চিন সাম্রাজ্য (২৬৫–৪২০)
চিন সাম্রাজ্য (Sima Jin and Liang Jin) চীনের একটি সাম্রাজ্য, যা ২৬৫ – ৪২০ সাল পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। সিমা ঝাওয়ের পুত্র সিমা ইয়ান এই সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা। তিন রাজ্য যুগের (২২০ - ২৮০ সাল) বিদ্বস্ত পরিস্থিতির পর এই সাম্রাজ্য সমগ্র চীনকে আবার একত্রিত করে।[2]
চিন সাম্রাজ্য | |||||
晉朝 | |||||
| |||||
![]() চিন সাম্রাজ্যের অবস্থান চিন সাম্রাজ্য (হলুদ), আনু. ২৮০ খ্রিস্টাব্দ (পশ্চিম চিন) | |||||
রাজধানী | লুওইয়াং (২৬৫ – ৩১১ খ্রিস্টাব্দ) চাং’য়েন (৩১২ – ৩১৬ খ্রিস্টাব্দ) জিয়ানকাং (৩১৭ – ৪২০ খ্রিস্টাব্দ) | ||||
ভাষাসমূহ | প্রাচীন চীনা ভাষা | ||||
ধর্ম | বুদ্ধ ধর্ম, দাও ধর্ম, কনফুসীয় ধর্ম, চীনা লোকজ ধর্ম | ||||
সরকার | রাজতন্ত্র | ||||
সম্রাট | |||||
- | ২৬৫ – ২৯০ খ্রিস্টাব্দ | সম্রাট য়ু | |||
- | ৪১৯ – ৪২০ খ্রিস্টাব্দ | সম্রাট গং | |||
ইতিহাস | |||||
- | প্রতিষ্ঠা | ২৬৫ খ্রিস্টাব্দ | |||
- | চিনদের অধীনে চীনকে পুনরায় একত্রীকরণ | ২৮০ খ্রিস্টাব্দ | |||
- | চিনরা হুয়াই নদীর দক্ষিণ দিকে চলে আসে, পূর্ব চিন সাম্রাজ্য শুরু | ৩১৭ খ্রিস্টাব্দ | |||
- | লিউ সং রাজবংশ-এর কাছে সিংহাসন ত্যাগ | ৪২০ খ্রিস্টাব্দ | |||
আয়তন | |||||
- | ২৮০ খ্রিস্টাব্দ (পশ্চিম চিনের সর্বোচ্চ)[1] | বর্গ কি.মি. ( বর্গ মাইল) | |||
- | ৩৪৭ খ্রিস্টাব্দ (পূর্ব চিনের সর্বোচ্চ)[1] | বর্গ কি.মি. ( বর্গ মাইল) | |||
জনসংখ্যা | |||||
• | ৩০০ খ্রিস্টাব্দ আনুমানিক | ||||
মুদ্রা | চীনা মুদ্রা, চীনা নোট | ||||
বর্তমানে অংশ | ![]() ![]() ![]() | ||||
চিন সাম্রাজ্য | |||||||||||||||||||||||||||
![]() Seven Sages of the Bamboo Grove, একটি সমাধিতে প্রাপ্ত চিত্র, জিয়ানকাং (নানচিং) বর্তমানে অবস্থিত শাআনশি প্রাদেশিক জাদুঘর. | |||||||||||||||||||||||||||
ঐতিহ্যবাহী চীনা | 晉朝 | ||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
সরলীকৃত চীনা | 晋朝 | ||||||||||||||||||||||||||
| |||||||||||||||||||||||||||
Sima Jin | |||||||||||||||||||||||||||
ঐতিহ্যবাহী চীনা | 司馬晉 | ||||||||||||||||||||||||||
সরলীকৃত চীনা | 司马晋 | ||||||||||||||||||||||||||
| |||||||||||||||||||||||||||
Liang Jin | |||||||||||||||||||||||||||
ঐতিহ্যবাহী চীনা | 兩晉 | ||||||||||||||||||||||||||
