শাহজাদা বায়েজিদ

শাহজাদা বায়েজিদ (১৫২৫-২৫ সেপ্টেম্বর ১৫৬১) ছিলেন উসমানীয় সাম্রাজ্যের সুলতান প্রথম সুলাইমান এবং তার সহধর্মিণী হুররেম সুলতান এর চতুর্থ সন্তান।[1] তিনি ইস্তানবুল এ জন্মগ্রহণ করেন।তিনি ছিলেন খুবই সাহসী শাহজাদা এবং নির্ভীক বীর যোদ্ধা। তবে তিনি কিছুটা রাগী প্রকৃতির ছিলেন।শাহজাদা মুস্তাফা এর মৃত্যুর পর তিনিই ছিলেন প্রজা এবং সেনাবাহিনীর কাছে গ্রহণযোগ্য শাহজাদা।

কর্মজীবন

বায়েজিদ আনাতোলিয়া প্রদেশের গভর্নর ছিলেন।১৫৫৩ সালের সাফাভিদ অভিজানের পর তিনি এদির্নের শাসনকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান।অভিজানের সময় রুমেলিয়া রক্ষার দায়িত্ব বায়েজিদ এর উপর ছিলো। সেসময় শেহজাদা মুস্তাফাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলে গোটা সাম্রাজ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়।একজন ছদ্মবেশী নিজেকে মুস্তাফা বলে দাবি করে এবং রুমেলিয়ায় বিদ্রোহ সংঘটিত করে।বায়েজিদকে সেই বিদ্রোহ দমনের দায়িত্ব দেওয়া হলে বায়েজিদ অনিচ্ছা প্রকাশ করেন।যার কারনে সুলতান সুলেইমান একজন উজিরকে বিদ্রোহ দমনের দায়িত্ব দেন এবং বায়েজিদের উপর রাগান্বিত হন।

সিংহাসন এর লড়াই

শেহজাদা মেহমেত,শেহজাদা মুস্তাফা এবং শেহজাদা জাহাঙ্গীর এর মৃত্যুর পর শেহজাদা সেলিম এবং শেহজাদা বায়েজিদ জীবিত থাকেন।সেলিম ছিলেন মানিসার গভর্নর এবং বায়েজিদ কুতাহিয়ার। বায়েজিদ কিছু টা রুক্ষমেজাজী হওয়ায় সুলতান সুলেইমান সেলিমকে বেশি প্রাধান্য দিতেন যদিও সেনাবাহিনী এবং প্রজাদের কাছে বায়েজিদ বেশি পছন্দের ছিলেন।সেলিম এবং বায়েজিদ এর মধ্যে সংঘর্ষ প্রায় লেগেই থাকতো। তাই সুলতান সুলেইমান তাদের সাঞ্জাক পরিবর্তন এর সিদ্ধান্ত নেন।সেলিমকে কোনয়া এবং বায়েজিদকে আমাসিয়ার গভর্নর হিসেবে নিয়োগ দেন।সেলিম নির্দেশমতো কোনিয়ায় চলে যান।কিন্তু বায়েজিদ এই আদেশ মেনে নিতে চাননি।কারন, আমাসিয়া ছিল তার ভাই শেহজাদা মুস্তাফার সাঞ্জাক।বায়েজিদ ভেবেছিলেন তার পরিনতিও তার ভাই মুস্তাফার মত হবে।তাই বায়েজিদ আমাসিয়ায় যেতে দেরি করায় সুলতান সুলেইমান বায়েজিদকে বিদ্রোহী হিসেবে অভিযুক্ত করেন এবং সেলিমকে পুরোপুরি সমর্থন করেন।১৫৫৯ সালে সেলিম এবং বায়েজিদ আবার যুদ্ধে জড়িয়ে পরেন।সুলতান সুলেইমান এর আদেশ এ সোকুল্লু মেহমেত পাশা বিশাল সেনাবাহিনী নিয়ে সেলিম এর এর সাথে যোগ দেন।এবং সুলতান সুলেইমান এর বাহিনীর কাছে বায়েজিদ পরাজয় বরন করেন।

মৃত্যু

যুদ্ধে পরাজিত হয়ে বায়েজিদ একটি ছোট সেনাবাহিনী এবং এবং তার সন্তানদের নিয়ে ইরান এ আশ্রয় নেন। সোকুল্লু মেহমেত পাশা বায়েজিদকে বন্দি করার জন্য একটি সৈন্যবাহিনী পাঠিয়েছিলেন যা বায়েজিদ এর বাহিনীর কাছে পরাজিত হয়।সাফাভিদ সাম্রাজ্যের শহর তাব্রিজ এ পৌছানোর পর শাহ তামাস্প প্রথমে বায়েজিদকে সাদরে গ্রহণ করলেও পরবর্তী তে বায়েজিদ কে সুলতান সুলেইমান এর অনুরোধ এ বন্দি করেন।সুলেইমান এবং সেলিম উভয়ই বায়েজিদকে হত্যার জন্য শাহ তামাস্পকে প্ররোচিত করতে থাকেন।এক পর্যায়ে শাহতামাস্প ৪,০০,০০০ সোনার মোহর এর বিনিময়ে বায়েজিদ এবং তার সন্তানদের অটোমান জল্লাদের হাতে তুলে দেন।এবং ২৫ সেপ্টেম্বর ১৫৬১ সালে বায়েজিদ এবং তার পাঁচ সন্তানকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় সুলতান সুলেইমান এর আদেশে।

  1. "The Imperial House of Osman: Genealogy"। Archived from the original on মে ২, ২০০৬।
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.