ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়ন

ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়ন দেশের স্বাধীনোত্তর ইতিহাসে মোটামুটি সমাজতান্ত্রিক ধাঁচের নীতিতে পরিচালিত হয়। বিভিন্ন ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ; লাইসেন্স রাজ নামে পরিচিত বহুবিধ বিধি ও লাল ফিতের নীতি; এবং বিশ্ব অর্থনীতি থেকে বিচ্ছিন্নতা ছিল এই ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য। স্বাধীনতার পরবর্তী তিন দশকে ভারতে মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির হার ছিল মাত্র ১%। [3] ১৯৮০-এর দশকের মধ্যভাগ থেকে অর্থনৈতিক উদারীকরণের মাধ্যমে ভারতের বাজার ধীরে ধীরে খুলে যেতে থাকে। ১৯৯১ সালের মৌলিকতর আর্থিক সংস্কার ও ২০০০-এর দশকে তার নবায়নের ফলে ভারত বাজারভিত্তিক ব্যবস্থা স্থাপনের পথে অগ্রসর হয়।[3]

ভারতের ত্রিশ কোটি মধ্যবিত্ত জনসংখ্যার বার্ষিক বৃদ্ধির হার ৫%।[1] উপরের চিত্রে মুম্বাই মহানগরীর বসতাঞ্চল
কোচির কালুরে বহুতল বাণিজ্যিক ভবনের পাশে বস্তি। এই ধরনের দূষিত পরিবেশে বাস করেন কাজের খোঁজে শহরে আসা শত শত শ্রমিক শ্রেণীর মানুষজন। [2]

২০০০-এর দশকের শেষভাগে ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির পরিমাণ দাঁড়ায় ৭.৫%, যা দেশের গড় দশকীয় আয়ের দ্বিগুণ।[3] বিশ্লেষক মহলের ধারণা, ভারত আরও বাজার সংস্কারের ক্ষেত্রে আরো কতকগুলি মৌলিক পদক্ষেপ নিলেই এই হার বৃদ্ধি পাবে এবং ২০১১ সালের মধ্যে সরকার কর্তৃক স্থিরীকৃত লক্ষ্যমাত্রা ১০ শতাংশে উপনীত হবে।[3] নিজ নিজ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ভারতীয় রাজ্যগুলির নিজস্ব দায়িত্ব রয়েছে। রাজ্যক্ষেত্রে ১৯৯৮-২০০৮ বর্ষভিত্তিক বৃদ্ধির হার হল : গুজরাট (৮.৮%), হরিয়ানা (৮.৭%), দিল্লি (৭.৪%)। এই হার বিহার (৫.১%), উত্তরপ্রদেশ (৪.৪%) বা মধ্যপ্রদেশ (৩.৫%) রাজ্যের তুলনায় অনেক বেশি।[4] ভারত বিশ্বে দ্বাদশ বৃহত্তম অর্থব্যবস্থা; ক্রয়ক্ষমতা সমতার নিরিখে বিশ্বে চতুর্থ বৃহত্তম ও মাথাপিছু জিডিপি (নমিন্যাল) ও মাথাপিছু জিডিপি (পিপিপি) অনুযায়ী বিশ্বে যথাক্রমে ১২৮তম ও ১১৮তম।

ভারতে জীবনযাত্রার মান উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেলেও জনসংখ্যার ৭৫.৬ শতাংশের দৈনিক ক্রয়ক্ষমতা সমতা ২ মার্কিন ডলারেরও কম, এবং নমিন্যাল ক্ষেত্রে তা ০.৫ মার্কিন ডলারের কাছাকাছি।[5] ভারতীয়দের দুই তৃতীয়াংশ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে গ্রামাঞ্চলে কৃষিকাজ থেকে জীবিকানির্বাহ করেন। আবার জিডিপির অংশ হিসেবে নগর ও মহানগরগুলি ভারতীয় অর্থনীতির দুই তৃতীয়াংশের গঠনকর্তা।

ভারতের অর্থনৈতিক সংস্কার প্রক্রিয়া অত্যন্ত দ্রুত সারা হচ্ছে। বিশ্ব ব্যাংকের মতে সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ প্রয়োজন পাবলিক সেক্টর সংস্কার, পরিকাঠামো, কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়ন, শ্রম আইনের অপসারণ, পিছিয়ে পড়া রাজ্য ও এইচআইভি/এইডস-এর ক্ষেত্রে।[6] ২০০৮ সালের ইজ অফ ডুইং বিজনেস ইনডেক্স অনুসারে ভারতের স্থান ১২০তম। উল্লেখ্য এই ইনডেক্সে গণপ্রজাতন্ত্রী চিনব্রাজিলের স্থান যথাক্রমে ৮৩তম ও ১২০তম।

তথ্যসূত্র

  1. Marketing in the 21st Century: New world marketing - By Bruce David Keillor
  2. "BBC News Online | Business | Winners and losers as India booms"। News.bbc.co.uk। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১১-০৩
  3. Economic survey of India 2007: Policy Brief. OECD.
  4. A special report on India: Ruled by Lakshmi Dec 11th 2008 From The Economist print edition
  5. "The developing world is poorer than we thought, but no less successful in the fight against poverty"। ২৩ মার্চ ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ জুন ২০০৯
  6. India Country Overview 2008 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২২ মে ২০১১ তারিখে. World Bank

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.