তাঁতীবন্দ জমিদার বাড়ি

তাঁতীবন্দ জমিদার বাড়ি বাংলাদেশ এর পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার তাঁতীবন্দ নামক গ্রামে অবস্থিত এক ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি। উক্ত জমিদার বাড়ি থেকে এই জমিদার বংশের তৈরি করা মঠ বিজয় বাবুর মঠ জনসাধারণের কাছে বেশ পরিচিত।[1][2]

তাঁতীবন্দ জমিদার বাড়ি
বিকল্প নামগোবিন্দ চৌধুরীর জমিদার বাড়ি
সাধারণ তথ্য
ধরনবাসস্থান
অবস্থানসুজানগর উপজেলা
ঠিকানাতাঁতীবন্দ
শহরসুজানগর উপজেলা, পাবনা জেলা
দেশবাংলাদেশ
খোলা হয়েছে১৭০০ শতকের মাঝামাঝি
স্বত্বাধিকারীউপেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরী
কারিগরী বিবরণ
পদার্থইট, সুরকি ও রড

ইতিহাস

আনুমানিক ১৭০০ শতকের মাঝামাঝি জমিদার উপেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরীর হাতে এই জমিদার বংশ ও জমিদার বাড়ির গোড়াপত্তন। এরপর একেএকে এই জমিদার বংশধররা উক্ত জমিদারী তাদের নিজ স্বীয় গুণাবলীর মাধ্যমে পরিচালনা করতে থাকেন। কিন্তু এই জমিদার বাড়ির ইতিহাসে জমিদার বিজয় গোবিন্দ চৌধুরীর নামটি একটু আলাদাভাবে জায়গা করে নেয় তার অসাধারণ গুণাবলীর কারণে। কারণ তার জমিদারী আমলেই উক্ত জমিদারী আরো বিশাল আকারে বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। তাই অনেকের কাছে উক্ত জমিদার বাড়ি তার নামেই বেশ পরিচিত। তিনি তার জমিদারী কঠোর নিয়ম এবং উদারতার মাধ্যমে পরিচালনা করে প্রজাদের কাছে সু-পরিচিত হয়ে উঠেন। সামর্থবান প্রজার কাছ থেকে নিয়মমাফিক খাজনা আদায় করতেন। যাতে কোনোরকম ছাড় দিতেন না। আবার যারা অসামর্থ্যবান প্রজা। তাদের কাছ থেকে তিনি জোর করে কোনো খাজনা আদায় করতেন না। উল্টো তাদের খাজনাগুলো মাফ করে দিতেন। তার জমিদারী আমলে মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর নিপীড়নমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য তিনিও অন্যান্য হিন্দু জমিদারদের থেকে একটুও ব্যতিক্রম ছিলেন না। ঐসময় তার জমিদারী এলাকায় মুসলমানরা কোরবানির জন্য গরু জবাই দিতে পারতেন না। এছাড়াও মুসলমানদের অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠানের উপরও ছিল নিষেধাজ্ঞা। বিজয় গোবিন্দ তার সৌখিন জীবনে চলাফেরা করার জন্য হাতিবহর ব্যবহার করতেন। ঐ হাতিবহরের খরচের জন্য তিনি প্রতিমাসে প্রজাদের কাছ থেকে আলাদাভাবে খাজনা আদায় করতেন। কথিত আছে জমিদারী আমলে বর্তমান পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলায় এই জমিদার বংশধরদের মত আরেকটি জমিদার বংশ ছিল। যা ছিল মুসলিম জমিদার আজিম চৌধুরীর জমিদার বংশ। মুসলিম জমিদার আজিম চৌধুরীর সাথে এই হিন্দু জমিদার বিজয় গোবিন্দ চৌধুরীর বেশ ভালো সম্পর্ক ছিল।[1]

অবকাঠামো

উপেন্দ্র নারায়ণ উক্ত জমিদার বংশ ও জমিদার বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা হলেও মূলত জমিদার বিজয় গোবিন্দ চৌধুরীর সময়ই জমিদার বাড়িতে বিশাল বিশাল সুন্দর কারুকার্যখচিত একাধিক অট্টালিকা তৈরি করা হয়। এছাড়াও কয়েকটি দিঘী ও দুইটি সুইচ্চ মঠ তৈরি করা হয়। এই দুইটি সুইচ্চ মঠ বর্তমান প্রজন্মের কাছে বেশ আকর্ষিত বস্তু হিসেবে রয়েছে।[2]

বর্তমান অবস্থা

জমিদার বাড়ির প্রতিটি স্থাপনাই এখন অযত্ন ও অবেহলায় পড়ে রয়েছে। বিশেষ করে জমিদার বংশধরদের তৈরি করা দুইটি দৃষ্টিনন্দন মঠ এখন পর্যটনমুখী মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয়। যেগুলো দেখার জন্য প্রতিনিয়ত মানুষরা এখানে ভিড় জমান।

তথ্যসূত্র

  1. "সুজানগর উপজেলা - বাংলাপিডিয়া"bn.banglapedia.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-১৯
  2. "'পাবনা'র নেপথ্যে যত জনশ্রুতি | banglatribune.com"Bangla Tribune। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-১৯
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.