আনু
আনু বা আন হচ্ছে আকাশের স্বর্গীয় ব্যক্তিকরণ, সর্বোচ্চ দেবতা এবং প্রাচীন মেসোপটেমীয় ধর্মে সকল দেবতার পূর্বসূরি। আনুকে মনে করা হতো সকল ক্ষমতার উৎস এবং তিনি অন্য সকল দেবতা এবং মরণশীল শাসকদের ক্ষমতা প্রদান করতেন। তার সম্পর্কে একটি লিপিতে পাওয়া গেছে, "যিনি সকল বিশ্বকে ধারণ করেন"। প্রথম দিককার লিখিত উৎসসমূহ থেকে জানা যায়, আনু খুব কমই পূজিত হতেন। তার পূত্র এনিলই বেশী পূজা পেতো। কিন্তু পুরো মেসোপটেমীয় ইতিহাসজুড়ে সর্বোচ্চ দেবতাকে বলা হতো আনুতু যার অর্থ স্বর্গীয় ক্ষমতা। পুরাণে আনুর প্রাথমিক ভূমিকা হচ্ছে আনুন্নাকির পূর্বসূরি হিসেবে। আনুন্নাকি হচ্ছে সুমেরীয় ধর্মের প্রধান দেবতাদের একজন।
আনু | |
---|---|
আকাশপিতা, দেবতাদের রাজা | |
![]() উর (৩য়) সুমেরীয় কুনেইফর্ম | |
আবাস | উত্তর মেরু, ড্রাকো |
প্রতীক | 𒀭 Dingir |
সন্তান | এনলিল, এনকি, নিকিকুরগা, নিদাবা, বাবা, কিছু স্থানে: ইনান্না |
গ্রিক সমমান | অর্যানোস এবং জিউস[1][2] |
সঙ্গী | উরাস (প্রাক সুমেরীয়), কী , আন্তু (পূর্ব সেমিটিক ) |
মাতাপিতা | আপসু এবং নাম্মু (সুমেরীয়) আনশার এবং কিশার (পূর্ব সেমিটিক) |
পরিবার
প্রাক সুমেরীয় লিপিসমূহে আনু কোথা থেকে এসেছেন কিংবা কিভাবে দেবতাদের রাজা হলেন সে সম্পর্কে কোন উল্লেখ নেই। ৩য় খ্রিস্টপূর্বাব্দের প্রাক সুমেরীয় তথ্যে আনুর সঙ্গিনী বলা হয়েছে দেবী উরাসকে। পরবর্তীতে সুমেরিয়গণ দেবী উরাসের জায়গায় দেবী কী কে তার স্ত্রী হিসেবে গণ্য করতেন। দেবী কি হচ্ছে পৃথিবী।
সুমেরীয় রা বিশ্বাস করতো বৃষ্টি হচ্ছে দেবতা আনুর বীর্য। বৃষ্টি পতনের ফলে দেবী কী (পৃথিবী) গর্ভবতী হয় যা ফলে সকল প্রকার উদ্ভিদের জন্ম হয়।[3] আক্কাডীয় যূগে কী এর স্থান দখল করে দেবী আন্তু। সম্ভবত আন্তু ছিলো আনুর স্ত্রীরূপ।[4][5] আক্কাডীয়রা বিশ্বাস করতো বৃষ্টি হচ্ছে মেঘের দুধ[3], যা দেবী আন্তুর বুক থেকে নি:সৃত হয়।[3]
সাধারণভাবে আনুকে দেবতাদের পিতা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।[5] লাগাশে প্রাপ্ত তৃতীয় খ্রিস্টপূর্বাব্দের লিপি থেকে জানা যায় আনু গাতুমদুগ, বাবা এবং নিনুর্তার পিতা ছিলেন।[5] পরবর্তী বিভিন্ন লিপি থেকে জানা যায় আদাদ, এনকি, এনলিল, গিররা, নান্না-সুয়েন, নেরগাল ও সারা তার পুত্র এবং নিনকাররাক, ইনান্না-ইশতার, ননায়া, নিদাবা, নিনিসিন্না, নিনমুগ, নিন্নিব্রু, নিন্সুমুন, নুনগাল এবং নুস্কা কন্যা ছিলো।[5] আনুকে লাসামতু, আসাগ এবং সেবেত্তু দানবের সৃষ্টিকারী ভাবা হতো।[5] হিট্টি পুরাণ অনুসারে আনুর পিতা হচ্ছে দেবতা আলালু।[6][7]
তথ্যসূত্র
- জর্ডান ১৯৯৩, পৃ. ২২।
- বুর্কার্ট ২০০৫, পৃ. ২৯৫, ২৯৯–৩০০।
- নেমেত-নেজাত ১৯৯৮, পৃ. ১৮২।
- ব্লাক ও গ্রীন ১৯৯২, পৃ. ৩০।
- স্টিফেনস ২০১৩।
- পুহভেল ১৯৮৭, পৃ. ২৫।
- কোলম্যান ও ডেভিডসন ২০১৫, পৃ. ১৯।