায় ১ মিনিট ৩৭.৬ সেকেন্ডে ১০০মিটার অতিক্রম করে ডলি নাজিরের রেকর্ড ভেঙ্গে দেন। ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে হেলসিঙ্কি অলিম্পিকে তিনি সাঁতারু ডলি নাজিরের সঙ্গে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন।[2]

পরবর্তী জীবন

১৯৬৯ সালে বিধানচন্দ্র রায়ের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসক অরুণ গুপ্তের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের অর্চনা নামে একটি কন্যা সন্তান ছিল। তিনি বিএনআরে চাকরি করতেন। ১৯৯৪ সালের ২৩শে আগস্ট কলকাতার একটি নার্সিং হোমে দীর্ঘ ১৯ দিন ধরে জণ্ডিস ও এনসেফালাইটিসের ভোগার পর মৃত্যু বরণ করেন।[3]

তথ্যসূত্র

  1. "First Indian Woman to Swim Across English Channel"
  2. De, Pradip; Basu, Tapas। "জলকন্যা আরতি সাহা : ইংলিশ চ্যানেলজয়ী প্রথম এশীয় মহিলা" (Bengali ভাষায়)। বাংলা bazar। ২ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ মার্চ ২০১৫
  3. Dutta, Partha (১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪)। "আজ ৭৫, ট্যাক্সি ঢেকে দিচ্ছে আরতির মূর্তি"Ei Samay (Bengali ভাষায়)। Kolkata। সংগ্রহের তারিখ ৭ মার্চ ২০১৫
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.