জগন্নাথ তর্কপঞ্চানন
জগন্নাথ তর্কপঞ্চানন (জন্ম: ১৩ সেপ্টেম্বর, ১৬৯৪। মৃত্য ১৯ অক্টোবর ১৮০৭) একজন বাঙালী শ্রুতিধর ও পন্ডিত। জন্মস্থান ত্রিবেণী, হুগলী। পিতা পন্ডিত রুদ্রদেব তর্কবাগীশ।
জগন্নাথ তর্কপঞ্চানন | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | অক্টোবর ১৯, ১৮০৭ ১১৩) | (বয়স
খ্যাতি
পিতা ও জেষ্ঠতাতের নিকট ব্যাকরণ ও স্মৃতি শাস্ত্র শিক্ষা, মুখে মুখেই ব্যকরনের সূত্রগুলি শিখে ফেলেছিলেন অতি অল্প বয়েসে। পরে রঘুদেব বাচষ্পতির কাছে আইনের পাঠ নেন। ত্রিবেনীতে তার টোল বা চতুষ্পাঠী ছিল। তার অসামান্য স্মৃতিশক্তির গল্প প্রায় প্রবাদের আকারে প্রতিষ্ঠিত। সেযুগে নবদ্বীপ সংস্কৃত চর্চা ও বিদ্যার পীঠস্থান হলেও ত্রিবেনীর জগন্নাথ তর্কপঞ্চানন ছিলেন পন্ডিতশ্রেষ্ঠ যিনি নবদ্বীপের খ্যাতি একাকী ম্লান করে দিয়েছিলেন।[1]
আইনবিদ
ইংরেজরা ১৭৬৫ সালে বাংলার দেওয়ানি লাভ করলে দেশীয় বিচার পদ্ধতি ও আইন প্রনয়নের জন্যে তার শরনাপন্ন হয়েছিল। 'অষ্টাদশ বিবাদের বিচার' তার রচনা। জীবনের বিশেষ কীর্তি ন্যায় বিষয়ক গ্রন্থ 'বিবাদ ভঙ্গার্নব' সংকলন। ততকালীন হিন্দু দেওয়ানি বিচার ব্যবস্থা এই বইয়ের ইংরেজি অনুবাদের মাধ্যমেই হতো। নব্যন্যায়ের ওপর নানা লেখা ছিল তার[1]।
পৃষ্ঠপোষকতা
মহারাজ নন্দকুমার থেকে শুরু করে শোভাবাজার রাজা নবকৃষ্ণ, মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়, বর্ধমান রাজ কীর্তিচন্দ্র ছিলেন তার গুনগ্রাহী। রবার্ট ক্লাইভ তার কাছে সংস্কৃত শিখেছেন, এছাড়াও লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংস, হার্ডিঞ্জ, জন শোর, কোলব্রুক এবং এশিয়াটিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা স্যার উইলিয়াম জোন্সের সাথে তার হৃদ্যতা ছিলো। প্রাচ্য সংস্কৃতি বিশারদ সুপন্ডিত জোনস বিভিন্ন তথ্য ও তত্ব সংগ্রহ করতে বারংবার তার কাছে আসতেন। সদর দেওয়ানি আদালতের প্রধান বিচারপতি হ্যারিংটন ছিলেন জগন্নাত তর্কপঞ্চাননের সুহৃদ। অন্যান্য ইংরেজ রাজপুরুষেরা আইন সংক্রান্ত কঠিন বিষয়ে তার পরামর্শ নিতেন। প্রথম সুপ্রীম কোর্ট স্থাপিত হলে তাকে প্রধান পন্ডিতের পদ আহবান করা হয়। তিনি সেই পদ গ্রহণে অস্বীকৃত হলে তার পৌত্র ঘনশ্যাম এই পদে আসীন হন।[2]
তথ্যসূত্র
- রূপমঞ্জরী, নারায়ন সান্যাল (১৯৯০)। ত্রিবেনী। কলকাতা: দেজ পাবলিশিং। পৃষ্ঠা ৩৯৮।
- সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, প্রথম খন্ড (২০০২)। সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান। কলকাতা: সাহিত্য সংসদ। পৃষ্ঠা ১৬৮। আইএসবিএন 81-85626-65-0।