ওয়াইল্ড থিংস

ওয়াইল্ড থিংস ১৯৯৮ সালে নির্মিত একটি ইরোটিক থ্রিলার চলচ্চিত্র। এই ছবিতে মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেন ম্যাট ডিলন, কেভিন বেকন, ডেনিস রিচার্ডস, নেভ ক্যাম্পবেলবিল মারে। ছবিটি পরিচালনা করেন জন ম্যাকনটন। কোনো কোনো দেশে এই ছবিটি সেক্স ক্রাইমস নামে মুক্তি পায়। ২০০৪ সালে এই ছবিটির একটি সেন্সর না করা ডিভিডি মুক্তি পায় যার ফলে ছবির দৈর্ঘ্য সাত মিনিট বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়।

ওয়াইল্ড থিংস
পোস্টার
পরিচালকজন ম্যাকনটন
প্রযোজককেভিন বেকন (কার্যনির্বাহী প্রযোজক)
স্টিভেন ব্রাউন (লাইন প্রযোজক)
স্টিভেন এ জোনস
রডনে লাইবার
রচয়িতাস্টিফেন পিটারস
শ্রেষ্ঠাংশেম্যাট ডিলন
কেভিন বেকন
ডেনিস রিচার্ডস
নেভ ক্যাম্পবেল
বিল মারে
সুরকারজর্জ এস ক্লিনটন
পরিবেশককলম্বিয়া পিকচার্স
মুক্তি২০ মার্চ ১৯৯৮
দৈর্ঘ্য১০৮ মিনিট
ভাষাইংরেজি
নির্মাণব্যয়২০,০০০,০০০ ডলার (আনুমানিক)

কাহিনি-সংক্ষেপ

দুই ছাত্রী – ধনী ও জনপ্রিয় কেলি ভ্যান রায়ান (ডেনিস রিচার্ডস) ও গথ ট্রেইলার নিবাসী সুজি টোলার (নেভ ক্যাম্পবেল) হাইস্কুল গাইডেন্স কাউন্সিলর স্যাম লম্বার্ডোর (ম্যাট ডিলান) বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনে। স্যাম কেনেথ বওডেন (বিল মারে) নামে এক আইনজ্ঞকে নিয়োগ করে। বিচার চলাকালীন বওডেন সুজিকে একথা প্রকাশ করতে বাধ্য করে যে স্যাম তাকে ধর্ষণ করেনি। বরং কেলি এই সমস্ত ঘটনাটির গল্প ফেঁদেছিল। কারণ কেলি স্যামকে ভালবাসত; কিন্তু স্যাম কেলির মায়ের সঙ্গে যৌনসংগম করায় সে তার উপর রেগে যায়। এই বিচারের ফলে ভ্যান রায়ান ও তার পরিবারকে অসম্মানজনক অবস্থায় পড়তে হয়। মামলায় স্যাম ও বওডেন ৮.৫ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ পায়। এই টাকা তারা দু’জনে ভাগ করে নেয়। স্যাম তাঁর অংশ নিয়ে কাজ থেকে অবসর নেয়। বাস্তবে প্রকাশিত হয় যে, স্যাম, সুজি আর কেলি তিনজনে মিলে ৮.৫ মিলিয়ন ডলার হাতানোর জন্য এই সমস্ত ঘটনার পরিকল্পনা করেছিল।

পুলিশ সার্জেন্ট রে ডুকেটের (কেভিন বেকন) সন্দেহ হয়। সুজি তাতে অত্যন্ত ঘাবড়ে যায়। স্যামের ভয় হয় যে সে তাদের পুরো প্ল্যানটাকে দুর্বল করে দেবে। কেলি আর সুজির মধ্যে হাতাহাতি হয়। প্রথমে কেলি সুজিকে প্রায় ডুবিয়ে দেয়। পরে পুলের ধারে তাদের ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখা যায়। স্যাম আর কেলি সুজিকে সমুদ্রের ধারে নিয়ে যায়। সেখানে স্যাম ভাঙা মদের বোতল দিয়ে সুজিকে হত্যা করে। পুলিশ নিখোঁজ সুজির সন্ধানে তদন্তে নেমে সমুদ্রের ধারে তার রক্ত আর দাঁত দেখতে পায়। রে আবিষ্কার করে যে স্যামই হল সুজির হত্যাকারী। সে কেলিকে স্যামের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য কেলির বাড়িতে যায়। যদিও কেলি রে’র ব্যাপারে সন্দিগ্ধই রয়ে যায়। কেলি ও রে’র মধ্যে ঝগড়া হলে একে অপরকে গুলি করে বসে। কেলি মারা যায়। রে কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট করে যে কেলিই প্রথমে তাকে গুলি করেছিল, সে শুধু আত্মরক্ষার খাতিরে পাল্টা গুলি চালায়। এই ঘটনার পর রে-কে পুলিশের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। স্যাম এই সময় একটি ট্রপিক্যাল রিসর্টে সময় কাটাচ্ছিল। সে তার কামরায় গিয়ে সেখানে স্যামকে আবিষ্কার করে – জানা যায়, দু’জনে একসঙ্গে কাজ করছিল।

