নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়

নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (ইংরেজি: Nasirabad Government High School) চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ এলাকায় অবস্থিত একটি সরকারী বিদ্যালয় যা ১৯৬৭ সালে প্রতিষ্ঠিত এবং অদ্যবধি এর সুনাম অক্ষুণ্ণ রেখে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।এই বিদ্যালয় থেকে পাশ করা বহু শিক্ষার্থী বর্তমানে রাষ্ট্রের বিভিন্ন অংশে তাদের মেধা ও জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশকে সারা বিশ্বের কাছে তুলে ধরছে। শুধুমাত্র বালক শিক্ষার্থীরাই এই বিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করতে পারে।[1]
২০১২ সালের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে এই বিদ্যালয়টি চট্টগ্রাম বোর্ডে ৫ম স্থান অধিকার করে।[2]

নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
School Monogram
অবস্থান
স্কুল ভবনের সম্মুখভাগ

পূর্ব নাসিরাবাদ

চট্টগ্রাম,  বাংলাদেশ
স্থানাঙ্ক২২°২১'৪৩.৩৫"উ
৯১°৪৯'১৫.৪৬"পূ
তথ্য
বিদ্যালয়ের ধরনসরকারী, বালক স্কুল
প্রতিষ্ঠাকাল১৯৬৭
প্রতিষ্ঠাতাবাংলাদেশ সরকার
বিদ্যালয় বোর্ডচট্টগ্রাম বোর্ড
বিদ্যালয় জেলাচট্টগ্রাম
কর্তৃপক্ষবাংলাদেশ সরকার
সেশনজানুয়ারি-ডিসেম্বর
বিদ্যালয় নম্বর৩১০০
প্রধান শিক্ষকএম.ফরিদুল আলম হোসাইনী,বি.এ(অনার্স);এম.এ;বি.এড; বিসিএস (সাধারন শিক্ষা)
কর্মকর্তা৩৫
শিক্ষকমণ্ডলী৫৩
শ্রেণীপঞ্চম-দশম
লিঙ্গবালক
বয়সসীমা১০-১৬
শিক্ষার্থী সংখ্যা৩০০০
ক্যাম্পাসের আকার২০ একর
বিশেষ প্রজেক্টব্রিটিশ কাউন্সিলের পক্ষ থেকে সংযোগকরন ক্লাস গ্রহণ।
ওয়েবসাইটnghs.tsmts.com

|ওয়েবসাইট = www.nghs.tsmts.com

ইতিহাস

১৯৬৭ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ এলাকায় এই বিদ্যালয়টি স্থাপন করে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর এটি বাংলাদেশ সরকারের তত্ত্বাবধানে আসে।[3]

ক্যাম্পাসের বর্ণনা

স্কুল আঙিনা প্রায় ১৫ একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত। স্কুলের মূল ভবনটি ইংরেজি T আকৃতির। মূল ভবনটি দ্বিতল। যার অভ্যন্তরে রয়েছে লাইব্রেরী, উপাসনা কক্ষ, মিলনায়তন, শিক্ষকদের সমাবেশ কক্ষ, স্কাউট কক্ষ, বিএনসিসি কক্ষ, প্রধান শিক্ষকের অফিস, সহকারী-প্রধান শিক্ষকের অফিস, একাউন্ট ও কর্মচারীদের অফিস, বিভিন্ন বিষয়ের জন্য আলাদা গবেষণাগার এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ শ্রেনী কক্ষ। মূল ভবনের সাথেই একটি বর্ধিত অংশও রয়েছে যাতে নবম ও দশম শ্রেনীর ক্লাস নেওয়া হয়ে থাকে। স্কুলের সীমানার মধ্যেই অপর একটি দ্বিতল ভবন রয়েছে যেখানে রয়েছে চট্টগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসারের কার্যালয় এবং ছাত্রদের ছাত্রাবাস। প্রধান শিক্ষকের বাসভবনও স্কুল সীমানার মধ্যেই অবস্থিত। প্রধান শিক্ষকের বাসভবনের পাশেই রয়েছে বিশাল খেলার মাঠ যেখানে বছরের বিভিন্ন সময় নানান আন্তঃস্কুল এবং আন্তঃনগর ফুটবল ও ক্রিকেট খেলার আয়োজন হয়ে থাকে। এই মাঠে খেলাধুলার মধ্যদিয়ে বহু ক্রীড়াবিদ তাদের ক্যারিয়ার শুরু করেন।

নাসিরাবাদ সরকারি স্কুলমাঠটা সবচেয়ে প্রিয় আমার। এখান থেকেই সত্যিকারের ক্রিকেট বলে খেলা শুরু আমার।
প্রথম ছক্কা মেরেছি নাসিরাবাদ সরকারি স্কুল মাঠ, চট্টগ্রামে।

- তামিম ইকবাল, বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের বর্তমান খেলোয়াড় ও সাবেক সহ-অধিনায়ক । [4]


