কিউরিওসিটি রোভার
কিউরিওসিটি রোভার ২০১২ খ্রিস্টাব্দে মঙ্গল গ্রহে নাসার প্রেরিত চতুর্থ রোবটযান। মঙ্গল গবেষণার ইতিহাসে এটিই এখন পর্যন্ত (২০১২) নাসার বিজ্ঞানীদের সবচেয়ে বড় সাফল্য। রোবটযানটির ওজন প্রায় ১ টন। এই প্রথম নাসা এত বেশি ওজনের যান কোনো গ্রহে সফলভাবে নামাতে সক্ষম হয়েছে। মিশনের বিজ্ঞানীরা বলছেন, মঙ্গল গ্রহে এপর্যন্ত যত অনুসন্ধানী যান পাঠানো হয়েছে, তার মধ্যে ১ টন ওজনের এই কিউরিওসিটিই সবচেয়ে উন্নত।[7][8] কিউরিওসিটি গ্রিনিচ মান সময় সোমবার ভোর পাঁচটা ৩২ মিনিটে মঙ্গল গ্রহের একটি পর্বতের জ্বালামুখের ভেতরে নামে এবং পরে মঙ্গলের মাটি স্পর্শ করে। কিউরিওসিটি পৃথিবী থেকে মঙ্গল গ্রহে পৌঁছাতে সময় নিয়েছে নয় মাস। এটি ২০১১ সালের নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরাল থেকে যাত্রা শুরু করে এবং ৫৭ কোটি কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে মঙ্গল গ্রহে পৌঁছায়।[7] এ রোবটকে বলা হচ্ছে ‘পূর্ণাঙ্গ জৈব গবেষণাগার’।[8]
![]() ![]() মঙ্গলে অবতরণের পূর্বে ও পরে কিউরিওসিটি রোভার | |
সংস্থা | নাসা আন্তর্জাতিক দল |
---|---|
প্রধান কনট্রাক্টর |
|
অভিযানের ধরন | রোভার |
উৎক্ষেপণের তারিখ | ২৬ নভেম্বর ২০১১ 15:02:00.211 UTC (10:02 EST)[1][2] |
উৎক্ষেপণ যান | Atlas V 541 (AV-028) |
উৎক্ষেপণ স্থান | Cape Canaveral LC-41[3] |
অভিযানের ব্যাপ্তিকাল | 668 Martian sols (23 Earth months) primary mission. Current: 2680 days since landing |
COSPAR ID | 2011-070A |
হোমপেজ | Mars Science Laboratory |
ভর | ৯০০ কেজি[4] |
ক্ষমতা | Radioisotope Thermoelectric Generator (RTG) |
মঙ্গল landing | |
Date | August 6, 2012, 05:17 UTC SCET[5] MSD 49269 05:50 AMT |
স্থানাঙ্ক | Aeolis Palus ("Bradbury Landing")[6] in Gale Crater, ৪°৩৫′৩১″ দক্ষিণ ১৩৭°২৬′২৫″ পূর্ব |
লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
মঙ্গল নামে লোহিত গ্রহটির বিশাল আকৃতির আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ গেইলের ভূতত্ত্ব সম্পর্কে জানা। রোবটটি এর লেজার ব্যবহার করে সেখানকার শিলাখণ্ড ছিদ্র বা দহন করে এ গ্রহের প্রাচীন আবহাওয়া ও জলবায়ু জানার চেষ্টা করবে। এতে জানা যাবে, মঙ্গল কখনো আনুবীক্ষণিক জীব বসবাসের উপযোগী ছিল কি না এবং এখন সেখানে জীবনধারণের মতো পরিবেশ আছে কি না বা ভবিষ্যতে সে অবস্থা তৈরির সম্ভাবনা আছে কি না। [8] এক কথায়, প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি কিলোমিটার পেরিয়ে মঙ্গলে সফল অবতরণ করা রোভার কিউরিওসিটির মিশনের উদ্দেশ্য মঙ্গলের আবহাওয়া ও প্রাণের অস্তিত্ব অনুসন্ধান। এই যানটি বানাতে সর্বমোট খরচ হয়েছে প্রায় ২৬০ কোটি মার্কিন ডলার।[9][10]
আকার