সরলীকৃত চীনা | 两晋 | ||||||||||||||||||||||||||
আক্ষরিক অর্থ | Two Jins | ||||||||||||||||||||||||||
|
Western Jin | |||||||||
ঐতিহ্যবাহী চীনা | 西晉 | ||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
সরলীকৃত চীনা | 西晋 | ||||||||
|
Eastern Jin | |||||||||
![]() The Jin Empire (yellow), আনু. 400 (Eastern Jin) | |||||||||
ঐতিহ্যবাহী চীনা | 東晉 | ||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
সরলীকৃত চীনা | 东晋 | ||||||||
|
![]() | |||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|
প্রাচীন যুগ | |||||||
নব্যপ্রস্তর যুগ আনু. খ্রিস্টপূর্ব ৮৫০০ - ২০৭০ অব্দ | |||||||
সিয়া সাম্রাজ্য আনু. খ্রিস্টপূর্ব ২০৭০ - ১৬০০ অব্দ | |||||||
শাং সাম্রাজ্য আনু. খ্রিস্টপূর্ব ১৬০০ - ১০৪৬ অব্দ | |||||||
চৌ রাজবংশ আনু. খ্রিস্টপূর্ব ১০৪৬ - ২৫৬ অব্দ | |||||||
পশ্চিম চৌ | |||||||
পূর্ব চৌ | |||||||
শরৎ বসন্ত কাল | |||||||
যুদ্ধরত রাজ্য কাল | |||||||
সামন্ততান্ত্রিক যুগ | |||||||
কিন সাম্রাজ্য খ্রিস্টপূর্ব ২২১ - ২০৬ অব্দ | |||||||
হান সাম্রাজ্য খ্রিস্টপূর্ব ২০৬ অব্দ - ২২০ খ্রিস্টাব্দ | |||||||
পশ্চিম হান | |||||||
সিন সাম্রাজ্য ৯ - ২৩ খ্রিস্টাব্দ | |||||||
পূর্ব হান | |||||||
তিন রাজ্য ২২০ - ২৮০ খ্রিস্টাব্দ | |||||||
চাও ওয়েই, শু হান ও পূর্ব য়ু | |||||||
চিন সাম্রাজ্য ২৬৫ - ৪২০ খ্রিস্টাব্দ | |||||||
পশ্চিম চিন | |||||||
পূর্ব চিন | ষোল রাজ্য | ||||||
উত্তর ও দক্ষিণ রাজবংশ ৪২০ - ৫৮৯ খ্রিস্টাব্দ | |||||||
সুই সাম্রাজ্য ৫৮১ – ৬১৮ খ্রিস্টাব্দ | |||||||
তাং রাজবংশ ৬১৮ – ৯০৭ খ্রিস্টাব্দ | |||||||
(দ্বিতীয় চৌ রাজবংশ ৬৯০–৭০৫ খ্রিস্টাব্দ) | |||||||
পাঁচ সাম্রাজ্য ও দশ রাজ্য ৯০৭ – ৯৬০ খ্রিস্টাব্দ |
লিয়াও রাজবংশ ৯০৭ – ১১২৫ খ্রিস্টাব্দ | ||||||
সং রাজবংশ ৯৬০ – ১২৭৯ খ্রিস্টাব্দ |
|||||||
উত্তর সং | পশ্চিম সিয়া | ||||||
দক্ষিণ সং | চিন | ||||||
ইউয়ান রাজবংশ ১২৭১ – ১৩৬৮ খ্রিস্টাব্দ | |||||||
মিং রাজবংশ ১৩৬৮ – ১৬৪৪ খ্রিস্টাব্দ | |||||||
চিং রাজবংশ ১৬৪৪ – ১৯১১ খ্রিস্টাব্দ | |||||||
আধুনিক যুগ | |||||||
গণতান্ত্রিক চীন ১৯১২ – ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দ | |||||||
গণচীন ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দ – বর্তমান |
