সূরা আত্ব-তূর
সূরা আত্ব তূর (আরবি ভাষায়: الحجرات) মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআনের ৫২ তম সূরা, এর আয়াত অর্থাৎ বাক্য সংখ্যা ২৭ এবং এর রূকু তথা অনুচ্ছেদ সংখ্যা ২। সূরা আত্ব তূর মদীনায় অবতীর্ণ হয়েছে।
![]() | |
শ্রেণী | মাদানী সূরা |
---|---|
নামের অর্থ | পাহাড় |
পরিসংখ্যান | |
সূরার ক্রম | ৫২ |
আয়াতের সংখ্যা | ৪৯ |
পারার ক্রম | ২৭ |
রুকুর সংখ্যা | ২ |
সিজদাহ্র সংখ্যা | নেই |
শব্দের সংখ্যা | ৩১২ |
অক্ষরের সংখ্যা | ১৩২৪ |
← পূর্ববর্তী সূরা | সূরা আয-যারিয়াত |
পরবর্তী সূরা → | সূরা আন-নাজম |
আরবি পাঠ্য · বাংলা অনুবাদ |
নামকরণ
এই সূরাটির প্রথম শব্দ وَالطُّورِ থেকে এই সূরার নামটি গৃহীত হয়েছে; অর্থাৎ, যে সূরা وَالطُّورِ (‘আত্ব তূর’) শব্দটি দ্বারা শুরু হয়েছে এটি সেই সূরা।[1]
নাযিল হওয়ার সময় ও স্থান
কুরআন |
---|
ধারাবাহিক নিবন্ধশ্রেণীর অংশ |
![]() |
বিষয়বস্তু
|
অনুবাদ
|
ইতিহাস
|
তাফসীর
|
|
শানে নুযূল
বিষয়বস্তুর বিবরণ
আয়াতসমূহ
১) وَالطُّورِ
কসম তূরপর্বতের,
২)وَكِتَابٍ مَّسْطُورٍ
এবং লিখিত কিতাবের,
৩)فِي رَقٍّ مَّنشُورٍ
প্রশস্ত পত্রে,
৪)وَالْبَيْتِ الْمَعْمُورِ
৫)কসম বায়তুল-মামুর তথা আবাদ গৃহের,
وَالسَّقْفِ الْمَرْفُوعِ
এবং সমুন্নত ছাদের,
৬)وَالْبَحْرِ الْمَسْجُورِ
এবং উত্তাল সমুদ্রের,
৭)إِنَّ عَذَابَ رَبِّكَ لَوَاقِعٌ
আপনার পালনকর্তার শাস্তি অবশ্যম্ভাবী,
৮)مَا لَهُ مِن دَافِعٍ
তা কেউ প্রতিরোধ করতে পারবে না।
৯) يَوْمَ تَمُورُ السَّمَاء مَوْرًا
সেদিন আকাশ প্রকম্পিত হবে প্রবলভাবে।
১০) وَتَسِيرُ الْجِبَالُ سَيْرًا
এবং পর্বতমালা হবে চলমান,
১১) فَوَيْلٌ يَوْمَئِذٍ لِلْمُكَذِّبِينَ
সেদিন মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে,
১২) الَّذِينَ هُمْ فِي خَوْضٍ يَلْعَبُونَ
যারা ক্রীড়াচ্ছলে মিছেমিছি কথা বানায়।
১৩) يَوْمَ يُدَعُّونَ إِلَى نَارِ جَهَنَّمَ دَعًّا
সেদিন তোমাদেরকে জাহান্নামের অগ্নির দিকে ধাক্কা মেরে মেরে নিয়ে যাওয়া হবে।
১৪) هَذِهِ النَّارُ الَّتِي كُنتُم بِهَا تُكَذِّبُونَ
এবং বলা হবেঃ এই সেই অগ্নি, যাকে তোমরা মিথ্যা বলতে,
১৫) أَفَسِحْرٌ هَذَا أَمْ أَنتُمْ لَا تُبْصِرُونَ
এটা কি জাদু, না তোমরা চোখে দেখছ না?