পরে স্যাম ও রে বোটে চড়ে সমুদ্রে ঘুরতে বের হয়। স্যাম রে’কে জলে ফেলে দেয়। রে বোটে উঠে দেখে সুজিকে। সে বেঁচে ছিল; শুধু তখন তার সোনালি চুল আর হাতে স্পেয়ারগান। রে স্যামের থেকে সাহায্য প্রার্থনা করে। কিন্তু স্যাম জবাব দেয়, “কেলিকে খুন করে তুমি ঠিক করোনি।” সুজি গুলি চালিয়ে তাকে হত্যা করে। রে জলে পড়ে যায়। স্যাম এবার বিশ্রাম নেয়। সুজি তাকে বিষ-মেশানো পানীয় খাইয়ে অজ্ঞান করে জলে ফেলে দেয়। তারপর একাই বোট চালিয়ে তীরে ফিরে আসে।

এরপর একগুচ্ছ ফ্ল্যাশব্যাকের মাধ্যমে প্রকৃত কাহিনিটি প্রকাশিত হয়। সুজি মামলার পুরো টাকা পাওয়ার জন্য সমগ্র ঘটনাটির পরিকল্পনা করেছিল। যাতে তার ধনী সৎ বোন সান্দ্রা ভ্যান রায়ানের (কেলির মা) উপর শোধ তোলা যায়। কারণ তাদের বাবা তাকে অসম্মান করে ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। রে সুজির বন্ধু ডেভিকে খুন করেছিল। তাই সুজি রে’কে খুন করে শোধ তোলে। সে পুরো প্ল্যানটাকে নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু এমনভাবে করে যাতে মনে হয় স্যাম এই পরিকল্পনার পিছনে মূল মস্তিস্ক। এমনকি সে তার নকল মৃত্যুপটটিকেও সাজিয়ে তোলে। সুজির অপরাধপ্রবণতা ও নিম্নবিত্ত পটভূমির কারণে তাকে ধর্তব্যের মধ্যে আনা হতো না। যারা তাকে চিনত তারা বলত, তার আইকিউ ২০০-এর কাছাকাছি; এবং সে কথা মনে রাখলে সে “যে কোনো কাজই করতে পারে”। কেলির মৃত্যুর সময় রে’ই তাকে আগে গুলি করে। পরে রে নিজের হাতে গুলি চালায়, যাতে প্রমাণিত হয় যে সে প্রথমে আক্রান্ত হয়েছিল।

শেষ দৃশ্যে দেখা যায় বওডেন এক ট্রপিক্যাল রিসর্টে সুজির সঙ্গে দেখা করে টাকার সিংহভাগ তার হাতে তুলে দিচ্ছে। শুধু সে তার ‘সাধারণ পারিশ্রমিক’টি তার থেকে কেটে নেয়। যাবার সময় সে সুজিকে “ভাল হতে” বলে।

অভিনয়

  • ম্যাট ডিলন - স্যাম লম্বার্ডো
  • কেভিন বেকন - সার্জেন্ট রে ডুকেট
  • নেভ ক্যাম্পবেল – সুজি মারি টোলার
  • থেরেসা রাসেল – সান্দ্রা ভ্যান রায়ান
  • ডেনিস রিচার্ডস – কেলি ল্যানিয়ার ভ্যান রায়ান
  • ড্যাফনে রুবিন-ভেগা – ডিটেকটিভ গ্লোরিয়া পেরেজ
  • রবার্ট ওয়াগনার – টম ব্যাক্সটার
  • বিল মারে – কেনেথ বওডেন

চলচ্চিত্রায়ণের স্থান

প্রায় সমস্ত হাইস্কুল দৃশ্য ও অনেকগুলি পুল দৃশ্যের শ্যুটিং হয় ফ্লোরিডার কোকোনাট গ্রোভের রানসম এভারগ্লেড স্কুলে।

সম্পর্কিত চলচ্চিত্রসমূহ

২০০৪ সালে নির্মিত এই ছবির সিকোয়েল ওয়াইল্ড থিংস ২আদৌ সিনেমাহলে মুক্তি পায়নি। এটি ভিডিও আকারে প্রকাশিত হয়। ২০০৫ সালে নির্মিত এই সিকোয়েলে তৃতীয় ছবি ওয়াইল্ড থিংস: ডায়মন্ডস ইন দ্য রাফ-ও একই ভাবে কেবল ভিডিও আকারে প্রকাশিত হয়। এই দুই ছবিতে প্রথম ছবির কাহিনি, সংলাপ ও পরিচালনা নানাভাবে ঘুরে ফিরে আসে। কেবল অভিনেতারা ছিলেন ভিন্ন।

২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জানা যায়, ক্যাম্পবেল ও রিচার্ডস ব্যাকস্ট্যাবার্স ছবিতে ফিরে আসছেন। প্রযোজকরা আগের ছবির প্রধান অভিনেতাদেরও এখানে নিয়ে আসার চেষ্টা করছেন।[1] যদিও ব্যাকস্ট্যাবার্স-এ ওয়াইল্ড থিংস ছবির পুরনো অভিনেতা ও কলাকুশলীদের আবার দেখা যাবে, তবুও এটি কোনো সিকোয়েল ছবি হবে না বলেই জানা গেছে।[1] ছবির কাজ শুরু হবে ২০০৯ সালে ও মুক্তি পাবে ২০১১ সালে।

পাদটীকা

  1. "Richards and Campbell Re-Team for 'Wild Things'"। World Entertainment News Network via hollywood.com। ২০১৩-০১-০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ মে ১৫, ২০০৮

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.