অজি অসবর্ন
জন মাইকেল "অজি" অসবর্ন (জন্ম ৩রা ডিসেম্বর, ১৯৪৮ সাল) একজন গ্র্যামি এ্যাওয়ার্ড জয়ী ইংরেজ গায়ক, গান রচয়িতা যার ক্যারিয়ার দীর্ঘ ৪০ বছর সময় পার করছে।
অজি অসবর্ন | |
---|---|
![]() অজি অসবর্ন ২০১০ সালে | |
প্রাথমিক তথ্য | |
জন্ম নাম | জন মাইকেল অসবর্ন |
ধরন | হেভি মেটাল, হার্ডরক |
পেশা | সঙ্গীতশিল্পী, গানের কথা লেখক |
বাদ্যযন্ত্রসমূহ | ভোকাল, হারমোনিকা,কি-বোর্ড |
কার্যকাল | ১৯৬৬-বর্তমান |
লেবেল | এপিক রেকর্ডস, কলম্বিয়া রেকর্ডস, জেট রেকর্ডস |
সহযোগী শিল্পী | ব্ল্যাক সাবাথ, কেলি অসবর্ন, ব্ল্যাক লেবেল সোসাইটি, ফায়ারউইন্ড |
ওয়েবসাইট | Official website |
অসবর্ন প্রাথমিকভাবে বিখ্যাত হয়ে ওঠেন হেভি মেটাল ধারার অগ্রবর্তী একটি ব্যান্ড ব্ল্যাক সাবাথের মূল গায়ক ও গান রচয়িতা হিসেবে, যাদের কর্ম ছিল সতিকারভাবেই ভিন্ন ধাঁচের ও গভীর। পরবর্তীকালে তার একক ক্যারিয়ারেও তিনি মাল্টি-প্লাটিনাম মর্যাদা পান।[1] এসব কিছু তার নাম বানিয়ে দেয় গডফাদার অব হেভি মেটাল।[2] তাদের ব্যান্ডের গাঢ় ধাচের গান তার নাম বানিয়ে দেয় প্রিন্স অব ডার্কনেস।[3] তার ১৫ টিরও বেশি উল্কি আছে সারা শরীরে, তাদের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত হলো তার বাম হাতের আংগুলের গাটে অজি লেখাটা। তার টিনএজ বয়সে তিনি প্রথম নিজেই তার প্রথম উল্কি আকেন সুঁই এবং পেন্সিলের সীসার সাহায্যে।[4]
২০০০ সহস্রাব্দের প্রথম দিকে তার ক্যারিয়ার পরিবর্ধিত হয় তার নিজের রিয়েলিটি শো দ্যা অজবর্নসের মাধ্যমে যেখানে তার বাচ্চারা ও তার স্ত্রী অংশ নিত। একক ক্যারিয়ারে তার সারা বিশ্বে ৩৫ মিলিয়নেরও বেশি অ্যালবাম বিক্রি হয়। অসবর্ন এখন তার সর্বশেষ অ্যালবাম স্ক্রিমের প্রচারণায় সারা বিশ্বে সফর করছে যা ২০১০ সালের ২২শে জুন মুক্তি পায়।[5]
প্রাথমিক জীবন
অজি অসবর্ন, ১৯৪৮ সালের ৩রা ডিসেম্বর, ইংল্যান্ডের বামিংহামের এস্টনে জন্ম গ্রহণ করেন। তার বাবা জ্যাক যন্ত্রাংশ কারিগর হিসেবে কাজ করত কারখানায়। তার ছিল ৬ ভাইবোন এবং তারা মাত্র ২টি ছোট বেডরূম বিশিষ্ট বাসায় বাস করত। ডাইস্লেক্সিয়া রোগের তিনি অল্প বয়সেই আক্রান্ত হন ও অন্যান্য প্রতিবন্ধকতায় আক্রান্ত হন। বিদ্যালয়ের শাস্তি তার কিশোর জীবনকে কঠিন করে তোলে ও মাত্র ১৫ বছর বয়সে তিনি বিদ্যালয় ত্যাগ করেন। দ্যা বিটলস ব্যান্ডের ভক্ত হয়ে ওঠেন তিনি মাত্র ১৪ বছর বয়সে।[4][6] তিনি তারপর নির্মাণ শ্রমিক, কসাইখানার কর্মী, পানির পাইপ বসানোর কর্মী ও মোটর গাড়ির কারখানায় হর্ন মেরামতের মিস্ত্রি হিসেবেও কাজ করেন।[4] তিনি কারাগারে ৬ সপ্তাহ কাটান একটি কাপড়ের দোকানের দরজা ভেঙ্গে চুরির প্রেক্ষিতে জরিমানা দিতে ব্যর্থ হয়ে।[4]
