আমাজন নদী
আমাজন নদী দক্ষিণ আমেরিকায় অবস্থিত এবং এটি পৃথিবীর দ্বিতীয় দীর্ঘতম নদী। এর উৎসস্থল পেরুর আন্দিজ পর্বতের নেভাদো মিস্মি নামক চূড়া হতে। আমাজন নদী দক্ষিণ আমেরিকার প্রায় ৩০০০ মাইল পাড়ি দিয়ে তিনটি দেশ বিধৌত হয়ে আটলান্টিক মহাসাগরে গিয়ে পড়েছে। এই নদী যে পরিমাণ জল ধারণ করে তা বিশ্বের যেকোন নদীর তুলনায় বেশি। আমাজন নদী যেখানে সাগরে গিয়ে মিশেছে সেখানে প্রতি সেকেন্ডে ৪.২ মিলিয়ন ঘন ফুট জল সাগরে গিয়ে পড়ে। বর্ষা মৌসুমে এই পরিমাণ গিয়ে দাঁড়ায় প্রায় ৭ মিলিয়ন ঘন ফুট।
আমাজন নদী | |
---|---|
![]() ইন্ডিয়ানা, পেরুর নিকটে আমাজন | |
![]() আমাজন নদী এবং আমাজনের নিষ্কাষন বেসিন | |
স্থানীয় নাম | আমাজনস |
অন্য নাম | Apurímac, ইনি, টাম্বো, ইউকায়ালী, Solimões |
দেশ | ব্রাজিল, কলাম্বিয়া, পেরু |
শহর | ইকুইটোস (পেরু); লেটিসিয়া (কলাম্বিয়া); টাবাটিংঙ্গা (ব্রাজিল); টেফé (ব্রাজিল); ইটাকোয়েটিয়ারা (ব্রাজিল) পারিন্টিস (ব্রাজিল); Óbidos (ব্রাজিল); Santarém (ব্রাজিল); এলমেরিম (ব্রাজিল); Macapá (ব্রাজিল); মানুস (ব্রাজিল) |
অববাহিকার বৈশিষ্ট্য | |
মূল উৎস | Río Mantaro Huancayo, Huancayo Province, Peru ৫,২২০ মি (১৭,১৩০ ফু) ১০°৪৩′৫৫″ দক্ষিণ ৭৬°৩৮′৫২″ পশ্চিম |
মোহনা | Atlantic Ocean Brazil ০ মি (০ ফু) ০°৪২′২৮″ উত্তর ৫০°৫′২২″ পশ্চিম[1] |
অববাহিকার আকার | ৭০,৫০,০০০ কিমি২ (২৭,২০,০০০ মা২)[2] |
শাখা-নদী |
|
প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য | |
দৈর্ঘ্য | ৬,৪০০ কিমি (৪,০০০ মা)[n 1] |
নিষ্কাশন |
|

এটি গড়ে প্রায় ২,০৯,০০০ ঘনমিটার প্রতি সেকেন্ড (৭৪,০০,০০০ ঘনফুট/সে; ২০,৯০,০০,০০০ L/s; ৫,৫০,০০,০০০ USgal/s)— পানি যা প্রায় ৬,৫৯১ cubic kilometres per annum (১,৫৮১ cu mi/a) বহন করে ঢালুর দিকে নিয়ে যায়, যা এর পরবর্তী সাতটি সম্পূর্ন ভিন্ন নদীর পানির সমান। আমাজন মোট বৈশ্বিক পানির প্রায় ২০ ভাগ পানি সমুদ্রে বহন করে।[6] আমাজনের বেসিন হল পৃথিবীর সর্ববৃহৎ পানি নিষ্কাষন বেসিন যা প্রায় ৭০,৫০,০০০ বর্গকিলোমিটার (২৭,২০,০০০ মা২)। শুধুমাত্র ব্রাজিলে অবস্থিত বেসিনটিই অন্য যে কোন বেসিনের তুলনায় বড়। আমাজন ব্রাজিলে শুধুমাত্র তার পুরো প্রবাহের পাচভাগের একভাগ নিয়ে প্রবেশ করে এবং সবশেষে আটলান্টিক সাগরে গিয়ে মেশে। তবুও সেখানেই সবথেকে বড় প্রবাহ রয়েছে যা অন্যান্য নদীর চেয়ে বেশি।[7][8]
নামের উৎপত্তি
ইউরোপীয়দের কাছে নদীটি শুরুতে মারুন নামে পরিচিত এবং নদীর ঐ অংশটিকে পেরুভিয়ানরা সেই নামে এখনও চিনে থাকে। স্প্যানিশ এবং পর্তুগিজরা নদীটিকে এখন রিও আমাজনাস নামে ডাকে আর ইংরেজিতে হল আমাজন।
১৬শতকে ফ্রান্সিসকো ডি ওরিলিয়ানা অভিযান চালানোর সময় স্থানীয় যোদ্ধাদের আক্রমনের সম্মুখীন হয় যার ফলে এই নামের উৎপত্তি। যোদ্ধারা নারী কমান্ডার দ্বারা পরিচালিত হয়, ছিল যা ডি ওরিলিয়ানাকে মনে করিয়ে দেয় ইরানিয়ান Scythians এবং সারমাশিয়ান[9][10] একদল নারী যোদ্ধার কথা যেমনটা গ্রিক উপকথায় উল্লেখ আছে।
