নিউরোব্লাস্টোমা

নিউরোব্লাস্টোমা (ইংরেজি: neuroblastoma) হলো এক প্রকার মস্তিষ্কের ক্যান্সার যা নির্দিষ্ট ধরনের স্নায়ু কলায় সৃষ্টি হয়।[1] এটি বেশিরভাগ সময় বৃক্কীয় গ্রন্থি থেকে শুরু হয়, কিন্তু ঘাড় গলা, বুক, পেট, বা মেরুদণ্ড থেকেও বিকশিত হতে পারে।[1] সাধারণ উপসর্গের মধ্যে রয়েছে হাড় ব্যথা, পেট ফোলা, ঘাড়, বুক, বা ত্বকের নিচে ব্যথাহীন নীলাভ হয়ে ফুলে ওঠা।[1]

নিউরোব্লাস্টোমা
আনুবীক্ষণিক ছবিতে রোসেট্টা আকৃতিতে একটি সাধারণ নিউরোব্লাস্টোমা
বিশেষায়িত ক্ষেত্রঅনকোলজি
উপসর্গহাড় ব্যথা, ফুলে যাওয়া[1]
সূত্রপাত৫ বছরের কম বয়সে[1]
কারণসমূহবংশগত রূপান্তর[1]
রোগনির্ণয়কলার বায়োপসি[1]
চিকিৎসাপর্যবেক্ষণ, অস্ত্রোপচার, রেডিয়েশন, কেমোথেরাপি, বা স্টেম কোষ ট্রান্সপ্লান্টেশন[1]
রোগের পূর্বাভাসযুক্তরাষ্ট্রে পাঁচ বছরের জীবনীকাল ~৯৫% (১ বছরের কম বয়সীদের ক্ষেত্রে), ৬৮% (১-১৮ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে)[2]
ব্যাপকতার হার৭,০০০ শিশুতে ১ জন[2]
মৃত্যুক্যান্সারের আক্রান্ত শিশুদের মাঝে ১৫%[3]

কিছু ক্ষেত্রে নিউরোব্লাস্টোমা কোনও ব্যক্তির পিতামাতার কাছ থেকে রূপান্তরিত হয়ে আসতে পারে।[1] পরিবেশগত কোনো কারণের সাথে এই রোগের কোনো সম্পর্ক এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।[2] মূলত আক্রান্ত কলার বায়োপসির মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা হয়।[1] কিছু ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায় আলট্রাসাউন্ড পরীক্ষার সময় শিশুর মধ্যে এই রোগ খুঁজে পাওয়া যেতে পারে।[1] রোগ নির্ণয়ের জন্য পরীক্ষা যখন করা হয়, সাধারণত ক্যান্সার তার আগেই বিস্তার লাভ করে ফেলে।[1] শিশুর বয়স, ক্যান্সারের পর্যায়, এবং ক্যান্সারের প্রকৃতির ওপর ভিত্তি করে একে নিম্ন, মাধ্যমিক, ও উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা — এই ভাগে ভাগ করা হয়।[1]

চিকিৎসা ও চিকিৎসার ফলাফল রোগীর ঝুঁকির অবস্থার ওপর নির্ভর করে।[1][4] সম্ভাব্য চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যে রয়েছে পর্যবেক্ষণ, অস্ত্রোপচার, রেডিয়েশন, কেমোথেরাপি, বা স্টেম কোষ ট্রান্সপ্লান্টেশন[1] শিশুদের ক্ষেত্রে কম-ঝুঁকির অবস্থায় সাধারণত অস্ত্রোপচার বা সাধারণ পর্যবেক্ষণে ভালো ফল পাওয়া যায়।[4] উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার ক্ষেত্রে সময় অনুযায়ী সর্বোচ্চ পর্যায়ের চিকিৎসা প্রদান করা হলেও লম্বা সময় বেঁচে থাকার হার শতকরা ৪০ ভাগের নিচে।[4]

শিশুরা যে-সকল ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় তার মধ্যে নিউরোব্লোস্টোমার পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। এছাড়াও বাচ্চাদের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে এটির হার তৃতীয় বৃহত্তম (লিউকিমিয়ামস্তিষ্কের ক্যান্সারের পর)।[4] সাধারণত প্রতি ৭,০০০ শিশুর মধ্যে ১ জন এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়।[2] প্রায় ৯০% ক্ষেত্রে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুরা এতে আক্রান্ত হয়। প্রাপ্তবয়স্কদের এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা বিরল।[2][3] ক্যান্সারে শিশু মৃত্যুর হারের ক্ষেত্রে নিউরোব্লাস্টোমার পরিমাণ প্রায় ১৫%।[3] আঠারো শতকে সর্বপ্রথম এই রোগের উল্লেখ পাওয়া যায়।[5]

তথ্যসূত্র

  1. "Neuroblastoma Treatment"National Cancer Institute। ২০ জানুয়ারি ২০১৬। ১০ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ নভেম্বর ২০১৬
  2. "Neuroblastoma Treatment"National Cancer Institute। ২৫ আগস্ট ২০১৬। ১০ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ নভেম্বর ২০১৬
  3. World Cancer Report 2014। World Health Organization। ২০১৪। Chapter 5.16। আইএসবিএন 978-9283204299। ২০১৬-০৯-১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা
  4. Maris, John M; Hogarty, Michael D (২০০৭)। "Neuroblastoma": 2106–20। doi:10.1016/S0140-6736(07)60983-0। PMID 17586306
  5. Olson, James Stuart (১৯৮৯)। The History of Cancer: An Annotated Bibliography (ইংরেজি ভাষায়)। ABC-CLIO। পৃষ্ঠা 177। আইএসবিএন 9780313258893। ২০১৭-০৯-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা

বহিঃসংযোগ

শ্রেণীবিন্যাস
বহিঃস্থ তথ্যসংস্থান
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.