রেখ বাতাসি

রেখ বাতাসি[1] (বৈজ্ঞানিক নাম: Neptis columella (Cramer)) 'নিমফ্যালিডি'(Nymphalidae) গোত্র ও 'লিমেনিটিডিনি' (Limenitidinae) উপ-গোত্রের অন্তর্ভুক্ত প্রজাতি।[2][3]

রেখ বাতাসি
Short banded sailer
ডানা বন্ধ অবস্থায়
ডানা খোলা অবস্থায়
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: Animalia
পর্ব: Arthropoda
শ্রেণী: Insecta
বর্গ: Lepidoptera
পরিবার: Nymphalidae
গণ: Neptis
প্রজাতি: N. columella
দ্বিপদী নাম
Neptis columella
(Cramer, 1780)
প্রতিশব্দ
  • Phaedyma columella (Cramer, [1780])

আকার

রেখ বাতাসি এর প্রসারিত অবস্থায় ডানার আকার ৬০-৭০ মিলিমিটার দৈর্ঘ্যের হয়।[4][5]

উপপ্রজাতি

ভারতে প্রাপ্ত রেখ বাতাসি এর উপপ্রজাতি হল-[6]

  • Phaedyma columella nilgirica Moore, 1888 – Dakhan Short-banded Sailer
  • Phaedyma columella ophiana Moore, 1872 – Sikkim Short-banded Sailer
  • Phaedyma columella binghami Fruhstorfer, 1905 – Nicobar Short-banded Sailer

বিস্তার

ভারত (উত্তরাঞ্চল থেকে অরুণাচল প্রদেশ ও উত্তর-পূর্ব ভারত, দক্ষিণ বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, মধ্য ও দক্ষিণ ভারত,আন্দামান) নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, মায়ানমার, মালয়,থাইল্যান্ড ও সুমাত্রা এর বিভিন্ন অঞ্চলে এদের পাওয়া যায়।[5][7]

বর্ণনা

প্রজাপতির দেহাংশের পরিচয় বিষদ জানার জন্য প্রজাপতির দেহ এবং ডানার অংশের নির্দেশিকা দেখুন:-

ডানার উপরিতল : ডানার উপরিতল কালো বা গাঢ় খয়েরি ও সাদা দাগ-ছোপ-বন্ধনী যুক্ত । সামনের ডানায় সেল-এর দাগটি দুটি অংশে বিভক্ত;- ডানার গোড়া (base) থেকে উৎপন্ন একটি ছোট সরু বন্ধনী (band) যার শেষভাগ চওড়া ও বহিঃপ্রান্তে একটি প্রায় ত্রিভুজাকৃতি ছোপ।ডিসকাল ছোপের অনিয়মিত সারিটিতে ২ ও ৩ নং শিরামধ্যের (inter-space) ছোপদুটি ৫ নং শিরামধ্যের ছোপটির সাথে একই সরলরেখায় অবস্থিত । ডিসকাল ছোপের সারিটি কোস্টার সামান্য নিচ থেকে ডরসাম পর্যন্ত বিন্যস্ত ও ছোপগুলি জোড়ায় জোড়ায় অবস্থিত । ১ নং শিরামধ্যের ডিসকাল ছোপটি সর্বদাই লম্বাটে ।পোস্ট-ডিসকাল ক্ষুদ্র ছোপের তির্যক সারিটি কোস্টার নিচ থেকে টরনাসের উপর পর্যন্ত বিস্তৃত ও ছোপগুলি অধিকাংশ নমুনাতেই অস্পষ্ট |ডিসকাল ও পোস্ট-ডিসকাল ছোপসারির মধ্যবর্তী অংশে অস্পষ্ট ফ্যাকাশে তির্যক সরু কিছু দাগ ছিলে পড়ে। সাব-টার্মিনাল রেখাটি অস্পষ্ট, ফ্যাকাশে ও শিরা দ্বারা খণ্ডিত। সিলিয়া (Cillia) পর্যায়ক্রমে সাদা ও কালো।

পিছনের ডানায় কোস্টাল প্রান্তরেখা চওড়াভাবে ধূসর-বাদামি। সুস্পষ্ট, চওড়া ডিসকাল বন্ধনীটি (কারো কারো মতে সাব-বেসাল বন্ধনী) আলাদা আলাদা ছোট বড় ডিসকাল ছোপের দ্বারা গঠিত, ডানার গড় বা base থেকে উৎপন্ন ও সামনের ডানার সেল-এর ছোট বন্ধনীটির সাথে অনুভূমিক। পোস্ট-ডিসকাল সারির ছোপগুলিও ডিসকাল বন্ধনীর সাথে সমান্তরাল ও অনুভূমিক অবস্থানরত এবং ছোপগুলি সামনের ডানা অপেক্ষা বৃহত্তর ও স্পষ্টতর। ডিসকাল বন্ধনী ও পোস্ট-ডিসকাল ছোপসারির মধ্যভাগে অনুভূমিক, ফ্যাকাশে ও অস্পষ্ট একটি রেখা দৃশ্যমান। সাব-টার্মিনাল রেখাটি বক্রাকার , ফ্যাকাশে ও অস্পষ্ট এবং শিরাদ্বারা খণ্ডিত ।সিলিয়া (Cillia) উপরের ডানার অনুরূপ পর্যায়ক্রমে সাদা ও কালো।

