অ্যাডিলি পেঙ্গুইন

অ্যাডিলি পেঙ্গুইন (Pygoscelis adeliae) হল পেঙ্গুইনের একপ্রকারের প্রজাতি, যারা প্রধানত অ্যান্টার্কটিকার উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাস করে। এরা সামুদ্রিক পাখিদের মধ্যে সবথেকে বেশি দক্ষিণে বসবাসকারী পাখি। অন্যান্য পাখিরা হল এম্পেরার পেঙ্গুইন, সাউথ পোলার স্কুয়া, উইলসনস স্ট্রম পেট্রেল, স্নো পেট্রেল, অ্যান্টার্কটিক পেট্রেল ইত্যাদি পাখিগুলোও এই দক্ষিণ প্রান্তেই বসবাস করে। ১৮৪০ সালে ফরাসি অনুসন্ধানকারী জুলেস দুমন্ত ডি উরভিল্লে প্রথম এদের নামকরণ করেন তার স্ত্রীয়ের নামে "অ্যাডিলি"।

অ্যাডিলি পেঙ্গুইন

প্রায়-বিপদগ্রস্ত  (আইইউসিএন ৩.১)[1]
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: Animalia
পর্ব: কর্ডাটা
শ্রেণী: পক্ষী
বর্গ: Sphenisciformes
পরিবার: Spheniscidae
গণ: Pygoscelis
দ্বিপদী নাম
Pygoscelis adeliae
(হোমবর্ন এবং জ্যাকুইনট, ১৮৪১)

শ্রেণীবিন্যাস

অ্যাডিলি পেঙ্গুইনরা হল Pygoscelis গণের অন্তর্ভুক্ত তিনটি প্রজাতির মধ্যে একটি। মাইটোকন্ড্রিয়া এবং নিউক্লিয়াস কোষ গবেষণার মাধ্যমে জানা গেছে যে এই প্রজাতিটি ৩৮ মিলিয়ন বছর আগে অন্যান্য প্রজাতিদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে। প্রায় পুর্বপুরুষ Aptenodytes দের ২ মিলিয়ন বছর পরে। অ্যাডিলি পেঙ্গুইন ১৯ মিলিয়ন বছর আগে অন্যান্য প্রজাতিদের থেকে আলাদা হয়ে যায়।[2]

বিতরণ ও বাসস্থান

এখনও পর্যন্ত অনুমান করা হয় যে অ্যাডিলি পেঙ্গুইনদের এখনও ২.৪-৩.২ মিলিয়ন জোড়া পৃথিবীতে বসবাস করে। বেশিরভাগরাই অ্যান্টার্কটিকার উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাস করে। যদিও কিছু অংশ অ্যান্টার্কটিকা পেনিনসুলা অঞ্চলে প্রজনন করে। প্রজনন মরসুমের সময় তারা বড় প্রজনন উপনিবেশের মধ্যে সমবেত হয়, এক মিলিয়ন জোড়ার এক চতুর্থাংশ।[3] স্বতন্ত্র উপনিবেশের আকার নাটকীয়ভাবে পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, এবং কিছুটা অংশ জলবায়ুর অস্থিরতার বিশেষ প্রবণও হতে পারে।[4]

অ্যাডিলি পেঙ্গুইন অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারী সময় পর্যন্ত বংশবৃদ্ধি করে অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশের বিভিন্ন উপকূলীয় অঞ্চলে। এরা পাথর দিয়ে এবড়ো-খেবড়ো বাসা বানায়। এরা দুটি ডিম পারে যা ৩২ থেকে ৩৪ দিন পর্যন্ত তা দেয়। পেঙ্গুইনদের সম্মেলনে যোগদান করবার আগে পর্যন্ত বাচ্চারা ২২ দিন বাসায় থাকে। প্রাপ্তবয়স্ক পেঙ্গুইনরা তাদের সেখানে আগলে রাখে। বাচ্চারা বড় হবার পরেই ৫০-৬০ দিন পরে সমুদ্রে নামে।

বর্ণনা

এই পেঙ্গুইনদের আকার মাঝারি রকমের। ৪৬ থেকে ৭৫ সেমি (১৮-৩০ ইঞ্চি) লম্বা হয় এবং এদের ওজন হয় ৩.৬-৬ কেজি (৭.৯-১৩.২ পাউন্ড)। [5][6] এদের স্বাতন্ত্র্য্যসূচক চিহ্ন চোখের পার্শ্ববর্তী সাদা রিং এবং ঠোঁটের নিচে পালক। এই দীর্ঘ পালক তাদের ঠোটের প্রায় পুরোটা অংশই ঢেকে দেয়। এদের লেজ অন্যান্য পেঙ্গুইনদের তুলনায় লম্বা হয়। এদের দেখতে অনেকটা "টেক্সুডো" এর মতোন হয় (টেক্সুডো হল আমেরিকান ডিনার জ্যাকেট)। অন্যান্য পেঙ্গুইন প্রজাতির থেকে এরা আয়তনে একটু ছোট হয়। তাদের কালো চেহারা এবং সাদা পেট বেশিরভাগ পেঙ্গুইন কার্টুন ছবির নিকটস্থ হয়।

অ্যাডিলি পেঙ্গুইন ঘন্টায় ৪৫ মাইল (৭২ কিলোমিটার/ঘন্টা) সাঁতার কাটতে পারে। এরা প্রধানত চিতাবাঘ সীল, স্কুয়া, হত্যাকারী তিমি এদের দ্বারাই শিকার হয়।

তথ্যসূত্র

  1. BirdLife International (২০১২)। "Pygoscelis adeliae"বিপদগ্রস্ত প্রজাতির আইইউসিএন লাল তালিকা। সংস্করণ 2013.2প্রকৃতি সংরক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন। সংগ্রহের তারিখ ২৬ নভেম্বর ২০১৩
  2. Baker AJ, Pereira SL, Haddrath OP, Edge KA (২০০৬)। "Multiple gene evidence for expansion of extant penguins out of Antarctica due to global cooling"Proc Biol Sci.273 (1582): 11–17। doi:10.1098/rspb.2005.3260। PMID 16519228পিএমসি 1560011
  3. দৃষ্টি আকর্ষণ: এই টেমপ্লেটি ({{cite doi}}) অবচিত। doi দ্বারা চিহ্নিত প্রকাশনা উদ্ধৃত করার জন্য:10.1016/j.rse.2013.08.009, এর পরিবর্তে দয়া করে |doi=10.1016/j.rse.2013.08.009 সহ {{সাময়িকী উদ্ধৃতি}} ব্যবহার করুন।
  4. "Climate change winners and losers"3 News NZ। এপ্রিল ৪, ২০১৩। ২ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ এপ্রিল ২০১৪
  5. "Adélie penguin (Pygoscelis adeliae)"। ARKive। ৫ নভেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ নভেম্বর ২০১১
  6. "Adélie Penguin"Sea World। ২১ নভেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ ডিসেম্বর ২০১১

বহির্সংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.