গণচীন (তাইওয়ান) ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দ – বর্তমান | ||||||
চিন সাম্রাজ্য সময়কালকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। ২৬৫ থেকে ৩১৬ সাল পর্যন্ত যখন রাজধানী লুওইয়াং বা চেং’এন-এ ছিল তখন পশ্চিম চিন নামে পরিচিত ছিল এবং ৩১৭ থেকে ৪২০ সাল পর্যন্ত যখন রাজধানী জিয়ানকাংয়ে ছিল তখন পূর্ব চিন নামে পরিচিত ছিল। সম্রাট ইউয়ান গৃহযুদ্ধ এবং উত্তর ও পশ্চিমের পাঁচ যাযাবর সম্প্রদায়ের আক্রমণ থেকে রেহাই পেতে জিয়ানকাংয়ে রাজধানী স্থানান্তর করতে বাধ্য হন। লিউ সং রাজবংশের হাতে পূর্ব চিন সাম্রাজ্যের পতন হয়।
ইতিহাস
চিন সাম্রাজ্যের উত্থান
উৎপত্তি
চিন সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে চীনের তিন রাজ্য সময়কালের শক্তিশালী রাজ্য কাও ওয়েইয়ের প্রসিদ্ধ বংশ সিমা পরিবার। ২৪৯ সালের গাওপিং সমাধির ঘটনার পরে দক্ষতার সাথে কাও ওয়েইয়ের সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রন করে প্রসিদ্ধি লাভ করে। সিমা ঝাও আরও কিছু বিদ্রোহ দমনে রাজপরিবারকে সহায়তা করেন। তিনি ২৬৩ সালে লিউ শানকে বন্দী করে শুকে মুক্ত করেন এবং পরের বছর ঝং হুই বিদ্রোহ দমন করেন। তার সিংহাসনে আরোহণ করার আশা অপূর্ণ রয়ে যায় এবং মৃত্যুর আগে তিনি ঝাও সাম্রাজ্য প্রদত্ত যুবরাজ পদবি লাভ করেন। সিমা ঝাওয়ের পুত্র সিমা ইয়ান ২৬৫ সালে শেষ ওয়েই সম্রাট কাও হুয়ানকে সিংহাসন ত্যাগ করতে বাধ্য করেন। সিমা ইয়ান তাকে যুবরাজ উপাধি প্রদান করেন এবং তার রাজকীয় সমাধির অনুমতি দেন। ফলে সিমা ইয়ান হন চিন সাম্রাজ্যের প্রথম সম্রাট।[3]
য়ু রাজ্য জয়
চিন য়ুডি উপাধি নিয়ে সিংহাসনে আরোহণ করার পর সিমা ইয়ান তিন রাজ্যের অপর আরেক রাজ্য পূর্ব য়ু বিজয়ে মনযোগী হন। পূর্ব য়ু তখন দক্ষিণপূর্ব চীনারা নিয়ন্ত্রণ করত। ২৮০ সালে ২০০,০০০ চিন সেনা নিয়ে ছয় দলে বিভক্ত হয়ে নদী ও সমতল ভূমি পাড়ি দিয়ে সিচুয়ান ও উত্তর দিক থেকে য়ু রাজ্যে আক্রমণ চালায়। তারা অচিরেই সকল প্রতিরোধ ভেঙ্গে দেয়, এমনকি য়ু চ্যান্সেলর ঝাং ডির ৩০,০০০ সেনা নিয়ে প্রতিরোধও। চিন সেনারা য়ু রাজধানী নানজিং অবরোধ করে। সেখানে মাত্র ২০,০০০ সেনা ছিল। ফলে য়ু রাজা চিনদের কাছে আত্মসমর্পণ করে এবং সমগ্র চীন আবার একত্রিত হয়।[4]
তাইকাং যুগে সমৃদ্ধি