ডানার নিম্নতল : ডানার নিম্নতল মরচেরঙা বাদামি (লালচে-বাদামি) এবং সাদা দাগ-ছোপ-বন্ধনীগুলি উপরিতলেরই অনুরূপ; তবে অপেক্ষাকৃত চওড়া । পিছনের ডানায় বেসাল-কোস্টাল (কোস্টার গোড়ার অংশের) চওড়া দাগটি ফ্যাকাশে সাদা । কোস্টা ও ডিসকাল বন্ধনীর মধ্যভাগে ডানার গোড়া থেকে উৎপন্ন একটি সামান্য চওড়া ফ্যাকাশে সাদা পটি বর্তমান যার অন্তিমভাগ সরুভাবে সর্ব-বহিঃস্থ ডিসকাল ছোপটির উপরে শেষ হয়েছে । সামনের ডানার উপরিতলের ডিসকাল ও পোস্ট-ডিসকাল ছোপসারির মধ্যবর্তী অস্পষ্ট ফ্যাকাশে দাগ, পিছনের ডানার উপরিতলের ডিসকাল বন্ধনী ও পোস্ট-ডিসকাল ছোপসারির মধ্যবর্তী অস্পষ্ট ফ্যাকাশে রেখা ও উভয় ডানার উপরিতলের ফ্যাকাশে অস্পষ্ট সাব-টার্মিনাল রেখা নিম্নতলে সাদা ও অধিক স্পষ্ট।পিছনের ডানার কোস্টাল প্রান্ত ৮ নং শিরার উপরের অংশে চওড়াভাবে সাদা; বিশেষত স্ত্রী প্রকারে।

শুঙ্গ কালচে বাদামি বা কালো ও শীর্ষে কমলা-হলুদ । মাথা , বক্ষদেশ (thorax) ও উদর উপরিতলে কালচে বাদামি বা কালো এবং নিম্নতলে সাদা। চোখ নীলচে।[7]।[5]

আচরণ

এই প্রজাতি উত্তর ভারতে দুর্লভ নয় তবে দক্ষিণ ভারতে দুর্লভ। স্বভাব মোটের উপর অন্যান্য সেইলারদের মতো।এদের উড়ান দ্রুত নয় এবং এরা ডানা অনুভূমিক রেখে বাতাসে ভেসে ওড়ে (glide) ও মাঝেমাঝে ডানা ঝাপটায় ।পাতায় ডানা মেলা ও বন্ধ অবস্থায় বসে রসপান, রোদ পোহানো এবং ভিজে মাটিতে বা পাথরের ভিজে ছোপে বসেও খ্যাদরস আহরণ ও রোদ পোহানো এদের নিয়মিত অভ্যাস। চিরহরিৎ ও পর্ণমোচী উভয় প্রকার বনভূমিতেই এই প্রজাতির দেখা মেলে। হিমালয়ের পাহাড়ী জঙ্গলে পাহাড়ের পাদদেশ থেকে ১২০০মি, উচ্চতা অবধি এদের বিচরণ চোখে পড়ে। দক্ষিণ ভারতে ১৯০০ মি, উচ্চতা পর্যন্ত ও উত্তর ভারতে গড়ে ৬০০ মি, উচ্চতা পর্যন্ত জঙ্গলের পথের ধরে নদী-ঝর্ণার কিনারা, নদীখাত এদের পছন্দের বাসস্থান। ফুলে বসে মধুপান করতে এদের খুবই কম দেখা যায়। সাধারণত মার্চ থেকে জুন ও অগাস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এদের দেখা পাওয়া যায়। স্বভাবে ও বাসস্থান পছন্দের বিষয়ে কমন সেইলারদের সাথে এই প্রজাতির অনেক মিল চোখে পড়ে।[4]

তথ্যসূত্র
  1. A Pictorial Guide Butterflies of Gorumara National Park (2013 সংস্করণ)। Department of Forests Government of West Bengal। পৃষ্ঠা 234।
  2. Varshney, R.K.; Smetacek, Peter (২০১৫)। A Synoptic Catalogue of the Butterflies of India। New Delhi: Butterfly Research Centre, Bhimtal & Indinov Publishing, New Delhi। পৃষ্ঠা 194। doi:10.13140/RG.2.1.3966.2164। আইএসবিএন 978-81-929826-4-9।
  3. Savela, Markku। "Phaedyma columella (Cramer, [1780])"। Lepidoptera and Some Other Life Forms। সংগ্রহের তারিখ জুলাই ২, ২০১৮।
  4. Kunte, Krushnamegh (২০১৩)। Butterflies of The Garo Hills। Dehradun: Samrakshan Trust, Titli Trust and Indian Foundation of Butterflies। পৃষ্ঠা 104।
  5. Isaac, Kehimkar (২০০৮)। The book of Indian Butterflies (ইংরেজি ভাষায়) (1st সংস্করণ)। নতুন দিল্লি: অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস। পৃষ্ঠা 379। আইএসবিএন 978 019569620 2।
  6. "Phaedyma columella Cramer, 1780 – Short-banded Sailer"। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মার্চ ২০১৯।
  7. Wynter-Blyth, M.A. (1957) Butterflies of the Indian Region, pg 190.
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.