ইজ্ আদ-দীন আল-কাসসাম ব্রিগেড
ইজ্ আদ-দীন আল-কাসসাম ব্রিগেড (আরবি: كتائب الشهيد عز الدين القسام; ইজ্ আদ-দীন আল-কাসসামের নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়েছে, প্রায়শ সংক্ষিপ্ত রূপ আল- কাসসাম, EQB) হল ফিলিলিস্তিনি সংগঠন হামাসের সশস্ত্র শাখা।
ইজ্ আদ-দীন আল-কাসসাম ব্রিগেড كتائب الشهيد عز الدين القسام | |
---|---|
ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত অংশগ্রহণকারী | |
সক্রিয় | ১৯৯৩–বর্তমান |
মতবাদ | Palestinian Self-Determination সুন্নি ইসলামবাদ,[1] Islamic Fundamentalism,[2] Palestinian Nationalism |
নেতা | মুহাম্মাদ দেইফ মারওয়ান ইসসা |
সদর দফতর | গাজা |
অপারেশনের এলাকা | ![]() ![]() |
শক্তিমত্তা | 10,000-40,000"[3][4] |
এর অংশ | ![]() |
প্রতিপক্ষ | ![]()
|
দ্বিতীয় ইন্তিফাদার সময় থেকে এটি ইজরাইলের আক্রমণের প্রধান লক্ষবস্তুতে পরিণত হয়েছে। এই সংগঠনটির শক্তি সামর্থ্য বহু রাষ্ট্রকে বিষ্মিত করেদিয়েছে। ইজ্ আদ-দীন আল-কাসসামকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আমেরিকা,[5] অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড,[6] ইংল্যান্ড[7] ও মিশর[8] নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
নামকরণ

বৃটিশ অধিভুক্ত ফিলিস্তিনের ইজ্ আদ-দীন আল-কাসসাম নামক একজন মুসলিম ধর্ম প্রচারকের নামানুসারে এই সংগঠনের নামকনরণ করা হয়েছে। ১৯৩০ সালে আল-কাসসাম ''ব্ল্যাক হ্যান্ড" নামে বৃটিশ এবং ইহুদী আধিপত্যবাদ বিরোধী একটি সংগঠন গড়ে তোলেন।[9]
লক্ষ ও উদ্দেশ্য
EQBএর তথ্যানুসারে :
কুরআন এবং রাসূল (স) এর সুন্নাহ আর মুসলিম শাসক ও বিদ্বানদের নীতি অণুসরনে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন করা এবং ফিলিস্তিনি জনগনের আধিকারের পূনঃপ্রতিষ্ঠায় অবদান রাখা।
আল-কাসসামের উদ্দেশ্য হল ফিলিস্তিনের জনগনকে জয়নবাদী ইহুদীদের দখলদারিত্বের হাত থেকে মুক্ত করা এবং ফিলিস্তিনী জনগণের সেই অধিকার প্রতিষ্ঠা করা যা জয়নবাদীরা হরণ করেছে। সেই সাথে আল-কাসসাম নিজেকে জাতীয় মুক্তি আন্দোলনের প্রতীক মনে করে।[10]
সংগঠনের গঠন
ইজ্ আদ-দীন আল-কাসসাম ব্রিগেড হামাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ। যদিও তারা হামাসের অঙ্গ সংগঠন তবুও তাদের স্বাধীন সিদ্ধান্ত নেবার অধিকার রয়েছে।[11] হামাসের বক্তব্য অণুসারেঃ "ইজ্ আদ-দীন আল-কাসসাম ব্রিগেড একটা বিচ্ছিন্ন সশস্ত্র সংগঠন এবং এর নিজস্ব নেতা রয়েছে যারা হামাসের আদেশ গ্রহণ করে না এবং তথ্য ও অগ্রগতির কথাও হামাস নেতাদের জানানো হয় না।"[12][13]
যোদ্ধাদের পরিচিতি এবং সংগঠনে এদের অবস্থান মৃত্য পর্যন্ত গোপন থাকে। এমনকি যখন তারা ইজরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তখন তারা কালো মুখোশ পরিধান করে আর তার উপর সবুজ বেল্ট দিয়ে বাধা থাকে। ইজ্ আদ-দীন আল-কাসসাম ব্রিগেড স্বাধীন অণুশাখা মডেলে কাজ করে যার কারণে অনেক সিনিয়র নেতারাও অন্য শাখার খবর কজাআনে না। এই শাখাগুলো নেতাদের মৃত্যুর পর নিজেরাই নেতা নির্বাচন করে। আল আকসা ইন্তিফাদার সময়ে বিমান হামলায় অনেক নেতা মারা যায়। এদের মধ্য রয়েছে সালাহ শাহাদী ও আদনান আল গুলের মত বড় নেতা। সংগঠনটির বর্তমান এবং দীর্ঘমেয়াদী নেতা মুহাম্মাদ দেইফ যিনি পাচবার গুপ্তহত্যা থেকে বেচে গেছেন বলে কথিত আছে।[14]
