সোয়াত নদী

সোয়াত নদী (উর্দু: دریائے سوات, পশতু: سوات سیند) পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের উত্তর অঞ্চলে একটি বারমাসী নদী। নদীটি সোয়াত কোহিস্তানের কলাম উপত্যকায় দুটি প্রধান উপনদী উশু ও উতর (বা গ্যাব্রাল) এর সঙ্গমে শুরু হয় এবং বাগধেরী পর্যন্ত একটি সরু ঘাটে প্রবাহিত হয়।

সোয়াত
سوات
সোয়াত নদীর প্রবাহিকা (interactive map)
দেশ পাকিস্তান
রাজ্যখাইবার পাখতুনখাওয়া
জেলাসোয়াত জেলা
অববাহিকার বৈশিষ্ট্য
মূল উৎসহিন্দুকুশ পর্বতমালা
মোহনাকাবুল নদী
চারসাদ্দা
অববাহিকার আকার১৪,০০০ কিমি (৫,৪০০ মা)
শাখা-নদী
  • বামে:
    উসু খোওয়ার ও বাসিগ্রাম খোওয়ার
  • ডানে:
    দাড়াল খোওয়ার, গাব্রাল খোওয়ার
প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য
দৈর্ঘ্য২৪০ কিমি (১৫০ মা)

ব্যুৎপত্তি

সোয়াত নামটি একটি প্রাচীন সংস্কৃত শব্দ সুভাস্তু থেকে উদ্ভূত হয়েছে। শব্দটির বাংলা অর্থ স্বচ্ছ জলধারা। নদীর এই নামটি ঋগ্বেদে বর্ণিত হয়েছে।[1]

প্রবাহিকা

সোয়াত নদী

এর উৎসটি হিন্দুকুশ পর্বতমালাতে অবস্থিত, যেখান থেকে এটি সারা বছর ধরে হিমবাহ থেকে পানি পায় এবং কালাম উপত্যকা দিয়ে মাদিয়ানে সরু পথে এবং নীচের সোয়াত উপত্যকার চকদারার সমতল ১৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত প্রবাহিত। উপত্যকার চূড়ান্ত দক্ষিণে, নদীটি একটি সরু ঘাটে প্রবেশ করে এবং কলঙ্গীর নিকটে পাঞ্জকোড়া নদীর সাথে মিলিত হয় এবং অবশেষে চরসদদার নিকটে কাবুল নদীতে খালি হয়। সেচ ও বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে বটখেলা এর নিকটে এটির গতিপথ পরিবর্তন করা হয়েছে।

ওপার সোয়াত খাল বেনটন টানেলের মধ্য দিয়ে মালাকান্দের নীচে প্রবাহিত। দরগাইয়ের নীচে উপরের খালটি দুটি শাখায় বিভক্ত, চারসদদা এবং সোবি ও মর্দান অঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত হয়। জলটি জব্বান ও দারগাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্যও ব্যবহৃত হত।

অর্থনৈতিক গুরুত্ব

সোয়াত নদী

সোয়াত নদী উপত্যকার অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি সোয়াত জেলা, মালাকান্দ জেলা এবং নিম্ন পেশোয়ার উপত্যকার বিস্তীর্ণ অঞ্চল সেচ দেয় এবং জলাবদ্ধতার মাধ্যমে জলের কূপ ও ঝর্ণা পূর্ণ করে।

নদীটি বিভিন্ন প্রজাতির পাখির আবাসস্থল হিসাবে কাজ করে এবং এই অঞ্চলে মাছ ধরা শিল্পে অবদান রাখে। গ্রীষ্মের মরসুমে নদীর নান্দনিক দৃশ্যাবলী পুরো পাকিস্তান থেকে হাজার হাজার পর্যটককে আকর্ষণ করে।

জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র

সোয়াত নদী

সোয়াত নদীর জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য খুবই উপযুক্ত একটি নদী। জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের এই অমিয় সম্ভাবনা নবায়নযোগ্য শক্তি ও বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য এক নতুন দিগন্ত সৃষ্টি করেছে। নদীতে মুন্ডা বাঁধ স্থাপন করার পর ৭৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম একটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র সৃষ্টি করা হয়েছে।[2] এছাড়াও অন্য যেসব জলবিদ্যুৎ ও শক্তি কেন্দ্র রয়েছে তা হল-

  • অসিত কেদাম জলবিদ্যুৎ প্রকল্প
  • গ্যাব্রাল জলবিদ্যুৎ প্রকল্প
  • মুলতান জলবিদ্যুৎ প্রকল্প

তাছাড়াও সোয়াত নদীর খালগুলিতে বেশ কয়েকটি ছোট পরিসরে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প কেন্দ্র রয়েছে যা স্থানীয় ব্যবহারের জন্য বিদ্যুত উৎপাদন করে থাকে।

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. Susan Whitfield (২০১৮)। Silk, Slaves, and Stupas: Material Culture of the Silk Road। University of California Press। পৃষ্ঠা 136। আইএসবিএন 978-0-520-95766-4।
  2. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৫ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ নভেম্বর ২০১৯

গ্রন্থপঞ্জি

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.