প্রতাপ চন্দ্র লাল

এয়ার চীফ মার্শাল প্রতাপ চন্দ্র লাল (৬ ডিসেম্বর ১৯১৬-আগস্ট ১৯৮২) ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ১৯৭১ চলাকালীন সময় ভারতীয় বিমান বাহিনীর প্রধান কর্মকর্তা (বিমান বাহিনী প্রধান) ছিলেন।[1][2][3] ১৯৬৯ সালের ১৬ জুলাই তিনি বিমান বাহিনী প্রধান হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন এবং এ পদে থেকে ১৯৭৩ সালের ১৫ জানুয়ারী অবসরে যান।

এয়ার চীফ মার্শাল
প্রতাপ চন্দ্র লাল
পদ্মবিভূষণ, পদ্মভূষণ, ডিসটিংগুইশ্ড ফ্লাইং ক্রস (যুক্তরাজ্য)
জন্ম(১৯১৬-১২-০৬)৬ ডিসেম্বর ১৯১৬
লুধিয়ানা, পাঞ্জাব, ভারত
মৃত্যুআগস্ট ১৯৮২ (৬৭ বছর বয়স)
আনুগত্য ব্রিটিশ ভারত (১৯৪০-১৯৪৭)
 ভারত (১৯৪৭ সাল থেকে)
সার্ভিস/শাখা রয়েল বিমানবাহিনী
 ভারতীয় বিমানবাহিনী
কার্যকাল১৯৩৯-১৯৭৩
পদমর্যাদা এয়ার চীফ মার্শাল (ভারত)
নেতৃত্বসমূহবিমান বাহিনী প্রধান (১৯৬৯–১৯৭৩)
উপ বিমান বাহিনী প্রধান
ভারতীয় বিমান বাহিনী পশ্চিমাঞ্চলীয় কমান্ড
নং ৭ স্কোয়াড্রন
যুদ্ধ/সংগ্রাম২য় বিশ্বযুদ্ধ
পাক-ভারত যুদ্ধ ১৯৬৫
পাক-ভারত যুদ্ধ ১৯৭১
পুরস্কার
পদ্মবিভূষণ
পদ্মভূষণ
ডিসটিংগুইশ্ড ফ্লাইং ক্রস

পূর্ব জীবন এবং শিক্ষা

প্রতাপ চন্দ্র লাল জন্মগ্রহণ করেন ১৯১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে, এলাহাবাদ-ভিত্তিক একটি আইনজীবী পরিবারে। তার অনেক আগে থেকেই বিমান উড্ডয়নের প্রতি আগ্রহ ছিলো এবং ১৯৩৪ সালের জানুয়ারী মাসে তিনি 'আনাড়ি বৈমানিক' (বেসামরিক) এর লাইসেন্স পেয়ে যান। তিনি যুক্তরাজ্যের কিংস কলেজে সাংবাদিকতা বিষয়ে ডিপ্লোমা করেন ১৯৩৮ সালে, তিনি আশা করেছিলেন ১৯৩৯ সালের শেষের দিকে 'ইন্স অব কোর্ট' (যুক্তরাজ্য) তে আইন বিষয়ে পড়াশোনা শুরু করবেন। ইতোমধ্যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে যায় এবং প্রতাপ যুক্তরাজ্যে না যেয়ে রাজকীয় ভারতীয় বিমান বাহিনীতে যোগ দেবেন বলেন মনস্থির করেন এবং ১২ নভেম্বর ১৯৩৯ তারিখে তিনি রিসালপুরে (বর্তমানে পাকিস্তানস্থিত) আসেন এবং এখানের রাজকীয় বিমান বাহিনীর একটি ঘাঁটি ছিলো যেখানে প্রশিক্ষণ হয়। তাকে বিমান বাহিনীর 'বিমান পোত চালনা' (নেভিগেটর) এর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিলো এবং তিনি ১৯৪০ সালের মে মাসের দিকে বিমান বাহিনীর কমিশন্ড পদ লাভ করেন করাচী শহরে (বর্তমানে পাকিস্তানে)।[4]

