হাজারদুয়ারি জমিদার বাড়ি

হাজারদুয়ারি জমিদার বাড়ি বাংলাদেশ এর রাজশাহী জেলার বাগমারা উপজেলার যোগীপাড়া ইউনিয়নে অবস্থিত এক ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি, যা মূলত বীরকুৎসা জমিদার বাড়ি বা বীরকুৎসা পরগণা নামে পরিচিত।[1]

হাজারদুয়ারি জমিদার বাড়ি
বিকল্প নামবীরকুৎসা জমিদার বাড়ি
বীরকুৎসা পরগণা
সাধারণ তথ্য
ধরনবাসস্থান
অবস্থানবাগমারা উপজেলা
শহরবাগমারা উপজেলা, রাজশাহী জেলা
দেশবাংলাদেশ
খোলা হয়েছেঅজানা
স্বত্বাধিকারীবীরেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায়
কারিগরী বিবরণ
পদার্থইট, সুরকি ও রড

অবস্থান

উপজেলা সদর ভবানীগঞ্জ থেকে ১৮ কিঃ দুরত্বে বাগমারা সীমানার শেষ প্রান্তে যোগীপাড়া ইউনিয়নের বীরকুৎসা গ্রাম অবস্থিত। নাটোর-সান্তাহার রেলপথের পাশে ৫০ বিঘা জমির উপর এই জমিদার বাড়ি অবস্থিত। বাড়িটির এক সময়ে হাজারটি দুয়ার ছিল বলে এর নামকরণ করা হয় হাজার দুয়ারী।[2]

ইতিহাস

নওগাঁ জেলার আমরুল ডিহির রাজা গোপাল ধাম তার মেয়ে প্রভাতী বালাকে ভারতের কাশী থেকে আসা বীরেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে বিয়ে দেন এবং তার অধীনস্ত এই বীরকুৎসা পরগণাটি মেয়ে প্রভাতী বালা ও জামাই বীরেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে লিখে দেন।[3] আর এই থেকেই এই জমিদার বাড়িটির জমিদারীর সূচনা হয়। ১৯৪৭ সালে বীরেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবার ভারতের হুগলী চন্দনগরে চলে গেলে পরবর্তীকালে এই বাড়িটি সরকারের দখলে চলে আসে।[4] তার ৫জন পুত্র ছিলেন। তারা হলেনঃ পরিমল, নির্মল, সুনীল, শ্যামল ও অমল। জমিদারের ১টি হাতী ও ৪টি লালবর্ণের ঘোড়া ছিল। হাতীতে চড়ে তিনি জমিদারী দেখাশুনা করতেন। জমিদারের ১৭টি নায়েব খাজনা আদায় ও হিসাব রাখতেন।[3]

অবকাঠামো

হাজারদুয়ারী জমিদার বাড়ির দরজাগুলো সেগুন কাঠের তৈরী এবং সুন্দর কারুকাজ করা ছিলো। দরজাগুলো ছিল তিনটি স্তরে সাজানো। প্রথমে কাঠ, তারপর লোহার গ্রিল, এরপরে তা দামি কাঁচে মোড়ানো ছিলো। বীরেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুই ভাই দুর্গা বাবু ও রমা বাবু এই প্রাসাদেই থাকতেন। প্রাসাদের সামনে বাহারি ফুলের বাগান ছিল। প্রাসাদের পশ্চিম দিকে খিড়কি দরজা পার হয়ে সান বাঁধানো একটি বিরাট পুকুর রয়েছে। এই পুকুরে শুধু জমিদার পরিবারই গোসল করত। প্রাসাদের ভেতরের এক পাশে ছিল জলসা ঘর। কলকাতা থেকে ভোলানাথ অপেরা এসে গান বাজনা করতো।[5] পূর্ব দিকের দেউড়ির দুই পাশে ছয় জন করে বারো জন বরকন্দাজ থাকত। দেউড়ির পাশে ছিল মালখানা। এর কিছু দূরে ছিল মহাফেজখানা। প্রাসাদের পূর্বের দেউড়ি পার হয়ে সামনে আরেকটি বড় পুকুর আছে, সেখানে গোসল করত আমলা, পেয়াদা ও বরকন্দাজরা। এই পুকুরটি এখন বেদখল হয়ে গেছে। বকুলতলার পাশে খাজনা আদায়ের ঘর ছিল, যা এখন বীরকুৎসা তহসিল অফিস নামে পরিচিত। এর পাশের পূজা মন্ডপটিতে বসানো হয়েছে পোস্ট অফিস।[3]

বর্তমান অবস্থা

বর্তমানে জমিদার বাড়ির ভৌত কাঠামো সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

তথ্যসূত্র

  1. হাজারদুয়ারি জমিদার বাড়ি!
  2. "বীরকুৎসা হাজার দুয়ারী জমিদারবাড়ী"The Daily Sangram। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-১৮
  3. "নিপুন হাতের কারুকাজ হাজার দুয়ারি জমিদার বাড়ি"প্রতিদিন নিউজ (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-১৮
  4. "ঐতিহ্য হারাচ্ছে হাজার দুয়ারি জমিদার বাড়ি : - Poriborton"www.poriborton.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-১৮
  5. admin। "ঐতিহ্য হারাচ্ছে বাগমারার হাজার দুয়ারী জমিদারবাড়ি" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-১৮
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.