সম্রাট য়ুর রাজত্বকাল থেকে চীন সমৃদ্ধি লাভ করতে থাকে। চিনরা কর কমাতে থাকে এবং পরিখা খননে ও কৃষির উন্নয়নের লক্ষে অন্যান্য কাজে সহায়তা প্রদান করে। চীন পুনরায় একত্রিত হওয়ার ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসার লাভ করে, যা দেশের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করে।[2]
দেশের এই সমৃদ্ধি সম্রাটের বিলাসবহুল জীবনযাপনের মধ্যে লক্ষণীয় হয়। একজন পদস্থ কর্মচারী প্রতিদিন শুধুমাত্র খাবারের জন্য নগদ ২০,০০০ স্ট্রিং খরচ করত। কিছু পদস্থ কর্মচারী আবার এই সময়কালে যাযাবর সম্প্রদায়ের চীনে অভিবাসন নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন।[5]
পশ্চিম চিন সাম্রাজ্যের পতন
আট যুবরাজের যুদ্ধ
সম্রাট য়ু মনে করতেন ওয়েই রাজ্য পতনের মূল কারণ হল রাজ পরিবারের ক্ষমতা ও জনসমর্থন হারানো। তার সাম্রাজ্যে এর পুনরাবৃত্তি না হওয়ার জন্য তিনি তার ভাইদের ও তাদের সন্তানদের বিভিন্ন প্রদেশে রাজা উপাধি দিয়ে প্রেরণ করেন। ফলে কেন্দ্রীয় সরকারের পাশাপাশি আঞ্চলিক সরকারও শক্তিশালী হয়ে ওঠে। কিন্তু তার মৃত্যুর পরপরই তার পুত্র চিন হুইডির রাজত্বে তার দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে ২৯১ সাল থেকে ৩০৫ সাল পর্যন্ত আট যুবরাজ যুদ্ধে লিপ্ত হয়। ফলে কেন্দ্রীয় সরকার নিয়ন্ত্রণ হারায় এবং চিন সাম্রাজ্য দুর্বল হতে থাকে।[6]
য়ু হু বিদ্রোহ
আট যুবরাজের যুদ্ধের পর উত্তরের পাঁচ যাযাবর সম্প্রদায় সংঘবদ্ধ হয়ে চীনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সুযোগ নেয়। লিউ ইউয়ানের নেতৃত্বে তাদের দল ৩০৪ সালে চিন সাম্রাজ্যে বিদ্রোহ শুরু করে। চিন সেনারা এই বিদ্রোহ দমনের চেষ্টা করে কিন্তু ৩১০ সালে তারা য়ু হুদে কাছে পরাজিত হয়। এতে ১০০,০০০ এরও বেশি সেনা মারা যায় এবং চীনকে উত্তরাংশ ছেড়ে দিতে হয়। ৩১১ সালে য়ু হু চিন রাজধানী লুওইয়াং লুণ্ঠন করে এবং ৩০,০০০ এর জনগণকে হত্যা করে। তারা চিনদের দ্বিতীয় রাজধানী চেং'আন ও ৩১৬ সালে দখল করে।[7] ফলে তারা চীনের প্রধান অংশ উত্তর চীনে কর্তৃত্ব স্থাপন করে এবং হুয়াই নদীর দক্ষিণাঞ্চলে চিনদের কর্তৃত্ব কমতে থাকে। এসময়ে চিনদের সমৃদ্ধি কমতে থাকে এবং তারা তাদের রাজধানী স্থানান্তর করে জিয়ানকাংয়ে নিয়ে যায়, যা পরে পূর্ব চিন সাম্রাজ্য নামে পরিচিতি লাভ করে।[8]
মধ্য চিন যুগ (৩১৬ - ৩৮৩)
আভ্যন্তরীণ সমস্যা