রোবটটির আকার মোটামুটি একটি প্রাইভেট কারের সাইজের মত। ঘণ্টায় ১৩ হাজার মাইলের গতি নিয়ে মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে বহনকারী ক্যাপসুল অ্যারোশেল। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের প্রায় একশ’ ভাগ পাতলা বায়ুমণ্ডলে ভীষণ গতিতে ধাবমান একটি যানের বেগ কমিয়ে এ ধরনের মসৃন অতরণ কঠিন ছিল। অবশ্য মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলের গ্যাস অ্যারোশেলের তাপবর্মের সঙ্গে প্রতিরোধ তৈরি করে এর গতি দ্রুত ঘণ্টায় এক হাজার মাইল করে কমিয়ে দিয়েছে। তারপরও যে গতি অবশিষ্ট ছিল তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে এবং সঠিক স্থানে অবতরণের জন্য স্কাইক্রেন নামে আলাদা মহাকাশ যানের প্রয়োজন হয়েছে।[8]
যন্ত্রপাতি

একটি ছোট গাড়ির আকারের কিউরিওসিটিতে আছে হরেক রকম বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি, ক্যামেরা আর আবহাওয়া কেন্দ্র। রোভার যানটির আছে একটি শক্তিশালী ড্রিলসহ রোবটিক হাত, দূর থেকে পাথর চূর্ণ বিচুর্ণ করতে পারা লেজার, একটি রাসায়নিক গবেষণাগার আর বিকিরণ মাপার ডিটেক্টর।[10]
(১)কেমক্যাম: একটি সংবেদনশীল যন্ত্রে যার সাহায্যে সাত মিটার দূরের কোনো শিলার উপরিস্তর বাষ্পায়িত করতে সক্ষম। এ যন্ত্র বাষ্পায়িত শিলা বিশ্লেষণ এবং এর মধ্যকার খনিজ উপাদান শনাক্ত করতে পারবে। ভিনগ্রহে পাঠানো কোনো যানে এ-ই প্রথম এমন বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন লেজার সংযোজন করা হয়েছে। এতে আরো কয়েকটি ক্যামেরা সংযুক্ত আছে যারা মঙ্গলের বৈচিত্রময় ভূপ্রকৃতির উচ্চমানের ছবি তুলে পৃথিবীতে পাঠাবে। অন্য যন্ত্রপাতিগুলো মঙ্গলের আবহাওয়ার অবস্থা পরীক্ষা করবে।
(২)স্পেক্টোমিটার: একসেট, যা মঙ্গলের মাটি পরীক্ষা করে দেখবে এতে কোনো জৈব পদার্থের অস্তিত্ব রয়েছে কি না। এছাড়া মঙ্গলপৃষ্ঠের ঠিক নিচের স্তরেই জলেরর বরফের অস্তিত্বও খুঁজবে কিউরিওসিটি।[8]
শ্বাসরুদ্ধ অবতরণ
সবকিছু পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব নিকাশমতে হলেও মঙ্গলের মাটিতে সফল অবতরণ বিজ্ঞানীদের জন্য ছিল একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ। তাই মঙ্গলের বায়ুমন্ডলে পৌঁছার পর অবতরণের ৭টি মিনিট ছিল তাঁদের কাছে যথেষ্ট উত্তেজনা এবং আতঙ্কের। মঙ্গলপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার উচ্চতায় ঐ মহাকাশযানের দেহ থেকে খুলে যায় বিশালকায় প্যারাশ্যুট৷ আরও কমতে থাকে মহাকাশযানের অবতরণের গতি৷ শেষ ৭ মিনিটে ঘণ্টায় ১৩ হাজার মাইলের নক্ষত্রগতিকে ধীরে ধীরে কমিয়ে একেবারে শূণ্যে কমিয়ে এনে মঙ্গলের বুক ছোঁয় কিউরিওসিটি৷ আতঙ্কের প্রহর কাটিয়ে কিউরিওসিটির সফল অবতরণের পর উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে নাসার জেট প্রোপালশন ল্যাবরেটরি৷[10] একটি ‘স্কাইক্রেনের’ সহায়তায় সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয়ভাবে মঙ্গলপৃষ্ঠে একটি নিখুঁত অবতরণ সম্পন্ন করে রোবটটি। স্কাইক্রেন হচ্ছে রকেট ইঞ্জিনযুক্ত একটি যান যা পতনবেগ কমিয়ে কোনোপ্রকার ক্ষতিসাধন ছাড়াই রোবটটিকে মঙ্গলপৃষ্ঠে নামতে সহায়তা করেছে।[8]
