হরি-হর যুদ্ধ

হরি-হর যুদ্ধ (অসমীয়া: হরি-হর যুদ্ধ) অসমে প্রচলিত এক কিংবদন্তি। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ও শিবের সহিত সংঘটিত যুদ্ধকে কেন্দ্র করে কাহিনীটি প্রচলিত। অসমের তেজপুর নগরের নামের উৎপত্তির জন্য এই প্রবাদ অধিক বিখ্যাত।

তেজপুরের অগ্নিগড়ে অবস্থিত হরি-হর যুদ্ধের বর্ণনাত্মক ভাস্কর্য

কিংবদন্তি

একসময় তেজপুরে বাণ নামক এক শিবভক্ত অসুর রাজা রাজত্ব করিতেন। বাণ রাজার কন্যা ঊষার সৌন্দর্য ছিল বিশ্ববিখ্যাত। সেইজন্য বাণ রাজা অগ্নিগড় নামক একটি অগ্নির দ্বারা আবৃত দুর্ভেদ্য দুর্গের ভিতরে ঊষাকে নিরাপদে রেখেছিলেন।


একদিন ঊষা স্বপ্নে এক সুদর্শন যুবককে দেখা পেয়ে প্রেমে পতিত হয়। প্রিয় সখী, চিত্রশিল্পী চিত্রলেখা ঊষার বর্ণনামতে রাজকুমার যুবকের চিত্র অঙ্কন করেন। অনুসন্ধান করে জানা যায় য়ে অঙ্কিত চিত্রটি বাণ রাজার শত্রু দ্বারকার রাজা ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নাতি অনিরুদ্ধ। চিত্রলেখার মাধ্যমে ঊষা ও অনিরুদ্ধ প্রেমের সম্পর্ক স্থাপিত হয় ও গন্ধর্ব প্রথামতে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়।


বাণ রাজা ক্রোধে অনিরুদ্ধকে বন্দী করে। নাতিকে উদ্ধার করার জন্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়। বাণ রাজাকে সাহায্য করার জন্য তাঁর ইষ্টদেব শিব বাণের পক্ষ হয়ে যুদ্ধে লিপ্ত হয়। কৃষ্ণসেনা ও শিবসেনার সহিত সংঘটিত এই অভুতপুর্ব ভয়ংকর যুদ্ধের ফলে ত্রিভুবন ত্রস্তমান হয়ে উঠে।কৃষ্ণ অর্থাৎ হরি ও শিব অর্থাৎ হর দুইজনের সহিত সংঘটিত এই যুদ্ধের নাম হরি-হর যুদ্ধ। অবশেষে যুদ্ধের প্রাবল্যে সৃষ্টি নাশ হওয়ার উপক্রম দেখে জগতের সকল মুনি,ঋষি ও দেবতার কাতর উপাসনায় দুই দেবতা শান্ত হয় ও যুদ্ধের সমাপ্তি হয়। বাণ নিজের ভুল উপলদ্ধি করতে পেরে অনিরুদ্ধকে উদ্ধার করে।

তেজপুর নামের উৎপত্তি

লোকপ্রবাদ মতে হরি-হর যুদ্ধ নামে বিখ্যাত দুই প্রতাপী দেবতার রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে রক্তের বন্যা বয়ে যায়। কালক্রমে এই স্থান তেজপুরশোণিতপুর (অসমীয়া ভাষায় তেজপুর অর্থ রক্তের নগর) নামে পরিচিত হয়ে উঠে।

তথ্যসূত্র

    This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.