ধর্মসাগর
ধর্মসাগর বাংলাদেশের কুমিল্লা শহরে অবস্থিত একটি বিশাল জলাধার। এটি একটি প্রাচীন দিঘি। এটি কুমিল্লা শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। ধর্মসাগরের আয়তন ২৩.১৮ একর।
ধর্মসাগর | |
---|---|
স্থানাঙ্ক | ২৩°২৭′৫২″ উত্তর ৯১°১০′৪৬″ পূর্ব |
ধরন | কৃত্রিম জলাশয় |
অববাহিকার দেশসমূহ | বাংলাদেশ |
পৃষ্ঠতল অঞ্চল | ২৩.১৮ একর (৯.৩৮ হেক্টর) |
জনবসতি | কুমিল্লা |
ইতিহাস
.jpg)
ত্রিপুরার অধিপতি মহারাজা প্রথম ধর্মমাণিক্য ১৪৫৮ সালে ধর্মসাগর খনন করেন।[1] এই অঞ্চলের মানুষের জলের কষ্ট নিবারণ করাই ছিল রাজার মূল উদ্দেশ্য।রাজমালা গ্রন্থ আনুসারে মহারাজা সুদীর্ঘ ৩২ বৎসর রাজত্ব করেন (১৪৩১-৬২ খ্রি:)।[2] মহারাজা ধর্মমাণিক্যের নামানুসারে এর নাম রাখা হয় ধর্মসাগর। ধর্মসাগর নিয়ে ছড়িয়ে রয়েছে বহু উপাখ্যান ও উপকথা।
তাম্রলিপি
ধর্মসাগর উৎসর্গের সময় যে তাম্রলিপি প্রদান করা হয় তা নিন্মরূপ:-
- “চন্দ্র বংশেতে মহামাণিক্য নৃপবর, তানপুত্র শ্রী ধর্মমাণিক্য শশধর।
- তেরশ আশিশতকে সোমবার দিনে, শুক্লপক্ষ এয়োদশী মেষ সংক্রমনে।।
- তাম্রপত্রে লিখি দিলাম এসব বচন, আমা বংশ মারি যে বা হয় রাজন।
- তাহার দাসের দাস হইবেক আমি, আমা কীর্তি ব্রক্ষাবৃত্তি না লঙ্ঘিত তুমি।।”
- …(রাজমালা দ্বিতীয় লহর ৩য় পৃষ্ঠা)।[2]
তাম্রলিপির মর্ম
- “চন্দ্র বংশোদ্ভব মহা মাণিক্যের সুধীপুত্র শশধর সদৃশ শ্রী শ্রী ধর্ম মাণিক্য ১৩৮০ মেষ সংক্রমনে (চৈত্র মাসের শেষ তারিখে) সোমবার শুক্ল এয়োদশী তিথিতে কৌতুকাদি তাষ্ট বিপ্রকে শষ্য-সমন্বিত ফল ও বৃক্ষাদি পূর্ণ উনত্রিশ দ্রোণ ভূমি দান করিলেন। আমার বংশ বিলুপ্ত হইলে যদি এই রাজ্য অন্যকোন ভূপতির হস্তগত হয়। তিনি এই বৃহ্মবৃত্তি লোপ না করিলে আমি তাহার দাসানুদাস হইব।”[2]
বর্তমান অবস্থা
![]() |
উইকিমিডিয়া কমন্সে ধর্মসাগর সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে। |
বর্তমানে ধর্মসাগরের আয়তন ২৩:১৮ একর। এটির পূর্বে কুমিল্লা স্টেডিয়াম ও কুমিল্লা জিলা স্কুল, উত্তরাংশে সিটি কর্পোরেশনের উদ্যান ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় অবস্থিত। কুমিল্লার শহরবাসীর নিকট এই দীঘিটি একটি বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। এখানে অবকাশ উদযাপনের নিমিত্ত প্রতিদিন বিপুল জন সমাগম হয়ে থাকে। এছাড়া সারাদেশেই ধর্মসাগরের প্রসিদ্ধি রয়েছে।
ধর্মসাগরের উত্তর কোণে রয়েছে রাণীর কুঠির, পৌরপার্ক। পূর্ব দিকে কুমিল্লা স্টেডিয়াম আর পশ্চিম পাড়ে বসার ব্যবস্থা আছে। স্থানীয় অধিবাসী ছাড়াও পর্যটকের আগমন ঘটে। দিঘিপাড়ের সবুজ বড় বড় গাছের সারি ধর্মসাগরকে দিয়েছে ভিন্ন মাত্রা। তাছাড়াও শীতকালে ধর্মসাগরে প্রচুর অতিথি পাখির আগমন ঘটে। [3]

তথ্যসূত্র
- Molla, Md. Tuhin। "Dharmasagar"। Banglapedia। ১৩ জুলাই ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জুলাই ২০১৫।
- সরকার, তাপস চন্দ্র। "ধর্মমাণিক্য বাহাদুরের অমরকীর্তি গাঁথা কুমিল্লার ঐতিহাসিক ধর্মসাগর"। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০১৪।
- "কুমিল্লা ধর্মসাগরের ইতিকথা"।