আমাজন শব্দটি হয়ত ইরানীয় শব্দ যৌগ বা শব্দাং *হা-মাজ-অন- "(একজন) একত্রে যুদ্ধ করা"[11] থেকে এসেছে অথবা ethnonym *হা-মাজন- "যোদ্ধাগন", a word attested indirectly through a derivation, a denominal verb in Hesychius of Alexandria's gloss "ἁμαζακάραν· πολεμεῖν. Πέρσαι" ("hamazakaran: 'to make war' in Persian"), where it appears together with the Indo-Iranian root *kar- "make" (from which Sanskrit karma is also derived).[12]
বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান

পূর্বে প্রায় ১৮শ শতক থেকে ১৯শ শতকে প্রথমভাগ পর্যন্ত আমাজন নদী এবং এর বেসিনে অনেক বৈজ্ঞানিক, জীববিজ্ঞান সম্পর্কিত এবং বৃক্ষ বিষয়ক অনুসন্ধান কর্ম চালানো হয়।
- চালর্স মেরি ডি লা কোন্ডেমাইন ১৭৪৩ সনে এই নদীতে অনুসন্ধান চালান।[13]
- আলেক্সান্ডার ভন হামভোল্ডট, ১৭৯৯-১৮০৪ সময়ে এখানে অনুসন্ধান করেন
- ১৮১৭-১৮২০ সালের সময় জন ব্যাপ্টিস্ট ভন স্পিক্স এবং কার্ল ফ্রেডেরিক পিলিপ ভন মার্টিউস
- ১৮৪৮-১৮৫৯ পর্যন্ত হেনরি ওয়াল্টার বেটস এবং আলফ্রেড রাসেল ওয়ালেস এখানে অনুসন্ধান চালান।
ইতিহাস
বিশ শতকের উন্নয়ন
ঔপনিবেশিক কাল থেকে, আমাজন অববাহিকার পর্তুগিজ অংশটি মূলত কৃষিক্ষেত্রের অনুন্নত এবং ইউরোপীয় রোগের আগমনে বেঁচে থাকা আদিবাসীদের দ্বারা দখল করা একটি ভূমি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আমাজন নদীর ইউরোপীয় আবিষ্কারের চার শতাব্দী পরে, এর অববাহিকায় মোট আবাদকৃত অঞ্চলটি চূড়ান্ত হেডওটারে পাহাড়ের মধ্যে সীমিত এবং অপরিশোধিতভাবে চাষ করা অঞ্চলগুলি বাদ দিয়ে সম্ভবত ৬৫ বর্গকিলোমিটার (২৫ বর্গ মাইল) এর চেয়ে কম ছিল।[14] এই পরিস্থিতি বিশ শতকের সময় নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত হয়।
দেশটির সম্পদগুলির বিদেশী শোষণ সম্পর্কে সতর্ক হয়ে ১৯৪০-এর দশকে ব্রাজিলের সরকার সমুদ্র সৈকত থেকে দূরে যেখানে বিদেশিদের জমির বিশাল অংশ ছিল, সেই অভ্যন্তরীণ অঞ্চলের উন্নয়নের পরিকল্পনা করে। এই সম্প্রসারণের মূল স্থপতি হলেন রাষ্ট্রপতি গেটালিয়ো ভার্গাস, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মিত্রবাহিনীর কাছ থেকে রাবারের দাবিতে এই অভিযানের জন্য অর্থ সরবরাহ করা হয়।
১৯৬০-এর দশকে, আমাজন অববাহিকার অর্থনৈতিক শোষণকে তখনকার সময়ে ঘটে যাওয়া "অর্থনৈতিক অলৌকিক ঘটনা" হিসাবে চালিত করার উপায় হিসাবে দেখা হয়। এর ফলে একটি অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রকল্প "অপারেশন অ্যামাজন"-এর উন্নয়ন ঘটে, যা অ্যামেজোনিয়ায় বড় আকারের কৃষিক্ষেত্র এবং পশুপালনে পৌঁছেছিল।। এটি ঋণ এবং আর্থিক উৎসাহের সংমিশ্রণের মাধ্যমে করা হয়েছিল।[15]
তবে, ১৯৭০-এর দশকে সরকার জাতীয় সংহতকরণ কর্মসূচির সাথে একটি নতুন পদ্ধতি গ্রহণ করে। একটি বৃহত আকারের উপনিবেশকরণ কর্মসূচিতে দেখা গেছে যে আমাজন অববাহিকার উত্তর-পূর্ব ব্রাজিলের পরিবারগুলি "লোকবিহীন ভূমিতে" স্থানান্তরিত হয়। এটি মূলত ট্রান্স-অ্যামেজোনিয়ান হাইওয়ে (ট্রান্সমাজানিকা) অবকাঠামোগত প্রকল্পগুলির সাথে একত্রে করা হয়েছিল।[15]