মঙ্গলে কিউরিওসিটির কাজ
মঙ্গলের প্রথম ও দ্বিতীয় দিনে যন্ত্রপাতি পরীক্ষায় সময় কেটেছে কিউরিওসিটির। তৃতীয় দিনে ক্যামেরা চালু করে ছবি তুলে পৃথিবীতে পাঠিয়েছে কিউরিওসিটি। প্রথম দিন মঙ্গলের তেজস্ক্রিয়া মাপতে আর যন্ত্রপাতি ঠিকঠাক কাজ করছে কি না, তা পরীক্ষা করে দেখেতে সময় কেটেছে কিউরিওসিটির। মঙ্গলের দ্বিতীয় দিনে এ পরীক্ষার অংশ হিসেবেই কিউরিওসিটি মাস্তুল খাড়া করেছে। এ মাস্তুলের সঙ্গে লাগানো ক্যামেরা ব্যবহার করে তৃতীয় দিনে মঙ্গলের নিসর্গের রঙিন ছবি তুলেছে কিউরিওসিটি। এ ছবি তুলতে ৩৪ মিলিমিটার ক্যামেরা ব্যবহার করেছে কিউরিওসিটি। চলার পথে পাথর ভেঙে আর মাটি বিশ্লেষণ করে অণুজীবের সন্ধান চালাবে। কিউরিওসিটির মাস্তুলে ৩৪ মিলিমিটার ক্যামেরাটির পাশে রয়েছে আরেকটি ১০০ মিলিমিটার টেলিফটো লেন্সের ক্যামেরা। দুটি ক্যামেরা মিলিয়ে উন্নত মানের ছবি তুলতে পারে। মঙ্গলে কিউরিওসিটির চতুর্থ দিন সফটওয়্যার ও ধুলা বিশ্লেষক যন্ত্রগুলো ঠিকঠাক কাজ করছে কি না, তা পরীক্ষায় পার হবে।[11]
মঙ্গলে মরুভূমি
কিওরিসিটি পৃথিবীর বুকে মঙ্গলপৃষ্ঠের নতুন ছবি পাঠাচ্ছে। মঙ্গলের যে বিশাল গহ্বরে (গেল ক্রেটার) অবতরণ করেছিল কিউরিওসিটি, সেখানকার ছবি পাঠিয়েছে এই মহাকাশযান এবং তাতে ধরা পড়েছে উঁচু-নিচু পাহাড়, মরুভূমির মতো বিস্তৃত রুক্ষ প্রান্তর যা কিনা অনেকটা পৃথিবীর মরুভূমির মতোই মঙ্গলের এই মরুভূমি। নাসার গবেষণাগারে পাঠানো সেই ছবি দেখে বিস্মিত গবেষকরা। বিজ্ঞানীদের একাংশ ক্যালিফোর্নিয়ার মোজাভে মরুভূমির সঙ্গে মিল খুঁজে পেয়েছেন মঙ্গলের মরুভূমির। তবে মিল থাকলেও অমিলও রয়েছে। মঙ্গলের মরুভূমিতে সব সময় তেজস্ক্রিয় বিকিরণ ঘটে থাকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ওই এলাকা এক সময় আরও উত্তপ্ত ছিল। ঠিক কী কারণে এবং কী ভাবে আবহাওয়ার এই পরিবর্তন ঘটল তা নিয়ে গবেষণা চলছে।[12]
মঙ্গলে জলের অস্তিত্ব
মঙ্গলগ্রহে জলের অস্তিত্বের প্রমাণ খুঁজে পেয়েছে কিউরিওসিটি। নাসার তরফে দাবি করা হয়েছে, কিউরিওসিটি মঙ্গলগ্রহের যেখানে অবতরণ করেছে সেই এলাকা দিয়ে একসময় বয়ে যেত জলের ধারা। মঙ্গলের ক্রেটার গহ্বরে অবতরণ করে কিউরিওসিটি। ক্রেটারের উত্তরদিকে মাউন্ট শার্প এলাকায় একটি পাথরের খণ্ডের ছবি পৃথিবীতে পৌঁছনোর পরেই উত্তেজিত হয়ে পড়েছেন নাসার বিজ্ঞানীরা। তাঁদের দাবি, ওই পাথরখণ্ডের আকার ও স্তরবিন্যাস স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে, তার ওপর দিয়ে একসময় জলের ধারা বয়ে যেত। সেই পাথরখণ্ডের ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে নাসার তরফে। প্রাথমিকভাবে বিজ্ঞানীদের অনুমান, হাঁটু গভীরতার জলের ধারা বইত ওই পাথরের ওপর দিয়ে। তবে পাথরটির রাসায়নিক বিশ্লেষণ এখনও করা বাকি। নাসার বিজ্ঞানী জানিয়েছেন, পাথরখণ্ডগুলি আকারে গোলাকার। একটি আকারে বেশ বড়। তাই বাতাসে স্থানচ্যূত হওয়ার আশঙ্কা নেই। যা দেখে বিজ্ঞানীদের সিদ্ধান্ত, এগুলির আকার জলস্রোতের ফলেই এমন হয়েছে।[13]
