বৃহৎ লাল বিন্দু

বৃহৎ লাল বিন্দু (ইংরেজি: Great Red Spot) হল বৃহস্পতি গ্রহের বায়ুমণ্ডলে বিষুবরেখা থেকে ২২ ডিগ্রি দক্ষিণে অবস্থিত একটি স্থায়ী উচ্চচাপ ক্ষেত্র। এই ক্ষেত্র থেকে যে প্রতীপ ঘূর্ণিঝড়টির সৃষ্টি হয়, সেটি সৌরজগতের বৃহত্তম প্রতীপ ঘূর্ণিঝড়। ১৮৩০ সাল থেকে একটানাভাবে এই বিন্দুটি পর্যবেক্ষিত হয়ে আসছে।[1] তারও আগে ১৬৬৫ ও ১৭১৩ সালে বৃহস্পতির বুকে পর্যবেক্ষিত ঝড়কেও প্রকৃতপক্ষে এই ঝড়টি বলেই মনে করা হয়। বিজ্ঞানীদের এই মতটি সঠিক হলে ধরতে হবে অন্তত এক্সপ্রেশন ত্রুটি: অপরিচিত বিরামচিহ্ন অক্ষর "" ঝড়টির অস্তিত্ব রয়েছে।[2]

বৃহস্পতির ঘূর্ণায়মান রঙিন মেঘ। এই গ্রহের দক্ষিণ গোলার্ধে (ছবিতে বাঁদিকে) বৃহৎ লাল বিন্দুটিকে দেখা যায়।

পর্যবেক্ষণের ইতিহাস

১৯৭৪ সালে পাইয়োনিয়ার ১০ কর্তৃক গৃহীত বৃহস্পতির আলোকচিত্র। ১৯৭৯ সালে ভয়েজার ১ কর্তৃক গৃহীত আলোকচিত্রটিতে রঙিন বিন্দুটিকে অধিকতর স্পষ্টভাবে দেখা যায়।
১৯৭৯ সালে ভয়েজার ১ থেকে গৃহীত বৃহস্পতি ও বৃহৎ লাল বিন্দুর একটি বিস্তৃত আলোকচিত্র। বৃহৎ লাল বিন্দুর ঠিক নিচে যে সাদা ডিম্বাকার ঝড়টিকে দেখা যাচ্ছে, সেটির ব্যাস পৃথিবীর ব্যাসের প্রায় সমান।
বৃহস্পতি গ্রহের নিকটবর্তী ভয়েজার ১ মহাকাশযান থেকে গৃহীত টাইম-ল্যাপস ক্রমে দৃশ্যমান বায়ুমণ্ডলীয় বন্ধনীগুলির গতি এবং বৃহৎ লাল বিন্দুর সঞ্চরণ। নাসা চিত্র

সম্ভবত ১৬৬৫ সালের আগেও বৃহৎ লাল বিন্দুটির অস্তিত্ব ছিল। কিন্তু বর্তমান বিন্দুটিকে প্রথম দেখা যায় ১৮৩০ সালের পরেই। ১৮৭৯ সালে উজ্জ্বলভাবে প্রতীয়মান হওয়ার পর এটিকে আরও ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়। ১৭শ শতাব্দীতে যে ঝড়টিকে দেখা গিয়েছিল, সেটি অন্য ঝড়ও হতে পারে।[3] ১৭শ শতাব্দীর পর্যবেক্ষণ এবং ১৮৩০ সালের পর বর্তমান পর্যবেক্ষণের পর্যায় দু’টির মধ্যে একটি সুদীর্ঘ ব্যবধান বিদ্যমান। তাই আদি বিন্দুটি ক্ষয়িত হয়ে পুনঃসৃজিত হয়েছে, নাকি সেটি বিবর্ণ হয়ে গিয়েছে, নাকি পর্যবেক্ষণমূলক নথিপত্রগুলিতে লিপিবদ্ধ তথ্য নেহাত মামুলি কিনা, তাও জানা যায় না।[4]

