চাক্ষুষ জ্ঞান
চাক্ষুষ জ্ঞান হল পরিবেশের বস্তু দ্বারা প্রতিফলিত দৃশ্যমান বর্ণালীর আলোর ব্যবহার করে পারিপার্শ্বিক পরিবেশকে ব্যাখ্যা দান করার ক্ষমতা।
প্রাপ্ত উপলব্ধি (perception) চাক্ষুষ জ্ঞান, দৃষ্টিশক্তি, দৃষ্টিক্ষেত্র, বা দৃষ্টি হিসাবেও পরিচিত। দৃষ্টির সাথে জড়িত বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় উপাদানকে সম্মিলিতভাবে দৃষ্টিপদ্ধতি (Visual system) হিসেবে উল্লেখ করা হয়, এবং ভাষাবিজ্ঞান , মনোবিজ্ঞান , বোধ বিজ্ঞান , স্নায়ুবিজ্ঞান , এবং আনবিক জীববিদ্যার(molecular biology) মধ্যে অনেক গবেষণার কেন্দ্রবিন্দু , সম্মিলিতভাবে দৃষ্টি বিজ্ঞান হিসাবে উল্লেখ করা হয়।
দৃষ্টিপদ্ধতি
প্রাণীদের দৃষ্টিপদ্ধতি প্রত্যেককে তাদের আশপাশ থেকে তথ্য একত্রীত করতে অনুমোদন দেয়।নিরীক্ষার কাজ শুরু হয় যখন চোখের কর্নিয়া এবং তারপর লেন্স তার আশপাশ থেকে আলোকে কেন্দ্রীভূত করে চোখের একটি আলোক সংবেদনশীল ঝিল্লীতে, যাকে বলা হয় রেটিনা । অক্ষিপট আসলে মস্তিষ্কর অংশ যা একটি পরিবর্তক (Transducer) হিসেবে বিচ্ছিন্ন থেকে কাজ করে আলোকে স্নায়ুর সংকেতে রূপান্তর জন্য। দৃষ্টিপদ্ধতি থেকে প্রতিক্রিয়ার উপর ভিত্তি করে, চোখের লেন্স তার পুরুত্বকে বিন্যস্ত করে আলোকে কেন্দ্রীভূত করে রেটিনার আলোকসংবেদনশীল কোষগুলোতে (photo-receptive cells) ,যারা রড এবং কোণ নামেও পরিচিত, যা আলোর ফোটনকে শনাক্ত করে এবং স্নায়ুবিক তাড়না (neural impulses) তৈরির মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া করে। রেটিনা থেকে মস্তিষ্কের ganglia পর্যন্ত মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের দ্বারা এই সংকেতগুলো প্রক্রিয়াকৃত হয় জটিল feedforward and feedback প্রক্রিয়ার মাধ্যমে।
উল্লেখ্য যে এখন পর্যন্ত উপরোক্ত অনুচ্ছেদের অনেকটাই অক্টোপাস , মলাস্কা , ক্রিমি (worms), কীট এবং আরো আদিম জিনিসের জন্য প্রাসঙ্গিক; জেলিফিশ থেকে যে কোন কিছু আরো ঘনীভূত স্নায়ুতন্ত্র এবং ভালো চোখসহ। তবে নিম্নলিখিত সাধারণত স্তন্যপায়ী ও পাখিদের (পরিবর্তিত আকারে) ক্ষেত্রে প্রযোজ্য: এই আরো জটিল প্রাণীদের রেটিনা তন্তু পাঠায় (দর্শন স্নায়ু থেকে) lateral geniculate nucleus পর্যন্ত, মস্তিষ্কের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক visual cortex পর্যন্ত। এছাড়াও সংকেত সরাসরি রেটিনা থেকে superior colliculus পর্যন্ত ভ্রমণ করতে পারে।
