শব্দদূষণ

শব্দদূষণ বলতে মানুষের বা কোনো প্রাণীর শ্রুতিসীমা অতিক্রমকারী কোনো শব্দ সৃষ্টির কারণে শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনাকে বোঝায়। যানজট, কলকারখানা থেকে দূষণ সৃষ্টিকারী এরকম তীব্র শব্দের উৎপত্তি হয়। মানুষ সাধারণত ২০-২০,০০০ হার্জের কম বা বেশি শব্দ শুনতে পায় না। তাই মানুষের জন্য শব্দদূষণ প্রকৃতপক্ষে এই সীমার মধ্যেই তীব্রতর শব্দ দ্বারাই হয়ে থাকে।

একটি বোয়িং ৭৪৭-৪০০ লন্ডন হিথ্রো বিমানবন্দরে অবতরণের পূর্বে লোকালয়ের খুব কাছ দিয়ে উড়ে যাচ্ছে

প্রভাব

মানুষের কান যেকোনো শব্দের ব্যাপারে যথেষ্ট সংবেদী। তাই তীব্র শব্দ কানের পর্দাতে বেশ জোরে ধাক্কা দেয়, যা কানের পর্দাকে নষ্টও করে দিতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে এর ক্ষতিকর প্রভাব সুদূর প্রসারী হতে পারে। শিশু বয়সে শব্দের অধিক তারতম্যের জন্য বৃদ্ধ বয়সে তাদের কানের বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায় । দলগতভাবে বিভিন্ন অঞ্চলে শব্দ দূষণের কারণ অনুসন্ধান করা হয়েছে এবং দেখা গেছে- যে সমস্ত অঞ্চলে দূষণের মাত্রা বেশি সেখানে নিম্নলিখিত অসুবিধা বা ক্ষতিকর প্রভাব মানুষের মধ্যে পড়েছে। (1) দূষণ প্রভাবিত এলাকার মানুষের মেজাজ খিটখিটে হচ্ছে। (2) আচরণে অস্বাভাবিকতা ও মানসিক উত্তেজনা দেখা যাচ্ছে। (3) মানুষকে ক্লান্ত মানসিক অবসাদগ্রস্ত ও কাজে অমনোযোগী করে তুলছে। (4) বয়স্ক মানুষের স্মৃতিশক্তি হ্রাস পাচ্ছে। (5) এমনকি বধির হওয়ার মতো খবর পাওয়া যাচ্ছে।

মনুষ্য স্বাস্থ্য

শব্দদূষণের কারণে শ্রবণশক্তি হ্রাসের পাশাপাশি মানুষের স্বাস্থ্য এবং আচার-আচরণ - উভয় ক্ষেত্রেই সমস্যার সৃষ্টি করে থাকে। অপ্রয়োজনীয় ও অতিরিক্ত শব্দের কারণে ব্যক্তির শারীরিক ও মানসিক স্বাভাবিক কার্যকলাপ ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। শব্দদূষণের কারণে দুশ্চিন্তা, উগ্রতা, উচ্চ রক্তচাপ, টিন্নিটাস, শ্রবণশক্তি হ্রাস, ঘুমের ব্যাঘাতসহ অন্যান্য ক্ষতিকর ও বিরূপ প্রতিক্রিয়া ঘটতে পারে।[1][2][3][4]

এছাড়াও, অন্যান্য শারীরিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে স্মরণশক্তি হ্রাস, মানসিক অবসাদ ইত্যাদি হতে পারে।[2][5]

বিমানের আওয়াজ

বিমানের প্রচণ্ড আওয়াজের ফলে বিমানবন্দর এলাকার আশেপাশে ব্যাপক শব্দ দূষণগত পরিবেশের সৃষ্টি করে। রাতে এবং ভোরে যদি বিমান পরিচালনা করা হয় তখন ব্যক্তির ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। শুধুমাত্র অবতরণ কিংবা উড্ডয়নের জন্যই বিমানের আওয়াজ সৃষ্টি হয় না; পাশাপাশি বিমান মেরামত , পর্যবেক্ষণের প্রশিক্ষণের জন্য এরূপ হয়ে থাকে। এরফলে ব্যক্তি বিশেষতঃ শিশুর শব্দদূষণগত কারণে শারীরিক এবং মানসিক বিকাশেও ব্যাপক প্রভাব সৃষ্টি করে থাকে।

তথ্যসূত্র

  1. S. Rosen and P. Olin, Hearing Loss and Coronary Heart Disease, Archives of Otolaryngology, 82:236 (1965)
  2. J.M. Field, Effect of personal and situational variables upon noise annoyance in residential areas, Journal of the Acoustical Society of America, 93: 2753-2763 (1993)
  3. "Noise Pollution"World Health Organisation
  4. "Road noise link to blood pressure"BBC News। ২০০৯-০৯-১০। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৫-২০
  5. Karl D. Kryter, The Effects of Noise on Man , Academic Press (1985)

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.