য়ু হু বিদ্রোহের পর বাকি চিনরা চীনের দক্ষিণাংশে চলে যায় এবং পূর্ব চিন সাম্রাজ্য গড়ে তুলে। এই সময়ে ক্ষমতাধর দুই সেনাপ্রধান ওয়াং ডুন ও হুয়ান ওয়েনের প্রভাবে চিন রাজদরবারের ক্ষমতা কমতে থাকে। উত্তরের হানরা দক্ষিণে চিন সাম্রাজ্যে প্রবেশ করতে থাকলে বিশেষ অভিবাসন ব্যবস্থা ও নথিভুক্তির তালিকা তৈরি করা হয়।[9]
হুয়ান ওয়েনের সামরিক অভিযান
হুয়ান ওয়েন ৩৪৬ সাল থেকে ৩৭৩ সাল পর্যন্ত অত্যন্ত দক্ষতার সাথে চিন রাজ্য পরিচালনা করেন। তিনি চিন সাম্রাজ্য ও তার নিজের সম্মান রক্ষার্থে যাযাবর য়ু হুদের বিরুদ্ধে বেশ কিছু সামরিক অভিযান চালান। কিন্তু যথাযথ সেনা ও খাদ্য মজুদের অভাবে ও চিন রাজদরবারের হুয়ান ওয়েনের প্রতি সংশয়ের কারণে প্রায় সবকটি অভিযান ব্যর্থ হয়। [10]
শেষ চিন যুগ (৩৮৩ - ৪২০)
ফেই নদীর তীরে যুদ্ধ

৩৭৬ সালে চিন সাম্রাজ্যের উত্তরাংশ সাবেক কিন রাজ্যের সাথে পুনরায় একত্রিত হলে চিন আসন্ন বিপদের সম্মুখীন হয়। ৩৮৩ সালে সাবেক কিন রাজ্যের রাজা ফু জিয়ান ৩০০,০০০ সেনা নিয়ে চিন সাম্রাজ্য আক্রমণ করে। চিনরা এই আক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য ৮০,০০০ সেনা মোতায়ন করে। চিনদের সেনারা সকলেই ছিল প্রশিক্ষিত ও অস্ত্রধারী, অন্যদিকে কিন সেনারা ছিল বাধ্যতামূলকভাবে সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত। ফলে ফেই নদীর তীরে এক যুদ্ধে কিন সেনারা চিন সেনাদের কাছে পরাজিত হয়।[11]
এই যুদ্ধে বিজয়ের ফলে চ্যান্সেলর সাই আন সাবেক কিন রাজ্য পতনের সুযোগ নিয়ে হুয়াই নদীর উত্তরের আরও কিছু অঞ্চল চিনদের রাজত্বে নিয়ে আসে। হুয়ান ওয়েনের পুত্র হুয়ান সুয়ানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ চিনদের বিক্ষিপ্ত করে দেয় এবং তারা লিউ ইয়ুর সামরিক অভিযানের পূর্ব পর্যন্ত তার সমাধান করতে অসমর্থ হয়।[12]
লিউ ইয়ুর সামরিক অভিযান
লিউ ইয়ু ৪০৬ সালে হুয়ান সুয়ানকে পরাজিত করে এবং পরবর্তী কিন, সিয়া, দক্ষিণ ইয়ান, ও উত্তর ওয়েই রাজ্যের বিরুদ্ধে কয়েকটি সামরিক অভিযান চালায়। সিয়া ব্যতীত সবকটি অভিযান সফল হয়। এইসব যুদ্ধ জয়ের ফলে লিউ চীনের প্রধান অংশ দখল এবং হুয়াংহো নদীর তীরে উত্তর সীমানা ঠিক করার সুযোগ পায়। এছাড়া এইসব যুদ্ধ জয়ে লিউ ইয়ুর সম্মান ও ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং ৪২০ সালে চিন সাম্রাজ্য দখল করে। এরই মধ্য দিয়ে চিন সামাজ্যের পতন হয়। লিউ ইয়ু ও তার পুত্রের শাসনামলে চিন সাময়িক সোনালি সময় পার করে, যা লিউ সং রাজবংশের রাজা মিং উত্তর চীন দখল করা পর্যন্ত স্থায়ী হয়।[13]
সংস্কৃতি
