কনস্ট্যান্টিন (চলচ্চিত্র)
কনস্ট্যান্টিন ২০০৫ সালের মার্কিন-জার্মান গুঢ় রহস্য অ্যাকশন চলচ্চিত্র। ডিসি কমিকস-এর হেলব্লেজার গ্রাফিক উপন্যাসের ডেঞ্জারাস হ্যাবিটস ও অরিজিনাল সিন্স গল্পাংশ অবলম্বনে নির্মিত চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন ফ্রান্সিস লরেন্স। এটি তার পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র। ছবিটির চিত্রনাট্য লিখেছেন কেভিন ব্রডবিন এবং ফ্রাঙ্ক কাপেলো। এতে অভিনয় করেছেন কিয়ানু রিভস, র্যাচেল ভাইস, শেই লাবফ, টিল্ডা সুইন্টন, প্রুইট টেইলর ভিন্স, জিমন হৌন্সৌ প্রমুখ।
কনস্ট্যান্টিন | |
---|---|
![]() | |
পরিচালক | ফ্রান্সিস লরেন্স |
প্রযোজক |
|
চিত্রনাট্যকার |
|
কাহিনীকার | কেভিন ব্রডবিন |
উৎস | ডিসি কমিকস-এর হেলব্লেইজার গ্রাফিক উপন্যাসের চরিত্র অবলম্বনে |
শ্রেষ্ঠাংশে |
|
সুরকার |
|
চিত্রগ্রাহক | ফিলিপ রুসলো |
সম্পাদক | ওয়েইন ওয়ারম্যান |
পরিবেশক | ওয়ার্নার ব্রাদার্স পিকচার্স |
মুক্তি |
|
দৈর্ঘ্য | ১২০ মিনিট[1] |
দেশ |
|
ভাষা | ইংরেজি |
নির্মাণব্যয় | $১০০ মিলিয়ন[2] |
আয় | $২৩০.৯ মিলিয়ন[2] |
কনস্ট্যান্টিন হংকংয়ে ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০০৫; জার্মানিতে ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০০৫ এবং যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০০৫ মুক্তি পায়। ছবিটি মিশ্র সমালোচনা অর্জন করে এবং ব্যবসায়িকভাবে সফলতা লাভ করে। $১০০ মিলিয়ন বাজেটের ছবিটি সারা বিশ্বে $২৩০.৯ মিলিয়ন আয় করে।[2]
কাহিনী সংক্ষেপ
জন কনস্ট্যান্টিন একটি মেয়ের শরীর থেকে অশরীরী তাড়ানোর পর জানতে পারে যে একজন সৈনিকের আত্মা পৃথিবীতে আসতে চাচ্ছে। কিন্তু সে যে করেই হোক তাকে আটকানোর ফন্দি খুঁজছে। সে তার পুরনো বন্ধু বীম্যানের কাছে যায়। বীম্যান বিভিন্ন ধরনের প্রেতাত্মা সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে গবেষণা করে।
ইতিমধ্যে গোয়েন্দা অ্যাঞ্জেলা ডডসনের বোন ইসাবেলা হাসপাতালের ছাদ থেকে লাফিয়ে পরে আত্মহত্যা করে। ইসাবেলা খুবই ধার্মিক ক্যাথলিক ছিল। ফলে সে আত্মহত্যা করতে পারে অ্যাঞ্জেলা তা মানতে নারাজ। অ্যাঞ্জেলা কনস্ট্যান্টিনের কাছে এই ব্যাপারে সাহায্য চায়। কনস্ট্যান্টিন তাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসে। এসময়ে তাকে দেবদূত ও শয়তানদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়।
কুশীলব
- কিয়ানু রিভস - জন কনস্ট্যান্টিন, একজন ধূমপায়ী নীরসপ্রকৃতির মানুষ, যে অর্ধ-দেবদূত ও অর্ধ-শয়তানের উপস্থিতি টের পায়।
- র্যাচেল ভাইস - অ্যাঞ্জেলা ডডসন/ ইসাবেলা ডডসন, লস অ্যাঞ্জেলেস পুলিশ ডিপার্টমেন্টের গোয়েন্দা/তার আত্মহননকারী বোন।
- শেই লাবফ - চাস ক্রেমার, জন কনস্ট্যান্টিনের গাড়ি চালক ও শিষ্য।
- টিল্ডা সুইন্টন - গ্যাব্রিয়েল, দেবদূত
- প্রুইট টেইলর ভিন্স - ফাদার হেনেসি, অনিদ্রা রোগাক্রান্ত ও মদ্যপ যাজক।