মঙ্গলে স্রোতবাহিত নুড়ির সন্ধান
কিউরিওসিটি মঙ্গলপৃষ্ঠে প্রাচীন স্রোতবাহিত নুড়ি পাথরের সন্ধান পেয়েছে। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা বলেছে, এক সময় ওই এলাকাটির ওপর দিয়ে প্রবল বেগে বয়ে যাওয়া স্রোতের জলে এসব নুড়ি পাথর ভেসে এসেছে। এর আগেও বিজ্ঞানীরা মঙ্গলে এক সময় জল থাকার অন্য প্রমাণ পেয়েছেন কিন্তু এই প্রথম স্রোতধারার তলদেশের নুড়ি পাথর আবিষ্কৃত হলো। হোট্টাহ নামের শিলাস্তরটিকে নগরীর ফুটপাথ থেকে হাতুড়ি দিয়ে ভেঙে নেয়া স্ল্যাব বলে মনে হয়। আসলে এটি একটি প্রাচীন স্রোতধারার তলদেশের হেলানো টুকরো। কিউরিওসিটি লিঙ্ক নামের অপর একটি শিলাস্তরও পরীক্ষা করে। কিউরিওসিটির পাঠানো বিভিন্ন ছবিতে দেখা যায়, ক্রেটারের উত্তরপ্রান্ত ও মাউন্ট শার্পের পাদদেশের মধ্যবর্তী একটি জায়গায় নুড়ি পাথর জমে প্রস্তুরিভূত শিলাস্তরে পরিণত হয়েছে। নাসা বলেছে, শিলাখণ্ডটির আকার-আকৃতি থেকে বিলুপ্ত জলপ্রবাহের গতিবেগ ও গভীরতা সম্পর্কে ধারণা মিলছে।কিউরিওসিটির বিজ্ঞানীরা বলছেন, আকৃতি দেখে বোঝা যায় এগুলো পরিবাহিত হয়ে এসেছে। আর আকার বলে, এগুলো বায়ুবাহিত হয়ে আসা সম্ভব নয়। এগুলো জলস্রোতবাহিত হয়েই এসেছে। বিজ্ঞানীরা অনুমান করছেন স্রোতধারাটি সেকেন্ডে তিন ফুট বেগে প্রবাহিত হচ্ছিল এবং এটি গোড়ালি থেকে কোমর পর্যন্ত গভীর ছিল। নাসা জানিয়েছে, কিছু কিছু নুড়ি গোলাকৃতির। এ থেকে বোঝা যায় এগুলো অনেক দীর্ঘ পথ পেরিয়ে এসেছে।[14]
মঙ্গলে নতুন পাথরের সন্ধান
রোবটযান কিউরিওসিটি মঙ্গলে এমন পাথর খুঁজে পেয়েছে, যা এর আগে পাওয়া মঙ্গলের পাথরের মতো নয়। বিজ্ঞানীরা এ ঘটনায় অভিভূত। তবে পৃথিবীর দু-একটি স্থানে এ ধরনের পাথরের নমুনা রয়েছে। রাসায়নিক গঠনের দিক দিয়ে এ ক্ষেত্রে উভয়ের মধ্যে যথেষ্ট মিলও রয়েছে। ফুটবলের সমান ওই পাথরটি নাসার জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরির গবেষক জেক মাটিজেভিকের নামানুসারে নামকরণ করা হয়। কিউরিওসিটির লেজারের মাধ্যমে পাথরটি ভেঙে এর রাসায়নিক গঠন জানার চেষ্টা করা হয়। বিজ্ঞানীরা প্রথমে ভেবেছিলেন, পাথরটি মঙ্গলের আর দশটি সাধারণ পাথরের মতোই। তবে পাথরটি ভিন্ন। গবেষকেরা দেখতে পান, হাওয়াই বা সেন্ট হেলেনার মতো সামুদ্রিক দ্বীপগুলো এবং রিও গ্রান্ডির মতো মহাদেশীয় উপত্যকা অঞ্চলে (যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো থেকে মেক্সিকোর চিহুয়াহুয়া পর্যন্ত এই অঞ্চলের বিস্তৃতি) প্রাপ্ত অস্বাভাবিক ধরনের পাথরের সঙ্গে এই পাথরটির যথেষ্ট মিল আছে।