স্বপ্নের ঠিকানা

স্বপ্নের ঠিকানা ১৯৯৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলাদেশী বাংলা ভাষার রোমান্টিক চলচ্চিত্র। ছায়াছবিটি পরিচালনা করেছেন এম এ খালেক। ।[1] বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে স্বপ্নের ঠিকানা ২য় সর্বোচ্চ আয়কারী চলচ্চিত্র ।

স্বপ্নের ঠিকানা
স্বপ্নের ঠিকানা চলচ্চিত্রের পোস্টার
পরিচালকএম এ খালেক
প্রযোজকমোঃ নুরুল ইসলাম পারভেজ
চিত্রনাট্যকারনিতিশ সাহা , ছটকু আহমেদ
কাহিনীকারমোঃ মোশারফ হোসেন, মোঃ নুরুল ইসলাম পারভেজ
শ্রেষ্ঠাংশেসালমান শাহ
শাবনূর
সোনিয়া
রাজীব
ডলি জহুর
আবুল হায়াত
সুরকারআলম খান
চিত্রগ্রাহকএ আর জাহাঙ্গীর
সম্পাদকমুজিবুর রহমান দুলু
পরিবেশকফেয়ার ফিল্মস
মুক্তি১১ মে, ১৯৯৫
দৈর্ঘ্য১১১ মিনিট
দেশ বাংলাদেশ
ভাষাবাংলা

কাহিনী সংক্ষেপ

সুমন ‍ও সুমী দুজনে ছোটবেলায় একসাথে লেখাপড়া করে। সুমন বড়লোকের ছেলে। সুমি গরিবের মেয়ে। তাদের মধ্যে ভালোভাসার সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরে এক দূর্ঘটনায় স্মৃতিশক্তি হারিয়ে ফেলে সুমন। তখন তার বাবার বন্ধুর মেয়ে সোনিয়া বিদেশ থেকে আসে। তার সাথে বিয়ে ঠিক হয় সোনিয়ার। কিন্তু স্মৃতিশক্তি না থাকায় বিয়ে হচ্ছে না। বা সুমন (সালমান শাহ) সুমি (শাবনূর) এর কথা ভুলে গেছেন। এদিকে শুরু হয় সুমির সাথে তার দ্বন্দ।

স্বপ্নে ঠিকানাকে বলা হয় বাংলা চলচ্চিত্রের বেদের মেয়ে জোসনার পরে সবচেয়ে জনপ্রিয় ছবি। এই ছবির গানগুলো বেশ জনপ্রিয়তা পায়। ‘‘এইদিন সেইদিন কোনোদিন’’ ‘‘ নীল সমুদ্র পার হয়ে’’ ‘‘ ওসাথীরে, যেওনা কখনো দূরে’’ এমনি নানা গান। এছাড়া কৌতুক অভিনেতা লিপে এ একটি প্যারেডি গান জনপ্রিয়তা পেয়েছিলো। ‘‘যদি সুন্দর একখান বৌ পাইতাম’’

বেদের মেয়ের জোসনার মতো স্বপ্নের ঠিকানার একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিলো ধনী গরিবের দ্বন্দ। বরাবরের মতোই এ ধরনের ছবি জনপ্রিয়তা পায়। স্বপ্নে ঠিকানা ছবির গল্পটা গতানুগতিক হলেও এর গাঁথুনিও ছিলো বেশ ভালো, গল্পের গতিছিলো ঝরঝরে সংলাপগুলো ছিলো একটু ভালো। অন্তত সেই সময়ের তুলনায়। আর রাজিব এবং আবুল হায়াত এর দ্বন্দটা দেখানো হয়েছে ভালোভাবে। জনপ্রিয় অভিনেত্রী জলিজহুর এর সাবলীল অভিনয় তখনকার ছবিগুলোর একটা দর্শকপ্রিয় ব্যাপার ছিলো।

জুটি হিসেবে তখন সালমানশাহ- শাবনূর, ওমরসানি- মৌসুমী, খুব জনপ্রিয় ছিলো। আর ইলিয়াছ কাঞ্চন-দিতি, মান্না- চম্পা ও বেশ ভালো যাচ্ছিলো। এই ছবি হিট হওয়ার পর সালমানশাহ- শাবনূর জুটি টপে চলে যায় এবং তারা নিজেদের পারশ্রমিক বাড়িয়ে নেন।

৩৫ এমএম ফরম্যাটে নির্মিত প্রথম দিকের ছবি স্বপ্নের ঠিকানা। চামড়া ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম পারভেজ এই সেনেমার মাধ্যমে সিনেমায় নামেন। গানে কন্ঠ দিয়েছেন রুনা লায়লা, সাবিনা ইয়াসমিন এন্ড্র কিশোর।

তখনো হিন্দি সিনেমার নকলের প্রবণতা ছিলো। আর এই কারণেই ইমন এর নাম হয় সালমান শাহ, আর ছবিতে একটি হিন্দি গানের বাংলা রুপায়ন দেখানো হয় ‘‘নীল সমুন্দর’’। সবকিছুর মধ্যে কেবল সালমান শাহই ছিলেন আলাদা। তার স্টাইল, তার ভাব, ভাষা, ফ্যাশন সবই নিজের মতো।

স্বপ্নের ঠিকানা গতানুগিতিক ছবিই ছিলো। আলাদা বা নতুনত্ব বলতে ওই ৩৫ এমএম আর এনিমেশন টাইটেল। কিন্তু গতানুগতিকার মাঝেও প্রতিটি বিষয় তৈরীর সময় বেশ যত্ন করা হয়েছিলো। স্মৃতি হারানোর ব্যাপারটা হয়তো উত্তম সুচিত্রার সাগরিকা ছবির সাথে মিলে যায়।

তবে এই ছবির মাধ্যমে সালমান শাহ দর্শকদের হৃদয়ে স্থায়ী আসন পেতে নেন। আজ সালমান শাহ নেই। তার ভক্তদের কাছে সিনেমার জগতটা বালুচরের মতো। সালমান শাহর আরেক সিনেমা "স্বপ্নের পৃথিবী" থেকে গান নিয়ে বলতে হয়ঃ

‘‘তুমি আপনের আপন,

পরের চেয়ে পর,

নিজেই বান্ধিয়া ঘর,

নিজেই আনো ঝড়,

স্বপ্নের পৃথিবী আমার হল বালুচর,

নিজেই বান্ধিয়া ঘর নিজেই আনো ঝড়।’’

শ্রেষ্ঠাংশে

মুক্তি

স্বপ্নের ঠিকানা সিনেমাটি ১৯৯৫ সালের ১১ মে ঢাকার বাইরে মুক্তি পায়। পরবর্তীতে দর্শকদের ব্যাপক চাহিদায় ঢাকা সহ সারাদেশে মুক্তি পায় এবং প্রচন্ড আলোড়ন তোলে। সিনেমাটি ঢালিউদের ২য় সর্বাধিক ১৯ কোটি টাকার ব্যবসা করে।[2][3]

সঙ্গীত

গানের তালিকা

তথ্যসূত্র

  1. গোলাম রিয়াদ (৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫)। "স্মরণ : অমর নায়ক সালমান শাহ"। দৈনিক ভোরের পাতা। ২১ এপ্রিল ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ অক্টোবর ২০১৬
  2. "সিনেমার আয়-ব্যয় ও ফাঁকা বুলি"। কালের কণ্ঠ=৬ আগস্ট, ২০১৫ ০০:০০।
  3. "চলচ্চিত্র ব্যবসাঃ লাভের গুড় কে খায়?"। কালের কণ্ঠ ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৫ ০০:০০।

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.