মুহাম্মদ তাহিরুল কাদেরি

ড. মুহাম্মদ তাহির উল কাদেরি (আরবি: محمد طاهر القادری‎‎‎; জন্ম ১৯ ফেব্রুয়ারী, ১৯৫১), হলেন সুন্নী মতবাদে বিশ্বাসী সুফিবাদী অভিষ্টসিদ্ধিসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব ও বর্তমান বিশ্বের সার্বজনীন সর্বশ্রেষ্ঠ মুসলিম ধর্মীয় বিদ্যাজ্ঞ, যাকে বিভিন্ন শাস্ত্রে অসামান্য গবেষণা ও গভীর পাণ্ডিত্যের কারণে আরব্য উলামা কর্তৃক শাইখুল ইসলাম উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে।[2] দ্বিতীয় মিলিনিয়ামের শেষ প্রান্তে বিশ্বের ৫০০ প্রভাবশালী ব্যাক্তিগের অন্তর্ভুক্ত করা হয় তাকে। তিনি আন্তর্জাতিক ইসলামি সম্মেলন এর সহ-সভাপতি এবং মিনহাজুল কুরআন ইন্টারন্যাশনাল নামক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা-চেয়ারম্যান। তিনি মিনহাজ বিশ্ববিদ্যালয়, লাহোর এর প্রতিষ্ঠাতা ও বোর্ড অব গভর্নর্স এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক।[3]

ড. মুহাম্মদ তাহির উল কাদেরি
পূর্ণ নামড. মুহাম্মদ তাহির উল কাদেরি
জন্ম (1951-02-19) ১৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৫১
যুগবর্তমান
অঞ্চলদক্ষিণ এশিয়া
ঘরানাহানাফি মাযহাব, কাদেরিয়া সুফিবাদ, রাজনীতি
মূল ক্ষেত্রআকাঈদ শাস্ত্র, কুরআন, উসুলে তাফসির, তাফসির, উসুলে হাদিস, হাদিসশাস্ত্র, উসুলে ফিকহ, ফিকহশাস্ত্র, সুফিবাদ, ইসলামি দর্শন, সিরাত, রাজনীতি[1]
উল্লেখযোগ্য ধারণাফতওয়া অন টেরোরিজম, Concept of Jihad, interfaith dialogue

জন্ম

ড. মুহাম্মদ তাহিরুল কাদেরী ১২ জমাদিউল উলা, ১৩৭০ হিজরী মোতাবেক ১৯ ফেব্রুয়ারী, ১৯৫১ খ্রিষ্টাব্দে রোজ সোমবার পাকিস্তানের জং জেলায় জন্মগ্রহণ করেন।[2][4][5] তিনি তৎযুগীয় অন্যতম হাদিস বিশারদ ড. ফরিদুদ্দীন আল-কাদেরীর জ্যেষ্ঠ পুত্র, যিনি একজন ধর্মীয় বিজ্ঞজন হওয়ার পাশাপাশি সু-চিকিৎসক ছিলেন।[6][7]

শিক্ষাজীবন

ড. মুহাম্মদ তাহিরুল কাদেরী বাল্যকালে মদিনাস্থ মাদরাসা আল-উম্ম আশ-শারীয়াতে প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন করেন।[5] তিনি তার পিতাসহ বিভিন্ন দেশের শিক্ষকদের নৈকট্যে থেকে ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষা অর্জন করেন। তার আধ্যাত্মিক শিক্ষক হলেন তাহির আলাউদ্দিন আল-কাদেরী আল-জিলানী।[5] তিনি পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় এর ইসলামিক ল' বিভাগ থেকে মাস্টার্স ফার্স্ট ক্লাস ডিগ্রী অর্জন করেন।[5] একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামে শাস্তি:তার প্রকার ও দর্শন বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন।[5]

কর্মজীবন

তিনি একজন শিক্ষাবিদ, ইসলামি চিন্তাবিদ, সুবক্তা, সমাজকর্মী, রাজনীতিবিদ ও পার্লামেন্টারিয়ান হিসেবে পরিচিত। পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে স্নাতক তিনি। আশির দশকে শিক্ষা ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান মিনহাজুল কোরআন ইন্টারন্যাশনাল প্রতিষ্ঠা করে। ১৯৮৯ সালে রাজনৈতিক দল গড়েন। তবে শুধু ২০০২ সালেই পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হতে পেরেছিলেন। পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত মুসলিম ধর্মের সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্মীয় নেতা কাদেরি কয়েক বছর টরন্টোতে কাটানোর পর ২০১২ সালের ডিসেম্বরে দেশে ফেরেন।[8][9]

