রহনপুর শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের গণকবর

রহনপুর শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের গণকবর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নিহত শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধি। এটি রহনপুর রেলস্টেশন এলাকার বিজিবি ক্যাম্পের পশ্চিম পাশে অবস্থিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যার স্মৃতিচিহ্ন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সমাপ্তিলগ্নে পাকিস্তান সেনাবাহিনী তাদের সহযোগীদের সহায়তায় রহনপুর ও এর আশে পাশের এলাকার যে-সকল মুক্তিযোদ্ধা এবং অন্যান্যদের হত্যা করেছিল তাঁদের শ্রদ্ধার নিদর্শন স্বরূপ এটি নির্মাণ করা হয়। যে স্থানটিতে এ হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছিল সেখানেই এ স্মৃতিসৌধটি নির্মিত হয়।[1]

রহনপুর শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের গণকবর
রহনপুর শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের গণকবর এর স্মৃতিস্তম্ভ
অবস্থানরহনপুর রেলস্টেশন, রহনপুর, গোমস্তাপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, বাংলাদেশ
ধরনসম্পূর্ন
উপাদানইট, সিমেন্ট, বালি
সম্পূর্ণতা তারিখ৭ ডিসেম্বর ২০১৩
উৎসর্গীকৃতরহনপুরে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা

অবকাঠামো

গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর রেল স্টেশনের পাশে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১১ পদাতিক ডিভিশন নির্মিত শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিসৌধটির সীমানা প্রাচীরে বেষ্টিত।[2] এটি আধুনিক নির্মাণ রীতিতে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভ।

এর সর্বোচ্চ স্তম্ভটি কালো টাইলস বা টালি নির্মিত। স্তম্ভের বেদিটি লাল ইটের তৈরি। ইটের তৈরি একটি দেয়াল সম্পূর্ন স্তম্ভের সবচাইতে বড় অংশটি দখল করে আছে। দেয়ালটির দুদিক ভাঙা। এ ভগ্ন দেয়াল ঘটনার দুঃখ ও শোকের গভীরতা নির্দেশ করছে। দেয়ালের দক্ষিণ-পশ্চিম পার্শ্বে একটি জানালা আছে। এ জানালা দিয়ে পেছনের আকাশ দেখা যায়। জানালাটি দেয়ালের বিশালতাকে কমিয়ে আনে।

ইতিহাস

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে রহনপুর তথা গোমস্তাপুর উপজেলার এই এলাকা ৭ নং সেক্টরের অধীন ছিল। চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৯৭১ এ পাকিস্তানি বাহিনী তাদের নৃশংসতম হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিলো। আর তার ই অংশ হিসেবে রহনপুরে এই গণকবর টি তৈরি করা হয়। ১০ হাজার এর ও বেশি সাধারন মানুষকে হত্যা করা হয়েছিলো এই গণকবরে। এরপর ২০১৩ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১১ পদাতিক ডিভিশন এর উদ্যগে এখানে একটি স্মৃতিস্তম্ভ সহ গণকবর এলাকাটি সীমানা প্রাচীরে বেষ্টিত করা হয়।

রহনপুর শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের গণকবর এর স্মৃতিস্তম্ভ

রহনপুরের মুক্তিযুদ্ধ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ এলাকার ‍মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে রহনপুর এলাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন ছিলো। কারণ এখানেই গোমস্তাপুর উপজেলা এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ এর গুরুত্বপূর্নে এলাকার প্রবেশ পথে ছিলো মহানন্দা নদীক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর এই রহনপুর অঞ্চলে প্রত্যক্ষ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।

৭ নং সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর এর নির্দেশে ১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বর খুব সকালে লেফটেন্যান্ট রফিকের নেতৃত্বে প্রায় ৩০/৩৫ জন মুক্তিযোদ্ধার একটি দল বাঙ্গাবাড়ী থেকে রহনপুর অভিমুখে রওনা হয়। পথে আলিনগর এলাকার মুক্তিযোদ্ধারাও তাদের সাথে যোগ দেয়। এছাড়া মহানন্দা নদীর পেরিয়ে বোয়ালিয়া এলাকার মুক্তিযোদ্ধারা রহনপুরে প্রবেশ করে। মুক্তিযোদ্ধারা রহনপুরে প্রবেশের আগেই পাক সেনারা রহনপুর এ.বি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে গড়ে তোলা সেনা ক্যাম্প গুটিয়ে ট্রেনযোগে পালিয়ে যায়। পরে মুক্তিযোদ্ধারা নাচোল-আমনুরা হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের দিকে রওনা হয়। [3]

সমাহিত মুক্তিযোদ্ধাগণ

আরো দেখুন

তথসূত্র

  1. হোসেন, আনোয়ার (মার্চ ৩০, ২০১৬)। "অযত্ন অবহেলায় হারিয়ে যাচ্ছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বধ্যভূমিগুলো"বাংলা ট্রিবিউন। ঢাকা, বাংলাদেশ: কাজী আনিস আহমেদ। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৪-০২
  2. "গণকবরের গল্প"দৈনিক সমকাল। ১৩৬, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা - ১২০৮: এ.কে.আজাদ। ১৫ ডিসেম্বর ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৪-০২
  3. "রহনপুর মুক্ত দিবস আজ"সাহস। গোলাম মোস্তফা। ১১ ডিসেম্বর ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৪-০২
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.