১৯৬৭ সালের শেষের দিকে গিজ বাটলার তার প্রথম ব্যান্ড রেয়ার ব্রীড গঠন করেন অজি অসবর্নকে সাথে নিয়ে। দু’টি শো এর পরই ব্যান্ডটি ভেঙ্গে যায়। বাটলার এবং অজি আবার একত্রিত হন গিটারিস্ট টনি ইয়োম্মি এবং ড্রামার বিল ওয়ার্ডকে সাথে নিয়ে পলকা টাল্ক ব্লুজ ব্যান্ড গঠন করে। তারা তাদের নাম পরিবর্তন করে আর্থ নামে, কিন্তু এই নামে আরও একটি ব্যান্ড থাকায় তারা তাদের নাম শেষ পর্যন্ত রাখে ব্ল্যাক সাবাথ নামে। তারা আবিষ্কার করেন যে মানুষ ভয় পেতে কতটা পছন্দ করে ও প্রভাবিত হয়। তারা থিক করেন ভারী ব্লুজ ধাচের গান তারা করবেন মেঘলা শব্দ ও লিরিক দিয়ে। একটা দুর্গে তাদের প্রথম অ্যালবাম রেকর্ডের সময় গিজার গুপ্তবিদ্যা ওপর একটি বই পড়েন ও রাতে একটি কালো ছায়ামূর্তির তার বিছানার শেষে এমন একটা দুঃস্বপ্ন দেখেন। বাটলার এই স্বপ্নের কথা অসবর্নকে বলেন ও তারা একসাথে ব্ল্যাক সাবাথ গানের কথা লিখেন। ওয়ার্নার ব্রস. রেকর্ডসের অল্প পরিমাণের বিনিয়োগ ছাড়া তাদের ব্যান্ডটি মসৃণ গতির সাফল্যই লাভ করে।
সঙ্গীত যাত্রা
১৯৭৮ সালে অজি অসবর্ন ৩ মাসের জন্য ব্যান্ডটি ত্যাগ করেন ব্লিজার্ড অব অজ নামে সলো প্রজেক্ট শুরু করার জন্য।[7] ১৯৭৮ সালে তারা ভ্যান হেলেন ব্যান্ডের সাথে কনসার্ট করেন যেখানে তাদের পরিবেশনা সমালোচকদের কাছে পরিশ্রান্ত ও অণুপ্রেরণা বিহীন বলে মনে হয়েছে যেখানে ভ্যান হেলেনের পরিবেশনা ছিল তারুণ্যদীপ্ত। ইয়োম্মি ও অজি অসবর্ন দ্বন্ধ অনেক পুরোন ছিল। তাদের একমাত্র বোঝাপড়া ছিল যখন অজি বারবার তার কন্ঠ ধারণের জন্য ইয়োম্মিকে বলত ও ইয়োম্মি বারবার যত্নের সাথে তা করত। তার বিরুদ্ধে উশৃংখলার অভিযোগ এনে গিজার ও বিল ওয়ার্ডের সমর্থনের মাধ্যমে টনি তাকে দল থেকে বহিঃস্কার করে। অসবর্ন বলেন যে তার ড্রাগ ও অ্যালকোহলের ব্যবহার ব্যান্ডের অন্যান্য সদস্যদের চেয়ে বেশিও ছিল না আবার কমও ছিল না। সাবেক রেইনবো ব্যান্ডের গায়ক রনি জেমস ডিও তখন ব্ল্যাক সাবাথে যোগ দেন।[8] ১৯৮০ সালে ড্রামার বিল ওয়ার্ড ব্ল্যাক সাবাথে থেকে বহিঃস্কৃত হন। তিনি অতিরিক্ত মাতলামির কারণে বাদ পড়েন। ওয়ার্ড পরে বলেনঃ আমি ছিলাম অবিশ্বাস্য ককমের মাতাল। দিনের মধ্যে ২৪ ঘন্টাই আমি মদে ডুবে থাকতাম। যখন আমি মঞ্চে উঠলাম তখন সবকিছু উজ্জ্বল ছিল না।আমি অনুভব করছিলাম যে আমি মরে যাচ্ছি ভেতরে ভেতরে।