উল্লেখযোগ্য কর্ম

সন্ত্রাসবাদের ফতওয়া
আত্মঘাতি বোমা হামলা ও সন্ত্রাসবাদের ফতওয়া

আত্মঘাতি বোমা হামলা ও সন্ত্রাসবাদের ফতওয়া (ইংরেজি: Fatwa on Terrorism and Suicide Bombings) হলো ২মার্চ ২০১০ সালে প্রকাশিত ড. কাদেরি কর্তৃক ৬০০ পৃষ্ঠাব্যাপী (উর্দু সংস্করণ), ৫১২ পৃষ্ঠাব্যাপী (ইংরেজি সংস্করণ) লিপিবদ্ধ ইসলামি আইনি অধ্যাদেশ বা রায় যাতে শরিয়াহর মূল উৎস হতে উপপাদন করা হয়েছে যে সন্ত্রাসবাদ ও আত্মঘাতি বোমা হামলা নীতিবিগর্হিত, পাপ এমনকি তা অনৈসলামিক কর্মকাণ্ড।[10][11] ফতোয়াটিতে ড. কাদেরি উল্লেখ করেন যে, ইসলামে সন্ত্রাসবাদের কোনো স্থান নেই।[10][12][13] ফতোয়াটি লন্ডন থেকে বই আকারে প্রকাশিত হয়।[14]

তথ্যসূত্র
  1. "Tahir-ul-Qadri's biography"। ১ সেপ্টেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জানুয়ারি ২০১৩।
  2. "Minhaj.org"। www.minhaj.org। ১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ সেপ্টেম্বর ২০১৭।
  3. "MUL AN INTERNATIONAL UNIVERSITY"। MUL.EDU.PK (ইংরেজি ভাষায়)। ২৪ মে ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মে ২০১৯।
  4. Nielsen, Jørgen S. (২০১২)। Islam in Denmark: The Challenge of Diversity (ইংরেজি ভাষায়)। Lexington Books। পৃষ্ঠা 23। আইএসবিএন 9780739150924।
  5. Clarke, Matthew; Halafoff, Anna (২৫ আগস্ট ২০১৬)। Religion and Development in the Asia-Pacific: Sacred Places as Development Spaces (ইংরেজি ভাষায়)। Taylor & Francis। পৃষ্ঠা 50। আইএসবিএন 9781317647454।
  6. "A Profile of Shaykh-ul-Islam Dr. Muhammad Tahir-ul-Qadri" (ইংরেজি ভাষায়)।
  7. Dr Farid-ud-Din Qadri
  8. রাজনৈতিক ‘ড্রোন’ কাদরি!,বিবিসির বিশ্লেষণ, দৈনিক প্রথম আলো। ঢাকা থেকে প্রকাশের তারিখ: ১৬-০১-২০১৩ খ্রিস্টাব্দ।
  9. পাকিস্তানে কাদরির লংমার্চে গুলি,ডন, বিবিসি ও এএফপি, দৈনিক প্রথম আলো। ঢাকা থেকে প্রকাশের তারিখ: ১৬-০১-২০১৩ খ্রিস্টাব্দ।
  10. "Fatwa on Terrorism"। Wikipedia.com (ইংরেজি ভাষায়)। ২৭ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মে ২০১৯।
  11. lila, Muhammad (৩০ মার্চ ২০১০)। "Influential Pakistani cleric based in GTA" (ইংরেজি ভাষায়)। ২ এপ্রিল ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মে ২০১৯।
  12. "IRAQ - URGENT / Iraq's media target ed by Al-Qaeda, other terror groups"। Wikileaks.org (ইংরেজি ভাষায়)। ২৭ মে ২০১৩। ২৬ মে ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মে ২০১৯।
  13. "Terrorism has no place in Islam: Sufi scholar"। Indianexpress.com। ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১২। ১৩ মার্চ ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০১৪।
  14. "Fatwa on Terrorism"। Wikipedia.com (ইংরেজি ভাষায়)। ২৭ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ মে ২০১৯।

বহিঃসংযোগ
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.