ঝিল শিংঘি
ঝিল শিংঘি (বৈজ্ঞানিক নাম: Heteropneustes fossilis) (ইংরেজি: Asian stinging catfish বা fossil cat) হচ্ছে Heteropneustidae পরিবারের Heteropneustes গণের একটি স্বাদুপানির মাছ।
ঝিল শিংঘি Heteropneustes fossilis | |
---|---|
![]() | |
![]() | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | Animalia |
পর্ব: | Chordata |
শ্রেণী: | Actinopterygii |
বর্গ: | Siluriformes |
পরিবার: | Heteropneustidae |
গণ: | Heteropneustes |
প্রজাতি: | H. fossilis |
দ্বিপদী নাম | |
Heteropneustes fossilis (Bloch, 1794) | |
বর্ণনা
ঝিল শিংঘির দেহ লম্বা, শ্রোণীপাখনা পর্যন্ত প্রায় চোঙাকৃতির কিন্তু পিছনে চাপা। এদের মাথা অবনমিত, পৃষ্ঠভাগ এবং পার্শ্বদিকে অস্থিগঠিত পিট দ্বারা আবৃত। অক্সিপিটাল প্রসেস পৃষ্ঠপাখনার গোড়া পর্যন্ত বিস্তৃত নয়। মুখ ছোট এবং প্রান্তীয়; চোয়ালের দাঁত ভিলি আকৃতির যা সারিব্দধভাবে অবস্থান করে। জিহ্বাটি মুখের তালুতে প্রায় সম্পূর্ণভাবে আটকে থাকে। ৪ জোড়া সুগঠিত স্পর্শী বিদ্যমান। এই মাছ প্রায় ৩০ সেমি পর্যন্ত লম্বা হয়।
পৃষ্ঠপাখনা খাটো, সাধারণত বক্ষপাখনা শীর্ষের উপর থেকে আরম্ভ হয়। বক্ষপাখনা শক্তিশালী কাঁটাযুক্ত যার অন্তঃস্থ কিনারা করাতের ন্যায় ধারালো এবং সামনের কিনারায় অল্প সংখ্যক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দাঁত থাকে। পায়ুপাখনার গোড়া দীর্ঘ, একটি সুস্পষ্ট খাঁজ দ্বারা পুচ্ছপাখনা থেকে পৃথক। এদের পুচ্ছপাখনা গোলাকার। এই মাছের উল্লেখযোগ্য অঙ্গ সংস্থানিক বৈশিষ্ট্য হলো, এদের কশেরুকার উভয় পার্শ্বে এক জোড়া দীর্ঘ ফাঁপা বায়ুথলি থাকে। এরা প্রায় ৪২,০০০ থেকে ১৫,৭৫০টি ডিম দেয়। নিষিক্ত ডিমগুলো আঠালো, তলদেশে থাকে, গোলাকৃতির এবং সবুজ বর্ণের।[1]
স্বভাব ও আবাসস্থল
ঝিল শিংঘি তলদেশবাসী এবং সর্বভুক প্রকৃতির শিকারি মাছ। তলদেশের কাছাকাছি ঝাঁক বেঁধে বাস করে। শুষ্ক মৌসুমে এরা সাধারণত অর্ধতরল ও অর্ধ শুষ্ক কাদায় বাস করে। এমনকি এরা যখন মাঠঘাট শুকিয়ে যায় তখন এরা মাটির ফাটল বা ছিদ্র দিয়ে বেরিয়ে আসে। বর্ষার শুরুতে বদ্ধ জলাশয়ে এদের প্রজনন ঘটে।[1]
বিস্তৃতি
ঝিল শিংঘি বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার, থাইল্যান্ড ও লাওসের স্থির পানির জলাশয়ে এরা ব্যাপকভাবে বিস্তৃত। তবে ঈষৎ লবণাক্ত পানিতে বিরল।[1]
অর্থনৈতিক গুরুত্ব
বাণিজ্যিকভাবে এই মাছ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ মৎস্য সম্পদে ঝিল শিংঘির অবদান অনেক।[1]
বাংলাদেশে বর্তমান অবস্থা এবং সংরক্ষণ
আইইউসিএন বাংলাদেশ (২০০০) এর লাল তালিকা অনুযায়ী এই প্রজাতিটি এখনও হুমকির সম্মুখীন নয়। প্রায় সহজেই পাওয়া যায়, তবে প্রকৃতিতে এর সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে।[1]
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
- সাহা, বিমল কান্ত (অক্টোবর ২০০৯)। "স্বাদুপানির মাছ"। আহমেদ, জিয়া উদ্দিন; আবু তৈয়ব, আবু আহমদ; হুমায়ুন কবির, সৈয়দ মোহাম্মদ; আহমাদ, মোনাওয়ার। বাংলাদেশ উদ্ভিদ ও প্রাণী জ্ঞানকোষ। ২৩ (১ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। পৃষ্ঠা ১৯৩–১৯৪। আইএসবিএন 984-30000-0286-0
|আইএসবিএন=
এর মান পরীক্ষা করুন: invalid prefix (সাহায্য)।