পুষ্কলাবতী

পুষ্কলাবতী (Pashto and উর্দু: پُشْكَلآوَتي) প্রাচীন গান্ধার রাজ্যের রাজধানী ছিল। [1] এটি বর্তমানে পাকিস্তান এর খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের চরসদ্দা শহরে অবস্থিত। স্বাত নদীর তীরে স্বাত ও কাবুল নদীর মিলনস্থলের নিকটে এর ধ্বংসাবশেষ এখনও দেখা যায়। খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ শতক থেকে পুষ্কলাবতী গান্ধারের রাজধানী ছিল, পরে খ্রিস্টপূর্ব ২য় শতকে এটি হাখমানেশী সাম্রাজ্য বা আকিমিনীয় সাম্রাজ্যের রাজধানী হয়।

পুষ্কলাবতী
پُشْكَلآوَتي
পুষ্কলাবতীর ধ্বংসাবশেষ, বালা হিসার
পাকিস্তানে এর অবস্থান দেখাচ্ছে
অবস্থানOutskirts of Charsadda
খাইবার পাখতুনখোয়া
পাকিস্তান
স্থানাঙ্ক৩৪.০৯৩১° উত্তর ৭১.৪৩৫০° পূর্ব / 34.0931; 71.4350
ধরনপ্রাচীন রাজধানী নগরী
ইতিহাস
প্রতিষ্ঠিতখ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ শতক BCE
সময়কালগান্ধার
স্থান নোটসমূহ
খননের তারিখ১৯০২
প্রত্নতত্ত্ববিদSir John Marshall
Sir Mortimer Wheeler

জরাথুস্ট্রবাদ মতানুযায়ী জরোস্ট্রিয়ান আভেস্তা গ্রন্থে পুষ্কলাবতী সংলগ্ন অঞ্চলসমূহ বৈকেরেতা (Vaēkərəta) অথবা অহুরা মাজদা কর্তৃক নির্মিত পৃথিবীর সপ্তম সুন্দরতম স্থান বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। এটি বৈক্ত্রিয়া অঞ্চলের ‘মুকুটমণি’ হিসেবে পরিচিত ছিল এবং সুবিখ্যাত তক্ষশীলার উপরেও প্রাধান্য বিস্তার করেছিল। [2]

নামকরণ

সংস্কৃত শব্দ পুষ্কল মানে পদ্মফুল। পুষ্কলাবতী শব্দের অর্থ হয় পদ্মফুলের শহর। রামায়ণ অনুযায়ী ভরতের পুত্র (রামের ভ্রাতুষ্পুত্র) পুষ্কল এ নগর প্রতিষ্ঠা করেন এবং তার নামে এর নাম হয় পুষ্কলাবতী।

ধ্বংসাবশেষ

পুষ্কলাবতীর ধ্বংসাবশেষের মধ্যে অনেকগুলো স্তূপ এবং দুটি প্রাচীন শহরের নিদর্শন রয়েছে।

বালা হিসার

এখানে বালা হিসার এলাকাটি খ্রিস্টপূর্ব ২য় সহস্রাব্দে গড়ে ওঠে। [3][4]

পরবর্তীকালে খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ শতকে পুষ্কলাবতী আকিমিনীয় গান্ধার রাজ্যের রাজধানী হয়। [5] ১৯০২ সালে পুরাতত্ত্ববিদ জন মার্শাল এখানে প্রথম খননকার্য পরিচালনা করেন। মর্টিমার হুইলার ১৯৬২ সালে আরও খননের মাধ্যমে বিবিধ আকিমিনীয় ধ্বংসাবশেষ চিহ্নিত করেন।

হিউয়েন সাঙ এর বর্ণনা অনুযায়ী ৬৩০ খ্রিষ্টাব্দে তার পর্যটনের সময় তিনি এখানে সম্রাট অশোকের নির্মিত একটি স্তূপ দেখেছিলেন, যা বর্তমানে চিহ্নিত করা যায়নি বা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

