হিলসবোরো দুর্ঘটনা

হিলসবোরো দুর্ঘটনা মানুষের পদপিষ্ট হওয়ার একটি দুর্ঘটনা যেটি সংঘটিত হয়েছিল ১৯৮৯ সালের ১৫ এপ্রিল ইংল্যান্ডের হিলসবোরো স্টেডিয়ামে একটি ফুটবল খেলার সময়। এ ঘটনায় ৯৬ জন দর্শক মারা যায়।

হিলসবোরো দুর্ঘটনা
হিলসবারোতে রাখা স্মরণিকা
তারিখ১৫ এপ্রিল ১৯৮৯
অবস্থানহিলসবারো স্টেডিয়াম
শেফিল্ড, ইংল্যান্ড
স্থানাঙ্ক৫৩.৪১১৫৪° উত্তর ১.৫০১৫৪° পশ্চিম / 53.41154; -1.50154
মৃত্যু৯৬ (১৫ এপ্রিলে ৯৪ জন)
আহত৭৬৬
তদন্তটেইলর রিপোর্ট (১৯৯০)
হিলসবারো নিরপেক্ষ কমিশন
তদন্তকারীডঃ স্টেফান পপার

ঘটনার তদন্ত কমিটি টেইলর রিপোর্ট প্রকাশ করে যাতে প্রধান কারণ হিসেবে পুলিশি নিয়ন্ত্রণের অভাবকেই দায়ী করা হয় যা ইংল্যান্ডের তৎকালীন অনেক স্টেডিয়ামের সমস্যা ছিল। এ ঘটনার পর ইংল্যান্ডের ফুটবল স্টেডিয়ামে ব্যাপক পরিবর্তন আসে।

দুর্ঘটনার বিবরণ

বড় কোন খেলার সময় প্রতিদ্বন্দী সমর্থকদের মধ্যে স্টেডিয়ামের বিভিন্ন অংশ ভাগ করে দেয়া হয়। সে অনুযায়ী খেলা শুরুর ১৫ মিনিট আগেই লিভারপুলের সমর্থকের লিপিংস লেন প্রান্তে বসার কথা ছিল। খেলা শুরু হবার কথা ছিল ৩:০০ টায়। ২.৩০ থেকে ২.৪০ এ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সমর্থক জড়ো হয় এবং সবাই স্টেডিয়ামে প্রবেশ করতে চেষ্টা করে। এ সময় প্রায় ৫০০০ সমর্থক মাঠের বাইরে উপস্থিত ছিল। পুলিশ জনতার এ ঢল সামাল দিতে বের হওয়ার জন্য নির্দেশিত গেট খুলে দেয়। ফলে জনতার ঢল নামে।

সরু প্রবেশ পথে হাজার হাজার সমর্থকের এ প্রবাহের ফলে দুর্ঘটনার সূত্রপাত হয়। জনতার ভীড়ে অস্বাভাবিক পরিস্থিতির উদ্রেক হয়। প্রান্তগুলোতে দর্শক ছিল কানায় কানায় পরিপূর্ণ। কিন্তু যে সমর্থকেরা প্রবেশ করছিলেন তারা এটা জানতেন না কারণ যে সমস্ত নিরাপত্তাকর্মী এ খবর জানাতেন তারা কোন কারনে সেখানে ছিলেন না।

কিছু সময় ধরে ভীড়ের সমস্যা কেবল আক্রান্ত দর্শক ছাড়া আর কেউ বুঝতে পারেননি। ইতোমধ্যে খেলা শুরু হয়ে গিয়েছিল। ৩.০৬ মিনিটে পুলিশের পরামর্শে রেফারি খেলা বন্ধ রাখেন। এ সময় দুর্ঘটনা এড়াতে অনেকে বেড়া বেয়ে উঠার চেষ্টা করেন। এসময় আরেকটি গেট খুলে দেয়া হয়। উপরের প্রান্তের দর্শকগণ নিচের প্রান্তের কিছু দর্শককে টেনে তুলেন।

সমর্থকেরা এত ভীড়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন যে অনেকে দাঁড়ানো অবস্থাতেই মারা যান। কিছুক্ষনের মধ্যে ভিড়ে পিষ্ট আক্রান্তের ভীড়ে মাঠ ভর্তি হয়ে যায়। অনেকে খুব ঘামছিলেন, অনেকে আহতদের সেবা করছিলেন আবার অনেকে মৃতদের নিয়ে বসেছিলেন। পুলিশের চরম অদক্ষতা প্রকাশ পায় এ দুর্ঘটনায়।

হতাহতের সংখ্যা

মোট ৯৪ জন ঘটনার দিন মারা যায়। ৭৬৬ জন আহত হয়। ঘটনার চার দিন পর ১৮ এপ্রিল ১৪-বছর বয়সী লি নিকোল হাসপাতালে মারা গেলে মৃতের সংখ্যা উন্নীত হয় ৯৫ জনে। চার বছর কোমায় থাকার পর ১৯৯৩ সালের মার্চ মাসে টনি ব্লান্ড মারা গেলে মৃতের সংখ্যা দাড়ায় ৯৬।

এদের স্মরণে হিলসবোরো স্টেডিয়ামে ১৯৯৯ সালে স্মরনিকা স্থাপন করা হয়েছে।

তথ্যসূত্র

    বহিঃসংযোগ

    This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.