চিন সাম্রাজ্য চীনামাটির তৈজসপত্র তৈরির জন্য বিখ্যাত ছিল। পানির পাত্রে বিভিন্ন প্রাণীর অবয়ব ও বুদ্ধের প্রতিক্রিতি ফুটে উঠত।[14][15]
- চীনামাটির তৈরি সিংহ আকৃতির বিক্সি, পশ্চিম চিন, ২৬৫ - ৩১৭ খ্রিষ্টাব্দ
- চীনামাটির বুদ্ধের ছবি সম্বলিত বাটি, পশ্চিম চিন, ২৬৫ - ৩১৭ খ্রিষ্টাব্দ
- হুনপিং, বুদ্ধের ছবি সম্বলিত পানি রাখার পাত্র, পশ্চিম চিন, ২৬৫ - ৩১৭ খ্রিষ্টাব্দ
- হুনপিং-এ বুদ্ধের প্রতিকৃতি, পশ্চিম চিন, ২৬৫ - ৩১৭ খ্রিষ্টাব্দ
- হুনপিং-এ আঁকা চিন যুগের ঘোড়সওয়ার
- শিল্প সমৃদ্ধ চীনামাটির তৈজসপত্র, ঝেজিয়াং, পশ্চিম চিন, ২৬৫ - ৩১৭ খ্রিষ্টাব্দ,
- চীনামাটির পানি রাখার পাত্র, পূর্ব চিন, ৩১৭ - ৪২০ খ্রিষ্টাব্দ
- চীনামাটির পানি রাখার পাত্র, পূর্ব চিন, ৩১৭ - ৪২০ খ্রিষ্টাব্দ
- 'প্যালেস লেডি' (女史箴图), ৩৪৪ - ৪০৫ খ্রিষ্টাব্দ
রাজ পরিবার

সিমা ফেই (司馬朏) চিন সাম্রাজ্যের একজন বংশধর যিনি উত্তরে সিয়ানবেই নির্বাসিত হন। তিনি সেখানে সিয়ানবেই উত্তর ওয়েইয়ের সিয়াওওয়েনের কন্যা রাজকুমারী হুয়াইয়াংকে (華陽公主) বিয়ে করেন।
যখন পূর্ব চিন সাম্রাজ্যের পতন হয় তখন চিন যুবরাজ সিমা চুঝি শরণার্থী হিসেবে উত্তর ওয়েইয়ে আশ্রয় লাভ করে। সেখানে তিনি উত্তর ওয়েইয়ের এক রাজকুমারীকে বিয়ে করেন এবং সিমা চিনলং নামে এক পুত্র সন্তান জন্ম দেন। সিমা চিনলং উত্তর লিয়াং রাজা জুকু মুজিয়ানের কন্যাকে বিয়ে করেন।[16]
পরবর্তী সং সাম্রাজ্য চ্যান্সেলর সিমা গুয়াং (১০১৯ – ১০৮৬) চিন রাজপরিবারের বংশধর ছিলেন।
চিন সম্রাট
রাজউপাধি | বংশনাম ও পারিবারিক নাম | রাজত্বকাল | বছর অনুসারে রাজউপাধি |
---|---|---|---|
Chinese convention: "চিন" + posthumous name + "ডি" | |||
পশ্চিম চিন সাম্রাজ্য (২৬৫-৩১৬) | |||
চিন য়ুডি | সিমা ইয়ান | ২৬৬ – ২৯০ খ্রিষ্টাব্দ |
|
চিন হুইডি | সিমা ঝং | ২৯০ - ৩০৭ খ্রিষ্টাব্দ |
|
নাই | সিমা লুন | ৩০১ খ্রিষ্টাব্দ |
|
চিন হুয়াইডি | সিমা চি | ৩০৭ – ৩১১ খ্রিষ্টাব্দ |
|
চিন মিনডি | সিমা ইয়ে | ৩১৩ – ৩১৭ খ্রিষ্টাব্দ |
|
পূর্ব চিন সাম্রাজ্য (৩১৭-৪২০) | |||
চিন ইউয়ানডি | সিমা রুই | ৩১৭ – ৩২৩ খ্রিষ্টাব্দ |
|
চিন মিংডি | সিমা সাও | ৩২৩ – ৩২৫ খ্রিষ্টাব্দ |
|
চিন চেংডি | সিমা ইয়ান | ৩২৫ – ৩৪২ খ্রিষ্টাব্দ |
|
চিন কাংডি | সিমা ইয়ুয়ে | ৩৪২ – ৩৪৪ খ্রিষ্টাব্দ |
|
চিন মুডি | সিমা ডান | ৩৪৪ – ৩৬১ খ্রিষ্টাব্দ |
|
চিন আইডি | সিমা পি | ৩৬১ - ৩৬৫ খ্রিষ্টাব্দ |
