পেন্টাগন

পেন্টাগন মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের সদরদপ্তর। এটি যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের আর্লিংটনে (৪৮ এন রোটারি রোড, আর্লিংটন, ভার্জেনিয়া ২২২১১ (মানচিত্র)) অবস্হিত। এর চিঠি লেখার ঠিকানা "ওয়াশিংটন, ডিসি ২০৩০১"। এর আকৃতি পঞ্চভুজাকৃতির বলে এরুপ নামকরণ করা হয়েছে। এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় অফিস ভবন।

পেন্টাগন ভবন

ইতিহাস

পেন্টাগনের অফিস আয়তনের দিক থেকে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ।[1][2] পেন্টাগনের নির্মাণ কাজ শুরু হয় , ১১ সেপ্টেম্বর ,১৯৪১, আর শেষ হয় ১৫ জানুয়ারি,১৯৪৩। এর মোট জমির পরিমাণ ৫৮৩ একর। পাঁচ তলা ভবনটির রয়েছে পাঁচটি সমান বাহু, যার প্রতিটির দৈর্ঘ্য ২৮১ মিটার এবং উচ্চতা ২৪ মিটার। কেউ যদি ভবনটির নিচ থেকে সবগুলো করিডোর ঘুরে ৫ তলায় পৌঁছতে চায় তবে তাকে কম করে হলেও ২৭ কিলোমিটার পথ হাঁটতে হবে। এখানে মোট সিড়িপথ ১৩১ টি, এস্কেলেটর ১৯টি, এলিভেটর ১৩টি, বিশ্রাম কক্ষ ২৮৪টি এবং জানালা রয়েছে ৭৭৫৪ টি।

পাঁচ একরের (২০, ০০০ বর্গমিটার), পেন্টাগনে মধ্যবর্তী চত্বর পৃথিবীর বৃহত্তম " কোন অভিবাদন নয়, কোন আচ্ছাদন নয় " ক্ষেত্র (স্বাভাবিক নিয়মকানুন থেকে এ ক্ষেত্র দায়মুক্ত। দরজার বাইরে, ইউ. এস. সামরিক ব্যক্তিবর্গ উপরস্থ কর্মকতাকে অভিবাদন এবং অবশ্যই টুপি পরিধান করবেন)। মধ্যবর্তী খোলা চত্বর অনানুষ্ঠানিক ভাবে " গ্রাউন্ড জিরো " নামে পরিচিত। ঠান্ডা যুদ্ধের সময় এই ডাকনাম সৃষ্টি হয়েছিল যখন এটি একটি নিউক্লিয়ার মিসাইলের সর্বাপেক্ষা সম্ভাব্য নিশানা হিসেবে চিন্তা করা হয়েছিল। এই চত্বরের মধ্যে " গ্রাউন্ড জিরো ক্যাফে " নামে একটি স্নাক্স বার আছে। স্থাপনা হিসেবে পেন্টাগনের যতটা গুরুত্বপূর্ণ রয়েছে তার চেয়ে বেশি গুরুত্ব এখানে উপস্থিত কর্তাব্যক্তিদের জন্য। যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপদস্থ প্রায় সব নেতৃত্বস্থানীয় কর্তাব্যক্তির অফিস এটি। পেন্টাগনের গুরুত্বপূর্ণ অফিসকক্ষে অনুমতি ছাড়া নির্দিষ্ট কর্মকর্তা ছাড়া আর কেউ যেতে পারেন না। পেন্টাগনে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষেধ বললেই চলে। এর ভিতরে ছবি তোলা ও ভিডিও করা সম্পূর্ণ নিষেধ। কেউ যদি ছবি বা ভিডিও করতে চায় তবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পূর্বানুমতির প্রয়োজন হয়। পেন্টাগনের ভিতরের ছবি তাই অনেকেই দেখতে পারেন না। শুধু সেমিনার হল এবং বিভিন্ন প্রেসের কর্মকাণ্ডের জন্য নির্দিষ্ট স্থান থেকেই এর কাজ চালানো হয়। গোপনীয়তা কাকে বলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান নিরাপত্তা কার্যালয়টি রয়েছে পেন্টাগনে। যুক্তরাষ্ট্রের সব প্রতিরক্ষাবিষয়ক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে ধরা হয় পেন্টাগনকে। এখান থেকেই প্রতিরক্ষা বিষয়ক বাহিনীগুলোর সমন্বয় এবং বিভিন্ন গোপন সংস্থার কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়। এগুলো গোপনীয় বিষয় ও সিদ্ধান্ত। পেন্টাগন নিয়ে যা বলা হয়, তার বেশির ভাগই শুধু মানুষের ধারণা। পেন্টাগনের এমন অনেক বিষয় রয়েছে যেগুলো সম্বন্ধে বাইরের পৃথিবীকে মোটেও জানানো হয় না। ন্যাশনাল সিকিউরিটি এবং ইউএস আর্মড ফোর্স সরাসরি এ পেন্টাগন থেকেই নিয়ন্ত্রিত হয়। পেন্টাগনের ভিতরেই প্রধান প্রতিরক্ষা কার্যালয় থাকায় এখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাধারণের অকল্পনীয়। পেন্টাগনে অসংখ্য অফিস রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে। রয়েছে সৈনিক, নাবিক, বিমানবাহিনী, নৌবাহিনীতে কর্মরত বিভিন্ন কর্মকর্তা। সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর পাশাপাশি মেরিন রিজার্ভ হিসেবেও রয়েছে অনেকে। এদের সবার অফিস এই পেন্টাগনে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা আরও কিছু গোপন সংস্থা অফিসও রয়েছে পেন্টাগনে। এদের মধ্যে ডিফেন্স ইন্টিলিজেন্স এজেন্সি, ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি, ডিফেন্স অ্যাডভান্স রিসার্চ প্রজেক্ট এজেন্সি, ডিফেন্স লজিস্ট্রিক এজেন্সি, মিসাইল ডিফেন্স এজেন্সি, পেন্টাগন ফোর্স প্রোটেকশন এজেন্সি ছাড়াও আরও অনেক সংস্থা রয়েছে।

তথ্যসূত্র

  1. "The Pentagon – George Bergstrom – Great Buildings Online"। Greatbuildings.com। অক্টোবর ১৫, ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ২৬, ২০০৮
  2. "The Pentagon, Facts & Figures"। আগস্ট ১৯, ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ১৭, ২০১৯

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.