- জিমন হৌন্সৌ - পাপা মিডনাইট
- গ্যাভিন রসডেল - বালথাজার, অর্ধ-শয়তান
- পিটার স্টরমার - লুসিফার মর্নিংস্টার
- ম্যাক্স বেকার - বীম্যান, জন কনস্ট্যান্টিনের বন্ধু
নির্মাণ
প্রযোজক লরেন শুলার ডনার ১৯৯৭ সালে এই চলচ্চিত্রটি নির্মাণের কথা ভাবেন।[3] ১৯৯৯ সালে পল হান্টারকে পরিচালক হিসেবে ভাবা হয়,[4] এবং পরে ২০০১ সালে তারসেম সিংকে।[5] ওয়ার্নার ব্রস. আশা করেছিল সিং ২০০২ সালের মধ্যে নির্মাণের কাজ শুরু করতে পারবে এবং মূল চরিত্রে অভিনয় করবেন নিকোলাস কেজ।[6] কিন্তু তারসেম সিং ও ওয়ার্নার ব্রসের মধ্যে একটি আইনি ঝামেলার কারণে সিংকে বাদ দেওয়া হয় এবং পাশাপাশি কিয়ানু রিভসকে মূল চরিত্রের জন্য নির্বাচন করা হয়।[7]
সঙ্গীত
কনস্ট্যান্টিন: চলচ্চিত্রের মৌলীক সঙ্গীত | |
---|---|
ব্রায়ান টাইলার ও ক্লস বাডেল্ট কর্তৃক অ্যালবাম | |
মুক্তির তারিখ | ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০০৫ |
শব্দধারণের সময় | ২০০৪ |
ঘরানা | চলচ্চিত্রের গান চলচ্চিত্রের সঙ্গীত |
দৈর্ঘ্য | ৫১:৪৭ |
সঙ্গীত প্রকাশনী | ভারেস সারাবান্দে |
পেশাদারী মূল্যায়ন | |
---|---|
পর্যালোচনা স্কোর | |
উৎস | মূল্যায়ন |
অলমিউজিক | ![]() ![]() ![]() ![]() ![]() |
কনস্ট্যান্টিন চলচ্চিত্রের সঙ্গীতের সুর করেছেন ব্রায়ান টাইলার ও ক্লস বাডেল্ট। দ্য হলিউড স্টুডিও সিম্ফনি ও দ্য হলিউড ফিল্ম চোরালে সঙ্গীত ধারণ করা হয়।
নং. | শিরোনাম | দৈর্ঘ্য |
---|---|---|
১. | "ডেস্টিনি" | ২:০০ |
২. | "দ্য ক্রস ওভার" | ২:৪২ |
৩. | "মিট জন কনস্ট্যান্টিন" | ২:৩৯ |
৪. | "কনফেসন" | ২:৩২ |
৫. | "দিও এত পাত্রি" | ১:১৬ |
৬. | "কাউন্টারওয়েট" | ২:৪৭ |
৭. | "ইনটু দ্য লাইট" | ২:৫৪ |
৮. | "আই লেফট হার অ্যালোন" | ১:৪০ |
৯. | "রিসারেকশন" | ২:০৪ |
১০. | "সার্কেল অফ হেল" | ৫:৩৮ |
১১. | "লাস্ট রাইটস" | ১:৫৫ |
১২. | "এনকাউন্টারিং অ্যা টুইন" | ১:০৬ |
১৩. | "ফাইট টু রেভেন্সকার" | ০:৫২ |
১৪. | "হিউম্যানিটি" | ২:৫৮ |
১৫. | "জন" | ১:৩১ |
১৬. | "সামওয়ান ওয়াজ হিয়ার" | ১:৪৪ |
১৭. | "হেল ফ্রিওয়ে" | ২:৪৩ |
১৮. | "ইথার সার্ফিং" | ১:১৩ |
১৯. | "দ্য ব্যালেন্স" | ২:২৬ |
২০. | "অ্যাবসেন্ট ল্যান্ডলর্ডস" | ১:৩৫ |
২১. | "জন্স সলিটিউড" | ১:২৫ |
২২. | "লুসিফার" | ১:৫৬ |
২৩. | "রুফটপ" | ১:১৮ |
২৪. | "কনস্ট্যান্টিন (শেষ নাম)" | ২:৩৯ |
মোট দৈর্ঘ্য: | ৫১:৪৭ |
মুক্তি
চলচ্চিত্রটি ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০০৪ মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল কিন্তু পরে মুক্তির তারিখ পিছানো হয়।[9]
হোম মিডিয়া
ওয়ার্নার হোম ভিডিও ঘোষণা দিয়েছিল ছবিটি ২০০৬ সালের ২৮ মার্চ এইচডি ডিভিডি ফরম্যাটে মুক্তি দেওয়া হবে।[10] এই মিডিয়া ফরম্যাটে কনস্ট্যান্টিনই হত প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র। কিন্তু মুক্তি পেতে বিলম্ব হওয়ার কারণে ছবিটি ২০০৬ সালের ৬ জুন এইচডি ডিভিডি ফরম্যাটে মুক্তি পায়। ওয়ার্নার হোম ভিডিও ছবিটির ব্লু-রে ডিস্ক মুক্তি দেয় ২০০৮ সালের ১৪ অক্টোবর।
