ফণীন্দ্রনাথ গুপ্ত
ফণীন্দ্রনাথ গুপ্ত (মৃত্যু: চৈত্র ১৩৪১ বঙ্গাব্দ) বাংলার অন্যতম দেশভক্ত ব্যবসায়ী। তাকে ভারতের শিল্পস্থাপনার অধিনায়কও বলা হয়।[1] তিনি ভারতে দেশি প্রযুক্তিতে ঝর্ণা কলম তৈরির কারখানার পথপ্রদর্শক। তিনিই প্রথম দেশি প্রযুক্তিতে ঝর্ণা কলম তৈরির কারখানা করে ব্যবসা শুরু করেন।[2] পরবর্তীতে এটি এফ এন কোম্পানি এন্ড পেন্সিল ফ্যাক্টরি নামে বিখ্যাত হয়।[2][3][4]
ফণীন্দ্রনাথ গুপ্ত | |
---|---|
![]() ছবিটি প্রবাসী পত্রিকায় তার মৃত্যু সংবাদের সাথে প্রকাশিত হয়েছিল | |
জন্ম | |
মৃত্যু | চৈত্র ১৩৪১ বঙ্গাব্দ |
জাতীয়তা | ভারতীয় |
নাগরিকত্ব | ভারত |
পেশা | বাঙালি ব্যবসায়ী, স্বদেশী আন্দোলনকারী |
পরিচিতির কারণ | স্বদেশী আন্দোলনে যোগ দিয়ে ভারতে প্রথম দেশীয় প্রযুক্তির ঝর্ণা কলমের কারখানা স্থাপন করেন |
উল্লেখযোগ্য কর্ম |
|
প্রথম জীবন
ফণীন্দ্রনাথ কলকাতার বিখ্যাত গুপ্তু বা গুপ্ত পরিবারের সন্তান ছিলেন। তার পিতামহ দ্বারকানাথ গুপ্ত ছিলেন কলকাতা মেডিকাল কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র, আধুনিক ভারতের প্রথম শব ব্যবচ্ছেদে মধুসূদন গুপ্তের সহকারী ও ম্যালেরিয়ার বিখ্যাত স্বনামধন্য ওষুধ 'ডি গুপ্তু'র আবিষ্কারক। তার পিতা গোপালচন্দ্র গুপ্ত ছিলেন শিল্পপতি। ফণীন্দ্রনাথ গুপ্ত প্রেসিডেন্সী কলেজে বি.এ. পড়েন।[2][5]
কর্ম জীবন
পড়াশোনা শেষ করে তিনি প্রসিদ্ধব্যবসায়ী ডি. গুপ্তের কোম্পানীতে কিছুদিন ব্যবসায়ে শিক্ষানবীশী করেন।[5] এরপর ১৯০৫-০৬ খ্রী.স্বদেশী আন্দোলনের সময় দেশী কলম, নিব ও পেন্সিলের কারখানা স্থাপন করে এই ব্যবসায়ে উন্নতি করেন।[4] ভারতবর্ষে ফাউন্টেন পেন তৈরির কাজে তাকে পথপ্রদর্শক বলা যায়।[5] তিনি এফ. এন.গুপ্ত নামে বেশি প্রসিদ্ধ ছিলেন।[2][4] ১৯০৮ সালে তিনি বাংলার শিল্পপতি, সরকারী আমলা, শিক্ষাবিদ ও চিন্তবিদদের নিয়ে বাংলার উন্নতিকল্পে বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ নামে একটি মঞ্চ গঠন করেন।[6] তাতে সদস্য ছিলেন আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় ও দাদাভাই নৌরজী।[6]
স্বদেশী আন্দোলন
ফণীন্দ্রনাথ গুপ্ত অন্যান্য বিপ্লবীদের মতো সরাসরি স্বদেশী আন্দোলনে না নেমে একটু অন্যভাবে স্বদেশী আন্দোলনে নিজেকে আত্মনিয়োগ করেন।[1] বাংলাকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার কথা ভেবে বাংলায় দেশীয় কারখানা স্থাপন করার প্রয়োজন অনুধাবন করেন। প্রথমে পেন-পেন্সিল, নিবের কারখানা স্থাপন করেন এবং ১৯০৫ সালে মাত্র কুড়ি বছর বয়সে নিজের বাড়িতেই পেনের কারখানা স্থাপন করেন। পরে ১৯১০ সালে বেলেঘাটায় আরো বৃহৎ আকারে কারখানা গড়ে তোলেন।[2] ১৯২৫ সালে মহাত্মা গান্ধী কলকাতায় থাকাকালীন তার কারখানা পরিদর্শন করেন এবং তার স্বদেশী আন্দোলনের ভাবমূর্তির জন্য ভূয়সী প্রসংশা জানান।[1]
তথ্যসূত্র
- Landholders Journal Vol.3 No.5-8(feb-may)1935 (ইংরেজী ভাষায়)। ১৯৩৫। পৃষ্ঠা ৬২১।
- বসু, অঞ্জলি; গুপ্ত, সুবোধ চন্দ্র সেন (২০১০)। সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান: প্রায় চার সহস্রাধিক জীবনী-সংবলিত আকর গ্রণ্থ. প্রথম খন্ড। সাহিত্য সংসদ। আইএসবিএন 9788179551356।
- Large Industrial Establishments in India (ইংরেজি ভাষায়)। Manager of Publications। ১৯৫৮।
- "পাতা:প্রবাসী (পঞ্চত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/১৪১ - উইকিসংকলন একটি মুক্ত পাঠাগার"। bn.m.wikisource.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০১-১৪।
- "পাতা:জীবনীকোষ-ভারতীয় ঐতিহাসিক-পঞ্চম খণ্ড.pdf/১০৭ - উইকিসংকলন একটি মুক্ত পাঠাগার"। bn.wikisource.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০১-১৪।
- বিশ্বাস, এস. (৩০ এপ্রিল ১৯৯৫)। "Calcutta's elite revive a peer group to usher in change"। ইন্ডিয়া টুডে। লিভিং মিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জানুয়ারি ২০১৯।