১৬) اصْلَوْهَا فَاصْبِرُوا أَوْ لَا تَصْبِرُوا سَوَاء عَلَيْكُمْ إِنَّمَا تُجْزَوْنَ مَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
এতে প্রবেশ কর অতঃপর তোমরা সবর কর অথবা না কর, উভয়ই তোমাদের জন্য সমান। তোমরা যা করতে তোমাদেরকে কেবল তারই প্রতিফল দেয়া হবে।
১৭) إِنَّ الْمُتَّقِينَ فِي جَنَّاتٍ وَنَعِيمٍ
নিশ্চয় খোদাভীরুরা থাকবে জান্নাতে ও নেয়ামতে।
১৮) فَاكِهِينَ بِمَا آتَاهُمْ رَبُّهُمْ وَوَقَاهُمْ رَبُّهُمْ عَذَابَ الْجَحِيمِ
তারা উপভোগ করবে যা তাদের পালনকর্তা তাদের দেবেন এবং তিনি জাহান্নামের আযাব থেকে তাদেরকে রক্ষা করবেন।
১৯) كُلُوا وَاشْرَبُوا هَنِيئًا بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
তাদেরকে বলা হবেঃ তোমরা যা করতে তার প্রতিফলস্বরূপ তোমরা তৃপ্ত হয়ে পানাহার কর।
২০) مُتَّكِئِينَ عَلَى سُرُرٍ مَّصْفُوفَةٍ وَزَوَّجْنَاهُم بِحُورٍ عِينٍ
তারা শ্রেণীবদ্ধ সিংহাসনে হেলান দিয়ে বসবে। আমি তাদেরকে আয়তলোচনা হুরদের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ করে দেব।
২১) وَالَّذِينَ آمَنُوا وَاتَّبَعَتْهُمْ ذُرِّيَّتُهُم بِإِيمَانٍ أَلْحَقْنَا بِهِمْ ذُرِّيَّتَهُمْ وَمَا أَلَتْنَاهُم مِّنْ عَمَلِهِم مِّن شَيْءٍ كُلُّ امْرِئٍ بِمَا كَسَبَ رَهِينٌ
যারা ঈমানদার এবং যাদের সন্তানরা ঈমানে তাদের অনুগামী, আমি তাদেরকে তাদের পিতৃপুরুষদের সাথে মিলিত করে দেব এবং তাদের আমল বিন্দুমাত্রও হ্রাস করব না। প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ কৃত কর্মের জন্য দায়ী।
২২) وَأَمْدَدْنَاهُم بِفَاكِهَةٍ وَلَحْمٍ مِّمَّا يَشْتَهُونَ
আমি তাদেরকে দেব ফল-মূল এবং মাংস যা তারা চাইবে।
২৩) يَتَنَازَعُونَ فِيهَا كَأْسًا لَّا لَغْوٌ فِيهَا وَلَا تَأْثِيمٌ
সেখানে তারা একে অপরকে পানপাত্র দেবে; যাতে অসার বকাবকি নেই এবং পাপকর্মও নেই।
২৪) وَيَطُوفُ عَلَيْهِمْ غِلْمَانٌ لَّهُمْ كَأَنَّهُمْ لُؤْلُؤٌ مَّكْنُونٌ
সুরক্ষিত মোতিসদৃশ কিশোররা তাদের সেবায় ঘুরাফেরা করবে।
২৫) وَأَقْبَلَ بَعْضُهُمْ عَلَى بَعْضٍ يَتَسَاءلُونَ
তারা একে অপরের দিকে মুখ করে জিজ্ঞাসাবাদ করবে।
২৬) قَالُوا إِنَّا كُنَّا قَبْلُ فِي أَهْلِنَا مُشْفِقِينَ
তারা বলবেঃ আমরা ইতিপূর্বে নিজেদের বাসগৃহে ভীত-কম্পিত ছিলাম।