স্কুলের সীমানার অভ্যন্তরে একটি মসজিদ রয়েছে।

যাতায়াত সুবিধা

বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির দেয়া একটি বাস বর্তমানে ছাত্রদের আনা নেওয়ার কাজে ব্যবহৃত হয়। দূর-দূরান্তে বসবাসকারী ছাত্ররা এই সুবিধা গ্রহণ করতে পারে। তবে শুধুমাত্র দিবা শাখার ছাত্রদের জন্যই এ সুবিধা প্রযোজ্য।

লাইব্রেরী

বিদ্যালয়ের মূল ভবনের দোতলায় লাইব্রেরী অবস্থিত। ছাত্ররা লাইব্রেরী কার্ডের মাধ্যমে বই বাসায় নিয়ে যেতে পারে। এছাড়া লাইব্রেরী কক্ষে বসেও ছাত্ররা পড়াশুনা করতে পারে। একজন লাইব্রেরীয়ান ও একজন সহকারী লাইব্রেরীয়ান ছাত্রদের প্রয়োজনীয় বই খুঁজে দিতে সাহায্য করে থাকেন।

শ্রেণী কার্যক্রম

এই স্কুলে দুটি ভিন্ন শাখায় পাঠদান করা হয়ে থাকে। একটি প্রভাতী শাখা ও অপরটি দিবা শাখা। প্রত্যেক শাখার জন্য আলাদা শিক্ষক রয়েছেন। শিক্ষার মধ্যম বাংলা। সিলেবাস শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত। বছরে মোট দুইটি পরীক্ষা নেওয়া হয়ে থাকে। মধ্য সাময়িক এবং বার্ষিক। কোন ছাত্র বার্ষিক পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলে তাকে পরবর্তী শ্রেনীতে ভর্তি করানো হয় না। নবম ও দশম শ্রেণিতে বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা দুটি বিভাগ রয়েছে। সকল শ্রেণিতে সৃজনশীল পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়া হয়। নবম ও দশম শ্রেনীর ছাত্রদেরকে লিখিত পরীক্ষার পাশাপাশি ব্যবহারিক পরীক্ষায়ও অংশগ্রহণ করতে হয়। এছাড়া বিভিন্ন সময় ব্রিটিশ কাউন্সিলের পক্ষ থেকে সংযোগকরণ ক্লাস গ্রহণ কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়ে থাকে।পঞ্চম শ্রেনীর ছাত্ররা প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা, অষ্টম শ্রেণির ছাত্ররা জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা এবং দশম শ্রেনীর ছাত্ররা মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে থাকে।[5]

ভর্তি

এই স্কুলে সাধারণত জানুয়ারিতে পঞ্চম, ষষ্ঠ এবং নবম শ্রেণিতে ছাত্র ভর্তি করা হয়ে থাকে। একটি প্রতিযোগিতামূলক ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার মাধ্যমে ছাত্ররা ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করে। পঞ্চম শ্রেনিতে ১৪০ জন, ষষ্ঠ শ্রেণিতে ১৪০ জন এবং নবম শ্রেণিতে ৬০ জন ছাত্র ভর্তি করা হয়ে থাকে।[6]
ভর্তি পরীক্ষায় প্রতিটি আসনে ভর্তির জন্য লড়াই করে থাকে ১০ জনেরও বেশি পরীক্ষার্থী।[7] এই বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ সারাদেশে একযোগে গৃহিত সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার মধ্যদিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে যোগদান করে থাকেন।

বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ

সংগঠন

  • বিএনসিসি, কর্ণফুলী রেজিমেন্ট
  • স্কাউট, ১৬ নং চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ইউনিট
  • রেডক্রিসেন্ট
  • শিশু কিশোর মেলা
  • বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চ
  • চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র
  • বিজ্ঞান ক্লাব

বিজ্ঞান মেলা

চট্টগ্রামে সকল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মধ্যে এক মাত্র নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ই ২৫ নভেম্বর ২০১৮ সর্বপ্রথম বিজ্ঞান ক্লাবের উদ্যেগে বিজ্ঞান মেলা অনুষ্ঠিত হয় ।আর প্রথম এই বিজ্ঞান মেলায় ই ১৫৭ টি প্রোজেক্ট নিয়ে শিক্ষার্থীরা তাদের সৃজনশীলতা দেখায় ।

কম্পিউটার ল্যাব

শিক্ষার্থীদের জন্য ২০১৮ সালে এই বিদ্যালয়ে একটি কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করা হয় ।যার ফলে শিক্ষার্থীরা তাদের "তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি" বিষয়টি হাতে কলমে শিখতে পারবে ।

তথ্যসুত্র

  1. নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০০৯ সালের সিলেবাস
  2. "'সেরা' ফলের পরও 'পিছিয়ে' চট্টগ্রাম বোর্ড"। ১০ মে ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ মে ২০১২ অজানা প্যারামিটার |1= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য); অজানা প্যারামিটার |2= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  3. নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০০৬ সালের সাময়িকী
  4. তামিম ইকবাল - প্রথম আলো
  5. Syllabus of all Class 2012 http://nghs.tsmts.com/?p=syllabus
  6. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৯ মার্চ ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ এপ্রিল ২০১২
  7. http://www.dailykalerkantho.com/print_news.php?pub_no=374&cat_id=1&menu_id=118&news_type_id=1&index=0

আরও দেখুন

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.