কৃষ্ণসার

কৃষ্ণসার বা কৃষ্ণশার (ইংরেজি: Blackbuck; বৈজ্ঞানিক নাম: Antilope cervicapra) এন্টিলোপ গণের অন্তর্ভুক্ত এক প্রকার হরিণবিশেষ। প্রধানতঃ ভারতের পশ্চিমাঞ্চলে এদের আবাসস্থল। এছাড়াও, পাকিস্তানের কিছু অংশসহ নেপালে এদেরকে দেখা যায়। পূর্ব পাঞ্জাবের আঞ্চলিক প্রাণী হিসেবে কৃষ্ণসার একটি স্বীকৃত প্রাণী। এদেরকে কৃষ্ণমৃগসারঙ্গ নামেও জানা যায়।

কৃষ্ণসার
ভারতের হায়দরাবাদে লাফরত অবস্থায় কৃষ্ণসার

বিপন্ন  (আইইউসিএন ৩.১)[1]
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: Animalia
পর্ব: কর্ডাটা
শ্রেণী: Mammalia
বর্গ: Artiodactyla
পরিবার: Bovidae
গণ: Antilope
প্রজাতি: A. cervicapra
দ্বিপদী নাম
Antilope cervicapra
(লিনিয়াস, ১৭৫৮)
উপপ্রজাতি

Antilope cervicapra centralis
Antilope cervicapra cervicapra
Antilope cervicapra rajputanae
Antilope cervicapra rupicapra

বৈশিষ্ট্যাবলী

পুরুষ ও স্ত্রীজাতীয় কৃষ্ণসারের দেহকাঠামোর মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। পুরুষ কৃষ্ণসার ঘন বাদামী, কালো এবং সাদা রঙের হয়ে থাকে। এদের পেঁচানো শিং রয়েছে। অন্যদিকে স্ত্রীজাতীয় কৃষ্ণসারের কোন শিং নেই এবং ফন রঙের অধিকারী। কব হরিণের সাথে কৃষ্ণসারের বেশ মিল রয়েছে।[2] এদের দেহের দৈর্ঘ্য: ১০০-১৫০ সেন্টিমিটার (৩.৩-৪.৯ ফুট); কাঁধের দৈর্ঘ্য: ৬০-৮৫ সে.মি (২-২.৭৯ ফুট); লেজের দৈর্ঘ্য: ১০-১৭ সে.মি. (৩.৯-৬.৭ ইঞ্চি) এবং ওজন: ২৫-৩৫ কেজি (৫৫-৭৭ পাউন্ড) হয়ে থাকে।[3]

আবাসস্থল

পূর্বে উত্তর-পূর্বাংশ ছাড়া ভারতের সর্বত্র কৃষ্ণসার ব্যাপক সংখ্যায় বাস করতো। কিন্তু বর্তমানে এদের সংখ্যা দ্রুত কমে যাওয়ায় শুধুমাত্র মহারাষ্ট্র, উড়িষ্যা, পাঞ্জাব, রাজস্থান, হরিয়ানা, গুজরাট, অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু এবং কর্ণাটকে দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়াও মধ্য ভারতে ক্ষুদ্র সংখ্যায় কৃষ্ণসার রয়েছে।[4][5]

নেপালের বর্দিয়া জাতীয় উদ্যানের দক্ষিণে কৃষ্ণসার সংরক্ষণ এলাকায় সর্বশেষ জরীপ কার্য্য পরিচালিত হয়। ২০০৮ সালের ঐ জরীপে কৃষ্ণসারের সংখ্যা ১৮৪টি উল্লেখ করা হয়।[6]

জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ

সাধারণতঃ উন্মুক্ত সমান্তরাল স্থানে দলবদ্ধ হয়ে থাকতে এরা পছন্দ করতে ভালবাসে। একটি প্রভাববিস্তারকারী পুরুষজাতীয় কৃষ্ণসারের নিয়ন্ত্রণে থেকে ১৫ থেকে ২০টি স্ত্রীজাতীয় কৃষ্ণসার একত্রে থাকে। এরা খুবই দ্রুত চলে। তাদের গতিবেগ ঘন্টায় ৮০ কিমি/ঘ (৫০ মা/ঘ) রেকর্ড করা হয়েছে।[7] তাদের মূল খাদক হিসেবে ভারতীয় চিতা বর্তমানে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বর্তমানে নেকড়ে বাঘবন্য কুকুরের কবলে পড়ে শিকারে পরিণত হয়ে থাকে।

কৃষ্ণসার প্রধানতঃ ঘাস খেয়ে জীবনধারণ করে। এছাড়াও, বিভিন্ন ধরনের বীজ, ফুল এবং ফল সহায়ক খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। তাদের সর্বোচ্চ জীবনকাল ১৬ বছর এবং গড় আয়ু ১২ বছর।

কৃষ্ণসার তার মাংসচামড়ার কারণে মানুষের শিকারে পরিণত হয়। ভারতীয় আইন অনুযায়ী পশু শিকার নিষিদ্ধ হলেও মাঝে মধ্যে এ বিপন্ন প্রাণী হত্যার ঘটনা ঘটে। এছাড়াও, জনসংখ্যাধিক্যজনিত কারণে বন বিলুপ্ত হচ্ছে। গৃহপালিত প্রাণীকে বনে ঘাস গ্রহণের লক্ষ্যে পাঠানোয় রোগ ছড়িয়ে তাদের মাঝে সংক্রমিত হচ্ছে।

তথ্যসূত্র

  1. Mallon, D.P. (২০০৮)। "Antilope cervicapra"বিপদগ্রস্ত প্রজাতির আইইউসিএন লাল তালিকা। সংস্করণ 2011.2প্রকৃতি সংরক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন
  2. Burton, Maurice (২০০২)। International Wildlife Encyclopedia (Volume 9)। Marshall Cavendish। পৃষ্ঠা 226। আইএসবিএন 0-7614-7266-5। অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য)
  3. Antilope cervicapra
  4. East, R. (২০০১)। Antelopes: Global Survey and Regional Action Plans, Volume 4। IUCN। পৃষ্ঠা 184। আইএসবিএন 2-8317-0594-0। অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য)
  5. Walther, F. R. (১৯৮৩)। Gazelles and their relatives: a study in territorial behavior। William Andrew। পৃষ্ঠা 74। আইএসবিএন 0-8155-0928-6। অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য)
  6. Bhatta, S. R. (2008). People and Blackbuck: Current Management Challenges and Opportunities ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৪ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে. The Initiation 2(1): 17–21.
  7. Nowak, R. M. (1999). Blackbuck. Pages 1193–1194 in: Walker's Mammals of the World. Volume 1. The Johns Hopkins University Press, Baltimore, USA and London, UK.

বহিঃসংযোগ

টেমপ্লেট:Artiodactyla

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.