উদাহরণস্বরূপ, এটির প্রথম পর্যবেক্ষণের কৃতিত্ব প্রায়শই দেওয়া হয় রবার্ট হুককে। তিনি ১৬৬৪ সালের মে মাসে বৃহস্পতি গ্রহের একটি বিন্দু বর্ণনা করেন। যদিও সম্ভবত হুকের দেখা বিন্দুটি ছিল সামগ্রিকভাবে ওই গ্রহের উত্তর বিষুবীয় বেষ্টনীতে, যেখানে বর্তমান বৃহৎ লাল বিন্দুটির অবস্থান বৃহস্পতির দক্ষিণ বিষুবীয় বেষ্টনীতে। পরের বছর জিওভান্নি ক্যাসিনি বৃহস্পতির যে "স্থায়ী বিন্দু"টির বর্ণনা দিয়েছিলেন, তা অধিকতর বিশ্বাসযোগ্য।[5] দৃশ্যমানতার হ্রাসবৃদ্ধি বজায় রেখেই ক্যাসিনির দেখা বিন্দুটি ১৬৬৫ থেকে ১৭১৩ সাল পর্যন্ত দেখা গিয়েছিল। যদিও পরবর্তী পর্যবেক্ষণের মধ্যবর্তী ১১৮ বছরের ব্যবধানের কারণে দু’টি বিন্দুর পরিচয় নিয়ে কোনও স্থির সিদ্ধান্তে আসা যায় না। তাছাড়া পূর্বে দৃষ্ট বিন্দুটির স্বল্পকালীন পর্যবেক্ষণ ইতিহাস এবং আধুনিক বিন্দুটির তুলনায় সেটির স্লথ গতির ফলে দু’টি বিন্দু যে একই তাও নিশ্চিত বলা যায় না।[6]

অভিযান

গঠন

বৃহৎ লাল বিন্দুর ঘূর্ণায়মান গতি, ক্যাসিনি মহাকাশযান থেকে গৃহীত আলোকচিত্র।
পৃথিবী ও বৃহৎ লাল বিন্দুর যথাযথপ্রায় আকার

রং ও উপাদান

গতিবিদ্যা

আরও দেখুন

  • বহির্জাগতিক ঘূর্ণিঝড়
  • বৃহৎ শ্বেত বিন্দু – শনি গ্রহের বুকে অনুরূপ একটি ঝড়
  • হাইপারকেন

তথ্যসূত্র

  1. Karl Hille (২০১৫-০৮-০৪)। "Jupiter's Great Red Spot: A Swirling Mystery"। NASA। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১১-১৮
  2. Rogers (1995), 6.
  3. Rogers (1995), 188.

আরও পড়ুন

  • [Numerous authors] (১৯৯৯)। Beatty, Kelly J.; Peterson, Carolyn Collins; Chaiki, Andrew, সম্পাদকগণ। The New Solar System (4th সংস্করণ)। Massachusetts: Sky Publishing Corporation। আইএসবিএন 978-0933346864।
  • Beebe, Reta (১৯৯৭)। Jupiter the Giant Planet (2nd সংস্করণ)। Washington: Smithsonian Books। আইএসবিএন 978-1560986850।
  • Hockey, Thomas (১৯৯৯)। Galileo's Planet: Observing Jupiter Before Photography। Bristol, Philadelphia: IOP Publishing। আইএসবিএন 978-0750304481।
  • Peek, Bertrand M. (১৯৮১)। The Planet Jupiter: The Observer's Handbook (Revised সংস্করণ)। London: Faber and Faber Limited। আইএসবিএন 978-0571180264।
  • Rogers, John H. (১৯৯৫)। The Giant Planet Jupiter। Cambridge: Cambridge University Press। আইএসবিএন 978-0521410083।
  • Smith, B. A.; ও অন্যান্য (১৯৭৯)। "The Jupiter system through the eyes of Voyager 1"। Science204 (4396): 951–957, 960–972। doi:10.1126/science.204.4396.951। PMID 17800430বিবকোড:1979Sci...204..951S

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.