ট্রান্স-অ্যামাজনিয়ান হাইওয়ের তিনটি অগ্রণী মহাসড়ক দশ বছরের মধ্যেই সম্পন্ন হয়, কিন্তু তাদের প্রতিশ্রুতি কখনই পূরণ করেনি। ট্রান্স-অ্যামেজোনিয়ান এবং এর আনুষঙ্গিক রাস্তাগুলির বিরাট অংশ, যেমন বিআর -১৩৩ (মানাউস-পোর্তো ভেলহো) বর্ষাকালীন সময়ে অবরুদ্ধ এবং দুর্গম হয়ে থাকে। ছোট শহর এবং গ্রামগুলি বনাঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এবং এর গাছপালা এত ঘন হওয়ার কারণে কিছু প্রত্যন্ত অঞ্চল এখনও অনাবিষ্কৃত।
প্রবাহ
উৎপত্তি
অ্যামাজনের সর্বাধিক দূরবর্তী উত্সটি প্রায় এক শতাব্দী ধরে অপুরম্যাক নদীর নিকাশীতে ছিল বলে মনে করা হয়েছিল। এই ধরনের গবেষণাগুলি সম্প্রতি প্রকাশিত হতে থাকে, যেমন ১৯৯৬,[16] ২০০১,[17] ২০০৭,[17] এবং ২০০৮,[18] যেখানে বিভিন্ন লেখক স্নোকেপড ৫,৫৯৭ (মিটার (১৮,৩৬৩ ফুট) উচু নেভাদো মিস্তি শৃঙ্গকে চিহ্নিত করেছেন, যা টিটিকাচা লেকের প্রায় ১৬০ কিলোমিটার (৯৯ মাইল) পশ্চিমে এবং লিমা হ্রদের ৭০০ কিমি (৪৩০ মাইল) দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত। সেদিক থেকে কুইব্রাডা কারহুয়ন্তা নেভাডো মিস্তি থেকে উত্থিত হয়ে কুইব্রাডা অ্যাপাচেটাতে যোগ দেয় এবং শীঘ্রই রিও ললোকাটা গঠন করে, যা রিও হর্নিলোসে পরিণত হয় এবং অবশেষে রাও অপুরম্যাকের সাথে যোগ দেয়।
বহি:সংযোগ
![]() |
উইকিভ্রমণে Voyaging along the Amazon River সম্পর্কিত ভ্রমণ নির্দেশিকা রয়েছে। |
টেমপ্লেট:Commons+cat
![]() |
Wikisource has the text of the 1905 New International Encyclopedia article Amazon. |
- Bibliography on Water Resources and International Law Peace Palace Library
- Information on the Amazon from Extreme Science
- A photographic journey up the Amazon River from its mouth to its source
- Amazon Alive: Light & Shadow documentary film about the Amazon river
- Amazon River Ecosystem
- Research on the influence of the Amazon River on the Atlantic Ocean at the University of Southern California
ওপেনস্ট্রিটম্যাপে আমাজন নদী সম্পর্কিত ভৌগলিক উপাত্ত
- Amazon River at GEOnet Names Server
- "Amazon River"। Encyclopædia Britannica। ৬ অক্টোবর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- "Where Does the Amazon River Begin?"। National Geographic News। ২০১৪-০২-১৫। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১২-২৫।
- Seyler, Patrick; Laurence Maurice-Bourgoin; Jean Loup Guyot। "Hydrological Control on the Temporal Variability of Trace Element Concentration in the Amazon River and its Main Tributaries"। Geological Survey of Brazil (CPRM)। ২১ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুলাই ২০১০।
- Moura, Rodrigo L.; Amado-Filho, Gilberto M.; Moraes, Fernando C.; Brasileiro, Poliana S.; Salomon, Paulo S.; Mahiques, Michel M.; Bastos, Alex C.; Almeida, Marcelo G.; Silva, Jomar M.; Araujo, Beatriz F.; Brito, Frederico P.; Rangel, Thiago P.; Oliveira, Braulio C.V.; Bahia, Ricardo G.; Paranhos, Rodolfo P.; Dias, Rodolfo J. S.; Siegle, Eduardo; Figueiredo, Alberto G.; Pereira, Renato C.; Leal, Camellia V.; Hajdu, Eduardo; Asp, Nils E.; Gregoracci, Gustavo