পেউকেলা ও শৈখন ধেরি

গ্রিক-ব্যাক্ট্রিয় রাজ্য বালা হিসার থেকে ১ কিলোমিটার দূরে জিন্দি নদীর অপর পাশে পেউকেলা নামের একটি নতুন নগর পত্তন করে। এ নগরটি পার্থিয়ন, শককুষাণ প্রভৃতি রাজত্ব কর্তৃক অধিভুক্ত হয় এবং শৈখর ধেরি নামধারণ করে। খ্রিস্টীয় ২য় শতকে নদী এর গতিপথ বদলায় এবং নগরটি প্লাবিত হয়। তখন নগরটি বর্তমান রাজ্জার এর গ্রামে স্থানান্তরিত হয়।

১৯৬০ সালে আহমদ হাসান দানী কর্তৃক প্রাচীন শহরের ধ্বংসাবশেষ আংশিক খনন করা হয়। মীর জিয়ারত, রজর ও সাহর ই নাপুরসানে এখনও বহু অখননকৃত ঢিবি আছে।

রামায়ণে পুষ্কলাবতী

রামায়ণের শেষ অংশ উত্তরখণ্ডের বিভিন্ন অধ্যায়ে (অধ্যায় ১০১, ১১৩-৪১, ২০০) বলা হয়েছে রাম ও তার ভ্রাতৃবৃন্দের উত্তরসূরীগণ পশ্চিম ভারতে বিভিন্ন রাজ্য ও নগরী প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। [6]

রামের ভ্রাতা ভরতের দুই পুত্র ছিল- তক্ষ ও পুষ্কল। তক্ষ সিন্ধু নদের পূর্বতীরে তক্ষশীলা নগর প্রতিষ্ঠা করেন যা আলেকজান্ডার ও গ্রিকদের নিকট তক্সিলা নামে পরিচিত ছিল। অন্যদিকে পুষ্কল সিন্ধুর পশ্চিম তীরে পুষ্কলবতী বা পুষ্কলাবতী নগর প্রতিষ্ঠা করে যা আলেকজান্ডার ও গ্রিকদের কাছে পেওকেলাওতিস বলে অভিহিত হত। এভাবে ভরতের পুত্রগণ সিন্ধু নদের উভয়তীরে রাজ্য বিস্তার করেছিলেন। [7]

তথ্যসূত্র

  1. Sagar, Krishna Chandra (১৯৯২)। Foreign Influence on Ancient India। Northern Book Centre। আইএসবিএন 9788172110284।
  2. "Encyclopædia Britannica: Gandhara"। ২৯ সেপ্টেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ নভেম্বর ২০১৭
  3. Investigating ancient Pushkalavati Pushkalavati Archaeological Research Project
  4. Ali et al. 1998: 6–14; Young 2003: 37–40; Coningham 2004: 9.
  5. Rafi U. Samad, The Grandeur of Gandhara: The Ancient Buddhist Civilization of the Swat, Peshawar, Kabul and Indus Valleys. Algora Publishing, 2011, p. 32 আইএসবিএন ০৮৭৫৮৬৮৫৯২
  6. Gandhara and Its Art Tradition, Ajit Ghose, Mahua Publishing Company, 1978, p. 14
  7. Valmiki Ramayan Sanskrit Text With Hindi Translation DP Sharma
    हतेषु तेषु वीरेषु भरतः कैकयीसुतः | निवेशयामास तदा समृद्धे द्वे पुरोत्तमे | तक्षं तक्षशिलायां तु पुष्करं पुष्करावतौ || ९|| गन्धर्वदेशो रुचिरो गान्धारविषयश्च सः | वर्षैः पञ्चभिराकीर्णो विषयैर्नागरैस्तथा || १०|| धनरत्नौघसम्पूर्णो काननैरुपशोभिते | अन्योन्यसङ्घर्षकृते स्पर्धया गुणविस्तरे || ११||

বহিঃসংযোগ

  • Charsadda(this link seems to link to the Department of Archaeology of the University of Bradford, UK, doesn't seem to give anything about Charsadda/Pushkalavati)

বহিঃতথ্যসূত্র

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.