|
চিন ফেইডি | সিমা য়ি | ৩৬৫ - ৩৭২ খ্রিষ্টাব্দ |
|
চিন জিয়ানওয়েন | সিমা ইয়ু | ৩৭২ খ্রিষ্টাব্দ |
|
চিন সিয়াওয়ুডি | সিমা ইয়াও | ৩৭২ - ৩৯৬ খ্রিষ্টাব্দ |
|
চিন আনডি | সিমা ডেজং | ৩৯৬ – ৪১৯ খ্রিষ্টাব্দ |
|
চিন গংডি | সিমা ডেয়েন | ৪১৯ – ৪২০ খ্রিষ্টাব্দ |
|
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
- Taagepera, Rein (১৯৭৯)। "Size and Duration of Empires: Growth-Decline Curves, 600 B.C. to 600 A.D."। Social Science History। 3 (3/4): 128। doi:10.2307/1170959। সংগ্রহের তারিখ ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬।
- Li and Zheng, pg 365
- Li and Zheng, pg 361
- Li and Zheng, pg 364.
- Li and Zheng, pg 366
- Li and Zheng, pg 371-379
- Li and Zheng, pg 383-384
- Li and Zheng, pg 384
- Jacques Gernet (৩১ মে ১৯৯৬)। A History of Chinese Civilization। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 182–। আইএসবিএন 978-0-521-49781-7।
- Li and Zheng, pg 390
- Li and Zheng, pg 419
- Li and Zheng, pg 428
- Li and Zheng, pg 428-432
- Shanghai Museum permanent exhibit
- Guimet Museum permanent exhibit
- China: Dawn of a Golden Age, 200-750 AD। Metropolitan Museum of Art। ২০০৪। পৃষ্ঠা 18–। আইএসবিএন 978-1-58839-126-1।
গ্রন্থপঞ্জি
- Gernet, Jacques (১৯৯৬)। A History of Chinese Civilization। Cambridge University Press। আইএসবিএন 978-0-521-49781-7।
- Li, Bo; Zheng Yin (Chinese) (2001) 5000 years of Chinese history, Inner Mongolian People's publishing corp, আইএসবিএন ৭-২০৪-০৪৪২০-৭
- de Crespigny, Rafe। "HE THREE KINGDOMS AND WESTERN JIN A HISTORY OF CHINA IN THE THIRD CENTURY AD" (PDF)। সংগ্রহের তারিখ ১১ জুলাই ২০১৬।
বহিঃসংযোগ
![]() |
উইকিমিডিয়া কমন্সে চিন সাম্রাজ্য (২৬৫–৪২০) সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে। |
- Chinese History, the Jin Dynasty 晉
- Largest Jin Dynasty Tomb Discovered in NW China
- Early Imperial China: A Working Collection of Resources
- History of China: A good catalogue of info
পূর্বসূরী তিন রাজ্য |
চীনের সাম্রাজ্য ২৬৫ – ৪২০ খ্রিস্টাব্দ |
উত্তরসূরী উত্তর ও দক্ষিণ সাম্রাজ্য |
টেমপ্লেট:চিন সাম্রাজ্য (২৬৫-৪২০)