১৯৮০ সালে শ্যারন অসবোর্নের তত্ত্বাবধানে অজি অসবর্ন দ্যা ব্লিজার্ড অব অজ ব্যান্ডটি গড়ে তোলেন। তাদের প্রথম অ্যালবাম ব্লিজার্ড অব অজ ভালো বিক্রি হয় মেটাল ভক্তদের মাঝে। ১৯৯৪ সালে অজি অসবর্ন গ্র্যামি এ্যাওয়ার্ড জেতেন বেস্ট মেটাল পারফরম্যান্সের জন্য।[9] এন এম ই পুরস্কার ‘গড লাইক জিনিয়াস’ তিনি জেতেন ২০০৪ সালে। ২০০৮ সালে সন্মানজনক লিভিং লিজেন্ড পুরস্কার জেতেন তিনি। অসবর্ন একজন বিচারকও ছিলেন ৬ষ্ঠ ও ১০ম ইন্ডিপেন্ডেন্ট মিউজিক এডওয়ার্ডস প্রতিযোগিতার। অসবর্ন জীবনে ২ বার বিয়ে করেন। ১৯৯২ সালে নিউ ইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে বলেন যে অসবর্ন চার্চ অব ইংল্যান্ডের একজন সদস্য ও প্রতিটি শো-র আগে তিনি প্রার্থনা করেন।
তার ক্যারিয়ারের প্রথম দিকে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তিনি তার গানের মাধ্যমে টিন এজারদের স্যাটানিজমের প্রতি উৎসাহিত করছেন। অনেকে তাকে গুপ্তবিদ্যা বিশেষজ্ঞ অ্যালিস্টার ক্রাউলির সাথে তুলনা করেন। অসবর্ন ও ক্রাউলির উভয়ই লজ্জাজনক এই উপাধি উপভোগ করেন।তবে অসবর্ন দৃঢ়ভাবে এই অভিযোগ প্রত্যাখান করেছেন। অনেক সমালোচক এই দু’জনকে এ্যান্টি ক্রিস্টিয়ান বলে অভিযুক্ত করেন।
আসবর্ন ১৯৮২ সালে তার স্ত্রীর পোশাক পরিধান করেন যেহেতু সে এটা লুকিয়ে রেখেছিল, তারপর মাতাল অবস্থায় শহীদদের স্বরণে একটি স্মৃতিস্তম্ভে মূত্রত্যাগ করেন। একজন পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেন এবং সান এন্টেনিও শহরে তাকে এক দশকের জন্য নিষিদ্ধ করে হয়। ২০১০ সালে একজন বিজ্ঞানী কনোমি ঘোষণা দেন যে তিনি অজি অসবর্নের জিনোম সিকোয়েন্স উৎঘাটন করবেন এটা জানার জন্য যে তিনি কিভাবে এত বছর এত ড্রাগ নেওয়ার পরও বেঁচে আছেন।
তথ্যসূত্র
- Mick Wall (১৯৮৬)। Diary of a Madman – The Official Biography। Zomba Books।
- "Ozzy Osbourne: the Godfather of Metal"। NY Rock। জুন ২০০২। ৩১ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ ডিসেম্বর ২০০৯। Authors list-এ
|প্রথমাংশ1=
এর|শেষাংশ1=
নেই (সাহায্য) - wiki (১৭ মে ২০০৮)। "Ozzy Osbourne"। GuitarMasterClass.net (wiki)। online। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মে ২০০৮।
- Sue Crawford (2003),"Ozzy Unauthorized" আইএসবিএন ৯৭৮-১-৮৪৩১৭-০১৬-৭
- "Ozzy Osbourne tour"। ১৫ জুলাই ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুলাই ২০১০।
- Johnson, Ross (January 2005). "What I've Learned: Ozzy Osbourne" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৪ ডিসেম্বর ২০০৯ তারিখে. Esquire (magazine). Retrieved 17 February 2008.
- Pete Sarfas (Taken from the CD reissue of “Orexis Of Death plus...”) (AACD 051), March 2005। "Necromandus"। alexgitlin.com।
- Ruhlmann, William (2003). "Black Sabbath – Biography". Allmusic. Retrieved 17 February 2008.
- "AllMusic No More Tears-awards"। সংগ্রহের তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০০৯।