পাকুড়

পাকুড় একটি বৃহদাকার বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ। এটি ক্ষীরী বৃক্ষ নামেও পরিচিত, কারণ এর কচি ডাল ও পাতা ছিঁড়লে সাদা আঠা বের হয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম Ficus rumphii (Syn: F infectoria). পাকুড় আকার আয়তনে অনেকটা বট গাছের মতোই; ঝুরিবহুল, বিস্তৃত ও বিশাল। কিন্তু পাতা দেখতে অশ্বত্থের মতো। তবে চওড়ায় কম ও লম্বা একটু বেশি। বসন্ত শেষে অশ্বত্থের মতো এদের পাতাও ঝরে যায়। চৈত্রে রক্তিম উজ্জ্বল বা তামাটে রঙের পাতা গজায়। পাতাগুলো পরে ধীরে ধীরে গাঢ় সবুজের রূপ ধারণ করে। পাকুড়ের ছাল সাধারণত অর্ধ ইঞ্চি পুরু, সবুজ আভাযুক্ত, ধূসর বর্ণ ও মসৃণ। কাঠও ধূসর রঙের। বর্ষার শেষে কমলা রঙের ফলগুলো পাকে। এই প্রজাতির মধ্যে বেশ কয়েকটা জাত আছে। এর বংশ বিস্তার পদ্ধতি বটগাছের মতো। অর্থাৎ ফুলগুলো পরাগায়নের জন্য বিশেষ জাতের পতঙ্গের উপর নির্ভরশীল এবং পাখিরা ফল খেয়ে বীজ ছড়িয়ে দেয়। এই বীজ দালানের কার্নিশ, পুরানো দালানের ফাটল ও অন্য কোন গাছের কোটরে সহজেই অঙ্কুরিত হয় এবং আশ্রয়কে গ্রাস করে। এই গাছের ছাল ও পাতা নানান রোগে ব্যবহার্য। পাতার রাসায়নিক দ্রব্যে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন, নাইট্রোজেন, ফসফরাসক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। পাকুড় গাছ প্রধানত গ্রামাঞ্চলেই বেশি দেখা যায়।[1]

পাকুড় গাছ

পাকুড় গাছ চেনার উপায়

পাকুড় গাছের পাতা

পাকুড় গাছকে অনেক সময় অশ্বত্থ বলে বিভ্রম হয়। কারণ, পাকুড় ও অশ্বত্থ উভয়ই বিশালাকৃতির বৃক্ষ, গাছের পাতার বৈশিষ্ট্যও প্রায় একই রকম এবং গাছ দুটির বেশ কিছু প্রজাতি রয়েছে যাদের বাহ্যিক চেহারা ও বৈশিষ্ট্য প্রায় একই ধরনের। তবে কিছু বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে গাছ দুটিকে আলাদাভাবে চেনা সম্ভব। যেমন- অশ্বত্থ গাছের পাতা তাম্বুলাকৃতির (পান পাতার মতো) হয়ে থাকে। এমন তাম্বুলাকৃতি ঘন-সবুজ পাতার লম্বা লেজ অন্য গাছে নেই। এ গাছের ঝুরির সংখ্যা খুবই কম অন্যদিকে পাকুড় গাছ একটি ঝুরিবহুল বৃক্ষ। অশ্বত্থের ফল পাকা অবস্থায় গাঢ় বেগুনি রঙের হয়, অন্যদিকে পাকুড় গাছের ফল পাকলে কমলা রঙ ধারণ করে।[1]

আরো দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রকাশিত প্রকৃতি বিষয়ক ম্যাগাজিন: প্রকৃতিবার্তা, প্রথম বর্ষ, তৃতীয় সংখ্যা, জুলাই ২০১৪
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.