বিমান বাহিনীতে জীবন

কমিশনপ্রাপ্তির তিনমাস পর তাকে রিসালপুরে আবার ডাকা হয় 'বিমান পোত চালনা প্রশিক্ষক' (নেভিগেশন ইন্সট্রাক্টর) হিসেবে। তিনি এ দায়িত্ব পালনকালে ভারতীয় এবং ব্রিটিশ উভয়দেরকেই বিমানপোত চালনার প্রশিক্ষণ দেন। ১৯৪১ সালের জানুয়ারী মাসে তাকে কোলকাতার 'নং ৩ উপকূল প্রতিরক্ষা ফ্লাইট' এ বদলী করা হয়। দুইমাস পর তাকে পুনরায় বিমানপোত চালনা প্রশিক্ষক হিসেবে আম্বালার নং ১ ফ্লাইং ট্রেনিং স্কুল (উড্ডয়ন প্রশিক্ষণ বিদ্যালয়) এ নিয়োগ দেওয়া হয়। এই আম্বালাতে কর্মরত থাকাকালেই তিনি পূর্ণ বৈমানিক হওয়ার মর্যাদা পান। ১৯৪৩ সালের শুরু দিকে তাকে বিমানপোত চালনা প্রশিক্ষক হিসেবে তো রাখা হয়ই এর সাথে সাথে তিনি উড্ডয়ন প্রশিক্ষক হিসেবেও নিয়োগ পেয়ে যান পেশোয়ারের (বর্তমানে পাকিস্তানে) 'যুদ্ধ প্রশিক্ষণ ইউনিট' (অপারেশনাল ট্রেনিং ইউনিট) এ। ১৯৪৩ সালের অক্টোবর মাসে প্রতাপ নং ৭ স্কোয়াড্রনে যোদ্ধা বৈমানিকের মর্যাদা পেয়ে যান। যদিও এই স্কোয়াড্রনটি ১৯৪৪ সালের ফেব্রুয়ারী মাসের আগে যুদ্ধে নামেনি। ফেব্রুয়ারী ১৯৪৪ সাল এবং মার্চ ১৯৪৫ পর্যন্ত নং ৭ স্কোয়াড্রন এবং ১ স্কোয়াড্রন বার্মা ফ্রন্টে খুবই সক্রিয় ছিলো। এই সময়ের মধ্যে প্রতাপ মোট ২১০ ঘণ্টা উড্ডয়ন করেন এবং যুদ্ধ শেষে স্কোয়াড্রন লিডার পদবী লাভ করেন। ১৯৪৬ সালে তিনি বিমান বাহিনীর 'স্থায়ী কমিশন্ড পদ' লাভ করেন।[4] এই ১৯৪৬ সালেই প্রতাপ উইং কমান্ডার পদবী লাভ করেন এবং কোলকাতাতে আন্তঃবাহিনী সৈনিক নিয়োগ কার্যালয়ের দায়িত্ব নেন। এই দায়িত্বের পাঁচ মাস পর প্রতাপ যুক্তরাজ্য যান সিনিয়র কমান্ডার্স কোর্স করতে এবং কোর্স শেষে ভারতে ফিরে এসে তিনি গ্রুপ ক্যাপ্টেন পদবীতে উন্নীত হন এবং ১৯৪৭ সালে বিমান বাহিনী সদর দপ্তরে বদলী হন পরিকল্পনা এবং প্রশিক্ষণ পরিদপ্তরের পরিচালক হিসেবে। ১৯৪৮ সালে গ্রুপ ক্যাপ্টেন অর্জন সিংহকে তিনি এই দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে ১৯৪৯ সালের মে মাসে আবার যুক্তরাজ্যে যান 'এয়ার স্টাফ কোর্স' করতে এবং ১৯৫০ সালের জুনে ভারতে এসেই এয়ার কমোডোর পদে পদোন্নতি লাভ করেন। ১৯৬৩ সালের ২৪শে নভেম্বর এয়ার ভাইস মার্শাল পদবীতে প্রতাপ ওয়েস্টার্ন এয়ার কমান্ডের অধিনায়ক হন; ১৯৬৪ সালের ১ই অক্টোবর তাকে বিমান বাহিনী সদর দপ্তরে উপ বিমান বাহিনী প্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ১৯৬৫ সালের পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধে প্রতাপের পরিকল্পনার জন্য ভারত সরকার তাকে পদ্মভূষণ পদকে ভূষিত করে। যুদ্ধের পর প্রতাপ এয়ার মার্শাল পদবীতে উন্নীত হন এবং ট্রেনিং কমান্ডের অধিনায়কের দায়িত্ব পান। ১৯৬৬ সালের শেষের দিকে প্রতাপ হিন্দুস্তান এ্যারোনেটিক্স লিমিটেড এর ম্যানেজিং ডাইরেক্টর হন। ১৬ জুলাই ১৯৬৯ তারিখে প্রতাপ এয়ার চীফ মার্শাল অর্জন সিংহর পদে অর্থাৎ বিমান বাহিনীর প্রধান কর্মকর্তা পদে আসীন হন।

তথ্যসূত্র

  1. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৩ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭
  2. http://www.bharat-rakshak.com/IAF/Database/1567
  3. http://www.indianetzone.com/11/air_chief_marshal_pratap_chandra_lal.htm
  4. http://www.bharat-rakshak.com/IAF/Personnel/Chiefs/257-PC-Lal.html
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.