লর্ড আরউইন

লর্ড আরউইন ছিলেন ৩ এপ্রিল ১৯২৬ থেকে ১৮ এপ্রিল ১৯৩১ সাল পর্যন্ত ভারতের গভর্নর জেনারেল ও ভাইসরয়। হ্যালিফ্যাক্সের দ্বিতীয় ভাইকাউন্টের পুত্র লর্ড এডওয়ার্ড ফ্রেডারিক লিন্ডলে উড আরউইন ইটনে শিক্ষা লাভ করেন। তিনি ১৯১০ থেকে ১৯২৫ সাল পর্যন্ত পার্লামেন্টের সদস্য ছিলেন। ওই সময় তিনি মন্ত্রিসভায় অনেকগুলি পদ পেয়ে ছিলেন। ১৯২৬ সালে তাঁকে ভারতের গভর্নর জেনারেল ও ভাইসরয় নিয়োগ করা হয়। এ পদে তিনি ১৯৩১ সাল পর্যন্ত অধিষ্ঠিত ছিলেন। আরউইন ভাইসরয় থাকাকালে ভারতের রাজনৈতিক জীবনে প্রচন্ড আলোড়নের সৃষ্টি হয়। সাইমন কমিশন রিপোট, নেহরু রিপোর্ট, সর্বদলীয় সম্মেলন, জিন্নাহ্র ১৪ দফা, আইন অমান্য আন্দোলন, গোলটেবিল বৈঠক, এবং আরও কিছু সমস্যা তাঁর শাসনামলকে চরমভাবে ঝঞ্ঝাপূর্ণ করে তোলে। প্রকৃতপক্ষে সাইমন কমিশন থেকে ভারতীয় নেতাদের বাদ দেওয়া থেকে শুরু করে একের পর এক সংকট দেখা দেয়। একটি সংকট মোকাবিলা করার পরিণতি হিসেবে নতুন নতুন সংকটের উদ্ভব হয়।[2][3][4][5]

লর্ড আরউইন
১৯৪৭ সালে লর্ড আরউইন
২০তম ভারতের গভর্নর জেনারেল ও ভাইসরয়
কাজের মেয়াদ
৩ এপ্রিল ১৯২৬  ১৮ এপ্রিল ১৯৩১
পূর্বসূরীরুফাস আইজাক
উত্তরসূরীফ্রিম্যান থমাস
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম(১৮৮১-০৪-১৬)১৬ এপ্রিল ১৮৮১
ইংল্যান্ড [1]
মৃত্যু২৩ ডিসেম্বর ১৯৫৯(1959-12-23) (বয়স ৭৮)
ইংল্যান্ড
জাতীয়তাবিটিশ

রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান

আরউইন বিভিন্ন রাজনৈতিক সমস্যা ধৈর্য্য ও কৌশলের সঙ্গে মোকাবিলা করার চেষ্টা করতেন। কিন্তু অবস্থা পরম্পরা এত বিভ্রান্তিকর ছিল যে, অভূতপূর্ব রাজনৈতিক ঘটনাসমূহের বিকাশ যে পর্যায়ে এসে পৌঁছেছিলো সেখানে সনাতন কূটনীতি ও চাতুর্য অকার্যকর হয়ে পড়ে। হিন্দু, মুসলমান, ইঙ্গ-ভারতীয় সম্প্রদায়, চরমপন্থি, দেশিয় রাজ্যসমূহ সকলেই ভারত শাসন আইন প্রণয়নের পূর্বে তাদের দাবি মিটানোর জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। সংকটটি আরও জটিল হয়ে পড়ে এ কারণে যে, প্রত্যেক সম্প্রদায়কে নেতৃত্বদানকারী দলগুলি ভবিষ্যৎ শাসনতন্ত্রে যে আন্তঃসাম্প্রদায়িক মর্যাদা দেওয়া হবে সে বিষয়ে তারা বিপরীত ধারণা পোষণ করত। সবচেয়ে সংগঠিত দল কংগ্রেস অনেকগুলি স্বার্থকে প্রতিনিধিত্ব করত বলে তারা সকলেই চাইত যে ভাইসরয় তাদের কথা শুনুন। কিন্তু বাস্তবে কংগ্রেসের স্বার্থান্বেষী সকল গোষ্ঠীকে সন্তুষ্ট করা প্রায় অসম্ভব ছিল।

এ পর্যায়ে এসে আরউইন কৌশল হিসেবে কংগ্রেসের নেতৃবৃন্দকে কারাবন্দী করেন এবং তারপর গান্ধীর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন। তাঁর এ কৌশলটি ফলপ্রসু হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৩১ সালে গান্ধী-আরউইন চুক্তি সম্পাদিত হয়।[6]

মহাত্মা গান্ধী ও লর্ড আরউইনের সম্পর্ক

মহাত্মা গান্ধী সম্পর্কে লর্ড আরউইন অতি উচ্চ ধারনা পোষণ করতেন এবং ভারত থেকে প্রত্যাবর্তনের পূর্বে বিভিন্ন সরকারী অনুষ্ঠানে বহুবার তিনি গান্ধীর প্রতি তাঁর গভীর শ্রদ্ধার কথা ব্যাক্ত করেন।

রাজনৈতিক ও কর্মজীবন

আরউইন রাজনীতির চাইতে তাত্ত্বিকতাকে ভালোবাসতেন। মাস্টার অব মিডলটন হান্ট হওয়ার ইচ্ছায় তিনি ১৯৩২ সালে বিদেশ দূতাবাসের দূত পদ গ্রহণের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। পরবর্তীতে তাঁকে বিদেশ বিষয়ের সেক্রেটারি পদ প্রদান করা হয় এবং ১৯৩৮ ধেকে ১৯৪০ পর্যন্ত তিনি এ পদে অধিষ্ঠিত থাকেন। তিনি উত্তোরাধিকার সূত্রে পিতার নিকট থেকে ভাইকাউন্ট হ্যালিফ্যাক্স পদবীটি লাভ করেন। লর্ড আরউইন ১৯৩৫ থেকে ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত হাউজ আব লর্ডস এর নেতৃত্বে ছিলেন। তিনি ১৯৩৩ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হন এবং ২৩ ডিসেম্বর ১৯৫৯ সালে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত এ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।[7]

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. The Peerage, entry for 1st Earl of Halifax
  2. Matthew 2004, p. 81.
  3. Roberts 1991, p. 10.
  4. Roberts 1991, p9
  5. Matthew 2004, p. 82.
  6. "নং. 32759"দ্যা লন্ডন গেজেট (সম্পূরক) (ইংরেজি ভাষায়)। ২৪ অক্টোবর ১৯২২।
  7. "Making history with brick and mortar"Hindustan Times। ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১১। ৫ ডিসেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.