মূল্যায়ন
বক্স অফিস
কনস্ট্যান্টিন ৩,০০৬টি প্রেক্ষাগৃহে ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০০৫ মুক্তি পায় এবং প্রথম সপ্তাহে $২৯,৭৬৯,০৯৮ আয় করে হিচের দ্বিতীয় সপ্তাহের আয়ের পরের দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করে।[11] ছবিটি ১৬ জুন, ২০০৫ সালে প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শন বন্ধ হয় এবং বক্স অফিস বোম্ব হিসেবে সারাদেশে $৭৫,৯৭৬,১৭৮ ও দেশের বাইরে $১৫৪,৯০৮,৫৫০ আয় করে এবং সারা বিশ্বে মোট $২৩০,৮৮৪,৭২৮ আয় করে।[2]
সমালোচকদের প্রতিক্রিয়া
চলচ্চিত্রটি মিশ্র পর্যালোচনা অর্জন করে। রটেন টম্যাটোস-এ ছবিটি ২১৭ জন সমালোচকের রায়ে ৫.৫/১০ গড়ে স্বাভাবিক রেটিং ৪৬% লাভ করে। ওয়েবসাইটটিতে বলে হয়, কনস্ট্যান্টিন দ্য ম্যাট্রিক্সের মত ফোকাসের অভাব ছিল।[12] মেটাক্রিটিক-এ ছবিটি ৪১টি পর্যালোচনার ভিত্তিতে ১০০-এ ৫০ রেটিং লাভ করে।[13]
চলচ্চিত্র সমালোচক রজার ইবার্ট ছবিটিকে ৪-এ ১.৫ প্রদান করেন,[14] এবং নরকের চিত্রায়ন, কাহিনীর অসামঞ্জস্যতা, পুরো চলচ্চিত্রে মারপিঠের ধরন এবং সর্বোপরি কিয়ানু রিভসের অভিনয়ের তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি এই ছবিটিকে তার সবচেয়ে জঘন্য চলচ্চিত্রের তালিকায় যুক্ত করেন।[15]
উপন্যাস ও ভিডিও গেম
চলচ্চিত্রটি মুক্তি পাওয়ার পর জন শির্লে এই চলচ্চিত্র অবলম্বনে একটি উপন্যাস রচনা করেন এবং ভিডিও গেম তৈরি করা হয়।
উপন্যাসে বর্ণিত রয়েছে, নরক মর্টারের পরিবর্তে রক্ত এবং ইটের পরিবর্তে অভিশপ্ত আত্মা দিয়ে তৈরি।[16]
অনুবর্তী পর্ব
২০১১ সালে এমটিভি স্প্ল্যাশ পেইজে এক সাক্ষাৎকারে পরিচালক ফ্রান্সিস লরেন্স এই ছবির একটি দ্বিতীয় পর্ব বা সিকুয়েল তৈরির সম্ভাবনার কথা বলেন।[17]
২০১২ সালের নভেম্বরে গিয়ের্মো দেল তোরো ও ওয়ার্নার ব্রস. ডিসি কমিকসের অতিপ্রাকৃত চরিত্রসমূহ নিয়ে, যার মধ্যে জন কনস্ট্যান্টিন চরিত্রটিও রয়েছে, একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করার কথা ভাবেন। কিন্তু এটি নিশ্চিত করে বলা হয় নি যে ছবিটি ২০০৫ সালের চলচ্চিত্রের সাথে সম্পর্কিত বা কিয়ানু রিভস তার ভূমিকায় অভিনয় করবেন কিনা।[18]
তথ্যসূত্র
- "CONSTANTINE (15)"। ব্রিটিশ বোর্ড অব ফিল্ম ক্ল্যাসিফিকেশন। জানুয়ারি ৩১, ২০০৫। সংগ্রহের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
- "Constantine (2005)"। বক্স অফিস মোজো। ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজ। জুন ১৭, ২০০৫। সংগ্রহের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
- Hindes, Andrew (১৯৯৭-১০-০৯)। "Aguilar upped to prod'n exec"। Variety। সংগ্রহের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