২৭) فَمَنَّ اللَّهُ عَلَيْنَا وَوَقَانَا عَذَابَ السَّمُومِ
অতঃপর আল্লাহ আমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন এবং আমাদেরকে আগুনের শাস্তি থেকে রক্ষা করেছেন।
২৮) إِنَّا كُنَّا مِن قَبْلُ نَدْعُوهُ إِنَّهُ هُوَ الْبَرُّ الرَّحِيمُ
আমরা পূর্বেও আল্লাহকে ডাকতাম। তিনি সৌজন্যশীল, পরম দয়ালু।
২৯) فَذَكِّرْ فَمَا أَنتَ بِنِعْمَتِ رَبِّكَ بِكَاهِنٍ وَلَا مَجْنُونٍ
অতএব, আপনি উপদেশ দান করুন। আপনার পালনকর্তার কৃপায় আপনি অতীন্দ্রিয়বাদী নন এবং উম্মাদও নন।
৩০) أَمْ يَقُولُونَ شَاعِرٌ نَّتَرَبَّصُ بِهِ رَيْبَ الْمَنُونِ
তারা কি বলতে চায়ঃ সে একজন কবি আমরা তার মৃত্যু-দুর্ঘটনার প্রতীক্ষা করছি।
৩১) قُلْ تَرَبَّصُوا فَإِنِّي مَعَكُم مِّنَ الْمُتَرَبِّصِينَ
বলুনঃ তোমরা প্রতীক্ষা কর, আমিও তোমাদের সাথে প্রতীক্ষারত আছি।
৩২) أَمْ تَأْمُرُهُمْ أَحْلَامُهُم بِهَذَا أَمْ هُمْ قَوْمٌ طَاغُونَ
তাদের বুদ্ধি কি এ বিষয়ে তাদেরকে আদেশ করে, না তারা সীমালংঘনকারী সম্প্রদায়?
৩৩) أَمْ يَقُولُونَ تَقَوَّلَهُ بَل لَّا يُؤْمِنُونَ
না তারা বলেঃ এই কোরআন সে নিজে রচনা করেছে? বরং তারা অবিশ্বাসী।
৩৪) فَلْيَأْتُوا بِحَدِيثٍ مِّثْلِهِ إِن كَانُوا صَادِقِينَ
যদি তারা সত্যবাদী হয়ে থাকে, তবেএর অনুরূপ কোন রচনা উপস্থিত করুক।
৩৫) أَمْ خُلِقُوا مِنْ غَيْرِ شَيْءٍ أَمْ هُمُ الْخَالِقُونَ
তারা কি আপনা-আপনিই সৃজিত হয়ে গেছে, না তারা নিজেরাই স্রষ্টা?
৩৬) أَمْ خَلَقُوا السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ بَل لَّا يُوقِنُونَ
না তারা নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল সৃষ্টি করেছে? বরং তারা বিশ্বাস করে না।
৩৭) أَمْ عِندَهُمْ خَزَائِنُ رَبِّكَ أَمْ هُمُ الْمُصَيْطِرُونَ
তাদের কাছে কি আপনার পালনকর্তার ভান্ডার রয়েছে, না তারাই সবকিছুর তত্ত্বাবধায়ক?
৩৮) أَمْ لَهُمْ سُلَّمٌ يَسْتَمِعُونَ فِيهِ فَلْيَأْتِ مُسْتَمِعُهُم بِسُلْطَانٍ مُّبِينٍ
না তাদের কোন সিঁড়ি আছে, যাতে আরোহণ করে তারা শ্রবণ করে? থাকলে তাদের শ্রোতা সুস্পষ্ট প্রমাণ উপস্থিত করুক।
৩৯) أَمْ لَهُ الْبَنَاتُ وَلَكُمُ الْبَنُونَ
না তার কন্যা-সন্তান আছে আর তোমাদের আছে পুত্রসন্তান?