নাসার বিজ্ঞানীরা জানান, মঙ্গলের ওই পাথরে ম্যাগনেসিয়াম এবং লৌহ উপাদান নেই। এর আগে নাসার পাঠানো যান স্পিরিট ও অপারচুনিটির মাধ্যমে মঙ্গলের যেসব আগ্নেয়শিলার পাথর পরীক্ষা করা হয়েছিল, সেগুলোতেও ওই দুটি উপাদানই ছিল। কানাডাভিত্তিক কিউরিওসিটির গবেষক এবং কানাডার অন্টারিও প্রদেশের ইউনিভার্সিটি অব গুয়েলফের শিক্ষক রালফ গেলার্ট বলেছেন, এটা আগ্নেয়শিলায় তৈরি, যা গলিত পদার্থ জমে তৈরি হয়। তবে এ পর্যন্ত মঙ্গলে যেসব পাথর পরীক্ষা করা হয়েছে, তার চেয়ে এটা আলাদা। এটা নতুন ধরনের শিলাখণ্ড। পাথরটিতে ‘ফেল্ডস্পার’-এর মতো খনিজ পদার্থ রয়েছে। বিজ্ঞানীরা পৃথিবী সৃষ্টির প্রথম অবস্থার মতো ওই লালগ্রহেও একই অবস্থায় বিশেষ ওই পাথর গঠনের আভাস পাচ্ছেন। জ্বলন্ত অবস্থা থেকে ক্রমান্বয়ে তাপ বিকিরণ করে পৃথিবীর উপরিভাগ শীতল ও কঠিন হয়েছে। এভাবে গলিত অবস্থা থেকে কঠিন হয়ে গঠিত হয় আগ্নেয় শিলা। পৃথিবীর অভ্যন্তরে গলিত ম্যাগমা ঘন ও ঠান্ডা হয়ে যেভাবে ক্রিস্টালে পরিণত হয়েছে সেভাবেই তৈরি হয়েছে মঙ্গলের ওই নতুন পাথর। কিউরিওসিটি এখন মঙ্গলের মাটি (সয়েল স্কুপ) পরীক্ষার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। মূলত, বিজ্ঞানীরা এখন রোবটযানটির গবেষণাগারে মাটির নমুনা নিয়ে সেখানকার রাসায়নিক গঠন আরও নিবিড়ভাবে বিশ্লেষণ করতে চাইছেন। যানটি বর্তমানে এর প্রথম বৈজ্ঞানিক গন্তব্য গ্লেনেগ্লের দিকে যাচ্ছে। ওই এলাকায় রয়েছে পৃথক তিন ধরনের শিলা।[15][16][17]
ছবি
Videos | |||||||||
|
Rover | |||||||||
|
Images taken by Curiosity | ||||||||||||||||||||||||
|
Aerial | ||||||||||||||||||||
|
- Wide images



তথ্যসূত্র
- "Curiosity: NASA's Next Mars Rover"। NASA। আগস্ট ৬, ২০১২। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ৬, ২০১২।
- Beutel, Allard (নভেম্বর ১৯, ২০১১)। "NASA's Mars Science Laboratory Launch Rescheduled for Nov. 26"। NASA। সংগ্রহের তারিখ নভেম্বর ২১, ২০১১।
- Martin, Paul K. (জুন ৮, ২০১১)। "NASA'S MANAGEMENT OF THE MARS SCIENCE LABORATORY PROJECT (IG-11-019)" (PDF)। NASA Office of Inspector General। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ৬, ২০১২।
- Rover Fast Facts
- "MSL Sol 3 Update"। NASA Television। আগস্ট ৮, ২০১২। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ৯, ২০১২।
- Brown, Dwayne; Cole, Steve; Webster, Guy; Agle, D.C. (আগস্ট ২২, ২০১২)। "NASA Mars Rover Begins Driving at [[Bradbury Landing]]"। NASA। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ২২, ২০১২। ইউআরএল–উইকিসংযোগ দ্বন্দ্ব (সাহায্য)
- ছবি পাঠাচ্ছে কিউরিওসিটি,এএফপি, দৈনিক প্রথম আলো। ঢাকা থেকে প্রকাশের তারিখ: ০৮-০৮-২০১২ খ্রিস্টাব্দ।