কার্যকলাপ
আন্তর্যাতিক সম্প্রদায় বিশেষ করে জাতিসঙ্ঘ বেসামরিক লোকজনকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করাকে জেনেভা কননেনশনের নিয়মবহির্ভুত বলে মনে করে।[15][16][17] এবং সাধারণ মানুষদের উপর নির্বিচার রকেট হামলা ও আত্মঘাতি বোমা হামলা আত্নর্যাতিক আইনের রীতিবিরুদ্ধ।[18] কাসসাম অবশ্য বরাবরই এসব তথ্য আস্বীকার করে আসছে।
অসলো একর্ডের পরপরই হামাসকে সহযোগিতার জন্য সংগঠনটির শসস্ত্র রূপান্তর ঘটে।[19] ২০০৩ ও ২০০৪ সালে আধিকৃত জালাবিয়া এলাকায় ব্রিগেডটি ব্যাপকভাবে ইজরাইলী হামলার স্বীকার হয়। বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতাও মারা যান। তারপরও সংগঠনটি ধীরে ধীরে শক্তিশালী হতে শুরু করে এবং পরবর্তি বছরগুলোতে আক্রমণ করার মতো সক্ষমতা অর্জন করে। এরপর তারা দলে যোগ দেবার মত প্রচুর স্বেচ্ছাসেবীও পেয়ে যায়। একদল গোপনে কাসসামকে বিভিন্ন হাতে বানানো অস্ত্র যেমন আল বানা, বাতর, ইয়াসিন ইত্যাদি সরবরাহ করে। কাসসাম রকেট তাদের আর্টিলারি প্রযুক্তিতে সর্বশেষ সংযোজন।[11]
২০০৫ সালের প্রথমদিকে কাসসাম ইজরাইলী সরকার এবং ফিলিস্তিনী অথরিটির শান্তি আলোচনার পক্ষে মতামত দেয়। এই সুযোগে কাসসাম নিজেকে আবার জোড়ালোভাবে সংগঠিত করে। ২০০৫ সালের আগষ্টে ইজরাইল গাজা থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করলে কাসসাম গাজায় ব্যাপক র্যালি করে। এসমস্ত র্যালিতে তারা নিজেদের প্রচুর অস্ত্রের মজুদ আর সৈন্য-সামন্তের ব্যাপকতা প্রদর্শন করে।
ইজরাইলী লক্ষবস্তু আক্রমণের তালিকা
ইজরাইল কর্তৃক নিহত নেতা
উল্লেখযোগ্য সদস্য
- ইয়াহইয়া আয়াশ
- আদনান আল হুল
- সালাহ শাহাদী
- ওয়ালি নাসার
- আহমেদ জাবেরী
- সালামা আহমাদ
- ইমাদ আব্বাস
- নিদাল ফাতহি রাব্বাহ ফারহাত
- আবু ওবায়দাহ (মুখপাত্র)
- ইয়াসিন আল-আসতাল[20]
- মারওয়ান ইসসা
তথ্যসূত্র
-
- "Understanding Islamism" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৭ মার্চ ২০১৩ তারিখে, Cris is Group Middle East/North Africa Report N°37, March 2, 2005
- "The New Hamas: Between Resistance and Participation". Middle East Report. Graham Usher, August 21, 2005
- "Hamas leader condemns Islamist charity blacklist"। Reuters। আগস্ট ২৩, ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ জানুয়ারি ২৮, ২০০৯।
- Hider, James (অক্টোবর ১২, ২০০৭)। "Islamist leader hints at Hamas pull-out from Gaza"। The Times। London। সংগ্রহের তারিখ জানুয়ারি ২৮, ২০০৯।
- "Council on Foreign Relations"। Council on Foreign Relations। সংগ্রহের তারিখ মে ২৭, ২০১০।
-
- Islamic fundamentalism in the West Bank and Gaza: Muslim Brotherhood and Islamic Jihad, by Ziyād Abū 'Amr, Indiana University Press, 1994, pp. 66–72
