ট্যাংক
যুদ্ধক্ষেত্রের সবথেকে শক্তিশালী একটি যুদ্ধযান। একে যুদ্ধক্ষত্রের রাজা বলা হয়। একটি ট্যাংক মূল বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এর সমস্ত শরীর অত্যন্ত পুরু বর্ম দ্বারা আবৃত থাকে। ক্যাটারপিলার ট্র্যাক থাকায় একটি ট্যাংক দুর্গম জায়গাতেও সহজেই চলতে পারে। এর সব থেকে ভয়ংকর অস্ত্রটি হচ্ছে এর প্রচন্ড ক্ষমতাশালী কামান যা দিয়ে একটি ট্যাংক অনেক দূর পর্যন্ত গোলা ছুঁড়তে পারে বা প্রতিপক্ষের যুদ্ধাযানকে ধ্বংস করতে পারে। কামান ছাড়াও এই যুদ্ধযানে মেশিনগান, স্মোকবম্ব লঞ্চার অথবা ট্যাংক বিধ্বংসী মিসাইল থাকে। কাজের সক্ষমতাভেদে অনেক ধরনের ট্যাংক দেখতে পাওয়া যায়। যেমনঃ- হালকা, মাঝারী, ভারী বা উভচর ট্যাংক।
যুদ্ধযান হিসেবে ট্যাংকের ব্যবহার শতবর্ষ পার করে ফেলেছে। ট্যাংক শব্দটি এসেছে একটি সাংকেতিক নাম হিসেবে। মূলত যে কারখানায় ট্যাংক বানানো হচ্ছিল সেই কারখানার শ্রমিকরা এই নামে ডাকত নির্মীয়মান যন্ত্রটিকে, কারণ । এই যানকে প্রথমে ডাকা হত স্থল জাহাজ বা ক্যাটারপিলার মেশিনগান ধ্বংসকারী যান হিসেবে। পরে এই যুদ্ধযান সম্পর্কিত কমিটিতে এর উদ্দেশ্য গোপন করার জন্য যন্ত্রটিকে "ট্যাংক" নামকরণ করা হয়।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে আগে করে ট্যাংকের ব্যবহার শুরু করে সামরিক বাহিনীগুলো। এক্ষেত্রে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করে ফরাসী এবং ইংরেজরা। ১৯১৫ সালে ইংল্যান্ডের লিঙ্কনে অবস্থিত উইলিয়াম ফস্টার এন্ড কোং প্রথম ট্যাংকের প্রোটোটাইপ বানায় যার নাম রাখা হয়েছিল "লিটল উইলি"। এই প্রোটোটাইপ থেকে ১৯১৬ সালে বানানো হল প্রথম যুদ্ধ ট্যাংক ব্রিটিশ মার্ক ১ এবং সেই বছরের সেপ্টেম্বরে সোমের যুদ্ধে প্রথমবারের মতন ট্যাংকের ব্যবহার হল।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ট্যাংকের আরো পরিবর্তন আসল। সামরিক বাহিনীতে ট্যাংক ততদিনে অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে গড়ে উঠছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগেই ট্যাংকের ওপর অনেক গবেষণা করা হয়। একই সাথে ট্যাংক ভিত্তিক যৌথ অভিযান তত্ত্ব নিয়েও যথেষ্ট পর্যালোচনা হচ্ছিল।