কাজী আবদুল বাসেত

কাজী আবদুল বাসেত (৪ ডিসেম্বর, ১৯৩৫ - ২৩ মে, ২০০২) ছিলেন একজন বাংলাদেশী চিত্রশিল্পী এবং চারুকলা বিষয়ের শিক্ষক। তিনি মূর্ত ও বিমূর্ত দু-ধারায়ই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেছেন। তিনি তার নিরীক্ষামূলক "ফিশ ওম্যান" শীর্ষক চিত্রকর্মের জন্য প্রসিদ্ধ। চারুকলায় অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ১৯৯১ সালে একুশে পদকে ভূষিত করে।[1]

কাজী আবদুল বাসেত
জন্ম(১৯৩৫-১২-০৪)৪ ডিসেম্বর ১৯৩৫
মৃত্যু২৩ মে ২০০২(2002-05-23) (বয়স ৬৬)
ঢাকা, বাংলাদেশ
জাতীয়তাবাংলাদেশী
শিক্ষাচারুকলা
যেখানের শিক্ষার্থীসরকারি আর্ট ইনস্টিটিউট
পেশাচিত্রশিল্পী
পিতা-মাতাআবদুল জলিল (পিতা)
নূরজাহান বেগম (মাতা)
পুরস্কারএকুশে পদক

প্রারম্ভিক জীবন

বাসেত ১৯৩৫ সালের ৪ ডিসেম্বর তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আবদুল জলিল এবং মাতা নূরজাহান বেগম। তার পৈতৃক বাড়ি মুন্সিগঞ্জ জেলার রামপাল গ্রামে। বাসেত ১৯৫১ সালে ঢাকার সরকারি মুসলিম হাইস্কুল থেকে প্রবেশিকা পাস করেন। ১৯৫৬ সালে তিনি ঢাকার সরকারি আর্ট ইনস্টিটিউট থেকে চারুকলা বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।[1]

কর্মজীবন

কর্মজীবনের শুরুতে বাসেত ১৯৫৬ সালে ঢাকার নবাবপুর সরকারি হাইস্কুলে ড্রয়িং-শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। পরের বছর ১৯৫৭ সালে তিনি তার নিজের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা সরকারি আর্ট ইনস্টিটিউটে লেকচারার পদে যোগদান করেন। এই ইনস্টিটিউটে শিক্ষাদানকালে ১৯৬৩-৬৪ সালে তিনি ফুলব্রাইট ফেলোশিপ লাভ করেন এবং চিত্রশিল্পে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্ট ইনস্টিটিউট পড়তে যান। ১৯৬৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরে এসে ড্রয়িং ও পেইন্টিং বিভাগের প্রধান হিসেবে যোগ দেন।[2] ১৯৯৫ সালে তিনি এই প্রতিষ্ঠান থেকে অবসরে যান।[1]

চিত্রকর্ম

বাসেত যুক্তরাষ্ট্রে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন বিমূর্ত প্রকাশবাদী ধারায় প্রভাবিত হন। সেখানে তিনি পল উইগার্ড, হ্যান্স হফম্যান এবং বাবভিক্টকে তার শিক্ষক হিসেবে পেয়েছিলেন।[1] দেশে ফিরে এসে তিনি বিমূর্ত প্রকাশবাদী ধারার বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। ১৯৮৪ পরবর্তী সময়ে তিনি বাস্তবধর্মী চিত্র রচনায়ও মনোযোগ দেন। নারী-প্রতিকৃতি, বিশেষ করে, নারীর মাতৃরূপ অঙ্কনে তার বিশেষ আগ্রহ ছিল। তিনি প্যাস্টেল রঙে যুদ্ধ শেষে প্রিয় সন্তানের জন্য অপেক্ষা করে আছেন মা এবং প্রিয় স্বামীর জন্য অপেক্ষা করে আছেন স্ত্রী এ ধরনের কিছু কাজ করেন।[2] তার একটি উল্লেখযোগ্য নিরীক্ষাধর্মী চিত্রকর্ম হল "ফিশ ওম্যান"।[3]

মৃত্যু

বাসেত ২০০২ সালের ২৩ মে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।[2]

সম্মাননা

বাসেত ১৯৫৪ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত নিখিল পাকিস্তান চারুকলা প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করে পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৫৭ সালে করাচীতে অনুষ্ঠিত পাকিস্তান জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনী থেকে দ্বিতীয় পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৮২ সালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, ১৯৮৭ সালে শ্রীজ্ঞান অতীশ দীপঙ্কর স্বর্ণ পদক, ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ চারুকলা সংসদ পুরস্কার লাভ করেন। চারুকলায় সামগ্রিক অবদানের জন্য ১৯৯১ সালে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জাতীয় সম্মাননা একুশে পদক লাভ করেন।[1]

তথ্যসূত্র

  1. হক, সৈয়দ আজিজুল (২০১২)। "বাসেত, কাজী আবদুল"। ইসলাম, সিরাজুল; হক, সৈয়দ আজিজুল। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি
  2. "প্রচ্ছদ-পরিচিতি"কালি ও কলম। সংগ্রহের তারিখ ৬ আগস্ট ২০১৭
  3. গুলশান, জাফরিন (১৩ জুলাই ২০১২)। "গ্যালারি বাসিলিও - ইন্দো-বাংলা চিত্রপ্রদর্শনী"দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ৬ আগস্ট ২০১৭

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.