- Anti-Semitic Motifs in the Ideology of Hizballah and Hamas, Esther Webman, Project for the Study of Anti-Semitism, 1994. আইএসবিএন ৯৭৮-৯৬৫-২২২-৫৯২-৪
- The HAMAS Terror Organization – 2007 update
- Omer, Mohammed। "Hamas growing in military stature, say analysts"। Middle East Eye। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০১৪।
- "Country Reports on Terrorism 2004" (PDF)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৮-০২।
- "Lists associated with Resolution 1373"। New Zealand Police। ২০ জুলাই ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১৬ আগস্ট ২০১৪।
- Georgy, Michael (২০১৫-০১-৩১)। "Egyptian court bans Hamas' armed wing, lists as terrorist organisation"। Reuters। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জানুয়ারি ২০১৫।
- Segev, Tom (১৯৯৯)। One Palestine, Complete। Metropolitan Books। পৃষ্ঠা 360–362। আইএসবিএন 0-8050-4848-0।
- al-Qassam Brigades: Details of the organisation ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২২ আগস্ট ২০১১ তারিখে Australian Government National Security 15 September 2009
- The deadly embrace: the impact of Israeli and Palestinian rejectionism on the peace process University Press of America, Ilana Kass & Bard E. O'Neill, 1997, p. 267
- Kass & O'Neill Pg 268
- "Profile: Hamas commander Mohammed Deif"। BBC News। ২৬ সেপ্টেম্বর ২০০২। সংগ্রহের তারিখ ৫ মে ২০১০।
- Berger, Yosef Ari Soffer। "Seeking Human Shields, Hamas Tells Gazans to Ignore IDF Warnings"। israelnationalnews.com। Arutz Sheva। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই ২০১৪।
- Sidner, Josh Levs, Sara, and Talal Abu-Rahma। "Rockets pound Israel, Gaza as Netanyahu alleges 'double war crime'"। cnn.com। Cable News Network. Turner Broadcasting System, Inc.। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই ২০১৪।
- KEINON, HERB। "As casualties in Gaza rise, PM accuses Hamas of double war crime"। jpost.com। The Jerusalem Post। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই ২০১৪।
- "Protection of the civilian population"। Protocol Additional to the Geneva Conventions of 12 August 1949, and relating to the Protection of Victims of International Armed Conflicts (Protocol I), 8 June 1977.। International Committee of the Red Cross। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই ২০১৪।
- Yousef, Mosab (২০০৯)। Son of Hamas। Tyndale Housing Publisher। পৃষ্ঠা 57।
- Jeroen Gunning; p179; Hamas in Politics: Democracy, Religion, Violence; Columbia University Press, 2008, আইএসবিএন ০-২৩১-৭০০৪৪-X
বহিঃসংযোগ
- AL-Qassam Brigades Information Office (en)
- The Truth About Hamas – Israel Defense Forces
- Hamas War Against Israel – Israel Ministry of Foreign Affairs