- মঙ্গল সম্পর্কে কী জানাবে কিউরিওসিটি? ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩০ আগস্ট ২০১৪ তারিখে,জাহাঙ্গীর আলম, আহ্সান কবীর, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম। ঢাকা থেকে প্রকাশের তারিখ: ০৮-০৮-২০১২ খ্রিস্টাব্দ।
- মঙ্গলগ্রহে নেমেছে রোবট-যান কিউরিওসিটি,। ঢাকা থেকে প্রকাশের তারিখ: ০৬-০৮-২০১২ খ্রিস্টাব্দ।
- মঙ্গলে সফল অবতরণ ‘কিউরিওসিটি’র ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০১২-০৮-০৯ তারিখে,ব্যুরো রিপোর্ট,এবিপি আনন্দ। প্রকাশের তারিখ: ০৬-০৮-২০১২ খ্রিস্টাব্দ।
- মঙ্গলের ছবি পাঠাচ্ছে কিউরিওসিটি, দৈনিক প্রথম আলো। ঢাকা থেকে প্রকাশের তারিখ: ১০-০৮-২০১২ খ্রিস্টাব্দ।
- মঙ্গলে মরুভূমি:সৌজন্যে কিউরিওসিটি ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০১২-০৮-১৪ তারিখে,ব্যুরো রিপোর্ট,এবিপি আনন্দ। প্রকাশের তারিখ: ১০-০৮-২০১২ খ্রিস্টাব্দ।
- পাথর দেখে মঙ্গলে জলের ধারা আবিষ্কার করল কিউরিওসিটি। প্রকাশের তারিখ: ২৮-০৯-২০১২ খ্রিস্টাব্দ।
- মঙ্গলে প্রবল স্রোতবাহিত নুড়ির সন্ধান পেয়েছে কিউরিওসিটি,এএফপি, দৈনিক নয়া দিগন্ত। প্রকাশের তারিখ: ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১২ খ্রিস্টাব্দ।
- মঙ্গলে নতুন ধরনের পাথর,রয়টার্স ও এএফপি, দৈনিক প্রথম আলো। ঢাকা থেকে প্রকাশের তারিখ: ১৩-১০-২০১২ খ্রিস্টাব্দ।
- মঙ্গলে নতুন ধরনের পাথরের সন্ধান ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৪ অক্টোবর ২০১২ তারিখে, বিডিনিউজ২৪.কম। প্রকাশের তারিখ: ১২-১০-২০১২ খ্রিস্টাব্দ।
- মঙ্গলে নতুন ধরনের পাথরের সন্ধান ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০১৪-০৮-৩০ তারিখে, দৈনিক আজাদী। প্রকাশের তারিখ: ১৪-১০-২০১২ খ্রিস্টাব্দ।
- Williams, John (আগস্ট ১৫, ২০১২)। "A 360-degree 'street view' from Mars"। PhysOrg। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ১৬, ২০১২।
- Bodrov, Andrew (সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১২)। "Mars Panorama - Curiosity rover: Martian solar day 2"। 360Cities। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১২।
- Brown, Dwayne; Cole, Steve; Webster, Guy; Agle, D.C. (সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১২)। "NASA Rover Finds Old Streambed On Martian Surface"। NASA। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১২।
- NASA (সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১২)। "NASA's Curiosity Rover Finds Old Streambed on Mars - video (51:40)"। NASAtelevision। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১২।
- Chang, Alicia (সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১২)। "Mars rover Curiosity finds signs of ancient stream"। AP News। মে ১৬, ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১২।