শোভনা বিরাজময়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয়

শোভনা বিরাজময়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয় এটি খুলনা জেলার ডুমুরিয়া থানার শোভনা গ্রামের অন্যতম স্কুল। এটি প্রায় ৫০০ শিক্ষার্থী এখানে অধ্যয়ন করে। গ্রামীণ অঞ্চলে পড়াশোনা করা এটির শিক্ষামূলক সাফল্য।[1]

শোভনা বিরাজময়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয়
ঠিকানা
শোভনা
ডুমুরিয়া উপজেলা, খুলনা
বাংলাদেশ
তথ্য
ধরনশিক্ষা
প্রতিষ্ঠাকাল১৯৪২

ইতিহাস

জননেতা বিষ্ণু চ্যাটার্জি এলাকার মানুষের শিক্ষার অভাব দূর করার মানসে কৃষক সমিতির নেতৃস্থানীয় সদস্য সতীশচন্দ্র হালদা, কামাখ্যা প্রসাদ রায়চৌধুরী,নগেন্দ্রনাথ মল্লিক, যোগেন্দ্রনাথ মল্লিক, কালিপদ বসাক, নগেন্দ্রনাথ সরকার,সমন্তি শেখ,সোহরাব সরদার,মনিন্দ্রনাথ হরি, সতীশ চন্দ্র মল্লিক,নকুল মল্লিক,সুধান্ন রায়,পদ্ম হালদার, নগেন্দ্রনাথ বিশ্বাস প্রমুখ ব্যক্তিদের নিয়ে একটা মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এই উদ্যোগ কে স্বাগত জানিয়ে এগিয়ে আসেন এলাকার বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কালিপদ বসাক মহোদয়। তিনি জনসম্মুখে স্বতঃস্ফূর্তভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির জন্য প্রয়োজনীয় ভুমি দানের প্রতিশ্রুতি ঘোষণা দেন। ফলশ্রুতিতে কৃষকসমিতির মাধ্যমে শোভনা,ভদ্রদিয়া,বামুন্দিয়া,জিয়ালতলা,বলাবুনিয়া,কদমতলা,মাদারতলা বাসীর সার্বিক সহযোগিতায় ১৯৪২ সালের অক্টোবর মাসে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়ের জন্য সমাজসেবক কালিপদ বসাক ৭০ শতাংশ জমি দান করেন। বিদ্যালয়টি যেহেতু কালুপদ বসাকের দানকৃত জমিতে প্রতিষ্ঠিত হয় তাই সমিতির সিদ্ধান্ত মোতাবেক কালিপদ বসাকের মাতা স্বর্গীয় বিরাজময়ী বসাক এর নামানুসারে বিদ্যালয়টির নামকরণ করা হয়। প্রতিষ্ঠার অল্প সময়ের মধ্যেই বিদ্যালয়টি এলাকায় বিশেষ পরিচিত হয়ে ওঠে এবং কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক ১৯৪৫ সালের ১৭ ই এপ্রিল স্থায়ী স্বীকৃতি লাভ করে।

পরবর্তীতে বিদ্যালয়টিকে সরলাবালা মল্লিক ও সন্তোষকুমার দাস যথাক্রমে ১০ শতাংশ ও ১৫ শতাংশ জমি দান করেন। যা বিদ্যালয়টির সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে শোভনা বিরাজময়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয় এই অঞ্চলের শিক্ষা তথা সার্বিক উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রেখে চলেছে।

সহশিক্ষা কার্যক্রম

  1. সম্পাদনা
  2. স্কাউট দল
  3. বিতর্ক সভা
  4. বিজ্ঞান ক্লাব
  5. গণিত ক্লাব

এছাড়া খেলাধুলাসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড পরিচালিত হয়ে থাকে যা বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা পরিচালনা করে থাকে।

খেলাধুলা

স্কুলের প্রথম দিক থেকে খেলার মাঠ রয়েছে এবং প্রতি বৃহস্পতিবার খেলার আয়োজন করা হয় শিক্ষার্থীদের বিনোদনের জন্য। এতে ফুটবল, ক্রিকেট ও অন্যান্য খেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। স্কুলের নিয়মিত ফুটবল দল ও ক্রিকেট দল রয়েছে। এসব দল বিভিন্ন আন্তঃস্কুল প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে থাকে এবং প্রায়ই বিজয়ী হয়ে স্কুলের জন্য সুনাম বয়ে আনে। প্রতি বছর বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।

