পিনিয়াল গ্রন্থি
পিনিয়াল গ্রন্থি (ইংরেজি: Pineal gland) হচ্ছে মস্তিষ্কের একটি ছোট অন্তঃক্ষরা গ্রন্থি যা মানুষসহ বেশির ভাগ মেরুদণ্ডী প্রাণীর মধ্যে বিদ্যমান। এটি কোনারিয়াম বা এপিফাইসিস সেরিব্রি নামেও পরিচিত। পিনিয়াল গ্রন্থি মেলাটোনিন নামক সেরোটোনিন থেকে উদ্ভূত একটি হরমোন তৈরি করে যা ছন্দপূরণ ও ঋতু ভিত্তিক উভয় প্রকার ক্ষেত্রেই ঘুমের রীতি নিয়ন্ত্রণ করে। এই গ্রন্থির আকৃতি অনেকটা পাইন কোনের মতো যার কারণে এই গ্রন্থিটির নাম পিনিয়াল।[1] এই গ্রন্থির অবস্থান মস্তিষ্কের কেন্দ্রে, দুই গোলার্থের মধ্যে থাকা এপিথ্যালামাসের ভেতরে। মূলত থ্যালামাসের দুই অংশ যেখানে যুক্ত হয়েছে সেখানে থাকা একটি খাঁজের মধ্যে এটির অবস্থান।[2][3] নিঃসরণকারী নিউরোএন্ডোক্রাইন সার্কামভেন্ট্রিকুলার অঙ্গগুলোর মধ্যে পিনিয়াল গ্রন্থি একটি যেখানে কৈশিক নালি পর্যায়ে রক্ত-মস্তিষ্ক বাধার অস্তিত্ব নেই।[4]
পিনিয়াল গ্রন্থি | |
---|---|
![]() মানুষের মস্তিষ্কে পিটুইটারি ও পিনিয়াল গ্রন্থির রেখাচিত্র | |
বিস্তারিত | |
অগ্রদূত | নিউরোএক্টোডার্ম, ডাইএনসেফ্যালনের ওপরে |
ধমনী | পোস্টেরিওর সেরিব্রাল ধমনি |
শনাক্তকারী | |
লাতিন | glandula pinealis |
টিএ | A11.2.00.001 |
এফএমএ | FMA:62033 |
স্নায়ুতন্ত্রের শারীরস্থান পরিভাষা |
প্রায় সকল মেরুদণ্ডীর পিনিয়াল গ্রন্থি রয়েছে। এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যতিক্রমটি হচ্ছে হ্যাগফিশ নামক একটি আদিম মেরুদণ্ডী প্রাণি। এমনকী হ্যাগফিশের পৃষ্ঠদেশীয় ডাইএনসেফ্যালনে পিনিয়াল গ্রন্থির সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ কোনো বিকল্প কাঠামো থাকতে পারে।[5] এখন পর্যন্ত অস্তিত্ব থাকা মেরুদণ্ডী প্রাণির সবচেয়ে কাছের প্রজাতি ব্রাংকিওস্টোমা ল্যান্সিওল্যাটাম-এরও শনাক্ত করার মতো কোনো পিনিয়াল গ্রন্থি পাওয়া যায়নি।[6] তবে ল্যামপ্রে নামক আরেকটি আদিম মেরুদণ্ডীতে পিনিয়াল গ্রন্থির অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।[6] আর কয়েকটি বিকশিত মেরুদণ্ডী প্রাণিতে তাদের বিবর্তনের সাথে সাথে পিনিয়াল গ্রন্থির অস্তিত্ব বিলুপ্ত হয়েছে।[7]
গঠন
মানুষের পিনিয়াল গ্রন্থির রং লালচে-ধূসর এবং এর আকৃতি একটি শস্যদানার মতো যার দৈর্ঘ প্রায় ৫–৮ মিলিমিটার।
রক্ত সরবরাহ
অন্যান্য মেরুদণ্ডী প্রাণির মস্তিষ্কের মতো মানুষের ক্ষেত্রে পিনিয়াল গ্রন্থি রক্ত-মস্তিষ্ক বাধার মাধ্যমের মস্তিষ্ক থেকে সম্পূর্ণ পৃথকভাবে সুরক্ষিত নয়।[8] পিনিয়াল গ্রন্থিতে রক্তের অপরিমিত সরবরাহ রয়েছে যা শরীরে বৃক্কের পর দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে।[9] পিনিয়াল গ্রন্থির এই রক্ত সরবরাহ আসে পোস্টেরিয়র সেরিব্রাল ধমনির করোডিয়াল শাখা থেকে।
তথ্যসূত্র
- "Pineal (as an adjective)"। Online Etymology Dictionary, Douglas Harper। ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ২৭ অক্টোবর ২০১৮।
- Macchi MM, Bruce JN (২০০৪)। "Human pineal physiology and functional significance of melatonin"। Frontiers in Neuroendocrinology। 25 (3–4): 177–95। doi:10.1016/j.yfrne.2004.08.001। PMID 15589268।
- Arendt J, Skene DJ (ফেব্রুয়ারি ২০০৫)। "Melatonin as a chronobiotic"। Sleep Medicine Reviews। 9 (1): 25–39। doi:10.1016/j.smrv.2004.05.002। PMID 15649736।
Exogenous melatonin has acute sleepiness-inducing and temperature-lowering effects during 'biological daytime', and when suitably timed (it is most effective around dusk and dawn) it will shift the phase of the human circadian clock (sleep, endogenous melatonin, cortisol) to earlier (advance phase shift) or later (delay phase shift) times.
- Gross PM, Weindl A (ডিসেম্বর ১৯৮৭)। "Peering through the windows of the brain": 663–72। doi:10.1038/jcbfm.1987.120। PMID 2891718।
- Ooka-Souda S, Kadota T, Kabasawa H (ডিসেম্বর ১৯৯৩)। "The preoptic nucleus: the probable location of the circadian pacemaker of the hagfish, Eptatretus burgeri"। Neuroscience Letters। 164 (1–2): 33–6। doi:10.1016/0304-3940(93)90850-K। PMID 8152610।
- Vernadakis AJ, Bemis WE, Bittman EL (এপ্রিল ১৯৯৮)। "Localization and partial characterization of melatonin receptors in amphioxus, hagfish, lamprey, and skate"। General and Comparative Endocrinology। 110 (1): 67–78। doi:10.1006/gcen.1997.7042। PMID 9514841।
- Erlich SS, Apuzzo ML (সেপ্টেম্বর ১৯৮৫)। "The pineal gland: anatomy, physiology, and clinical significance"। Journal of Neurosurgery। 63 (3): 321–41। doi:10.3171/jns.1985.63.3.0321। PMID 2862230।
- Pritchard TC, Alloway KD (১৯৯৯)। Medical Neuroscience (Google books preview)। Hayes Barton Press। পৃষ্ঠা 76–77। আইএসবিএন 978-1-889325-29-3। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০২-০৮।
- Arendt J: Melatonin and the Mammalian Pineal Gland, ed 1. London. Chapman & Hall, 1995, p 17
বহিঃসংযোগ
- বিইউ-তে হিস্টোলজি: এন্ডোক্রাইন সিস্টেম: পিনিয়াল গ্রন্থি (চিত্র)
- অ্যানাটমি অ্যাটলাসেস, মাইক্রোস্কোপিক অ্যাটলাস: পিনিয়াল গ্রন্থি