B.; Neumann-Leitão, Sigrid; Yager, Patricia L.; Francini-Filho, Ronaldo B.; Fróes, Adriana; Campeão, Mariana; Silva, Bruno S.; Moreira, Ana P.B.; Oliveira, Louisi; Soares, Ana C.; Araujo, Lais; Oliveira, Nara L.; Teixeira, João B.; Valle, Rogerio A.B.; Thompson, Cristiane C.; Rezende, Carlos E.; Thompson, Fabiano L. (১ এপ্রিল ২০১৬)। "An extensive reef system at the Amazon River mouth"। Science Advances (ইংরেজি ভাষায়)। 2 (4): e1501252। doi:10.1126/sciadv.1501252। PMID 27152336। পিএমসি 4846441
। ২৪ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ এপ্রিল ২০১৬। - Tom Sterling: Der Amazonas. Time-Life Bücher 1979, 7th German Printing, p. 19.
- Smith, Nigel J.H. (২০০৩)। Amazon Sweet Sea: Land, Life, and Water at the River's Mouth। University of Texas Press। পৃষ্ঠা 1–2। আইএসবিএন 978-0-292-77770-5। ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- Apollonius Rhodius, Argonautica, Book 2
- Argonautica Book 2
- "Amazon | Origin And Meaning Of Amazon By Online Etymology Dictionary". 2018. Etymonline.Com. Accessed October 15, 2018. .
- Lagercrantz, Xenia Lidéniana (1912), 270ff., cited after Hjalmar Frisk, Greek Etymological Dictionary (1960–1970)
- "Charles-Marie de La Condamine (French naturalist and mathematician)"। Encyclopædia Britannica Online। ২৫ জুলাই ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুলাই ২০১৪।
- Church 1911, পৃ. 790।
- Campari, João S. (২০০৫)। The Economics of Deforestation in the Amazon: Dispelling the Myths (ইংরেজি ভাষায়)। Edward Elgar Publishing। আইএসবিএন 9781845425517। ৩০ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- "Source of the Amazon River Identificated (Jacek Palkiewicz)"। Palkiewicz.com। ১৯ নভেম্বর ১৯৯৯। ১২ মার্চ ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১১।
- Smith, Donald (২১ ডিসেম্বর ২০০০)। "Explorers Pinpoint Source of the Amazon (National Geographic News)"। National Geographic। ১ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুলাই ২০১৭।
- "Studies from INPE indicate that the Amazon River is 140 km longer than the Nile"। Brazilian National Institute for Space Research। ১১ এপ্রিল ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ আগস্ট ২০১০।
- আমাজনের দৈর্ঘ্য কমপক্ষে ৬,৪০০ কিমি (৪,০০০ মা),[2] রিপোর্টে উল্লেখ্য আছে ৬,২৭৫ কিমি (৩,৮৯৯ মা) এবং ৭,০২৫ কিমি (৪,৩৬৫ মা).[3] The length measurements of many rivers are only approximations and differ from each other because there are many factors that determine the calculated river length, such as the position of the geographical source and the mouth, the scale of measurement, and the length measuring techniques (for details see also List of rivers by length).[3][4]