- Archerd, Army (১৯৯৯-০৭-০১)। "Callner goes from TV specs to film"। Variety। সংগ্রহের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
- Fleming, Michael (২০০১-০৫-১৪)। "Donners shoot for Winchester"। Variety। সংগ্রহের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
- Fleming, Michael (২০০১-১২-০৫)। "DreamWorks logs Logan as Lincoln scribe"। Variety। সংগ্রহের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
- Harris, Dana (২০০২-০৬-৩০)। "WB: fewer pix, more punch"। Variety। সংগ্রহের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
- Monger, James Christopher. অলমিউজিকে কনস্ট্যান্টিন (চলচ্চিত্র)। সংগৃহীত 2011-12-30।
- D'Alessandro, Anthony (২০০৩-০৭-১৬)। "Comics in development"। Variety। সংগ্রহের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
- Business Wire (2006-01-05). "Warner Home Video Announces Titles and Release Dates for HD DVD". Yahoo! ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০ ফেব্রুয়ারি ২০০৬ তারিখে
- "Weekend Box Office Results for February 18-20, 2005"। বক্স অফিস মোজো। ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজ। ফেব্রুয়ারি ২১, ২০০৫। সংগ্রহের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
- "Constantine"। রটেন টম্যাটোস। Flixster। সংগ্রহের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
- "Constantine Reviews, Ratings, Credits"। মেটাক্রিটিক। CBS Interactive। ২০০৫-০২-১৮। সংগ্রহের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
- Ebert, Roger (২০০৫-০২-১৮)। "Constantine :: rogerebert.com :: Reviews"। শিকাগো সান-টাইমস। সংগ্রহের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
- Roger Ebert। "Ebert's Most Hated"। সংগ্রহের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
- Shirley, John (২০০৫-০১-২৫)। Constantine (Mass Market Paperback)। Pocket Star। আইএসবিএন 0-7434-9755-4।
- Marshall, Rick (মে ৩, ২০১১)। "'Constantine' Director Hoping To Make 'Hard-R, Scary' Sequel"। SplashPage.MTV.com। MTV। সংগ্রহের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
- Melrose, Kevin (নভেম্বর ৯, ২০১২)। "Del Toro Says He's 'Discussing' Justice League Dark-Style Movie"। ComicBookResources.com। সংগ্রহের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
বহিঃসংযোগ
- প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট
- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে কনস্ট্যান্টিন
(ইংরেজি) - বক্স অফিস মোজোতে কনস্ট্যান্টিন (ইংরেজি)
- রটেন টম্যাটোসে কনস্ট্যান্টিন (ইংরেজি)
- মেটাক্রিটিকে কনস্ট্যান্টিন (ইংরেজি)
টেমপ্লেট:ডিসি কমিকস চলচ্চিত্র টেমপ্লেট:ফ্রান্সিস লরেন্স টেমপ্লেট:হেলব্লেজার টেমপ্লেট:অ্যালান মুর