সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত (মে ৫, ১৯৪৫ – ফেব্রুয়ারি ৫, ২০১৭) একজন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ। তিনি দ্বিতীয়, তৃতীয়, পঞ্চম, সপ্তম, অষ্টম, নবম ও দশম জাতীয় সংসদসহ মোট সাতবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।[2] এর আগে সত্তরের নির্বাচনেও তিনি প্রদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ২০১২ সালে দ্বিতীয় রেল মন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগ করেন। মৃত্যুর সময় তিনি দপ্তরবিহীন মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত | |
---|---|
![]() সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত | |
জন্ম | [1] | ৫ মে ১৯৪৫
মৃত্যু | ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ৭১) | (বয়স
জাতীয়তা | বাংলাদেশি, বাঙালি |
নাগরিকত্ব |
|
শিক্ষা | এমএ, এলএলবি[2] |
পেশা | রাজনীতিবিদ, আইনজীবী |
রাজনৈতিক দল | ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি একতা পার্টি |
জন্ম ও শৈশব
সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম দেবেন্দ্র নাথ সেনগুপ্ত এবং মাতার নাম সুমতিবালা সেনগুপ্ত৷
শিক্ষা
প্রবীণ এ সাংসদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেন। পরে সেন্ট্রাল ল কলেজ থেকে এলএলবি ডিগ্রি সম্পন্ন করে আইন পেশায় নিযুক্ত হন। এছাড়াও তিনি বাংলা, ইংরেজি, সংস্কৃত, হিন্দি ও সংস্কৃত ভাষায় দক্ষতা অর্জন করেন৷
রাজনৈতিক জীবন
ছাত্র জীবনেই তিনি বামপন্থী রাজনীতির মাধ্যমে তার রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। হাওরাঞ্চলের ‘জাল যার জলা তার’ আন্দোলনে দীর্ঘদিন তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন। ১৯৭০ সালের পাকিস্তান নির্বাচনে তিনি সিলেট জেলা থেকে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির পক্ষ থেকে নির্বাচনে জয়লাভ করেন। তিনি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি সুনামগঞ্জ-২ আসন থেকে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে মোট সাতবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর আগে সত্তরের নির্বাচনেও তিনি প্রদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন।
বাংলাদেশের প্রথম সাংবিধান পরিষদে তিনি বিরোধী বেঞ্চের একজন সক্রিয় সদস্য ছিলেন। এরপর তিনি নিজে একতা পার্টি নামক একটি দল গঠন করেন। ১৯৯০ এর দশকে তিনি আওয়ামী লীগ এ যোগদান করেন। এর আগে তিনি স্বপ্রতিষ্ঠিত একতা পার্টির সাথে জড়িত ছিলেন। ২৪ ফেব্রুয়ারী ১৯৯৬ সালে বিশেষ ক্ষমতার অধীনে পুলিশ তার বাসায় তল্লাশী চালালে তাকে ধরতে অসমর্থ হয়।[3] তিনি ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর রেলমন্ত্রী নিযুক্ত হন। যদিও সহকারীর অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনার পর তিনি পদত্যাগ করেন। তবে প্রধানমন্ত্রী সেই পদত্যাগপত্র গ্রহণ না করে তাকে দপ্তরবিহীন মন্ত্রী হিসেবে মন্ত্রিপরিষদে রাখেন। এর আগে ১৯৯৬ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সংসদে সব সময় সরব এ সংসদ সদস্য একজন অভিজ্ঞ সংবিধান বিশেষজ্ঞ হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন।
মৃত্যু
ফুসফুসের সমস্যার জন্য ২০১৭ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তাকে ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ৪ রাতে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটায় প্রথমে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ও পরে লাইফ সাপোর্টে দেয়া হলেও ৫ ফেব্রুয়ারি ভোর রাত ৪টা ২৪ মিনিটে ৭১ বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন৷[4][5]
তথ্যসূত্র
- "Suranjit Sengupta: At a glance"। ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০২-০৫।
- "সুরঞ্জিতের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন"। দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
- "Bangladesh Political Violence On All Sides"। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (ইংরেজি ভাষায়)। খণ্ড ৮ নং ৬। ১ জুন ১৯৯৬।
- "সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত আর নেই"। এনটিভি অনলাইন। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০২-০৫।
- "চলে গেলেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত"। দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।