স্কুলের নতুন ভবন

স্কুলের মূল ভবনটি ইংরেজি '"L"' আকৃতির দ্বিতল দালান। এছাড়া আরও ১ টি একাডেমিক ভবন ও ১ টি উচ্চ মাধ্যমিক ভবন রয়েছে। মূল ভবনে রয়েছে প্রধান শিক্ষকের অফিস কক্ষ, শিক্ষক মিলনায়তন, শিক্ষিকা মিলনায়তন, অফিস কক্ষ, চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের কক্ষ, শ্রেণীকক্ষ ও সম্মেলন কক্ষ। তার পাস্ব ভবনে গ্রন্থাগার, গবেষণাগার, ক্রীড়া কক্ষ, স্কাউট ড্রেন ইত্যাদি মূল ভবনের চতুর্দিকে অবস্থিত। তাছাড়াও ২০১৫ সালে উচ্চ মাধ্যমিক ভবন নামে পরিচিত দি তলা ভবন তৈরি হয়।

স্কুলের মাঠ

ফুটবল ও ক্রিকেট খেলার জন্য রয়েছে মাঠ। এছাড়াও স্কুলের ভিতরে বাহিরে ছোট বড় মাঠ রয়েছে। যেখানে ছাত্ররা অবসর সময়ে নানারকম খেলাধুলা করে থাকে।

গবেষণাগার

পদার্থবিজ্ঞান, রসায়নবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান, কম্পিউটার, কৃষি ইত্যাদি গবেষণাগার রয়েছে। এসব গবেষণাগারে বহু মূল্যবান যন্ত্রপাতি রয়েছে। শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক বিষয়ে জ্ঞান লাভের জন্য এসব উপকরন ব্যবহারিত হয়।

গ্রন্থাগার

স্কুলে রয়েছে বিশাল একটি লাইব্রেরী। এতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের নামী দামী কয়েক হাজার বই। শিক্ষার্থীরা এখানে সাচ্ছন্দে বসে পড়তে পারে এবং তাদের পছন্দের বই নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বাড়ি নিয়ে যেতে পারে। সম্পূর্ণ বেসরকারি উদ্যোগে লাইব্রেরীটি পরিচালিত হচ্ছে।

বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড

বছরের বার মাস স্কুলে নানা রকম সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পালন করা হয়। শহীদ দিবস, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, জাতির জনকের জন্মদিন ও বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান যথাযথ মর্যাদার সাথে পালিত হয়। বর্ষবরণ, বাসন্তী উৎসব ইত্যাদি নানা রকম অনুষ্ঠান ছাত্র-শিক্ষক সম্মিলিতভাবে পালন করে। এছাড়াও প্রতি বছরই আয়োজিত হয় শিক্ষা সফর।

শিক্ষক-অভিভাবকের মতবিনিময় সভা

বছরে তিন বার ছাত্রদের অগ্রগতি, শিক্ষার মানোন্নয়ন ও নানাবিধ সমস্যা-সমাধান ইত্যাদি ব্যাপারে শিক্ষক-অভিভাবকদের মধ্যে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে শিক্ষক ও অভিভাবকেরা আলোচনা সাপেক্ষে বিভিন্ন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।

ভবন ও শিক্ষা কার্যক্রম

এটি পুরাতন বিদ্যালয়।প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ বিদ্যালয়ে মানবিক, বাণিজ্য ও বিজ্ঞান খোলা হয়। যার মধ্যে রয়েছে- ইতিহাস, অর্থনীতি,ভূগোল, বাণিজ্য বিভাগের সকল বিষয়। বর্তমানে মোট ১৮ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা কর্মরত আছেন। এর মধ্যে প্রধান শিক্ষক০১ জন, সহ:প্রধান শিক্ষক ০১ জন,শিক্ষকবৃন্দু ১৫ জন,শরীরচর্চা শিক্ষক ০১জন, গ্রন্থাগারিক ০১ জন,ও কম্পিউটার ডেমোনেস্ট্রের ০১জন।

তথ্যসূত্র

  1. "শোভনা বিরাজময়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয় - শোভনা ইউনিয়ন"বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। ২৬ জুন ২০১৯। ৩০ জুন ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুন ২০১৯

বহিঃসংযোগ

  1. শোভনা বিরাজময়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ফেসবুক
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.