আবুল কাশেম (মুক্তিযোদ্ধা)

আবুল কাশেম (জন্ম: অজানা, মৃত্যু: ২১ নভেম্বর, ১৯৭১) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর বিক্রম খেতাব প্রদান করে। [1]

আবুল কাশেম
মৃত্যু২১ নভেম্বর, ১৯৭১
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
 বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণবীর বিক্রম

জন্ম ও শিক্ষাজীবন

শহীদ আবুল কাশেমের জন্ম পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া উপজেলার রাধানগর (তেওয়ারীপুর) গ্রামে। তার বাবার নাম আবদুল ছোমেদ । তার স্ত্রী রাজিয়া বেগম। তাঁদের দুই ছেলে।

কর্মজীবন

আবুল কাশেম চাকরি করতেন ইপিআরে। ১৯৭১ সালে কর্মরত ছিলেন রাজশাহী ইপিআর সেক্টর হেডকোয়ার্টারের অধীনে। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ঝাঁপিয়ে পড়েন যুদ্ধে। প্রতিরোধযুদ্ধ শেষে ৭ নম্বর সেক্টরের লালগোলা ও আঙ্গিনাবাদ সাব-সেক্টরে যুদ্ধ করেন।

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা

রাজশাহী জেলার অন্তর্গত হরিপুর জেলা সদর থেকে পশ্চিমে। গোদাগাড়ী ও পবা উপজেলার সীমান্তে হরিপুর এলাকা। ১৯৭১ সালে গোদাগাড়ী ও পবা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ছিল পাকিস্তানিদের অবস্থান। তাদের সঙ্গে ছিল একদল রাজাকার। সেখানে মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ চালালেন পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর প্রতিরক্ষা অবস্থানে। পাল্টা আক্রমণ শুরু করল পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। নিমেষে শুরু হয়ে গেল মুখোমুখি যুদ্ধ। মুক্তিযোদ্ধারা কয়েকটি দলে বিভক্ত। একটি দলে ছিলেন আবুল কাশেম। পাকিস্তানিদের প্রতিরক্ষা অবস্থান বেশ শক্তিশালী। তাদের কাছে আছে অনেক অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ। পাকিস্তানি অবস্থান থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের দিকে ছুটে আসছে হাজার হাজার গুলি। বৃষ্টির মতো গুলিবর্ষণ। একই সঙ্গে মর্টার শেল। মুহুর্মুহু মর্টার শেল এসে পড়ছে মুক্তিযোদ্ধাদের আশেপাশে। সময় যত গড়াচ্ছিল, যুদ্ধের তীব্রতা ততই বেড়ে যাচ্ছে। পাকিস্তানিদের পাল্টা আক্রমণে আবুল কাশেমের কয়েকজন সহযোদ্ধা আহত হয়েছেন। আহত মুক্তিযোদ্ধাদের ধরাধরি করে পেছনে নিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকারী সহযোদ্ধারা। পাল্টা আক্রমণের তীব্রতায় মুক্তিযোদ্ধারা কিছুটা বিচলিত। কিন্তু আবুল কাশেম এতে বিচলিত হলেন না। বরং তার ক্রোধ আরও বেড়ে গেল। সঙ্গে থাকা সহযোদ্ধাদের পেছনে ফেলে গুলি করতে করতে একাই এগিয়ে গেলেন সামনে। তার সাহসিকতায় অণুপ্রাণিত হলেন কয়েকজন সহযোদ্ধা। তারাও গুলি করতে করতে এগিয়ে গেলেন সামনে। তাঁদের সম্মিলিত আক্রমণে ভেঙে পড়ার উপক্রম হলো পাকিস্তানিদের এক অংশের প্রতিরক্ষা। এটা দেখে আবুল কাশেমের উৎসাহ আরও বেড়ে গেল। জয়বাংলা ধ্বনি দিয়ে তিনি সহযোদ্ধাদের নিয়ে এগিয়ে গেলেন আরেকটু সামনে। পাকিস্তানি সেনা ও তাদের সহযোগীরা তার রণমূর্তি দেখে হতভম্ব। চরম উত্তেজনাকর এই মুহূর্ত। এমন সময় পাকিস্তানিদের গুলি এসে লাগল আবুল কাশেমের দেহে। রক্তাক্ত অবস্থায় ঢলে পড়লেন মাটিতে। গুরুতর আহত হয়েও তিনি জয়ের আশা ছাড়লেন না। সহযোদ্ধাদের যুদ্ধ চালিয়ে যেতে বলে বললেন, ‘মৃত্যু পর্যন্ত যুদ্ধ চলবে’। সেখানেই মারা যান তিনি।

পুরস্কার ও সম্মাননা

তথ্যসূত্র

বহি:সংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.