৪০) أَمْ تَسْأَلُهُمْ أَجْرًا فَهُم مِّن مَّغْرَمٍ مُّثْقَلُونَ
না আপনি তাদের কাছে পারিশ্রমিক চান যে, তাদের উপর জরিমানার বোঝা চেপে বসে?
৪১) أَمْ عِندَهُمُ الْغَيْبُ فَهُمْ يَكْتُبُونَ
না তাদের কাছে অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান আছে যে, তারাই তা লিপিবদ্ধ করে?
৪২) أَمْ يُرِيدُونَ كَيْدًا فَالَّذِينَ كَفَرُوا هُمُ الْمَكِيدُونَ
না তারা চক্রান্ত করতে চায়? অতএব যারা কাফের, তারই চক্রান্তের শিকার হবে।
৪৩) أَمْ لَهُمْ إِلَهٌ غَيْرُ اللَّهِ سُبْحَانَ اللَّهِ عَمَّا يُشْرِكُونَ
না তাদের আল্লাহ তা’আলা ব্যতীত কোন উপাস্য আছে? তারা যাকে শরীক করে, আল্লাহ তা’আলা তা থেকে পবিত্র।
৪৪) وَإِن يَرَوْا كِسْفًا مِّنَ السَّمَاء سَاقِطًا يَقُولُوا سَحَابٌ مَّرْكُومٌ
তারা যদি আকাশের কোন খন্ডকে পতিত হতে দেখে, তবে বলে এটা তো পুঞ্জীভুত মেঘ।
৪৫) فَذَرْهُمْ حَتَّى يُلَاقُوا يَوْمَهُمُ الَّذِي فِيهِ يُصْعَقُونَ
তাদেরকে ছেড়ে দিন সেদিন পর্যন্ত, যেদিন তাদের উপর বজ্রাঘাত পতিত হবে।
৪৬) يَوْمَ لَا يُغْنِي عَنْهُمْ كَيْدُهُمْ شَيْئًا وَلَا هُمْ يُنصَرُونَ
সেদিন তাদের চক্রান্ত তাদের কোন উপকারে আসবে না এবং তারা সাহায্যপ্রাপ্তও হবে না।
৪৭) وَإِنَّ لِلَّذِينَ ظَلَمُوا عَذَابًا دُونَ ذَلِكَ وَلَكِنَّ أَكْثَرَهُمْ لَا يَعْلَمُونَ
গোনাহগারদের জন্যে এছাড়া আরও শাস্তি রয়েছে, কিন্তু তাদের অধিকাংশই তা জানে না।
৪৮) وَاصْبِرْ لِحُكْمِ رَبِّكَ فَإِنَّكَ بِأَعْيُنِنَا وَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ حِينَ تَقُومُ
আপনি আপনার পালনকর্তার নির্দেশের অপেক্ষায় সবর করুন। আপনি আমার দৃষ্টির সামনে আছেন এবং আপনি আপনার পালনকর্তêার সপ্রশংস পবিত্রতা ঘোষণা করুন যখন আপনি গাত্রোত্থান করেন।
৪৯) وَمِنَ اللَّيْلِ فَسَبِّحْهُ وَإِدْبَارَ النُّجُومِ
এবং রাত্রির কিছু অংশে এবং তারকা অস্তমিত হওয়ার সময় তার পবিত্রতা ঘোষণা করুন।
তথ্যসূত্র
- "সূরার নামকরণ"। www.banglatafheem.com। তাফহীমুল কোরআন, ২০ অক্টোবর ২০১০। ১২ আগস্ট ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ : ২৬ জুলাই ২০১৫। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য)
বহিঃসংযোগ
- ডিজিটাল 'আল কোরআন' - ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ।
- কোরআন শরীফ.অর্গ।
![]() |
ইংরেজি ভাষার উইকিসংকলনে এই নিবন্ধ বা অনুচ্ছেদ সম্পর্কিত মৌলিক রচনা রয়েছে: |