বস্তুর উপলব্ধি এবং দৃশ্যপটের সম্পূর্ণতা দ্বারা visual association cortex সম্পাদিত হয়। striate cortex, যা ধারণ করে মডুলার নিউরাল নেটওয়ার্কের (modular neural networks) হাজার হাজার মডিউল, দ্বারা অনুভূত সব সংজ্ঞাবহ তথ্যকে ভিজ্যুয়াল এসোসিয়েশন কর্টেক্স একত্রিত করে। striate cortex এর নিউরোন অ্যাক্সন পাঠায় extrastriate cortex এ,ভিজ্যুয়াল এসোসিয়েশন কর্টেক্সের একটি অঞ্চল যা striate cortex কে ঘিরে থাকে। [1]
অধ্যয়ন
চাক্ষুষ জ্ঞানের প্রধান সমস্যা হল মানুষ যা দেখে তা কেবল রেটিনা উদ্দীপনার একটি অনুবাদ নয় (অর্থাৎ, অক্ষিপট চিত্র)। এভাবে উপলব্ধি আগ্রহী ব্যক্তিগণ দীর্ঘ লড়াই করেছেন প্রকৃত দৃশ্য তৈরি করতে চাক্ষুষ প্রক্রিয়াকরণ কি করে তা ব্যাখ্যা করার জন্য ।
প্রারম্ভিক গবেষণা

দুটি প্রধান প্রাচীন গ্রিক বিদ্যালয়, কিভাবে দৃষ্টি শরীরে সম্পাদিত হয় তার একটি আদিম ব্যাখ্যা প্রদান করেছিল।
প্রথমটি ছিল "নির্গমন তত্ত্ব " যা দাবি করেছিল যে, যখন রশ্মি চোখ থেকে নির্গত হয় এবং চাক্ষুষ বস্তু দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয় তখন দৃষ্টি ঘটে। যদি একটি বস্তু সরাসরি দেখা যায় তবে তা চোখ থেকে বেরিয়ে আসা 'রশ্মি মাধ্যম' দ্বারা এবং বস্তুর উপর পুনরায় পতিত হয়ে। একটি প্রতিসৃত ছবি দেখা যায় চোখ থেকে আসা 'রশ্মি মাধ্যম' দ্বারা, বায়ু মাধ্যম ভেদ করে, এবং প্রতিসরণের পর, দৃশ্যমান বস্তুর উপর পতিত হয় যা চোখ থেকে আসা রশ্মির আন্দোলনের ফলে দেখা যায়। এই তত্ত্বের প্রবক্তা ছিলেন ইউক্লিড এবং টলেমির মত পণ্ডিতেরা এবং তাদের অনুসারীরা।
দ্বিতীয় বিদ্যালয় তথাকথিত 'ইন্ট্রো-মিশন' পদ্ধতির সমর্থন করেছিল যা দৃষ্টিকে বিবেচনা করেছিল বস্তুর প্রতিনিধি হিসেবে কিছু চোখে প্রবেশ করাকে। এর প্রধান প্রচারক এরিস্টটল , গ্যালেন এবং তাদের অনুসারীরা, দৃষ্টি আসলে কি তার আধুনিক তত্ত্বের সাথে এই তত্ত্বের কিছু সম্পর্ক আছে বলে মনে হয়, কিন্তু এটি শুধুই একটি ধারণা কোনো পরীক্ষামূলক ভিত্তির অভাবে। (অষ্টাদশ শতাব্দীর ইংল্যান্ডে, আইজাক নিউটন , জন লক এবং অন্যান্যরা, অন্তনির্বেশ / intromittist তত্ত্ব নিয়ে আসেন যা দৃঢ়ভাবে অগ্রসর হয়েছিল যে দৃষ্টি একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে বস্তু থেকে-উদ্গত প্রকৃত দেহধারী রশ্মি চোখের রন্ধ্রের মাধ্যমে দর্শকের মন/ চেতনপীঠে প্রবেশ করে।) [2]
উভয় স্কুলের চিন্তাগুলো "like is only known by like" নীতির উপর নির্ভর করেছিল, এবং এইভাবে চোখ কিছু "অভ্যন্তরীণ অগ্নি" দ্বারা গঠিত হয়েছিল যা দৃশ্যমান আলোর "বাহ্যিক অগ্নি"র সাথে মিথস্ক্রিয়া করে এবং দর্শনকে সম্ভব করে এই ধারণার উপর নির্ভর করেছিল। প্লেটো তার Timaeus সংলাপে এই কথন রচনা করেছিল, এরিস্টটলও করেছিল তার De Sensuতে। [3]
